৩৪তম বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমা ২০২৪ সম্পন্ন

নওদাপাড়া, রাজশাহী ২২ ও ২৩শে ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতি ও শুক্রবার : ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপী ৩৪তম বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমা ২০২৪ রাজশাহী যেলার পবা উপযেলাধীন এয়ারপোর্ট থানার নিকটবর্তী ময়দান সহ ২টি ময়দানে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফালিল্লা-হিল হাম্দ। ১ম দিন বাদ আছর তাবলীগী ইজতেমা’২৪-এর সভাপতি মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব-এর সভাপতিত্বে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান : বাদ আছর অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত করেন মারকাযের মক্তব বিভাগের শিক্ষক হাফেয ওবায়দুল্লাহ। অতঃপর স্বাগত ভাষণ পেশ করেন তাবলীগী ইজতেমা ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক আব্দুল লতীফ। অতঃপর উদ্বোধনী ভাষণ পেশ করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত। তিনি সূরা রা’দ ১১ আয়াতের আলোকে বক্তব্য রাখেন এবং সমাজ পরিবর্তনে সাংগঠনিক মযবূতীর মাধ্যমে দৃঢ় পদে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান। অতঃপর গত এক বছরে মৃত্যুবরণকারী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও উপদেষ্টাদের ৫ জন এবং অসুস্থ ১০ জনের নাম-পরিচয় উল্লেখ করে তাদের জন্য দো‘আ করেন। অতঃপর তিনি সকলকে শৃংখলা ও সহমর্মিতার সাথে ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্য বজায় রেখে ইজতেমায় দু’দিন অবস্থানের আহবান জানান। অতঃপর তিনি আল্লাহর নামে তাবলীগী ইজতেমা ২০২৪-এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। যদিও দু’দিন পূর্ব থেকেই কর্মীরা আসতে থাকে। সেকারণ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকেই অনানুষ্ঠানিক ভাবে ইজতেমা শুরু হয়ে যায়।

নির্ধারিত বক্তৃতা পর্ব :

অতঃপর রাত দেড়টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য পেশ করেন যথাক্রমে (১) ‘যুবসংঘ’ ঢাকা-দক্ষিণ সাংগঠনিক যেলার সভাপতি হাফেয আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ (অন্তরের রোগ ও তা থেকে সুস্থতা লাভের উপায়)। (২) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম (হারাম উপার্জনের ভয়াবহতা ও আত্মরক্ষার উপায়)। (৩) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাযীপুরের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইমাম হোসাইন (ছূফীবাদী তরীকাসমূহের আক্বীদাগত বিভ্রান্তি ও তার খন্ডন)। (৪) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এবং ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষাবোর্ড’-এর চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব (ইসলামী খেলাফতের গুরুত্ব ও তা প্রতিষ্ঠার উপায়)। (৫) ‘আহলেহাদীছ পেশাজীবী ফোরাম’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. শওকত হাসান (রাজশাহী) (আহলেহাদীছ আন্দোলনের অগ্রযাত্রায় পেশাজীবী ফোরামের ভূমিকা)। (৬) মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল (পাবনা) (আল্লাহর পথে ব্যয় করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য)। (৭) ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুুুুুুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম (রাজশাহী) (ইসলামের নামে প্রচলিত বাতিল মতবাদসমূহ ও তা খন্ডন (জঙ্গীবাদ, হাদীছ অস্বীকার)। (৮) ঢাকা-দক্ষিণ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ (কর্মজীবনে সততা ও আমানতদারিতা)। (৯) চট্টগ্রাম যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক আরজু হোসাইন ছাববীর (দ্বীনের পথে ত্যাগ স্বীকার) ও (১০) ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফায়ছাল মাহমূদ (তাওহীদের শিক্ষা ও আজকের সমাজ)।

আমীরে জামা‘আতের ১ম দিনের ভাষণ : বাদ এশা মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সূরা কাহ্ফের ১১০ আয়াতের উপর ভিত্তি করে মাটির তৈরী মানুষ শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) অহি-র বিধান অনুসরণে জাহেলী আরবে যে বিপ্লব সাধন করেছিলেন সে বিষয়ে ঘণ্টা ব্যাপী সারগর্ভ ভাষণ পেশ করেন।

ইসলাম গ্রহণ : ইজতেমার ১ম দিন মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের ভাষণের পর নিরাপদ বর্মন, গ্রাম ও পোঃ মণিপুর, থানা ও যেলা- গাযীপুর ‘যুবসংঘ’ গাযীপুর-উত্তর সাংগঠনিক যেলার দায়িত্বশীলদের সহযোগিতায় আমীরে জামা‘আতের হাতে ইসলাম গ্রহণ করে। আমীরে জামা‘আত তার নাম রাখেন আব্দুর রহমান। সবাই তার জন্য প্রাণখোলা দো‘আ করেন।

২য় দিন বাদ ফজর : মূল প্যান্ডেলে ‘দরসে কুরআন’ পেশ করেন ‘আন্দোলন’ সঊদী আরব শাখার সহ-সভাপতি হাফেয মুহাম্মাদ আখতার (মৃত্যুর জন্য প্রস্ত্ততি গ্রহণ)। একই সময়ে পশ্চিম পার্শ্বস্থ মারকাযী জামে মসজিদে ‘দরসে কুরআন’ পেশ করেন মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল (সদাচরণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য)। একই সময় মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ ছোট মসজিদে ‘দরসে কুরআন’ পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা দুররুল হুদা, রাজশাহী (সূরা আছরের শিক্ষা)।

