৬. ছালাতে মুহাম্মাদী : এতে সংক্ষেপে ছালাতের নিয়ম-পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। এর ভূমিকায় মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী বলেন, ‘জানা উচিত যে, আল্লাহ তা‘আলা এক। তাঁর কোন শরীক ও অংশীদার নেই। তাঁর মতো কেউ নেই। তিনি যেমন স্বীয় সত্তায় একক, তেমনি স্বীয় গুণাবলীতেও একক। তিনিই সবার মালিক এবং সবাই তাঁর গোলাম। তাঁর নিকট প্রত্যেক ব্যক্তি মুখাপেক্ষী। তিনি সবার নিকট থেকে অমুখাপেক্ষী। তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে এত নে‘মত দিয়ে রেখেছেন, যেগুলি আমরা গণনাও করতে পারব না। কাজেই এরূপ প্রতিপালক, দয়ালু ও করুণাময় মালিকের ইবাদত ও আনুগত্য অবশ্যই আমাদেরকে করতে হবে। তিনি স্বীয় রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে নবী করে আমাদের নিকট প্রেরণ করেছেন এবং তাঁর ইবাদতের পদ্ধতি বাৎলিয়ে দিয়েছেন। আমাদের অবশ্য কর্তব্য হল, তার বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা। আল্লাহ তা‘আলাকে এক এবং তাঁর রাসূলকে সত্য বলে মেনে নেয়ার পরে সবচেয়ে বড় ইবাদত হল ছালাত।... যেভাবে রাসূল (ছাঃ) ছালাত আদায় করতেন, সেভাবে তা আদায় করুন! রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ওযূ ও ছালাতের পদ্ধতি আমরা সংক্ষেপে হাদীছের আলোকে বর্ণনা করছি। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে ছালাতী করুন এবং আমাদের ছালাত কবুল করুন।[1] ১৯৩৮ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৬। ড. মুহাম্মাদ মুজীবুর রহমান স্যার এটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন।
৭. ছিয়ামে মুহাম্মাদী :
এতে ছিয়ামের ফাযায়েল ও মাসায়েল, তারাবীহ, লায়লাতুল কদর, ই‘তিকাফ, ফিৎরা,
ঈদায়েনের ছালাত প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা
১৮। ২০ রাক‘আত তারাবীহ সম্পর্কে এতে বলা হয়েছে, ‘বিশ রাক‘আত তারাবীহ রাসূল
(ছাঃ) থেকে ছহীহ সনদে বর্ণিত নেই।... হযরত ওমর ফারূক (রাঃ)ও জামা‘আতের
সাথে ৮ রাক‘আত তারাবীহ ছালাত পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন’।[2]
৮. হজ্জে মুহাম্মাদী : এতে হজ্জ ও ওমরার ফযীলত, হজ্জ না করার গুনাহ, হজ্জ মুলতবী করার গুনাহ, হজ্জ মুলতবীর সমস্ত দলীল খন্ডন এবং সঊদী আরবের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডার জবাব দেয়া হয়েছে। শাওয়াল ১৩৫৬ হিঃ/জানুয়ারী ১৯৩৮ সালে দিল্লীর জওব প্রেস থেকে এর ২য় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৭।
৯. যাকাতে মুহাম্মাদী :
এতে যাকাতের ফরযিয়াত, নিছাব, পরিমাণ, যাকাতের বিভিন্ন মাসায়েল, নফল
দান-ছাদাক্বাহ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ১৯২৭ সালে এর ৩য় সংস্করণ
প্রকাশিত হয়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৫। মাওলানা মুনতাছির আহমাদ রহমানী এটি
বাংলায় অনুবাদ করেছেন। গ্রন্থটির উপসংহারে জুনাগড়ী বলেন, ‘মোদ্দাকথা যাকাত
আদায় করা ছাড়াও মুসলমানদেরকে নফল দান-খয়রাতও মন খুলে করা উচিত। ছাদাকা করলে
মাল কমে না; বরং বাড়ে। আল্লাহ আমাদেরকে ভাল কাজ করার তাওফীক দিন, আমাদের
কাছ থেকে তার সন্তুষ্টিমূলক কাজ নিন এবং আমাদেরকে কৃপণতা থেকে বাঁচান। আমীন
ইয়া রববাল আলামীন’।[3]
১০. তাওহীদে মুহাম্মাদী :
এতে কুরআন মাজীদ, তাফসীর, হাদীছ, চার ইমামের উক্তি এবং হানাফী মাযহাবের
ফিক্বহ গ্রন্থ সমূহের প্রায় ২০০ উদ্ধৃতির মাধ্যমে কবর পাকা করা, এর উপর সৌধ
নির্মাণ করার নিষিদ্ধতা প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৬।
এর ভূমিকায় মাওলানা জুনাগড়ী বলেছেন, ‘এই পুস্তিকায় আমার উদ্দেশ্য স্রেফ
এটা যে, প্রথমে আমি বলব যে, আসলে মুহাম্মাদী শরী‘আতে গম্বুজ ও কবরসমূহের
বাস্তবতা কি? সাথে সাথে বিশেষভাবে এটাও বর্ণনা করা উদ্দেশ্য যে, হানাফী
মাযহাবে এসবের কি বিধান রয়েছে? কেননা সাধারণভাবে কবরের উপর গম্বুজ
পসন্দকারী আলেমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী হওয়ার দাবীদার। বিশেষত আমি আমার
এই পুস্তকে আপনাদেরকে স্বয়ং ইমামে আ‘যম ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নির্দেশ
বর্ণনা করব যে, তিনি এই বিশেষ মাসআলায় কি ফায়ছালা দিয়ে গেছেন। উপরন্তু
আপনারা এটাও খুব ভালভাবে জানতে পারবেন যে, অন্য তিন ইমাম শাফেঈ, মালেক ও
আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এরও এই মাসআলায় কি ফায়ছালা রয়েছে?[4]
কবর
উচুঁ ও পাকা করার ব্যাপারে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর মত উল্লেখ করতে গিয়ে
