পৃথিবীর ভিতরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রের মাথা খারাপ হয়ে গেছে! সব হিসাব ওলটপালট করে দিয়ে তা অত্যন্ত দ্রুত দিক বদলাচ্ছে। তার ফলে গভীর সমুদ্র, অতলান্ত মহাসাগরে দিগভ্রান্ত হয়ে পড়ছে জাহায। গভীর সমুদ্রে জাহাযের ক্যাপ্টেন, নাবিকদের দিক নির্ণয়ে ভুল হয়ে যাচ্ছে। ভুলভ্রান্তি হয়ে যাচ্ছে স্মার্টফোনে দেখানো গুগলের ম্যাপেও। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরাও। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের উত্তর মেরুটা ছিল কানাডার দিকে। কিন্তু হিসাব করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা এখন দেখছেন সেই উত্তর মেরু কানাডা থেকে বেশ কিছুটা সরে গিয়ে চলে গেছে সাইবেরিয়ায়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর পেটের ভিতরে থাকা সেই বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রের এত দ্রুত দিক বদলানোয় কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। পার্থিব চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না ভূপদার্থবিদ ও ভূচুম্বক বিশেষজ্ঞরা। পৃথিবীর পেটে (কোর) থাকা ফুটন্ত তরল লোহার স্রোত দিক বদলানোর ফলেই পার্থিব চুম্বক দিক বদলাচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারছেন না, কেন তার উত্তর মেরু কানাডা থেকে এত দ্রুত গতিতে সরে গিয়েছে সাইবেরিয়ায়।

এ বিষয়ে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অর্ণব জানান, পার্থিব চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর নযর রাখার জন্য ৫ বছর অন্তর বানানো হয় নতুন চৌম্বক মডেল। চলতি মডেলটি চালু হয় ২০১৫ সালে। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালে। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক কেন বদলায়, এ বিষয়ে তিনি জানান, পৃথিবীর পেটের ঐ চৌম্বক ক্ষেত্রটা তৈরী হয় মূলতঃ এর কোরে থাকা গনগনে তরল লোহার স্রোতের জন্য। সেই লোহার সঙ্গে রয়েছে আরও কিছু পদার্থ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই স্রোত এক দিক থেকে আরেক দিকে যায়। ফলে সময়ান্তরে পার্থিব চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক বদলায়। তা এক জায়গা থেকে অন্যত্র সরে যায়। ২০১৬ সালে এমন ঘটনা ঘটেছিল। দক্ষিণ আমেরিকার (লাতিন আমেরিকা) উত্তর দিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিকে আচমকা সাময়িকভাবে খুব দ্রুত গতিতে সরে গিয়েছিল পৃথিবীর সেই চৌম্বক ক্ষেত্র। তা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ বা এসা) সোয়ার্ম উপগ্রহের নযরে ধরা পড়েছিল।






আরও
আরও
.