রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা জোটের দ্বন্দ্ব ফের উসকে দিচ্ছে স্নায়ুযুদ্ধকালীন বাস্তবতা। পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সম্প্রতি শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আগাম পরমাণু হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন। অন্যদিকে মস্কো থেকে বলা হয়েছে, ভুল করলে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে ব্রিটেন। তবে সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধ শুরু হ’লে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও রাজপরিবারকে রক্ষা করে সরকার পরিচালনা করতে বহু বছর আগে থেকেই তৈরী করে রাখা হয়েছে এক গোপন শহর। দেশটির উইল্টশায়ারের কোর্সহ্যাম শহরে মাটির ১০০ ফুট গভীরে বার্লিংটন নামের গোপন শহরটি অবস্থিত। পরমাণু হামলা চালালে ব্রিটিশ সরকার যরূরীভাবে ঐ শহর থেকেই দেশ পরিচালনা করবে। ১৯৫০ সালে নির্মিত ঐ বাঙ্কারটিতে রয়েছে হাসপাতাল, ক্যান্টিন, রান্নাঘর, লন্ড্রি সহ প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মতো যাবতীয় ব্যবস্থাপনা। ২৪০ একর জায়গায় এ ধরনের বাঙ্কার শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্তই ছিল। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড ম্যাকমিলান, যিনি দেশটির রাজপরিবারের একজন সদস্য ছিলেন তার ইচ্ছায় ঐ বাঙ্কারটি তৈরী করা হয়েছিল। পানি ও শৌচাগারসহ বসবাসের সব ধরনের ব্যবস্থাই আছে সেখানে। মাটির নিচে ঐ শহরটিতে রয়েছে ৬০ মাইলের বেশি ভূগর্ভস্থ সড়ক, একটি হরদ ও বেকারী। এমনকি এখনো সেখানে অনেক টেলিফোন সেট রয়েছে যা ব্যবহৃত হয়নি।
গোপন ঐ শহরটির তাপমাত্রা সবসময় ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। এছাড়া বাঙ্কারটিতে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিপুল সংখ্যক বই। পরমাণু যুদ্ধে যুক্তরাজ্য পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও যেন দেশটিকে পুনর্গঠন করা যায়, সেজন্য পর্যাপ্ত তথ্য বইগুলোতে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। বইগুলোতে স্থান পেয়েছে মানচিত্র, বৈজ্ঞানিক তথ্য, পার্লামেন্টের আইন এবং অসংখ্য প্রযুক্তিগত ম্যানুয়াল।
টানা তিন মাস অবস্থানের জন্য বাঙ্কারের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত জ্বালানির সুব্যবস্থা রয়েছে। আর সুদীর্ঘ ভূগর্ভস্থ এই শহরের ভেতরে চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ব্যাটারিচালিত বেশ কিছু গাড়ি। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের কাছে গোপন এই শহরটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।