জুনাগড়ী বলেন, ‘হানাফী মাযহাবের নির্ভরযোগ্য ফিক্বহগ্রন্থ ফাতাওয়া কাযী
খাঁ, (ফাতাওয়া আলমগীরীর হাশিয়ায় মুদ্রিত), মায়মানিয়া ছাপা, মিসর, ১ম খন্ড,
পৃঃ ১৭৮-এ আছে,روى عن أبي حنيفة رحمه الله تعالى أنه قال لايجصص القبر ولا
يطين ولايرفع عليه بناء وسقف- ‘ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) হ’তে বর্ণিত আছে তিনি
বলেন, কবর পাকা করা ও মাটি দিয়ে লেপা যাবে না এবং কবরের উপর কোন সৌধ বা
তাঁবু নির্মাণ করা যাবে না’। দারুল কুতুব, মিসরীয় ছাপা, শামী, ১ম খন্ড, পৃঃ
৬৬২-তে আছে,عن أبى حنيفة يكره أن يبنى عليه بناء من بيت أو قبة أو نحو
ذالك ‘ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, কবরের উপর যে কোন ধরনের
ইমারত নির্মাণ করা মাকরূহ। চাই সেটা ঘর, গম্বুজ বা অন্য কিছু হোক’।[5]
হানাফী
মাযহাবের প্রসিদ্ধ মুফতী মাওলানা কিফায়াতুল্লাহ দেহলভী, মাওলানা আহমাদ
সাঈদ দেহলভী প্রমুখ এক ফৎওয়ায় বলেন, ‘উচুঁ উচুঁ কবর সমূহ বানানো, কবরগুলিকে
পাকা করা, কবর সমূহের উপরে গম্বুজ ও ইমারত নির্মাণ করা, গিলাফ পরানো, চাদর
চড়ান, নযর মানা, তওয়াফ করা, সিজদা করা এগুলি সব শরী‘আত বিগর্হিত কাজের
অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র ইসলামী শরী‘আত সুস্পষ্টভাবে এসব কাজ থেকে নিষেধ করেছে।
ছহীহ হাদীছ সমূহে এ ধরনের কর্মকান্ডের নিষিদ্ধতা বর্ণিত রয়েছে। যা শিরক বা
শিরকের দিকে ধাবিতকারী। ... হানাফী ফিক্বহে সুস্পষ্টভাবে এই মাসআলা
উল্লেখিত আছে যে, কবর পাকা করা যাবে না এবং এর উপর কোন ইমারতও নির্মাণ করা
যাবে না। ছাহাবায়ে কেরাম, মুজতাহিদ ইমামগণ এবং সালাফে ছালেহীনের কর্মপদ্ধতি
এরই অনুকূলে ছিল। স্বর্ণ যুগে এর কোন প্রমাণ নেই যে, কবর সমূহের উপর
গম্বুজ নির্মাণ করা হত বা কবরগুলিকে এমনভাবে সম্মান করা হত যা বর্তমানে
কিছুকাল যাবৎ প্রচলিত আছে। নযর, তওয়াফ ও সিজদা তো ইবাদত। আর গায়রুল্লাহর
(আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো) জন্য ইবাদতের নিয়তে এসব কাজ করা তো নিশ্চিতভাবে
শিরক। যদি এসব কাজে ইবাদতের নিয়ত নাও থাকত তবুও এগুলি হারাম হওয়ার ব্যাপারে
কোন সংশয় নেই’।[6]
১১. মীলাদে মুহাম্মাদী : এ গ্রন্থে মাওলানা জুনাগড়ী মোট ৫০টি দলীলের মাধ্যমে মীলাদ ও কিয়াম বিদ‘আত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করেছেন। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৮। মাওলানা হাবীবুল্লাহ খান রহমানী এটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন। মীলাদের খন্ডন করতে গিয়ে জুনাগড়ী বলেন, ‘১ম দলীল : বিশ্বপ্রতিপালক তাঁর সত্য ও পসন্দনীয় দ্বীনকে রাসূলগণের সর্দার হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর হাতে পূর্ণতা দান করেছেন এবং বলেছেন যে, الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম’ (মায়েদা ৫/৩)। আর এই পূর্ণাঙ্গ দ্বীনে কোন ছহীহ বা যঈফ বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত নেই যে, এই দিনকে ঈদের দিনের মতো উদযাপন করা হয়েছে, কোন অনুষ্ঠান করা হয়েছে এবং বর্তমানের ন্যায় মীলাদের মাহফিল করা হয়েছে। যদি আমরা এই মীলাদের মাহফিলকে দ্বীনী কাজ মনে করি, যদিচ দ্বীনে এর কোন প্রমাণ নেই, তাহলে প্রমাণিত হয় যে, দ্বীনের মধ্যে এটুকু ঘাটতি থেকে গিয়েছিল। অথচ আল্লাহ একে পূর্ণাঙ্গ বলেছেন। এখন এটা আবশ্যক হয়ে যায় যে, হয় আল্লাহ সত্য এবং মীলাদপন্থীরা মিথ্যুক এবং আল্লাহর দ্বীন পরিপূর্ণ। অথবা আল্লাহ মিথ্যাবাদী এবং মীলাদপন্থীরা সত্য আর আল্লাহর দ্বীন অপূর্ণাঙ্গ। প্রকাশ থাকে যে, দ্বিতীয় কথার প্রবক্তা কেউ নন। সেজন্য প্রথম কথাটিই সঠিক এবং মীলাদের মজলিস বিদ‘আত ও নাজায়েয।
দ্বিতীয় দলীল :
ছাহেবে মীলাদ অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর নবুঅত লাভের পর তেইশ বছর
জীবিত ছিলেন। প্রত্যেক বছর রবীউল আউয়াল মাস আসত এবং প্রত্যেক রবীউল আউয়াল
মাসে ১২ তারিখও আসত। কিন্তু না তিনি কোন মীলাদের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন,
আর না এর নির্দেশ দিয়েছেন। ... সুতরাং যেহেতু এটি রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর
পরে আবিষ্কৃত এবং এটাকে দ্বীনী কাজ মনে করে করা হয়, সেহেতু এটি বিদ‘আত
সাব্যস্ত হয়ে গেছে’।[7]
কিয়ামের খন্ডন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘১ম দলীল :
যখন স্বয়ং মীলাদের মাহফিল বিদ‘আত এবং হারাম সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তখন কিয়াম
যা এর অন্তর্ভুক্ত ছিল সেটাও বিদ‘আত ও নিষিদ্ধ প্রমাণিত হয়ে গেছে। এছাড়া
