ইস্রাঈলে হামাসের হামলা এবং এর জের ধরে গাযা যুদ্ধ শুরুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত ৭ই অক্টোবর ২০২৪। বছর শেষে সেই যুদ্ধ আরো ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। নিহত হয়েছেন ইসমাঈল হানিয়া, ইয়াহইয়া সিনওয়ারের মত গাযার শাসকগোষ্ঠী ‘হামাসে’র কয়েকজন শীর্ষ নেতা। ‘হিযবুল্লাহ’ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর যুদ্ধ বিস্তৃত হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ লেবাননেও। গাযায় হামাসের পর লেবাননে হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হাওছী এবং শেষ পর্যন্ত ইরানের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে তেলআবিব। ফলে আশংকা দেখা দিয়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যব্যাপী যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার। ভয়াবহ এক মানবতা বিধ্বংসী অপতৎপরতার মুখোমুখি আজ মধ্যপ্রাচ্য। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, ১৯৬৭ সালে আরব-ইস্রাঈল যুদ্ধের পর থেকে সংঘাতময় এই অঞ্চলটি বর্তমানে সবচেয়ে বিপজ্জনক মুহূর্তে উপনীত হয়েছে। একদিকে আরব বিশ্ব ও ইস্রাঈলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবং অন্যদিকে শী‘আ ও সুন্নীদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব- যার নেতৃত্বে রয়েছে ইরান ও সঊদী আরব। এই দুই দেশের মধ্যকার বৈরী সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। দুই দেশের ভূরাজনৈতিক ও আঞ্চলিক দ্বন্দ্বের জেরে এখানকার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ধর্মীয়-রাজনৈতিক অমোচনীয় বিভাজন তৈরী হয়েছে। আর বিশ্ব রাজনীতি ও সামরিক জোটের কারণে এই বিভাজন আরো ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে।
বিগত এক বছরে ইস্রাঈলের নৃশংস হামলায় গাযার প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়ীঘর ধ্বংসস্ত্তপে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪২ হাযার ৪০৯ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছে ৯৯ হাযার ১৫৩জন। যার অধিকাংশই নারী-শিশু ও বেসামরিক লোকজন। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখ মানুষ। প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। সুরম্য ভবনগুলো বোমার আঘাতে সব ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। আগুনের লেলিহান শিখা প্রতিনিয়ত আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে। প্রাণ বাঁচানোর তাকিদে সন্তান বুকে নিয়ে মা দৌড়াচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে, অবলা শিশু-কিশোরদের চোখে-মুখে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ছাপ, যেকোন মুহূর্তে হায়েনাদের বোমার অসহায় খোরাক হতে পারে তারা-এসব সেখানকার নিত্যদিনের দৃশ্য। নির্যাতিত ও ক্ষুধার্ত মানবতার আর্তচিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠলেও বিশ্ববিবেক তার নিশ্চুপ, নীরব দর্শকের ভূমিকা আজও ধরে রেখেছে। মুসলিম বিশ্বও মাঝে মাঝে মৃদু প্রতিবাদ করলেও মোটামুটি নিঃসাড় অবস্থাতেই রয়েছে।
ইস্রাঈল শুধু গাযা হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং পুরো উপত্যকাটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলের ২৩ লাখ মানুষ এখন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও বিপর্যয়কর ক্ষুধার মুখোমুখি। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাযার প্রত্যেক মানুষই এখন ক্ষুধার্ত। তাদের মধ্যে ৪ ভাগের ১ ভাগ মানুষ অনাহারে রয়েছেন। জাতিসংঘের জনৈক প্রতিনিধির ভাষ্য মতে, যুদ্ধের ইতিহাসে এরকম দ্রুতগতিতে কোন জাতি দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধাপীড়িত হওয়ার রেকর্ড বিরল। এ অঞ্চলে ২৩ লাখ ফিলিস্তীনীর দুর্ভিক্ষপীড়িত হওয়ার ঘটনা নযীরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, অবৈধ ইস্রাঈল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফিলিস্তীনী জনগণের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় থেকেই ফিলিস্তীনী জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার ইতিহাস শুরু হয়। তারপর থেকে ইস্রাঈল ফিলিস্তীনী জনগণকে ক্ষুধার্ত রাখার নীতির দিকে ঝুঁকেছে বলে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদক উল্লেখ করেছেন। