সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মন্তব্য করেছেন, আমলারা স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের গলায় রশি বেঁধে ঘোরান। গত ২৬শে জুন এক মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি নিজেও আমলা ছিলেন। অতিরিক্ত সচিব হিসাবে অবসরে গিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। বরাদ্দ পেতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়, আগে নিজেদের ২০ টাকা আছে দেখাও, তাহ’লে ১০০ টাকা বরাদ্দ পাবে। এভাবে গলার মধ্যে নানা ধরনের রশি দেওয়া হয়।

মন্ত্রী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যানকে সচিবালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিবের সঙ্গে দেখা করতে হ’লেও দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। তখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহজ-সরল পথে না গিয়ে ঘোরানো পথে যান। সচিবালয়ের বারান্দায় বা সচিবালয়ের বাইরে চায়ের স্টোরগুলোতে বসে আলোচনা হয়, দেন-দরবার হয়। সেখানে তারা (আমলারা) কিছু পান।

এছাড়া গত ২৯শে জুন এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কিছু কিছু বিধি বা আমলান্ত্রিকতা অন্যায় এবং অমানবিক। যে কাজ নয় সেকেন্ডে করা যায়, সে কাজে আমলারা ৯০ দিন লাগান। কোন কোন ক্ষেত্রে ৯০ দিনের তিনগুণ সময়ও লাগান। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে যে নিয়ম-কানূনগুলো আছে- তা কঠোর নয়। এখন সময় এসেছে আইন-কানূনে সংস্কারের। তিনি আরো বলেন, আমলাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে আইন-কানূন পরিবর্তন করা যাচ্ছে না দুষ্টু আমলাদের চাতুরির কারণে।

মন্ত্রী বলেন, প্রশাসনের অনেক বিধি অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশরা করে গেছে, যা এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এগুলোর এখন কোন বাস্তবতা নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে এসব বদলানোর, তা সত্ত্বেও অনেক দুষ্টু আমলাদের কারণে এসব পরিবর্তন করা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত বছর ২৩শে নভেম্বর’২১ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এলডিসি গ্রাজুয়েশন সম্পর্কিত এক সংলাপে অংশ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র থেকে ১০০ টাকা বরাদ্দ হ’লে তা ঠিকাদারের মাধ্যমে সাব-ঠিকাদারের হাতে যায়। সাব-ঠিকাদার আবার তার সাব-ঠিকাদারের হাতে দেয়। এভাবে নানা হাত বদলের মাধ্যমে ১০০ টাকা বরাদ্দ দিলে গ্রামে ১০ টাকা পৌঁছায়। সরকার এই বলয় ভেঙে ফেলতে নানাভাবে কাজ করছে।

[হক কথা বলার জন্য ধন্যবাদ। বহু রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভের ৫০ বছর পরেও সেই পুরানো গীত শুনতে হচ্ছে সচিব ও রাজনীতিকদের মুখে। যারাই রক্ষক তারাই যদি ভক্ষক হন, তাহ’লে দেশের উন্নতি কারা করবেন? আল্লাহর কাছেই রইল আমাদের ফরিয়াদ (স. স.)]।

-পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান






আরও
আরও
.