কুরআন মাজীদে পরিষ্কারভাবে বলা আছে যে, وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ ‘এবং
তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। দ্বিতীয় দলীল : রাসূল (ছাঃ) তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর জন্য ছাহাবীদেরকে কিয়াম তথা দাঁড়াতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন এবং বাধা দিয়েছিলেন’।[8]
১২. আক্বীদায়ে মুহাম্মাদী ই‘য়ানী মাযহাবে আহলেহাদীছ :
এতে আহলেহাদীছদের আক্বীদা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা
১১। ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ) সম্পর্কে আহলেহাদীছদের আক্বীদা বর্ণনা করতে গিয়ে
তিনি বলেন, ‘ইমাম মাহদী (আঃ)-এর ইমামত সত্য। হযরত ঈসা (আঃ)-কে জীবিত
আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি অদ্যাবধি জীবিত আছেন এবং কিয়ামতের সন্নিকটে
আসমান থেকে অবতীর্ণ হবেন। তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন। পৃথিবীতে ইসলামের
বিস্তার ঘটাবেন। নবী করীম (ছাঃ)-এর সুন্নাতের উপর আমল করবেন। অতঃপর
মৃত্যুবরণ করবেন’। কবীরা গুনাহগারদের সম্পর্কে জুনাগড়ী বলেন, ‘কবীরা গুনাহ
সত্ত্বেও তাওহীদপন্থী ও সুন্নাতের অনুসারী মুসলমান সর্বদা জাহান্নামে থাকবে
না। বরং এক সময় অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। তবে মুশরিক ও কাফেরের
উপর অবধারিতভাবে জান্নাত হারাম’।[9]
১৩. দালাইলে মুহাম্মাদী : এতে ছালাতে সূরা ফাতিহা পাঠ, রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা এবং স্বশব্দে আমীন বলা প্রভৃতি বিষয় সুস্পষ্ট হাদীছ, হানাফী মাযহাবের গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ সমূহ ও আল্লাহর ওলীদের উক্তি দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে। শাওয়াল ১৩৪৭ হিঃ/মার্চ ১৯২৯ সালে এর ৪র্থ সংস্করণ প্রকাশিত হয়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৫।
১৪. দালাইলে মুহাম্মাদী (২য় অংশ) : মাওলানা জুনাগড়ীর দালাইলে মুহাম্মাদী (১ম অংশ)-এর জবাবে ‘আছ-ছিরাতুল মুস্তাকীম ফী ইত্তিবায়ে সাইয়িদিল মুরসালীন’ নামে একটি গ্রন্থ রাজকোট থেকে প্রকাশিত হয়। এর জবাবে তিনি উক্ত গ্রন্থটি রচনা করেন।[10] এতে ছালাতে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে না মর্মের দলীলগুলির ১৬২টি জবাব, রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করার দলীল সমূহের ৭৯টি জবাব এবং নাভীর নীচে হাত বাঁধার বর্ণনার ১০টি জবাব প্রদান করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৬।
১৫. মি‘রাজে মুহাম্মাদী :
এতে মি‘রাজের পুরা ঘটনা ছহীহ হাদীছ সমূহের আলোকে আলোচনা করা হয়েছে। সাথে
সাথে মি‘রাজ দৈহিকভাবে সংঘটিত হওয়ার আকলী ও নকলী দলীল এবং রজব মাসে যেসব
বিদ‘আত সংঘটিত হয় তা তুলে ধরা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১। ২৭শে রজবের
ছিয়াম পালন সম্পর্কে মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভীর ‘আল-আছার আল-মারফূ‘আহ’
গ্রন্থ থেকে তিনি উদ্ধৃতি দিয়েছেন, وَمَا اشْتَهَرَ فِي بِلادِ الْهِنْدِ
وَغَيْرِهِ أَنَّ صَوْمَ صَبَاحِ تِلْكَ اللَّيْلَةِ يعدل أَلْفَ صَوْمٍ
فَلا أَصْلَ لَهُ ‘হিন্দুস্তান ও অন্যান্য দেশে প্রসিদ্ধ রয়েছে যে, ২৭শে
রজবের ছিয়ামের ছওয়াব এক হাযার ছিয়ামের সমতুল্য। এর কোন ভিত্তি নেই’।[11]
১৬. তোহফায়ে মুহাম্মাদী : এতে কা‘বাঘর নির্মাণের ইতিহাস, কুরবানীর সূচনা, ঈদুল আযহার ছালাত, যিলহজ্জ মাসের ফাযায়েল ও মাসায়েল প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে। বিশেষত হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থ সমূহ থেকে গরু যবেহ করার প্রমাণ পেশ করা হয়েছে।[12] মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১।
১৭. জামা‘আতে মুহাম্মাদী : মাওলানা কিফায়াতুল্লাহ দেহলভী রচিত ‘কাফফুল মুমিনাত আন হুযূরিল জামা‘আ-ত’ গ্রন্থের জবাবে মাওলানা জুনাগড়ী ‘হুযূরুল মুমিনাত ফিল ঈদায়েন ওয়াল জামা‘আ-ত’ ওরফে ‘জামা‘আতে মুহাম্মাদী’ পুস্তকটি রচনা করেন।[13] এতে কুরআন, হাদীছ ও হানাফী ফিক্বহের আলোকে মহিলাদের ঈদের জামা‘আতে অংশগ্রহণ করা, মসজিদে আসা ও জালসায় যাওয়ার প্রমাণ পেশ করা হয়েছে এবং যারা এসব নাজায়েয বলেন তাদের জবাব দেয়া হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩১।
১৮. দুরূদে মুহাম্মাদী : এটি জোধপুরের মাস্টার মুহাম্মাদ ইসমাঈল রচিত গ্রন্থের জবাবে লিখিত।[14]
এতে প্রচলিত কুরআনখানী, কলেমাখানী, চল্লিশা, ওরস, শবেবরাত, নযর-নেয়ায তথা