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক গাযার মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কেও ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন। খাদ্য সহায়তার পরিমাণও জুলাইয়ের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কমে গেছে। তাছাড়া সেখানে পাঁচ বছরের নিচে তিন লাখ ৩৫ হাযার শিশু রয়েছে, যারা অপুষ্টিতে ভুগছে। এতে পুরো একটি প্রজন্ম অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে লেবাননেও চলছে ইস্রাঈলী আগ্রাসন। সেখানেও ১০ লাখ মানুষকে বাস্ত্তচ্যুত করা হয়েছে। দু’হাযারের অধিক মানুষকে আকাশবোমা নিক্ষেপে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন ‘হিযবুল্লাহ’র প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ‘হামাস’ (গাযা নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন) ইস্রাঈলী ভূখন্ডে অতর্কিত হামলা চালায়। হামাস মাত্র ২০ মিনিটে ৫০০০ রকেটবৃষ্টির মাধ্যমে ইস্রাঈলে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটায় এবং কাঁটা তারের বেড়া ভেঙ্গে ট্যাঙ্কসহ ইস্রাঈলের সীমানার মধ্যে ঢুকে কয়েকটি ইস্রাঈলী ট্যাঙ্ক দখল করে নিয়ে আসে। এই হামলায় প্রায় ১ হাযার ২০০ ইস্রাঈলী নিহত হয়। আর ২৪২ জনকে যিম্মী করা হয়। এতে ইস্রাঈল হতচকিত হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক কুফরী শক্তিগুলি ছাড়াও যখন বাহরায়েন, কাতার, আরব আমিরাত এমনকি সঊদী আরব ইস্রাঈলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে যাচ্ছিল, তখনই চারদিক অবরুদ্ধ, মৃত্যুর মুখোমুখি ফিলিস্তীনীরা এই হামলার মাধ্যমে বিশ্ব বিবেকের কাছে হয়ত এটাই বলতে চেয়েছিল যে, ফিলিস্তীনের আদি বাসিন্দা অবরুদ্ধ ২৩ লাখের অধিক মুসলিম নিশ্চিহ্ন হ’তে চায় না। তারা জীবনের শেষ বিন্দু দিয়ে পূর্ণ মানবাধিকার নিয়ে বাঁচতে চায়। হামাসের ওই হামলাকে ইস্রাঈল ফিলিস্তীনের উপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানোর মোক্ষম সুযোগ হিসাবে বিবেচনা করেছিল। ফলে যিম্মীদের উদ্ধার এবং হামাস তথা ফিলিস্তীনকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে সেদিন থেকেই গাযায় অভিযান শুরু করে ইস্রাঈলী বাহিনী।
এদিকে ইস্রাঈলের হামলার প্রতিশোধ নিতে গত ডিসেম্বরে লোহিত সাগরে জাহাযে হামলা শুরু করে ইয়েমেনের হাওছী বিদ্রোহীরা। এতে মিসরসহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে বেশ কিছু দেশ। হামলার শিকার হচ্ছে সেখানে অবস্থান করা পশ্চিমা যুদ্ধজাহাযও। মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য হাওছীদের ওপর হামলা করেছে। ফলে লোহিত সাগরে জাহায চলাচল ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বড় শিপিং লাইনগুলোর বেশিরভাগ জাহায আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে সাগর পাড়ি দিচ্ছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পরিবহনে আগের তুলনায় সময় বেশি লাগছে। লোহিত সাগরের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে যদি যথাযথভাবে মোকাবিলা করা না যায়, তাহলে এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি সুয়েজ খালে জাহায চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে জড়ালে বিশ^ আরেকটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে বলে শঙ্কা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকটের কারণে তেলের দাম বাড়তে পারে। যার প্রভাব পড়বে সর্বক্ষেত্রে। বিশ^ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই বছরে ক্রমাগত উচ্চ ভূরাজনৈতিক উদ্বেগ তেল এবং অন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গাযা উপত্যকা একসময় মিসরের অংশ ছিল। ওছমানীয় খেলাফতের পূর্ব থেকে ১৩০০ বছর পর্যন্ত কখনোই সেখানে কোন সংঘাত বা কোন ইহূদী বা মুসলিম প্রাণ হারায়নি। অথচ ১ম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর কুখ্যাত ‘বেলফোর ঘোষণা’-এর পর যখন ফিলিস্তীনে পৃথক ইহূদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়, তখন থেকেই সেখানে স্থায়ীভাবে রক্ত ঝরার সূত্রপাত হয়। অতঃপর ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তীন ভূখন্ডে জাতিসংঘ কর্তৃক জোরপূর্বক ‘ইস্রাঈল রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৭ সালের ৫ই জুন আরব-ইস্রাঈল যুদ্ধে ৩৬০ বর্গকিলোমিটারের গাযা ভূখন্ডটি ইস্রাঈলের দখলে চলে যায়। ১৯৯৩ সালে ‘অসলো চুক্তি’র পর গাযায় ফিলিস্তীনী কর্তৃপক্ষের সীমিত শাসন মেনে নেয় ইস্রাঈল। অতঃপর ২০০৫ সালে গাযা থেকে তারা ইহূদী বসতি পুরোপুরি গুটিয়ে নেয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’র প্রতিবেদন মোতাবেক বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের ১৪৩টি দেশ ফিলিস্তীনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘের সদস্যপদও রয়েছে ফিলিস্তীনের।
