শিরোইল, রাজশাহী ১৭ই রামাযান ১৯শে এপ্রিল মঙ্গলবার : অদ্য বাদ আছর রাজশাহী শহরের শিরোইল স্টেশন পাড়া ‘দিনের আলো হিজড়া সংঘে’র কার্যালয়ে ‘আত-তাহরীক টিভি’র উদ্যোগে ‘ইসলামী শরী‘আতের আলোকে হিজড়াদের সামাজিক ও ধর্মীয় অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ‘দিনের আলো হিজড়া সংঘে’র সভাপতি মোহনা-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাসিক আত-তাহরীক-এর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য কাযী হারূণুর রশীদ এবং ‘আত-তাহরীক টিভি’র অনুষ্ঠান পরিচালক মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে নারী ও পুরুষ অবয়বের প্রায় ত্রিশোর্ধ্ব হিজড়া উপস্থিত ছিল। আলোচকগণ হিজড়াদের ব্যাপারে শারঈ বিধান সমূহ তুলে ধরেন। তাঁরা তাদেরকে তাক্বদীর মেনে নিয়ে ইসলামী বিধানমতে চলার এবং নিজ পরিবারের সাথে মিলেমিশে থাকার আহবান জানান। কেননা ইসলামী শরী‘আতে পিতার অন্যান্য সন্তানদের ন্যায় তাদেরও অধিকার সুরক্ষিত আছে। আলোচনা শেষে হিজড়াদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকগণ।

উল্লেখ্য যে, হিজড়াদের মধ্যে সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ কওমী মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন। তারা সহ অনেকেই আগে থেকে ‘ছালাতুর রাসূল (ছাঃ)’-এর পাঠক আছেন ও সে অনুযায়ী ছালাত পড়েন। অনেকে নিয়মিত ছিয়াম পালনকারী ও ছালাত আদায়কারী। অনুষ্ঠানে হিজড়াদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করা হয় এবং মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের ছালাতুর রাসূল, আক্বীদা ইসলামিইয়াহ বই, মাসিক আত-তাহরীক পত্রিকা ও ৫টি দেওয়ালপত্র বিতরণ করা হয়। যা সাথে সাথে অফিসের দেওয়ালে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়।

তাদের অভিযোগ সমূহ ছিল নিম্নরূপ-

(১) তাদেরকে ইতিপূর্বে কেউ ইসলামের দাওয়াত দেয়নি (২) তাদের কোন দান মসজিদ-মাদ্রাসায় নেওয়া হয় না (৩) মসজিদে ছালাত আদায় করতে গেলে অনেকেই তাদের প্রতি কটাক্ষ করেন (৪) তাদেরকে পিতা-মাতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয় (৫) তারা পারিবারিক বঞ্চনার শিকার। আপন ভাই-বোনেরা তাদেরকে ভাই-বোন বলে পরিচয় দিতে চায় না।

আত-তাহরীক টিভির প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, আমাদের এই সমিতি ‘জাতিসংঘ’ ‘কানাডা এইড’ প্রভৃতি বিদেশী সংস্থা থেকে অনুদান পায়। সেই সাথে সরকারী কিছু অনুদানও পায়। অনেকে ইউসেফ স্কুল, কারিগরী স্কুল এবং ‘উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে ডিগ্রী নিয়েছে। তাদের অনেকে মানুষের বাড়ি বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এমনকি পরিবহনে উঠে চাঁদা আদায় করে। আমাদের সমিতির লক্ষ্য হ’ল ওদেরকে ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

এটি ছিল একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান। যে হিজড়ারা সামাজিক নিগ্রহের শিকার, তাদেরকে নিয়ে আত-তাহরীক টিভির এই আয়োজনটি ছিল বেশ গুরুত্ববহ ও প্রাণবন্ত। হিজড়াদের মনের আকুতিভরা প্রশ্ন সমূহ থেকেই তা ছিল অনুমেয়।






আরও
আরও
.