প্রথমবারের
মতো মানুষের জিনের পূর্ণাঙ্গ বিন্যাস উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের
জিনবিন্যাসের ৯২ শতাংশ উন্মোচন হয়েছিল ২০০৩ সালে। বাকি ৮ শতাংশের বিশ্লেষণ
করতে প্রায় দুই দশক লাগল। গত ৩১শে এপ্রিল টেলোমিয়ার টু টেলোমিয়ার (টিটুটি)
নামে ১০০ বিজ্ঞানীর সমন্বিত একটি কনসোর্টিয়াম থেকে পূর্ণাঙ্গ জিনবিন্যাসের
ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে মানবদেহের প্রতিটি কোষ কিভাবে গঠিত হয়, তা ব্যাখ্যা
করা সম্ভব হবে; যা রোগের কারণ অনুসন্ধান, রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে নতুন
সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।
জীবজগতের বংশগতির সব বৈশিষ্ট্যই এক বা একাধিক জিনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। মানুষের জিনের পূর্ণাঙ্গ বিন্যাসকে যুগান্ত কারী বলেছেন যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অ্যান্ড মলিকুলার জেনেটিকসের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কলিন জনসন। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে পুরো মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যাবে। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়, পৃষ্ঠা উঠে আসবে’।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল হিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এনএইচজিআরআই) পরিচালক এরিক গ্রিন বলেছেন, ‘মানুষের জিনের পূর্ণাঙ্গ বিন্যাস করাটা একটি অবিশ্বাস্য বৈজ্ঞানিক অর্জন। এটি প্রথমবারের মতো আমাদের ডিএনএ নকশার পূর্ণাঙ্গ চিত্র দেবে’।
এই গবেষণায় দু’হাযার নতুন জিন শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এসব জিনের বেশির ভাগই নিষ্ক্রিয়। তবে ১১৫টি জিন সক্রিয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর বাইরে গবেষকেরা ২০ লাখের বেশি অতিরিক্ত জিনগত রূপান্তর শনাক্ত করেছেন, যার মধ্যে ৬২২টি বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট।
টেলোমিয়ার টু টেলোমিয়ার (টিটুটি) কনসোর্টিয়ামের নামকরণ করা হয়েছিল ক্রোমোসোমের প্রান্তের দিকে অবস্থিত একটি কাঠামোর নাম অনুসারে। অধিকাংশ জীবিত কোষের নিউক্লিয়াসে সুতার মতো কাঠামোর এই বস্ত্তটি জিনগত তথ্য বহন করতে পারে।
অ্যাডাম ফিলিপ্পি নামে টিটুটির নেতৃত্ব পর্যায়ে থাকা একজন গবেষক বলেন, ‘ভবিষ্যতে কারও জিনোম সিকোয়েন্স করা হ’লে তাঁর ডিএন-এর সব রূপ আমরা শনাক্ত করতে পারব, যা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে আরও উন্নত দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম হবে’।
[বিজ্ঞানের এই বিস্ময়কর আবিষ্কারকে আমরা স্বাগত জানাই এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। যিনি বান্দার মধ্যে ইলহাম করেন এবং এক বান্দাকে দিয়ে আরেক বান্দার কল্যাণ করেন। ইসলামী খেলাফতের স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীর এক হাযার বছর যাবৎ বিশ্ব বিজ্ঞানে নেতৃত্ব দিয়েছে। বর্তমানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও দলীয় গণতন্ত্রের হিংসা ছোবলে মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে সামাজিক অস্থিরতা চরম অবস্থায় পৌঁছে যাওয়ায় বিজ্ঞান গবেষণায় মুসলমানরা পিছিয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সমাজবিদদের সচেতন হওয়া আবশ্যক। আমরা কুরআন ও হাদীছের অভ্রান্ত সূত্র সমূহের অনুসরণে বিজ্ঞান গবেষণায় উৎসাহ যোগানোর জন্য সরকার ও ধনিক শ্রেণীর প্রতি আহবান জানাই (স.স.)]