অতঃপর ইজতেমা প্যান্ডেলে বেলা ১১-টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আলোচনা পেশ করেন (১) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় যুববিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার (কুষ্টিয়া) (আহলেহাদীছ আন্দোলনের ৩টি সংস্কার) (২) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন (সাতক্ষীরা) (প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও পদ্ধতি)। (৩) কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মাদ জালালুদ্দীন (নরসিংদী) (আহলেহাদীছ আন্দোলনের ৫টি মূলনীতি) (৪) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম (যশোর) (দাঈদের গুণাবলী)। (৫) আব্দুল্লাহ আল-মামূন (নরসিংদী) (জাহান্নামের ভয়াবহতা)। অতঃপর শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন হাফেয মুহাম্মাদ আখতার।

জুম‘আর খুৎবা : ইজতেমার মূল প্যান্ডেলে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ‘মাযহাবী ফক্বীহ ও হাদীছপন্থী ফক্বীহদের আক্বীদাগত ও ব্যবহারগত বিষয়সমূহে ৩০টি মতভেদের বাস্তব দৃষ্টান্ত’ বিষয়ে এবং মারকাযী জামে মসজিদে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম (মেহেরপুর) ‘দ্বীনী কাজে ইখলাছের গুরুত্ব ও তা অর্জনের উপায়’ বিষয়ে জুম‘আর খুৎবা প্রদান করেন। এ সময় প্যান্ডেল ছাড়াও প্যান্ডেলের বাইরে বিভিন্ন স্থানে বসে বিপুল সংখ্যক মুছল্লী খুৎবা শ্রবণ করেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য : ইজতেমার মূল প্যান্ডেলে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের জুম‘আর খুৎবা শ্রবণ করেন ও তাঁর সাথে জামা‘আতে জুম‘আর ছালাত আদায় করে শুভেচ্ছা বক্তব্য পেশ করেন (১) মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য জনাব সালমান এফ. রহমান (ঢাকা)। তিনি বলেন, আমীরে জামা‘আতের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল জেলখানায় (বগুড়া) এবং প্রায় ৭দিন আমরা একসাথে ছিলাম। তখন আমার মনে দ্বীন সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন ছিল যা আমি তাঁকে করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, আমরা যদি সবক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ মেনে নেই, তাহ’লে আমাদের মাঝে কোন বিতর্ক থাকবে না। তাঁর এই সিম্পল কথায় আমি অনেক উপকৃত হয়েছি। এখন আমি সেটা সার্বিক জীবনে মেনে চলার চেষ্টা করছি। আমি তাঁর কাছে ঋণী। ইজতেমায় উপস্থিত হ’তে পেরে আমি অনেক আনন্দিত।

(২) রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জনাব এ. এইচ. এম. খায়রুয্যামান লিটন বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে আপনাদের স্বাগত জানানো আমার কর্তব্য। এই ইজতেমার মূল আয়োজক ও যার আকর্ষণে আমরা সবাই এখানে আসি। যিনি নানা বিপদে, নানা সংকটে, নানা দুঃসময়ে আপনাদের ও আমাদের পাশে থেকেছেন, অত্যাচার সহ্য করেছেন, তিনি হলেন ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, অধ্যাপক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর একজন ভক্ত। অনেকেই জানেন যে, আমি আহলেহাদীছ পরিবারের সন্তান। আমার বাপ-দাদারা সবাই আহলেহাদীছ ছিলেন। সেই হিসাবে আপনাদের প্রতি আমার একটা আলাদা আকর্ষণ ও আলাদা মহববত আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ যতদিন আমি বাঁচব। প্রতি বছর এই ইজতেমা নওদাপাড়ার ট্রাক টার্মিনালে হ’ত। এ বছর এটি এই ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ এখানে বহু মুছল্লীর সামগম দেখে আমি আনন্দিত। আমার যতটুকু শক্তি আছে ইনশাআল্লাহ আমি আপনাদের সাথে আছি এবং থাকব।

২য় দিন বাদ আছর থেকে পরদিন ফজর পর্যন্ত :

জুম‘আর বিরতির পর আছর ছালাতের পর থেকে রাত ৪-টা পর্যন্ত নির্ধারিত বিষয়বস্ত্ত সমূহের উপর বক্তব্য পেশ করেন যথাক্রমে, (১) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম (সাতক্ষীরা) (‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ ও অন্যান্য ‘ইসলামী আন্দোলন’-এর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য)। (২) ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক রবীউল ইসলাম (শিশুদের নৈতিকতা বিকাশের উপায়) (৩) জামালপুর-দক্ষিণ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক ক্বামারুয্যামান বিন আব্দুল বারী (সামাজিক অবক্ষয় : পরিণাম ও প্রতিকার) (৪) মারকাযের সাবেক ছাত্র ড. আব্দুল্লাহিল কাফী (চাঁপাই নবাবগঞ্জ) (সুন্নাত বনাম বিদ‘আত : পরিচিতি ও প্রকারভেদ) (৫) ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম (জয়পুরহাট) (সমাজ সংস্কারে যুবসমাজের ভূমিকা)।

