ধানের নাম ‘ফাতেমা’। ফলন বিঘা প্রতি ৫০ মণ। নওগাঁ অঞ্চলে সাড়া ফেলেছে ব্যাপক। যেলার মান্দা উপযেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক কৃষকের চাষ করা ‘ফাতেমা’ জাতের ধান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর প্রতিটি শীষে পাওয়া গেছে প্রায় এক হাযারটি ধান। দেশে উৎপাদিত প্রচলিত জাতের ধানের চেয়ে এই ধানের ফলন প্রায় তিনগুণ।

মান্দা উপযেলার গণেশপুর ইউনিয়নের দোশতীনা গ্রামের সৌখিন কৃষক আশরাফুল ইসলাম বশীর পেশায় নওগাঁ জজ কোর্টের আইনজীবী। একই সঙ্গে আধুনিক চাষাবাদে রয়েছে তার ব্যাপক আগ্রহ। গতানুগতিক কৃষির পরিবর্তে নতুন জাতের এ ধান উৎপাদনে তিনি সাফল্য পেয়েছেন। লাভজনক হওয়ায় তার মতো এলাকার অনেকেই এখন এই নতুন জাতের ধান চাষের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

দেখতে ব্রি-২৮ ধানের মতো এই জাতের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বশীর জানান, অন্য ধানের মতোই তিন মৌসুমে এ ধানের চাষ করা যায়। তবে বোরো মৌসূমে এর উৎপাদন সবচেয়ে বেশী হয়ে থাকে। গাছের উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট, যা অন্য ধানের তুলনায় বেশী। গাছগুলো শক্ত হওয়ায় হেলে পড়ে না। আর এক একটি ধানের শীষে ৭৫০-১০০০টি করে ধান হয়। সাধারণ ধানের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশী। ফলে এর উৎপাদনও অনেক বেশী। চলতি মৌসূমে তিনি দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৭৫ মণ ধান পেয়েছেন। এধানে রোগ ও পোকামাকড়ের হার তুলনামূলক কম এবং ধানটি ঝড়, খরা এবং লবণাক্ততা সহনীয়। এছাড়া এর চাল খুব চিকন ও ভাতও খেতে সুস্বাদু।

জানা গেছে, বাগেরহাট যেলার লেবুয়াত শেখ (৪০) নিজেদের জমিতে ২০১৬ সালে প্রথম ঐ ধান চাষ করেন। ঐ বছর বোরো মৌসুমে তার বাড়ির পাশে জমিতে হাইব্রিড আফতাব-৫ জাতের ধান কাটার সময় তিনটি ভিন্ন জাতের ধানের শীষ তিনি দেখতে পান। ঐ তিনটি শীষ অন্যগুলোর চেয়ে অনেক বড় এবং শীষে ধানের দানার পরিমাণও অনেক বেশী ছিল। এরপর ঐ ধানের শীষ তিনটি বাড়িতে এনে শুকিয়ে বীজ হিসাবে ব্যবহার করে এ ধান চাষ শুরু করেন। তিনি তার মায়ের নামানুসারে নাম না জানা এই ধানের নাম রাখেন ‘ফাতেমা ধান’।

যেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শামসুল ওয়াদূদ বলেন, ‘ঐ ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। এত বেশী ফলন পাওয়া যায়, এমন কোন জাতের ধান দেশে আছে বলে আমার জানা নেই’। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে সারা দেশে এই ধান চাষ করা যাবে। এটা সম্ভব হ’লে বার্ষিক উৎপাদন পাঁচ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে।






আরও
আরও
.