চরমপন্থী সংগঠন তেহরীক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও জামাত-উল-আহরার (জেইউএ)-এর সাবেক এক মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ নেতা এহসানুল্লাহ এহসান দাবী করেছেন, এই দুই সংগঠনকে ব্যবহার করছে ভারত ও আফগানিস্তান। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সম্প্রতি এই স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও বক্তব্য প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি তিনি স্বেচ্ছায় পাক সেনাবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পনের পর এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে টিপিপি ভাগ হয়ে গিয়ে তাদের দলছুট অংশকে নিয়ে জামা‘আতুল আহরার গঠিত হ’লে তিনি এর মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন এবং বহু বড় বড় হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন।

তিনি দাবী করেন, আফগানিস্তানে নির্বিঘ্নে চলাফেরায় ঐ সংগঠন দু’টিকে সাহায্য করছে আফগানিস্তান ও ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। পাশাপাশি আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ভারতের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’।

বক্তব্যে তিনি সংগঠন দু’টির নেতাদের ধান্দাবাজ বলে উল্লেখ করে বলেন, সংগঠন দু’টি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইসলামকে বিকৃত করছে। তারা তরুণ-তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে প্রচারণা চালাতে তৎপর রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি ২০০৮ সালে কলেজছাত্র থাকাকালে টিটিপিতে যোগ দিই। আমি টিটিপি ও জামাতুল আহরারের মুখপাত্র ছিলাম। গত নয় বছরে আমি সংগঠন দুটির অনেক কিছু দেখেছি। এরা নিজেদের স্বার্থে মানুষকে ইসলামের নামে বিভ্রান্ত করছে, বিশেষ করে তরুণদের। ঐ সংগঠন দু’টির মধ্যকার স্বতন্ত্র একটি গ্রুপ অপহরণ করে টাকা আদায় করছে ও নিরপরাধ লোকদের হত্যা করছে। এরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করছে এবং জনবহুল স্থলে বোমা হামলা চালাচ্ছে। ইসলাম আমাদের এ শিক্ষা দেয় না। ওয়াজিরিস্তানে অভিযান শুরু হ’লে এই সংগঠন দু’টির নেতারা নেতৃত্ব ও ক্ষমতার জন্য নিজেদের মধ্যে লড়াই শুরু করে। সবাই ক্ষমতা চায়। সবাই পৃথকভাবে প্রচার অভিযান শুরু করেন। ফলে মজলিসে শূরা লটারীর মাধ্যমে মোল্লা ফাযলুল্লাহকে নেতা নির্বাচিত করে। আর লটারীর মাধ্যমে নির্বাচিত কোন নেতার কাছ থেকে আপনি কি আশা করতে পারেন?

এহসান বলেন, প্রতিটি কর্মকান্ডের জন্য তারা ভারত থেকে অর্থ পান। টিটিপির নেতারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংগঠনের সেনাদের সামনের দিকে ঠেলে দিয়ে নিজেরা পালিয়ে থাকে।

ভারত ও ‘র’-এর কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া শুরু করার পর আমি বলেছিলাম যে, আমরা কাফেরদের সহায়তা করছি এবং আমরা তাদেরকে আমাদের নিজেদের দেশের লোকজনকে হত্যা করতে সহায়তা করছি। তখন বলা হয়েছিল যে, পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করতে ইসরাঈলও যদি টাকা দেয়, তবে নির্দ্বিধায় আমরা তাদের সহায়তা নেব। এই পর্যায়ে আমার কাছে পরিষ্কার হয় যে টিটিপির নেতারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সংগঠনটিকে ব্যবহার করছে।

এহসান বলেন, আফগানিস্তানে নির্বিঘ্নে চলাফেরায় সহায়তা করতে ভারত তাদের কাছে কিছু কাগজপত্র সরবরাহ করে। যেগুলি আইডি কার্ডের মতো কাজ করত। কারণ আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিবেচনায় ঐ কাগজপত্র ছাড়া সন্ত্রাসীদের নির্বিঘ্নে চলাফেরা করা কঠিন ছিল। কোথাও যাওয়ার আগে তারা আফগানিস্তান ও ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করত। এরপর তারা অনুমোদন দিত এবং পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের পথ বাৎলে দিত।







আরও
আরও
.