বাদ মাগরিব বক্তব্য পেশ করেন (৬) ‘আল-‘আওন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ড. মুখতারুল ইসলাম (রাজশাহী) (মানব সেবায় আল-‘আওনের গুরুত্ব) (৭) নওদাপাড়া মারকাযের ভাইস-প্রিন্সিপাল ড. নূরুল ইসলাম (ভারত উপমহাদেশে আহলেহাদীছদের শিক্ষা সংস্কার (আমাদের প্রস্তাবনাসহ) (৮) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম (বিশুদ্ধ ইসলামের প্রচার ও প্রসারে আহলেহাদীছ আন্দোলনের কর্মসূচী)।

বাদ এশা বক্তব্য পেশ করেন, (৯) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি ধ্বংসের অপতৎপরতা : আমাদের করণীয়) (১০) হাফেয মুহাম্মাদ আখতার (আহলেহাদীছ ও অন্যান্য মাসলাকের মাঝে মৌলিক পার্থক্য) (১১) নওদাপাড়া মারকাযের শিক্ষক হাফেয আব্দুল মতীন (শিরকের ভয়াবহতা ও প্রচলিত কতিপয় শিরক)। (১২) মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম (খুলনা) (কুরআন-হাদীছের আলোকে মানবসৃষ্টি ও বিবর্তনবাদ)। (১৩) মাওলানা মোখলেছুর রহমান (নওগাঁ) (মূসা (আঃ) ও খিযিরের কাহিনী থেকে শিক্ষা)। (১৪) হাফেয শামসুর রহমান (ঢাকা) (প্রচলিত যিকির-আযকার বনাম সুন্নাতী যিকির-আযকার)। (১৫) মাওলানা আবুবকর (রাজশাহী) (সৎকর্মের প্রতিযোগিতা)।

আমীরে জামা‘আতের ২য় দিনের ভাষণ :

ইজতেমার ২য় দিন রাত সাড়ে ৯-টায় মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সূরা হজ্জের ১-৩ আয়াত অবলম্বনে ‘ক্বিয়ামতের ভয়াবহতা ও তা থেকে মুক্তির উপায়’ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ পেশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বিগত ৬টি ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির ইতিহাস ও তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। 

উদ্বোধনপূর্ব বক্তৃতা সমূহ : বৃহস্পতিবার বাদ আছর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হওয়ার ঘোষণা থাকলেও কর্মী ও সুধীগণ দু’দিন আগে মঙ্গলবার থেকেই আসতে শুরু করেন। ফলে বুধবার ফজরের পর থেকেই মারকাযের দুই মসজিদে দরসের মাধ্যমে বক্তব্য শুরু হয়ে যায়। অতঃপর অনানুষ্ঠানিকভাবে ১ম দিন বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে এয়ারপোর্ট থানার নিকটবর্তী ময়দান মূল প্যান্ডেলে আলোচনা শুরু হয়। যা মাঝখানে একটু বিরতি দিয়ে আছর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চলে। এসময় বক্তব্য পেশ করেন যথাক্রমে- (১) ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. ইহসান ইলাহী যহীর (কুমিল্লা) (ধৈর্য ও শুকরিয়া : মুমিন জীবনে সুখের চাবিকাঠি) (২) নওগাঁ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক আফযাল হোসাইন, (জামা‘আতবদ্ধ জীবনের প্রয়োজনীয়তা) (৩) রাজশাহী-পূর্ব সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ যিল্লুর রহমান (ছালাতের সামাজিক গুরুত্বব) (৪) ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুন নূর (কথা, কলম ও সংগঠন : জিহাদের তিনটি হাতিয়ার),

(৫) দারুলহাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ, বাঁকাল, সাতক্ষীরার প্রিন্সিপাল মাওলানা সোহাইল আহমাদ (হিংসা ও অহংকার থেকে মুক্তির উপায়) (৬) দিনাজপুর-পূর্ব সাংগঠনিক যেলা ‘যুবসংঘে’র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-মাহমূদ (শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সংস্কার কার্যক্রম : কেন ও কিভাবে?) (৭) রংপুর-পশ্চিম যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মতীউর রহমান (আদর্শ পরিবার গঠনে আমাদের করণীয়) (৮) জামালপুর-উত্তর যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ ইসমাঈল (তৃণমূল পর্যায়ে দ্বীনের দাওয়াত : আমাদের করণীয়) (৯) বগুড়া যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ আল-আমীন (সামাজিক অপসংস্কৃতিসমূহ) (১০) মেহেরপুর যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ হায়দার আলী (সফল মুমিনের পরিচয়) (১১) জামালপুর-দক্ষিণ যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ মাসঊদ (মৃত্যু কেন্দ্রিক বিদ‘আতী রসম-রেওয়াজসমূহ)।

বিদায়ী ভাষণ ও দো‘আ : ইজতেমার শেষ দিন শনিবার ইজতেমার মূল প্যান্ডেলে ‘আল-‘আওনে’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকিরের ইমামতিতে ফজরের জামা‘আত অনুষ্ঠিত হয়। ছালাত শেষে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বিদায়ী ভাষণ দেন ও বায়‘আত নেন। অতঃপর সভাপতি হিসাবে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মজলিস ভঙ্গের দো‘আ পাঠের মাধ্যমে দু’দিন ব্যাপী ৩৪তম বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমা ২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

