ধান ভাঙানোর পর আলাদা হয়ে যায় চাউল ও তুষ। সেই তুষ পুড়িয়ে উৎপাদন হচ্ছে বায়োগ্যাস, তাতে চলছে জেনারেটর, উৎপাদন হচ্ছে বিদ্যুৎ। চলছে পুরো কারখানা। আর তুষ পোড়া ছাই প্রক্রিয়াজাত করে তৈরী হচ্ছে সিলিকন ডাই-অক্সাইড বা সিলিকা পাউডার। গাড়ির টায়ার, টুথপেস্ট, প্রসাধনী, রংসহ নানা শিল্পে ব্যবহৃত হয় এই পাউডার। সিলিকায় আমরা এখনো পুরোটাই আমদানী নির্ভর। তবে ঠাকুরগাঁওয়ের ‘সাসটেইনেবল এনার্জি অ্যান্ড এগ্রো রিসোর্স লিমিটেড (সিল)’ সম্ভাবনার বার্তা দিচ্ছে। তাদের দাবী, দেশে তারাই প্রথম ধানের তুষ পুড়িয়ে সিলিকা উৎপাদন করছে। শুধু তা-ই নয়, উৎপাদিত সেই সিলিকা বিভিন্ন কারখানায় সরবরাহও করছে। কারখানাটি ঘুরে দেখা গেল, প্রথমে ধানের তুষকে গ্যাসিফায়ারে পোড়ানো হচ্ছে। ধানের তুষ পোড়ানোর ফলে যে ধোঁয়া হচ্ছে, তা গ্যাসে রূপান্তরিত করে গ্যাস জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আর সিলিকা তৈরীতে ব্যবহার করা হচ্ছে তুষের ছাই।
ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানী লিমিটেডের (ইডকল) সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত কারখানাটি ২০২০ সালে উৎপাদন শুরু করে। শুরুতে প্রতিদিন ৫০০ কেজি সিলিকা উৎপাদন হ’লেও এখন তা বেড়ে প্রায় এক হাযার কেজিতে পৌঁছেছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, দেশে উৎপাদিত ধান থেকে বছরে সাড়ে ৭৫ লাখ মেট্রিক টন তুষ পাওয়া যায়। যার অধিকাংশই বিভিন্ন বয়লারে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার হয়। এই তুষ সিলিকা তৈরির কাজে লাগাতে পারলে অন্যতম সিলিকা উৎপাদক দেশের স্বীকৃতি পেতে পারে বাংলাদেশ। এতে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে, তেমনি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিও সম্ভব হবে।
প্রতিষ্ঠানটির অংশীদার আবুল ফযল বলেন, ‘ধানের তুষ থেকে সিলিকা উৎপাদনের কারখানা দেশে এটাই প্রথম। পাশাপাশি ধানের তুষ পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনও দেশে এটাই প্রথম। এটা সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব। যে গ্যাস জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, সেটা থেকে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হচ্ছে, তা কিন্তু বাতাসে ছাড়ছি না। সেটা দিয়ে সিলিকা তৈরী করছি। আমাদের উৎপাদিত সিলিকা বিশ্বমানের। বুয়েট ও বিসিএসআইআর-এ পরীক্ষা করে প্রমাণও পেয়েছি’।