মৃত্যুর পর প্রচলিত বিভিন্ন বিদ‘আত সম্পর্কে দলীলভিত্তিক আলোচনা পেশ করা
হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৮। কুরআনখানী সম্পর্কে শায়খ আলী মুত্তাকী
জৌনপুরী ‘রদ্দে বিদ‘আত’ গ্রন্থে লিখেছেন,الاجتماع للقراءة بالقرآن على
الميت بالتخصيص فى المقبرة أو المسجد أو البية بدعة مذمومة- ‘মৃত ব্যক্তির
উপর কুরআন পড়ার জন্য কবরস্থান, মসজিদ বা বাড়ীতে একত্রিত হওয়া নিন্দনীয়
বিদ‘আত’।[15]
১৯. হায়াতে মুহাম্মাদী :
মৃত্যুর পর বুযর্গদের রূহগুলির হাযির-নাযির হওয়া ও হায়াতুন্নবী আকবীদার
খন্ডনে এ পুস্তিকাটি রচিত হয়েছে। এ বিষয়ে উল্লেখিত দলীলগুলির ৮৪টি জবাব
প্রদান করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১। জুনাগড়ী হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত
ফৎওয়া গ্রন্থ বায্যাযিয়াহ থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন-من قال ارواح المشائخ حاضرة
تعلم يكفر ‘যে বলবে যে, বুযর্গদের রূহসমূহ হাযির-নাযির, জানবে সে কাফের’।[16]
২০. ছদায়ে মুহাম্মাদী : আহলেহাদীছদের বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ উত্থাপন করা হয় তার পান্ডিত্যপূর্ণ জবাব দেয়া হয়েছে এ পুস্তিকায়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৬।
২১. তা‘বীযে মুহাম্মাদী : মৌলভী আহমাদ আলী মৌভী ব্রেলভী কর্তৃক আহলেহাদীছদের বিরুদ্ধে লিখিত ‘তাহযীরুন নাস আন মাজালিসিল খান্নাস’ ও ‘নযরী ধোকা মা‘আ আক্বলী ধোকা’ শীর্ষক দু’টি গ্রন্থের জবাবে এটি রচিত।[17] ১৯৩৪ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২০।
২২. নূরে মুহাম্মাদী :
কাওয়ালী, গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্রের প্রতিবাদে লিখিত এ গ্রন্থের মোট
পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৪। এটি ১৯৩৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এতে কাওয়ালী
পসন্দকারীদের সকল দলীল খন্ডন করা হয়েছে এবং তাদের রচিত তিনটি গ্রন্থের জবাব
দেয়া হয়েছে। মাওলানা জুনাগড়ী বলেন, ‘রাগ-রাগিনী, কাওয়ালী ও বাদ্যযন্ত্র
সমূহ শয়তানী ফাঁদ। অজ্ঞ-মূর্খ লোকদেরকে এতে তারা ফাঁসিয়ে দেয় এবং এ জালে
আটকিয়ে কুরআন ও হাদীছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়’।[18]
২৩. যিম্মায়ে মুহাম্মাদী :
এতে কুরআন, হাদীছ, হানাফী ফিক্বহ গ্রন্থ সমূহ এবং আব্দুল কাদের জীলানী
(রহঃ)-এর বাণীসমূহ থেকে শিরক, বিদ‘আত, বিভিন্ন রসম-রেওয়াজ সম্পর্কে আলোচনা
করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪১। আব্দুল কাদের জীলানী (রহঃ) ‘ফুতূহুল
গায়েব’ গ্রন্থের ২য় মাকালায় লিখেছেন,اتبعوا ولا تبتدعوا واطيعوا ولا تمزقوا
ووحدوا ولا تشركوا ‘তোমরা সুন্নাতের অনুসরণ করো, বিদ‘আত করো না। আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং নাফরমানী করো না। তাওহীদপন্থী হও, মুশরিক হয়ো
না’।[19] মৃত্যুকালীন অসুস্থতার সময় আব্দুল কাদের জিলানী তার ছেলে আব্দুল
ওয়াহ্হাবকে অছিয়ত করতে গিয়ে বলেন, عليك بتقوى الله عز وجل ولاتخف أحدا سوى
الله ولا ترج أحدا سوى الله وكل الحوائج إلى الله عز وجل ولا تعتمد إلا
عليه واطلبها جميعا منه ولا تثق باحد غير الله عز وجل التوحيد التوحيد-
‘তুমি আল্লাহকে ভয় করবে। আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করবে না। আল্লাহ ব্যতীত
অন্য কারো কাছে কোন আশা করবে না। যাবতীয় প্রয়োজন আল্লাহর কাছে চাও।
শুধুমাত্র তাঁর উপরেই ভরসা করো। তার কাছেই সবকিছু চাও। আল্লাহ ছাড়া কারো
সাহায্যের উপর ভরসা করবে না। তাওহীদকে অাঁকড়ে ধরো, তাওহীদকে অাঁকড়ে ধরো’।[20]
আব্দুল
কাদের জীলানী আরো বলেন,واجعل الكتاب والسنة إماما لك وانظر فيهما بتأمل
وتدبر واعمل بهما ولا تغتر بالقال والقيل والهوس- ‘কুরআন ও সুন্নাহকে তোমার
নেতা বানাও। এ দু’টি জিনিসকে চিন্তা-গবেষণা করে পড় এবং এতদুভয়ের উপর আমল
করো। মানুষের রায়-কিয়াসের উপর চলো না’।[21]
মৃত্যুর সময় আব্দুল কাদের জীলানী বলেছিলেন, استغيث بلا إله إلا الله الحى الذى لا يموت ولا يخشى أن يفوت- سبحان من تعزز بالقدرة والبقاء- وقهر العباد بالموت والفناء- ‘আমি সেই আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি, যিনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই এবং যিনি চিরঞ্জীব। মৃত্যুকে যিনি সামান্যতম পরোয়া করেন না। পূত-পবিত্র সেই আল্লাহ, যিনি ক্ষমতা ও স্থায়িত্বের সাথে সম্মানিত। যিনি বান্দাদেরকে মৃত্যু ও ধ্বংসের মাধ্যমে পরাভূত করে রেখেছেন’।[22] অথচ তার তথাকথিত মুরীদরা তাকে গাওছে পাক, গাওছুল আযম ইত্যাদি বলছে। আল্লাহর গুণে বান্দাকে গুণান্বিত করছে। যা স্পষ্ট শিরক।