ইজতেমার অন্যান্য রিপোর্ট

১. ইজতেমায় গৃহীত প্রস্তাব সমূহ : আমীরে জামা‘আতের ২য় দিন রাতের ভাষণের পর ইজতেমায় নিম্নোক্ত প্রস্তাব সমূহ গৃহীত হয়।-

(১) পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে দেশের শিক্ষা ও শাসন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। (২) শিক্ষার সর্বস্তরে বিশুদ্ধ ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজের চলমান সিলেবাস থেকে নাস্তিক্যবাদী বিবর্তনবাদ, চরিত্রবিধ্বংসী ট্রান্সজেন্ডারবাদ সহ সকল প্রকার ইসলাম বিরোধী বিষয়সমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। সাথে সাথে পাঠ্যবই লেখক প্যানেল থেকে ইসলাম বিদ্বেষী ও হিন্দুত্ববাদী লেখকদের অপসারণ করতে হবে।

(৩) দেশের বিভিন্ন শহরে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী আক্বীদা ও সংস্কৃতি বিরোধী মূর্তি-ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।

(৪) সূদভিত্তিক অর্থব্যবস্থা বাতিল করে ন্যায় ও ইনছাফভিত্তিক ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

(৫) সরকারী অফিস সমূহে ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

(৬) যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে যাবতীয় অশ্লীল কনটেন্ট দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে।

(৭) সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

(৮) এ সম্মেলন ফিলিস্তীনে ইস্রাঈলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এ পর্যন্ত ৩০ হাযার মানুষ নিহত হওয়ায় গভীর শোক প্রকাশ করছে। সাথে সাথে ইস্রাঈলের এই পৈশাচিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার, ওআইসি সহ বিশ্বনেতাদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছে।

[ইজতেমার রিপোর্ট স্থানীয় ও জাতীয় কয়েকটি পত্রিকার অনলাইন ও প্রিন্ট ভার্সনে প্রচারিত হয়]।

২. প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময় : ইজতেমার ২য় দিন সকাল ৭-টায় আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর শিক্ষক মিলনায়তনে ‘আন্দোলন’ -এর প্রবাসী সংগঠন সমূহের দায়িত্বশীল, কর্মী ও সুধীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের পক্ষে ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম।

‘আন্দোলন’ সঊদী আরব শাখার সহ-সভাপতি হাফেয মুহাম্মাদ আখতারের সভাপতিত্বে এবং তাঁর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অতঃপর বক্তব্য রাখেন, কুয়েত প্রবাসী আবু সারাহ (ঢাকা), ফ্রান্স প্রবাসী ফখরুল আমীন (কুমিল্লা), সিঙ্গাপুর প্রবাসী মুহাম্মাদ ইকবাল (কুমিল্লা) ও রজব আলী (নাটোর), সঊদী আরব প্রবাসী আবুল হোসাইন (ফরিদপুর), বেলজিয়াম প্রবাসী মাসঊদ শিকদার (কিশোরগঞ্জ), লন্ডন প্রবাসী নিয়ায হোসাইন (ঢাকা) প্রমুখ। অবশেষে অতিথিদের ধন্যবাদ দিয়ে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এবং ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষাবোর্ড’-এর চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব এবং সমাজ কল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক দুররুল হুদা। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম।

৩. শিক্ষক সমাবেশ : শুক্রবার সকাল ৮-টায় মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ প্যান্ডেলে ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষাবোর্ড’-এর উদ্যোগে শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

‘শিক্ষাবোর্ড’-এর চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে স্বাগত ভাষণ পেশ করেন ‘শিক্ষাবোর্ডে’র সচিব জনাব শামসুল আলম। অতঃপর ‘শিক্ষার উন্নয়ন, আপনার ভাবনা ও হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষাবোর্ড’-এর করণীয়’ বিষয়ের উপর জোন ভিত্তিক উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনায় বিভিন্ন জোনের কো-অর্ডিনেটর বা তার প্রতিনিধিগণ বক্তব্য পেশ করেন। এদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী জোনের ‘শিক্ষাবোর্ডে’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও নওদাপাড়া মারকাযের ভাইস-প্রিন্সিপাল ড. নূরুল ইসলাম, খুলনা-সাতক্ষীরা জোনের সাতক্ষীরার আখড়াখোলা-ভাটপাড়া মাদ্রাসাতুল ইছলাহ আস-সালাফিইয়ার প্রধান শিক্ষক শরীফুল ইসলাম, বগুড়া জোনের নশিপুর তা‘লীমুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেয মোখলেছুর রহমান, ঢাকা জোনের গাযীপুর মারকাযুল উলূম লিছ ছালিহাত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা খায়রুল ইসলাম, বরিশাল জোনের ফরিদপুর সালথা আহলেহাদীছ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের প্রধান শিক্ষক রাক্বীবুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-জামালপুর জোনের জামালপুর মারকাযুস সুন্নাহ আস-সালাফী কমপ্লেক্সের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মাদ ইসমাঈল, চট্টগ্রাম-কুমিল্লা জোনের চট্টগ্রাম আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর সহকারী শিক্ষক আরাফাত যামান ও রংপুর-দিনাজপুর জোনের পার্বতীপুর দারুলহাদীছ সালাফিইয়াহ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল-মাহমূদ প্রমুখ। উল্লেখ্য দেশব্যাপী অত্র শিক্ষাবোর্ড অধিভুক্ত ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে বক্তৃতার জন্য ৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। ১ম স্থান কুমিল্লা জোনের আরাফাত যামান, ২য় স্থান ঢাকা জোনের মাওলানা খায়রুল ইসলাম ও ৩য় পুরস্কার বরিশাল জোনের রাক্বীবুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন ‘শিক্ষাবোর্ডে’র সাবেক সহকারী পরিদর্শক মুহাম্মাদ ফেরদাঊস।