মূলত ১৯৪৮ সালে অবৈধভাবে জন্ম নেওয়া ‘ইস্রাঈল’ পাশ্চাত্যের ও বৃহৎ শক্তি বলয়ের সৃষ্ট একটি সামরিক কলোনী ছাড়া কিছুই নয়। মধ্যপ্রাচ্যের বিশাল তৈল ভান্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং সেখানকার মুসলিম রাষ্ট্রগুলির উপরে ছড়ি ঘুরানোর উদ্দেশ্যে তারা নিজেদের স্বার্থে একে ‘রাষ্ট্র’ নাম দিয়েছে ও জাতিসংঘের সদস্য করে নিয়েছে। অথচ ঐসব শক্তির সমর্থন উঠে গেলে ইস্রাঈলের ‘রাষ্ট্র’ হিসাবে আদৌ টিকে থাকার কোন ক্ষমতা নেই।
ইতিপূর্বে জার্মানীতে হিটলার ৬০ লাখ ইহূদীকে গ্যাস চেম্বারে হত্যা করে বলে শ্রুতি রয়েছে। যা ‘হলোকস্ট ট্রাজেডী’ নামে খ্যাত। অতঃপর সেখান থেকে ও অন্যান্য স্থান থেকে অবশিষ্ট ইহূদীদের এনে ফিলিস্তীনে জড়ো করা হয় এবং সেখানকার স্থায়ী মুসলিম আরব বাসিন্দাদের জোর করে তাড়িয়ে দিয়ে সেখানে এইসব ইহূদীদের বসতি স্থাপন করা হয়। অথচ ফিলিস্তীনে শতকরা ৯৩ ভাগ ছিল আরব মুসলিম, আর মাত্র ৭ ভাগ ছিল ইহূদী। কিন্তু পশ্চিমা ইহূদী-খৃষ্টান পরাশক্তিগুলির নগ্ন সমর্থনে ও অস্ত্র সাহায্যে তারা আজ অজেয় শক্তিতে গর্বোদ্ধত।
১৯৪৮ সালে এই অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও সেখানে নিয়মিত রক্ত ঝরছে। যখনই বর্তমান মানুষের দেওয়া এই অঙ্গীকার ছিন্ন হবে, তখনই ওরা আবার চূড়ান্ত লাঞ্ছনার শিকার হয়ে ঘুরতে থাকবে পৃথিবীব্যাপী। কারণ ইহুদীরা তওরাত ও ইনজীলকে বিকৃতকারী চির অবাধ্য জাতি। তারা তাদের নবীদের হত্যা করেছে। এমনকি হযরত ঈসাকেও হত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে। অবশেষে শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ওদের অনিষ্টকারিতা হ’তে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে মুসলিম উম্মাহকে সূরা ফাতিহায় প্রার্থনা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, ‘তুমি আমাদেরকে অভিশপ্ত (ইহূদী)-দের ও পথভ্রষ্ট (নাছারা)-দের পথে নিয়ে যেয়ো না’ (তিরমিযী হা/২৯৫৪)। তবে তাদের মধ্যে সর্বদা কিছু ভালো লোক থাকবে, যারা মুসলমান হয়ে শান্তিময় জীবন যাপন করবে। যেমন হাবশার বাদশাহ নাজাশী, মদীনার আব্দুল্লাহ বিন সালাম ও তাদের সাথীগণ।
ইহূদীরা আল্লাহর অভিশপ্ত জাতি। আল্লাহ বলেন, তাদের উপর আরোপ করা হ’ল লাঞ্ছনা ও পরমুখাপেক্ষিতা।... কারণ তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী’ (বাক্বারাহ ২/৬১)। তিনি বলেন, ‘তাদের উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যেখানেই তারা থাকুক না কেন, কেবলমাত্র আল্লাহর অঙ্গীকার ও মানুষের অঙ্গীকার ব্যতীত। আর তারা নিজেদের উপর আল্লাহর ক্রোধকে ফিরিয়ে নিয়েছে এবং তাদের উপর পরমুখাপেক্ষিতা অবধারিত হয়েছে। এটা এজন্য যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। কেননা ওরা অবাধ্য হয়েছিল এবং সীমালংঘন করত’ (আলে ইমরান ৩/১১২)।
এক্ষণে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই নগরীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হ’লে মুসলিম শাসকগণকে ব্যক্তিস্বার্থ থেকে বের হয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারী ও বেসরকারীভাবে ইস্রাঈলের সাথে সকল ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলির পানিসীমা ও আকাশসীমা দিয়ে ইস্রাঈল ও তার সাহায্যকারীদের জাহায ও বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশ্ব সভাগুলিতে কূটনৈতিক ভূমিকা জোরদার করতে হবে। সেই সাথে অবিলম্বে ১৯৬৭ সালের ২২শে নভেম্বর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ২৪২ এবং ৩৩৮ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুসরণে স্বাধীন ফিলিস্তীন ও ইস্রাঈল দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। এটাই মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিরসনের একমাত্র পথ। আল্লাহ যালেমদের উপযুক্ত শাস্তিবিধান করুন এবং মযলূমদের সহায় হৌন-আমীন!