২৪. গুনয়ায়ে মুহাম্মাদী :
এটি যিম্মায়ে মুহাম্মাদী-এর দ্বিতীয় অংশ। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০। ১৯৪০ সালে
এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থটি রচনার কারণ সম্পর্কে মাওলানা জুনাগড়ী
বলেন, ‘এই যিলক্বদ মাসের কথা। আমি আব্দুল কাদের জীলানী (রহঃ)-এর কিছু বাণী
সংকলন করেছিলাম এবং কুরআন, সুন্নাহ ও হানাফী ফিক্বহ থেকে সেগুলিকে
সমর্থনপুষ্ট করে ‘যিম্মায়ে মুহাম্মাদী’ নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছিলাম।
ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই কয়েকদিনে আগত পত্রগুলি আমার মনে খুশীর
বন্যা বইয়ে দিয়েছে। এই গ্রন্থটি আল্লাহর রহমতে দারুণ প্রভাব ফেলেছে এবং
অনেক অজানা ব্যক্তি অবগত হয়ে গেছে। ‘হে শায়খ আব্দুল কাদের জীলানী আল্লাহর
ওয়াস্তে সাহায্য করুন’ শীর্ষক ওযীফা, ছালাতে গাওছিয়া, এগার রবীউল আখের
তারিখে তাঁর মৃত্যুদিবস পালন করা এবং বহু শিরক ও বিদ‘আতী রসম-রেওয়াজ থেকে
অনেকে তওবা করেছে। আল-হামদুলিল্লাহ। এ সংবাদ আমাকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেছে
যে, আমি আব্দুল কাদের জীলানী (রহঃ)-এর এ জাতীয় আরো বাণী সংকলন করব এবং
মুসলিম জামা‘আতের হাতে পৌঁছিয়ে দিব। যাতে অন্য ভাইয়েরাও ছিরাতে মুস্তাকীমে
চলে আসেন’।[23]
এতে মূলতঃ আব্দুল কাদের
জীলানী (রহঃ)-এর শিরক ও বিদ‘আত বিরোধী বক্তব্যগুলিকে সংকলন করা হয়েছে।
মাওলানা জুনাগড়ী এ গ্রন্থের এক জায়গায় বলেন, ‘বর্তমানে সাধারণ মানুষের মুখে
মুখে উচ্চারিত হয় যে, তারা আব্দুল কাদের জিলানীকে দস্তগীর (সাহায্যকারী),
‘মুশকিল কুশা’ (বিপদ দূরকারী), ‘গাওছুছ ছাকালায়েন’ (জ্বিন ও ইনসানের গাওছ),
আরো না জানি কত কি বলে এবং তাঁর মধ্যে আল্লাহর গুণাবলী বিদ্যমান থাকার কথা
বর্ণনা করে। অথচ তিনি তাঁর গুনয়া গ্রন্থের ১০২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,ويكره من
الألقاب والأسماء ما يوازي أسماء الله تعالى- ‘এমন লকব ও নাম রাখা মাকরূহ,
যা আল্লাহর নামসমূহের সমপর্যায় ভুক্ত’। কাজেই জ্বিন ও ইনসানের ফরিয়াদ
শ্রবণকারী আল্লাহ তা‘আলা। আপনারা গাওছুছ ছাকালায়েন নাম রেখে পীর ছাহেবকে
কষ্ট দিয়েছেন। একমাত্র সাহায্যকারী আল্লাহ তা‘আলা। আপনারা তাকে এই লকব দিয়ে
তার নির্দেশকে পদদলিত করেছেন। ‘মুশকিল কুশা’ ‘বিপদ দূরকারী’ আল্লাহ
তা‘আলার নাম। আপনারা আব্দুল কাদের জীলানীর এই নাম রেখে তাকে মনোকষ্ট
দিয়েছেন। এখন বলুন! আপনারা মুরীদ, না মারীদ (অবাধ্য)’?[24]
জুনাগড়ী
আরো বলেন, ‘তোমরা আজ কবরগুলির নিকট গিয়ে সেগুলিকে চুমু দাও, চাট, তার উপর
হাত এমনকি মাথা ঘষো। অথচ তোমাদের পীর ছাহেব এটাকে ইহুদীদের স্বভাব বলেছেন।
শুনো গুনয়া গ্রন্থের ১০৩ পৃষ্ঠায় আব্দুল কাদের জিলানী লিখেছেন, وإذا زار
قبرًا لا يضع يده عليه، ولا يقبله، فإنه عادة اليهود- ‘কবর যিয়ারত করার সময়
কবরে হাত রাখবে না এবং কবরকে চুমুও দেবে না। কেননা এটি ইহুদীদের স্বভাব’।[25]
জুনাগড়ী আরো বলেছেন, ‘আব্দুল কাদের জিলানীর মুরীদরা শুনছ, আমরা যা বলি
তিনিও তাই বলেন। গুনয়ার ৬১৩ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, كمال الدين في شيئين: في
معرفة الله تعالى، وإتباع سنة رسول الله صلى الله عليه وسلم- ‘পূর্ণাঙ্গ
দ্বীন দু’টি জিনিসের মধ্যে রয়েছে। আল্লাহর পরিচয় ও রাসূল (ছাঃ)-এর
সুন্নাতের অনুসরণ’।[26]
২৫. সিরাজে মুহাম্মাদী :
‘আল-ফকীহ’ (অমৃতসর) পত্রিকার সম্পাদক ‘যারবাতুল হানাফিয়াহ আলা হামাতিল
ওয়াহাবিয়াহ’ নামে একটি গ্রন্থ লিখে সেখানে আহলেহাদীছদের প্রতি ৫৩টি প্রশ্ন
ছুঁড়ে দেন। মাওলানা জুনাগড়ী এর জবাবে ‘তারীখে আহলেহাদীছ’ ওরফে ‘সিরাজে
মুহাম্মাদী’ গ্রন্থটি রচনা করেন।[27] সর্বমোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৫। ‘আহলেহাদীছ
নামের যোগ্য কে হতে পারে- মূর্খ না আলেম’? এমন প্রশ্নের জবাবে জুনাগড়ী
বলেন, ‘প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি যিনি কারো তাক্বলীদ না করে কুরআন ও হাদীছের উপর
আমলকারী হবেন তিনিই আহলেহাদীছ। চাই তিনি আলেম হোন বা না হোন। যেভাবে আপনারা
আপনাদের আলেম ও জাহেল সবাইকে হানাফী বলেন’।[28]