৪. যুব সমাবেশ : শুক্রবার সকাল ৯-টায় মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ প্যান্ডেলে ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ‘যুব সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের স্বাগত বক্তব্যের পর বক্তব্য পেশ করেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ‘আন্দোলন’-এর যুববিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার, সাবেক কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম, ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. ইহসান ইলাহী যহীর, প্রচার সম্পাদক আহমাদুল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুন নূর, তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফায়ছাল মাহমূদ প্রমুখ।

যেলা সভাপতি ও দায়িত্বশীলদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন (১) বগুড়া যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ আল-আমীন (২) মেহেরপুর যেলা সভাপতি হায়দার আলী (৩) বরিশাল যেলা সভাপতি কায়েদ মাহমূদ ইমরান (৪) নরসিংদী যেলা সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন (৪) ভোলা যেলা সভাপতি ইকবাল হোসাইন ও (৫) সিলেট যেলা সভাপতি তোফায়েল আহমাদ। সমাবেশে ‘যুবসংঘে’র বিভিন্ন স্তরের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ আব্দুর রঊফ।

৫. জাতীয় গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতা ২০২৪ (অনলাইন) :

গত বছরের ন্যায় এবারও ‘যুবসংঘে’র উদ্যোগে অনলাইনে ‘জাতীয় গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতা’ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের নির্বাচিত গ্রন্থ ছিল মুহতারাম আমীরে জামা‘আত লিখিত তরজমাতুল কুরআন (১-১৫ পারা)।

বয়স ও পেশা নির্বিশেষে উন্মুক্ত এই প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থান অধিকারী তিন জন হ’লেন (১) মুহাম্মাদ আবু তালহা (নওগাঁ) (ছাত্র, ছানাবিয়া ১ম বর্ষ, মারকায) (২) আতীকুর রহমান যাকারিয়া (নওগাঁ) (ছাত্র, নবম শ্রেণী, মারকায) ও (৩) ইমতিয়ায আহমাদ (রাজশাহী)।

অতঃপর বিশেষ পুরস্কার প্রাপ্ত ১০ জন হ’লেন (১) মতীউর রহমান (রাজশাহী) (২) জাহিদ হাসান (কুমিল্লা) (৩) গাযী সুমাইয়া জান্নাতী (রাজবাড়ী) (৪) বাদশা ইসলাম (কুড়িগ্রাম) (৫) মাহফূযুর রহমান (নওগাঁ) (৬) মুছাদ্দেক হোসাইন (দিনাজপুর) (১০ম শ্রেণী, মারকায) (৭) মুহাম্মাদ খলীলুর রহমান (রাজশাহী) (৮) মা‘রূফা খাতূন (রাজশাহী) (ছাত্রী, দাওরায়ে হাদীছ, বালিকা শাখা, মারকায) (৯) জাহাঙ্গীর হোসাইন (সাতক্ষীরা) ও (১০) মাহফূয আলম (চাঁপাই নবাবগঞ্জ)। ইজতেমার ২য় দিন শুক্রবার ‘যুব সমাবেশে’র মঞ্চে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা স্মারক, সনদ ও পুরস্কার তুলে দেন অতিথিগণ।

উল্লেখ্য যে, এ সময় ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. ইহসান ইলাহী যহীরকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হ’তে ‘আল-মুহাররারুল ওয়াজীয তাফসীর গ্রন্থে ব্যবহৃত আরবী কবিতা সমূহের তাৎপর্য বিশ্লেষণ’ শিরোনামে পিএইচ.ডি ডিগ্রী লাভের জন্য সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন ‘আন্দোলন’-এর যুববিষয়ক সম্পাদক জনাব আব্দুর রশীদ আখতার। 

৬. আহলেহাদীছ পেশাজীবী ফোরাম : শুক্রবার বাদ জুম‘আ আছরের প্রাক্কালে মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ প্যান্ডেলে ‘আহলেহাদীছ পেশাজীবী ফোরাম’-এর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব পেশাজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে স্ব স্ব হালাল পেশায় নিখুঁতভাবে নিযুক্ত থাকুন। সাথে সাথে মানুষকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ার দাওয়াত দিন। ইনশাআল্লাহ আপনার পেশা আপনাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। ৪টি বিষয় মনে রাখবেন : যা বলব তাই করব, অন্যকে সংস্কারের সাথে নিজেকে ও নিজ পরিবারকে সংস্কার করব, রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর হাতে, সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করব’। তিনি বলেন, বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজের মত। আপনি ঢাকায় থাকুন বা কানাডায় থাকুন সর্বত্র পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দাওয়াত দিন ও সংগঠনের মাধ্যমে শক্তি অর্জন করুন।

‘ফোরাম’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. শওকত হাসান (পরিচালক, ফেনী কার্ডিয়াক সেন্টার, ফেনী) রাজশাহী-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন রাজশাহী মহানগর ‘ফোরাম’-এর যুগ্ম-আহবায়ক ডা. মহিদুল হাসান মা‘রূফ (নাটোর)।

অতঃপর বক্তব্য পেশ করেন ঢাকা-দক্ষিণ সাংগঠনিক যেলার যুগ্ম-আহবায়ক মুহাম্মাদ হাফীযুর রহমান, সদস্য ডা. মাহবূবুর রহমান, কক্সবাজার যেলার আহবায়ক ডা. আসাদুল্লাহ আল-গালিব, সাতক্ষীরা যেলার সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আল-মাহমূদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নাজমুছ ছাকিব প্রমুখ। অতঃপর বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এবং ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষাবোর্ড’-এর চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, আল-‘আওনে’র সভাপতি ডা. আব্দুল মতীন, কানাডা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর হামীদুয্যামান মুক্তা (রাজশাহী), নারায়ণগঞ্জ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডা. আ.ন.ম সাইফুল ইসলাম নাঈম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন ‘পেশাজীবি ফোরাম’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার তারিক আহমাদ (নাটোর)।

৭. বায়‘আত অনুষ্ঠান : ইজতেমার দু’দিনে ১৮টি যেলা থেকে ৫০ জন ‘প্রাথমিক সদস্য’ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আমীরে জামা‘আতের নিকট আনুগত্যের বায়‘আত গ্রহণ করে ‘সাধারণ পরিষদ সদস্য’ মানে উন্নীত হন। এছাড়া ইজতেমার শেষদিন শনিবার বাদ ফজর আমীরে জামা‘আতের বিদায়ী ভাষণের পর ‘আম বায়‘আত অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে কেবল ইচ্ছুক ভাই-বোনেরা সরাসরি এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে বায়‘আত নেন।

৮. ইজতেমার পরিচালক বৃন্দ : দু’দিন ব্যাপী তাবলীগী ইজতেমার বিভিন্ন অধিবেশনে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন (১) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (২) সাংগঠনিক সম্পাদক (৩) প্রচার সম্পাদক (৪) প্রশিক্ষণ সম্পাদক এবং (৫) সমাজকল্যাণ সম্পাদক।

৯. সঞ্চালক বৃন্দ : (১) ড. নূরুল ইসলাম (মারকায) (২) আব্দুর রশীদ আখতার (কুষ্টিয়া) (৩) কাযী হারূণুর রশীদ (ঢাকা) (৪) আব্দুল ওয়াদূদ (ঢাকা) (৫) আব্দুল মান্নান (রাজশাহী) (৬) রবীউল ইসলাম।

১০. প্যান্ডেলের মুওয়াযযিন বৃন্দ : (১) রবীউল ইসলাম (পরিচালক, সোনামণি) বৃহস্পতিবার (ফজর); (২) আবু রায়হান, সাতক্ষীরা (যোহর); (৩) হাফেয ওবায়দুল্লাহ (শিক্ষক, মারকায) আছর; (৪) হাফেয আব্দুল আলীম (দিনাজপুর) মাগরিব; (৫) আরযুল ইসলাম শাফী (ছাত্র, মারকায) এশা (৬) রোকনুয্যামান (মেহেরপুর) ২য় দিন ফজর; (৭) হাফেয আব্দুল আলীম (দিনাজপুর) জুম‘আ; (৮) মুয্যাম্মিল হক (ছাত্র, মারকায) আছর; (৯) রাক্বীবুল ইসলাম (মেহেরপুর) মাগরিব; (১০) আব্দুল বারী (মুওয়াযযিন, মারকায) এশা (১১) শাহীনুর রহমান (শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ) শেষ দিন শনিবার ফজর।

১১. প্যান্ডেলের ইমামগণ : (১) হাফেয রবীউল ইসলাম (শিক্ষক, মারকায) বৃহস্পতিবার ফজর; (২) মাওলানা সোহাইল আহমাদ, প্রিন্সিপাল, দারুলহাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ, বাঁকাল, সাতক্ষীরা, যোহর; (৩) হাফেয রবীউল ইসলাম (শিক্ষক, মারকায) আছর; (৪) হাফেয লুৎফর রহমান (পরিচালক, হিফয বিভাগ, মারকায) মাগরিব; (৫) হাফেয ওবায়দুল্লাহ (শিক্ষক, মারকায) এশা; (৬) হাফেয মুহাম্মাদ আখতার ২য় দিন ফজর; (৭) হাফেয মুহাম্মাদ আখতার, জুম‘আ (৮) ক্বারী আব্দুর রহীম (শিক্ষক মক্তব বিভাগ, মারকায) আছর; (৯) হাফেয আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ (ঢাকা) মাগরিব; (১০) হাফেয মুহাম্মাদ আখতার, এশা; (১১) হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির (শিক্ষক, মারকায) শনিবার ফজর।