২৬. মারহামাতে মুহাম্মাদী : ‘কিতাবুল ইকরাহ’ ওরফে ‘মারহামাতে মুহাম্মাদী’ শীর্ষক এ গ্রন্থে إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ আয়াতের পূর্ণ তাফসীর রয়েছে। এতে একথা আলোচনা করা হয়েছে যে, জোর-যবরদস্তীমূলক কারো কাছ থেকে কিছু করায়ে নিলে বা বলায়ে নিলে শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে তা ধর্তব্য হবে না এবং এমন ব্যক্তিকে আল্লাহ পাকড়াও করবেন না। এ বিষয়ে এ গ্রন্থে তিনি ২৪৫টি দলীল উল্লেখ করেছেন এবং ১১৫ জন আলেমের ফৎওয়া সংকলন করেছেন। ১৩৫৫ হিঃ/১৯২৭ সালে এটি জাইয়েদ বারকী প্রেস, দিল্লী থেকে প্রকাশিত হয়। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৩।
২৭. নছীহতে মুহাম্মাদী : ‘মহববতে হুসাইন’ শীর্ষক গ্রন্থের জবাবে মাওলানা জুনাগড়ী ‘হেদায়াতুন নাজদাইন বেজওয়াবে রিসালা মহববতে হুসাইন’ ওরফে ‘নছীহতে মুহাম্মাদী’ পুস্তকটি রচনা করেন। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৩। মাওলানা জুনাগড়ী লিখেছেন, ‘উক্ত গ্রন্থের ২য় পৃষ্ঠায় আমার নামের সাথে ওহাবী লেখা হয়েছে। যদি এ সম্বন্ধ আল্লাহ তা‘আলার দিকে হয়, যার একটি নাম ওয়াহ্হাব, তবে আমি এই লকব গ্রহণ করছি। কিন্তু যদি এতে জনৈক আব্দুল ওয়াহ্হাবের দিকে নিসবত হয় তাহলে বলব যে, যখন আমরা চারজন সম্মানিত ইমামের কারো দিকে সম্বন্ধিত হয়নি, তখন আপনি কেন অন্য কারো দিকে আমাদেরকে সম্বন্ধিত করবেন? শুনুন! আমরা আমাদের নিসবত স্রেফ তাঁর দিকে করি যার কলেমা পড়ি। কাজেই উত্তম হয় যদি আপনিও আমাদেরকে সেই নিসবতে মুহাম্মাদী বলেন। অন্য কিছু নয়। ... অতঃপর আপনি লিখেছেন যে, আমরা নিজেদের ছাড়া অন্য সকল মুসলমানকে বিদ‘আতী ও বেদ্বীন মনে করি। এটাও ভুল। আমরা সকল মুসলমানকে আমাদের ভাই মনে করি’।[29] এতে প্রচলিত তা‘যিয়া মিছিল, মীলাদ, কিয়াম, কুরআনখানী, কলেমাখানী, কবর পাকা করা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
২৮. মিল্লাতে মুহাম্মাদী :
বেনারসের একজন আলেম রচিত ‘হক আওর বাতিল কা মুকাবালা’ পুস্তিকার জবাবে
মাওলানা জুনাগড়ী ‘আল-হুকমুল ফাছিল ফীমা বায়নাল হক ওয়াল বাতিল’ ওরফে
‘মিল্লাতে মুহাম্মাদী’ রচনা করেন। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৫। এতে তাক্বলীদের
দলীল সমূহের জবাব প্রদান করত আহলেহাদীছ মাসলাকের সত্যতা প্রমাণ করা হয়েছে।
উক্ত গ্রন্থের শেষের দিকে জুনাগড়ী শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভীর
নিম্নোক্ত উক্তি তাঁর ‘আ-তাফহীমাত আল-ইলাহিয়া’ গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে
লিখেছেন- أصول الشرع اثنان أية محكمة وسنة قائمة لايزيد عليهما- ‘শরী‘আতের
উৎস স্রেফ দু’টি। কুরআন ও হাদীছ। কোন মুসলমানের এর উপর বৃদ্ধি করা উচিত
নয়’।[30]
২৯. লু’লু’য়ে মুহাম্মাদী : এতে মুহাম্মাদ নাম রাখার ১০০টি দলীল উল্লেখ করা হয়েছে এবং যারা এ নাম রাখার বিরোধী তাদের দলীল সমূহের জবাব প্রদান করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১, প্রথম প্রকাশ ১৩৫৯ হিঃ/১৯৪০।
৩০. নিকাহে মুহাম্মাদী : এতে এক মজলিসে প্রদত্ত তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করা এবং লাপাত্তা ব্যক্তির স্ত্রীর অন্যের সাথে বিবাহ প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৬, প্রথম প্রকাশ ১৯৩৮ খ্রিঃ।
৩১. মিশকাতে মুহাম্মাদী : মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী রচিত দালাইলে মুহাম্মাদী (২য় অংশ)-এর জবাবে মৌলবী সাইয়িদ কুরবান আলী শাহ হানাফী কাদেরী হায়দারাবাদী ‘রাহে ছওয়াব’ নামে একটি গ্রন্থ লিখেন। এর জবাবে জুনাগড়ী মিশকাতে মুহাম্মাদী রচনা করেন।[31] এতে শিরক-বিদ‘আত ও অন্যান্য খারাপ রসম-রেওয়াজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৪৪।
মানাকিব :
তাক্বওয়া-পরহেযগারিতা :
মাওলানা
মুহাম্মাদ জুনাগড়ী তাহাজ্জুদগুযার, অত্যন্ত পরহেযগার ও সুন্নাতের পাবন্দ
ছিলেন। প্রতিবেশী ছূফী যাফর নাসীম বলেন, ‘তাহাজ্জুদ ছালাতের জন্য দারুল
হাদীছ রহমানিয়া, দিল্লীর মুহতামিম শায়খ আতাউর রহমান স্বীয় বাসস্থান থেকে
এসে মাওলানা মুহাম্মাদ ছাহেবকে জাগাতেন। অতঃপর দু’জন সদর বাজারের জামে
মসজিদে যেতেন এবং ফজর ছালাতের পর ফিরতেন। শায়খ আতাউর রহমান সাথে থাকতেন এবং
বাড়ির নিকটস্থ গলিতে একটি ছোট হোটেলে তাঁরা চা পান করতেন’।[32]
অতিথিপরায়ণতা :
পড়শী
হাকীম এনায়াতুল্লাহ নাসীম (মৃঃ ১৯৯৪) বলেন, ‘তিনি অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ
ছিলেন। আমি আলেমদের মধ্যে তাঁর মতো অতিথিপরায়ণ ও বিনয়ী আলেম দেখিনি।
প্রত্যেকদিন দু’চারজন আলেম তাঁর অতিথি হতেন। ‘তারাজিমে ওলামায়ে হাদীছ
হিন্দ’ গ্রন্থের রচয়িতা) মাওলানা আবু ইয়াহ্ইয়া ইমাম খান নওশাহরাবী যখন
দিল্লীতে আসতেন তখন তিনি তাঁরই মেহমান হতেন’।[33]
মনীষীদের দৃষ্টিতে জুনাগড়ী :
১.