১২. অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত : (১) হাফেয ওবায়দুল্লাহ (মারকায); (২) আরযুল ইসলাম শাফী (ছাত্র, মারকায); (৩) ক্বারী আব্দুল আউয়াল (শিক্ষক, মারকায); (৪) হাফেয হুযায়ফা (ছাত্র, মারকায); (৫) হাফেয হোসাইন (ফরিদপুর); (৬) হাফেয আব্দুল আলীম (দিনাজপুর); (৪) হাফেয ছাক্বিবুল হাসান (ছাত্র, মারকায)। 

১৩. জাগরণী : আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য (১) মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান (জয়পুরহাট) (২) আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ (ঢাকা) (৩) রাক্বীবুল ইসলাম (মেহেরপুর) (৪) ইয়াকূব আলী, (ঐ) (৫) তানভীরুয্যামান, (ঐ) (৬) রোকনুয্যামান, সাতক্ষীরা (৭) আবু রায়হান, (ঐ) (৮) কেরামত আলী (পাবনা) (৯) আলে ইমরান (রাজশাহী) (১০) রাতুল আসলাম (&ঐ) (১১) আব্দুল্লাহ আল-ফাহীম (কুষ্টিয়া)।

১৪. প্যান্ডেল : এবার স্বল্প পরিসরে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর (বালিকা শাখা) ময়দানে ইজতেমার মহিলা প্যান্ডেল করা হয়। যা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এছাড়াও ছিল মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ একাডেমিক ভবন ময়দানে প্যান্ডেল যেখানে ইজতেমার বিভিন্ন প্রোগাম বাস্তবায়িত হয়। আর মূল প্যান্ডেল ছিল এয়ারপোর্ট থানার নিকটবর্তী ময়দান এবং তার পূর্ব পার্শ্বে ছিল বৃহদায়াতন খাদ্য প্যান্ডেল ও পৃথক খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্যান্ডেল। যেখানে স্বল্প মূল্যে সকালের নাশতা এবং দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা ছিল।

১৫. বুক স্টল : ইজতেমার মূল প্যান্ডেলের দক্ষিণ পার্শ্বে ৪৪টি বুক স্টল ছিল।

১৬. আল-‘আওন : মূল প্যান্ডেলের দক্ষিণ পার্শ্বে ‘স্বেচ্ছাসেবী নিরাপদ রক্তদান সংস্থা আল-‘আওনে’র ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পিংয়ে ১৩৩ জনের ব্ললাড গ্রুপিং করা হয় এবং ৮২ জন ডোনর তালিকাভুক্ত হন। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে কেন্দ্র সহ বিভিন্ন যেলার দায়িত্বশীলগণ অংশগ্রহণ করেন।

১৭. যরূরী চিকিৎসা কেন্দ্র : মূল প্যান্ডেলের দক্ষিণ পার্শ্বে যরূরী চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। আহলেহাদীছ পেশাজীবী ফোরামের চিকিৎসক সদস্যগণ সেখানে ফ্রি চিকিৎসা প্রদান করেন। ইজতেমা কমিটির পক্ষ থেকে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র সরবরাহ করা হয়।

১৮. অনুদান বুথ : ময়দানের দক্ষিণ পার্শ্বে ছিল দারুলহাদীছ (প্রাঃ) বিশ্ববিদ্যালয় ও ইজতেমা ময়দানের জমি ক্রয় ছাড়াও অন্যান্য অনুদান সংগ্রহের জন্য ‘আন্দোলন’ ও ইয়াতীম বিভাগের পৃথক অনুদান বুথ।

১৯. দেওয়াল পত্রিকা : তাবলীগী ইজতেমা’২৪ উপলক্ষ্যে ‘সোনামণি’ মারকায এলাকার পক্ষ থেকে ‘সোনামণি প্রতিভা’ এবং ‘যুবঘংঘ’ মারকায এলাকার পক্ষ থেকে ‘ছওতুল মারকায’ নামে দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যা ইজতেমা প্যান্ডেলের বুক স্টলের মধ্যবর্তী স্থানে প্রদর্শিত হয়।

২০. ফৎওয়া বুথ : গতবারের ন্যায় এবারও ফৎওয়া বুথের ব্যবস্থা করা হয়। ইজতেমার মূল প্যান্ডেলের দক্ষিণ পার্শ্বে স্থাপিত ফৎওয়া বুথে বিভিন্ন যেলা থেকে আগত কর্মী ও সুধীবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ‘দারুল ইফতা’র সদস্য মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম ও ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইহসান ইলাহী যহীর। ইজতেমার ১ম দিন বাদ মাগরিব থেকে রাত ১২-টা পর্যন্ত এবং ২য় দিন বাদ আছর থেকে রাত ১২-টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।

২১. নিরাপত্তা : প্রশাসনের প্রস্তাবক্রমে ৩টি ওয়াচ টাওয়ার ও ১৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। সেই সাথে সংগঠনের ৭০০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবক দু’দিন আগে থেকে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে। এছাড়াও ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণের নিয়মিত তদারকি।