বিশ্ববরেণ্য আরবী সাহিত্যিক, জুনাগড়ের আরেক কৃতীসন্তান আল্লামা আব্দুল
আযীয মায়মানী বলেন, كان من كبار علماء الحديث ‘তিনি একজন অনেক বড় আহলেহাদীছ
আলেম ছিলেন’।[34]
২. মুআররেখে আহলেহাদীছ
মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক ভাট্টী বলেন, ‘তিনি বাগ্মী ও তার্কিক ছিলেন।
গ্রন্থপ্রণেতা, অনুবাদক, শিক্ষক, গবেষক, মিষ্টভাষী, ইবাদতগুযার ও রাত্রি
জাগরণকারীও ছিলেন। তিনি অত্যধিক অধ্যয়নকারী আলেম ছিলেন। বরং বলা চলে যে,
তিনি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরী ছিলেন। তাঁর বক্তৃতার ঢং ও আলোচনার ধরন অত্যন্ত
প্রভাব বিস্তারকারী ছিল। তিনি দারুণ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও জাযবার সাথে স্বীয়
দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতেন। সকল বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহর গন্ডীতে থাকতেন এবং
এটিকে তিনি তাঁর জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি হক প্রকাশে
নির্ভীক এবং আল্লাহর বাণীকে সমুন্নতকরণে নিঃশঙ্কচিত্ত ছিলেন’।[35]
৩. বিশিষ্ট গবেষক ও জীবনীকার আব্দুর রশীদ ইরাকী বলেন, ‘খতীবে হিন্দ মাওলানা মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম জুনাগড়ী একজন খ্যাতিমান আলেমে দ্বীন, মুফাসসিরে কুরআন, মুহাদ্দিছ, ফকীহ, ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক, বাগ্মী, শিক্ষক, দার্শনিক, সাংবাদিক ও সমালোচক ছিলেন। তাঁকে ঐ সকল আলেমের মধ্যে গণ্য করা হয় যারা হাদীছের খিদমত, ইলমী যোগ্যতা ও ধর্মীয় প্রভাব, কর্মতৎপরতা, বাহ্যিক সৌন্দর্য, সুন্দর আচরণ ও সংগ্রামী কর্মকান্ডের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিলেন। মাওলানা মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম সকল ইসলামী জ্ঞানে গভীর পান্ডিত্য রাখতেন। তাফসীর, হাদীছ, ফিক্বহ ও ইতিহাসে তাঁর পূর্ণ দক্ষতা এবং চার মাযহাবের ফিক্বহে পূর্ণ দখল ছিল। বিশেষ করে হানাফী ফিক্বহে তিনি অত্যন্ত দক্ষ-
অভিজ্ঞ ছিলেন। তাঁর রচনা সমূহ এর প্রমাণ দেয়’।[36] তিনি আরো
বলেন, ‘মাওলানা মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম লেখনী ও বক্তব্যের মাধ্যমে তাওহীদ ও
সুন্নাতের প্রচার-প্রসারে এবং শিরক ও বিদ‘আত খন্ডনে যে কার্যকর অবদান
রেখেছেন, তা আহলেহাদীছদের ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায়’।[37]
৪.
সাংবাদিক ও জীবনীকার মুহাম্মাদ রামাযান ইউসুফ সালাফী বলেন, ‘তিনি
পাক-ভারতের একজন খ্যাতিমান আহলেহাদীছ আলেম। বক্তৃতা ও লেখনী এবং অনুবাদ ও
রচনায় তিনি দারুণ খ্যাতি লাভ করেন। তাক্বলীদে শাখছীর খন্ডনে তিনি ব্যাপক
কাজ করেন। ১৫০-এর কাছাকাছি ছোট-বড় গ্রন্থ রচনা করেন। যেগুলি পড়ে মানুষদের
চিন্তা-চেতনা ও আক্বীদা-বিশ্বাস সংশোধিত হয়েছে’।[38]
৫.
হাকীম এনায়াতুল্লাহ নাসীম বলেন, ‘তাঁর বক্তৃতার ফলে দিল্লীতে তাওহীদ ও
সুন্নাতের প্রচার-প্রসার ঘটে। গোঁড়া তাক্বলীদ, শিরক ও বিদ‘আতের অবসান ঘটে।
হাযার হাযার মানুষ তাঁর বক্তৃতা শুনে সুন্নাতের অনুসারী হয়েছে বললে
অত্যুক্তি হবে না’।[39]
উপসংহার :
পরিশেষে বলা যায়, মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছদের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর ক্ষুরধার লেখনী, তেজস্বী বক্তৃতা, দলীল ও যুক্তিভিত্তিক বলিষ্ঠ মুনাযারা, সাংবাদিকতা উপমহাদেশে আহলেহাদীছ আন্দোলনের প্রচার-প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বিশুদ্ধ ঈমান, আক্বীদা ও আমল জনসম্মুখে তুলে ধরতে তাঁর রচিত মুহাম্মাদী সিরিজ কার্যকর অবদান রেখেছে। শিরক, বিদ‘আত ও তাক্বলীদের বিরুদ্ধে তাঁর আপোষহীন ভূমিকা সর্বজনবিদিত। উর্দূ অনুবাদ সাহিত্যের তিনি অন্যতম পথিকৃৎ। তাফসীর ইবনে কাছীরের উর্দূ অনুবাদ ‘তাফসীরে মুহাম্মাদী’ ও ইবনুল ক্বাইয়িমের ই‘লামুল মুওয়াক্কি‘ঈন-এর উর্দূ অনুবাদ ‘দ্বীনে মুহাম্মাদী’ অনুবাদক হিসাবে তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছে। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউসে ঠাঁই দিয়ে সম্মানিত করুন! আমীন!!
[1]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, ছালাতে মুহাম্মাদী (দিল্লী : আলীমী বারকী প্রেস, ৮ম সংস্করণ, তাবি), পৃঃ ৩-৪।
[2]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, ছিয়ামে মুহাম্মাদী (দিল্লী : মুম্বাই জওব বারকী প্রেস, ১৩৫৭ হিঃ/১৯৩৮ খ্রিঃ), পৃঃ ১০।
[3]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, যাকাতে মুহাম্মাদী (বাড়া হিন্দুরাও, দিল্লী : মুহাররম ১৩৪৬ হিঃ), পৃঃ ১৫।
[4]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, তাওহীদে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, ৪র্থ সংস্করণ, ১৩৫৯ হিঃ), পৃঃ ২।
[5]. ঐ, পৃঃ ৫-৬।
[6]. ঐ, পৃঃ ৩২-৩৩।
[7]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, মীলাদে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, ৫ম সংস্করণ, ১৩৫৯ হিঃ/১৯৪০ খ্রিঃ), পৃঃ ২-৩।
[8]. ঐ, পৃঃ ১১।
[9]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, আক্বীদায়ে মুহাম্মাদী (দিল্লী : যিলহিজ্জ ১৩৫৩ হিঃ), পৃঃ ৭।
[10]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, দালাইলে মুহাম্মাদী (দিল্লী : খাজা বারকী প্রেস, ২য় সংস্করণ, ১৩৫২ হিঃ), পৃঃ ১।
[11]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, মি‘রাজে মুহাম্মাদী (দিল্লী : মুম্বাই জওব প্রেস, ১৩৫৭ হিঃ/১৯৩৮ খ্রিঃ), পৃঃ ৭।
[12]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, তোহফায়ে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জওব বারকী প্রেস, ৩য় সংস্করণ, শা‘বান ১৩৫৩ হিঃ), পৃঃ ১০।
[13]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, জামা‘আতে মুহাম্মাদী (দিল্লী : বিজলী প্রেস, ১৩৫৪ হিঃ), পৃঃ ২।
[14]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, দুরূদে মুহাম্মাদী (দিল্লী : আলীমী বারকী প্রেস, ১৩৬৪ হিঃ), পৃঃ ৬।
[15]. ঐ, পৃঃ ১৪।
[16]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, হায়াতে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, ১৩৫৯ হিঃ/১৯৪০ খ্রিঃ), পৃঃ ৫।
[17]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, তা‘বীযে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, যিলহজ্জ ১৩৫৪ হিঃ), পৃঃ ২ ও ৮।
[18]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, নূরে মুহাম্মাদী (দিল্লী : মুম্বাই জওব বারকী প্রেস, ১৩৫৭ হিঃ/১৯৩৮ খ্রিঃ), পৃঃ ৪।
[19]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, যিম্মায়ে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, ১৩৫৮ হিঃ/১৯৪০ খ্রিঃ), পৃঃ ৯-১০।
[20]. ঐ, পৃঃ ১০।
[21]. ঐ, পৃঃ ১৯।
[22]. ঐ, পৃঃ ৩৭-৩৮।
[23]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, গুনয়ায়ে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়িদ বারকী প্রেস, ১৩৫৯ হিঃ/১৯৪০ খ্রিঃ), পৃঃ ২।
[24]. ঐ, পৃঃ ৫।
[25]. ঐ, পৃঃ ৫।
[26]. ঐ, পৃঃ ১৪।
[27]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, সিরাজে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, ১ম প্রকাশ, ১৩৫৫ হিঃ/১৯৩৬ খ্রিঃ), পৃঃ ২।
[28]. ঐ, পৃঃ ৩।
[29]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, নছীহতে মুহাম্মাদী (দিল্লী : মুম্বাই জওব বারকী প্রেস, ১৩৫৭ হিঃ/১৯৩৮ খ্রিঃ), পৃঃ ২।
[30]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, মিল্লাতে মুহাম্মাদী (দিল্লী : মুম্বাই জওব বারকী প্রেস, ১৩৫৭ হিঃ/১৯৩৮ খ্রিঃ), পৃঃ ২৩-২৪।
[31]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, মিশকাতে মুহাম্মাদী (দিল্লী : জাইয়েদ বারকী প্রেস, ১ম প্রকাশ, ১৩৫৫ হিঃ/১৯৩৬ খ্রিঃ), পৃঃ ১।
[32]. তাযকিরাতুল মুহাম্মাদিইয়ীন, পৃঃ ৮৬।
[33]. চালীস ওলামায়ে আহলেহাদীছ, পৃঃ ১৫৯।
[34]. বুহূছ ওয়া তাহকীকাত ২/১৮।
[35]. মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী, তাফসীর ইবনে কাছীরের উর্দূ অনুবাদ তাফসীরে মুহাম্মাদী, (লাহোর : মাকতাবা ইসলামিয়াহ, ২০০৯), ১ম খন্ড, পৃঃ ১৬, জীবনী দ্রঃ।
[36]. চালীস ওলামায়ে আহলেহাদীছ, পৃঃ ১৫৭।
[37]. তাযকিরাতুল মুহাম্মাদিইয়ীন, পৃঃ ৮৬।
[38]. মুহাম্মাদ রামাযান ইউসুফ সালাফী, মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব মুহাদ্দিছ দেহলভী আওর উনকা খান্দান, পৃঃ ৫৮।
[39]. তাযকিরাতুন নুবালা ফী তারাজুমিল ওলামা, পৃঃ ৩৫২।