২২. যানবাহন : অন্যান্য বারের ন্যায় এবারও বিভিন্ন যেলা থেকে মুছল্লীগণ বাস, ট্রেন, মাইক্রো, বিমান ও অন্যান্য যানবাহনে করে ইজতেমায় আগমন করেন। বিভিন্ন যেলা থেকে আগত মোট বাসের সংখ্যা ৩২১টি ও মাইক্রোর সংখ্যা ২২টি ও ট্রাক ১টি। সবচেয়ে বেশী বাস আসে সাতক্ষীরা থেকে ৬৬টি। এছাড়া ভারত, সঊদী আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কুয়েত, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, লন্ডন সহ বিভিন্ন দেশ থেকে সদ্য দেশে আগত অনেক প্রবাসী কর্মী ও সুধী ইজতেমায় যোগদান করেন।

২৩. সাইকেলে আগমন : অন্যান্য বারের ন্যায় এবারও সাইকেল যোগে ইজতেমায় আগমন করেন (১) সাতক্ষীরা যেলার তালা উপযেলার বর্তমানে মানিকহার গ্রামের আব্দুল বারী (৬৬)। ১৯৯৭ সাল থেকে মোট ২৩ বার (২) সাতক্ষীরা সদর উপযেলার কাওনডাঙ্গা গ্রামের যয়নাল আবেদীন (৮৬)। তিনি একটানা ২১ বছর যাবৎ (৩) একই উপযেলার গড়েরডাঙ্গা গ্রামের মুহাম্মাদ আশরাফ (৫৪)। সাতক্ষীরা থেকে প্রায় ৩০০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে রাজশাহী পৌঁছতে তাদের সময় লাগে দু’দিনে মোট ২১ ঘণ্টা। আমীরে জামা‘আত তাদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং এই কষ্টকর ভ্রমণে যেন ‘রিয়া’ না আসে এবং এটি যেন স্রেফ আল্লাহর জন্য হয়, সে বিষয়ে সাবধান করেন।

২৪. সোনামণি র‌্যালি : তাবলীগী ইজতেমা’২৪ উপলক্ষ্যে ‘সোনামণি’ কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে ২০শে ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার বাদ আছর সোনামণি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিটি মারকায থেকে শুরু হয়ে মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্ব ধরে উত্তর দিকে বায়া বাজার মোড়ে গমন করে। সেখান থেকে মহাসড়কের পূর্ব পার্শ্ব ধরে দক্ষিণ দিকে মারকাযে ফিরে আসে।

২৫. পত্রিকায় রিপোর্ট : ইজতেমার বিস্তারিত রিপোর্ট দৈনিক ইনকিলাবে কয়েকদিন যাবৎ প্রকাশিত হয়। এছাড়া ইজতেমায় আগত সম্মানিত অতিথি জনাব সালমান এফ রহমান-এর আগমন প্রসঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সকল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

২৬. ইসলামী জাগরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২০২৪ : ২১শে ফেব্রুয়ারী বুধবার বাদ আছর থেকে রাত সাড়ে ১০-টা পর্যন্ত মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ প্যান্ডেলে ‘ইসলামী জাগরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। আল-হেরা শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় পরিচালক ও ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ আজমালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত। বিশেষ অতিথি ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, যুববিষয়ক সম্পাদক, শূরা সদস্য কাযী হারূণুর রশীদ, রাজশাহী-সদর সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’-এর উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট জারজিস আহমাদ প্রমুখ।

অতিথিগণ স্ব স্ব ভাষণে উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানান এবং জাগরণীর মাধ্যমে তাওহীদী সমাজ গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত হাদীছের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই কথার মধ্যে জাদু আছে। তার ভালোটা ভালো এবং মন্দটা মন্দ। যে কণ্ঠ মানুষকে জান্নাতের পথ দেখায় সেটাই ভালো। আর যে কণ্ঠ মানুষকে জাহান্নামের পথ দেখায় সেটাই মন্দ। আল-হেরার পুরা প্রচেষ্টাই হচ্ছে মানুষকে সুরের মাধ্যমে জান্নাতমুখী করা। ১৯৯১ সালে যখন আমরা আল-হেরা প্রতিষ্ঠা করি, তখন আমাদেরকে কুফরীর ফৎওয়া শুনতে হয়েছে। সকল কটাক্ষ উপেক্ষা করে বাতিলপন্থী গান ও সঙ্গীতের মোকাবেলায় যখন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে আল-হেরার আলোকচ্ছটা ও মায়াময় কণ্ঠ সমাজে ছড়িয়ে পড়ে, তখন জান্নাত পিয়াসী মানুষগুলির হৃদয়ে নব জাগরণের সূত্রপাত হয়। এজন্য এর নাম দিয়েছিলাম ‘জাগরণী’। দো‘আ করি, তোমাদের জাগরণী যেন সমাজে নির্ভেজাল তাওহীদের জাগরণ ঘটায়। এগুলি যেন তোমাদের জান্নাতের অসীলা হয়।

অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত করেন হাফেয ওবায়দুল্লাহ। জাগরণী পেশ করেন মীযানুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ, রাক্বীবুল ইসলাম, রোকনুয্যামান, ইয়াকূব আলী, কেরামত আলী, আলে ইমরান ও রাতুল আসলাম। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সহকারী পরিচালক রাক্বীবুল ইসলাম।

২৭. টয়লেট : এবারে ইজতেমার মূল প্যান্ডেলের পূর্ব পার্শ্বে মোট ৩০৮টি অস্থায়ী টয়লেট স্থাপন করা হয়। সাথেই পুকুরে ওযূ ও গোসলের ব্যবস্থা ছিল।







আরও
আরও
.