ভূমিকা : জুম‘আর দিন উপদেশ শ্রবণের দিন। এই দিনে ছাহাবায়ে কেরাম সকাল সকাল মসজিদে গিয়ে ইবাদতে মগ্ন হ’তেন। এই দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে খুৎবা প্রদান ও শ্রবণ করা। এর মাধ্যমে খত্বীবগণ লোকদের বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ দিয়ে থাকেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্লাসের মত। যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মাঝে জ্ঞানের আলো বিতরণ হয়। এই জ্ঞানের আলো বিতরণ করা এবং গ্রহণ তখনই ফলপ্রসু হবে যখন জ্ঞান বিতরণকারী বোধগম্য ভাষায় জ্ঞান বিতরণ করবেন। যদি খত্বীবের ভাষা অস্পষ্ট হয় বা ভিন্ন হয় তাহ’লে পুরো কার্যক্রম বিফলে যাবে। উল্লেখ্য যে, খুৎবা প্রদান ও তা শ্রবণ স্বতন্ত্র ইবাদত। আর ভাষা এই ইবাদতের মাধ্যম মাত্র। সেজন্য খত্বীব নিজ ভাষায় বা মুছল্লীদের জন্য বোধগম্য ভাষায় খুৎবা দিবেন এটাই খুৎবার মৌলিক চাহিদা। কোন কোন আলেম খুৎবার ভাষা নিয়ে বিতর্ক তুলে ধরায় সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিষয়টি খোলাছার দাবী রাখে। নিম্নে এ বিষয়ে সবিস্তার আলোচনা করা হ’ল :

পবিত্র কুরআন থেকে দলীল : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ فَيُضِلُّ اللهُ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ، ‘আর আমরা কোন রাসূলকে পাঠাইনি স্বজাতির ভাষায় ব্যতীত, যাতে তারা তাদের কাছে (আমার দ্বীন) ব্যাখ্যা করে দিতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে চান পথভ্রষ্ট করেন ও যাকে চান পথপ্রদর্শন করেন। তিনি মহাপরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়’ (ইবরাহীম ১৪/০৪)

হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) ইমাম আহমাদের উক্তি উল্লেখ করে বলেন,هذا من لطفه تبارك وتعالى بخلقه أنه يرسل إليهم رسلا منهم بلغتهم ليفهموا عنهم ما يريدون، وما أرسلوا به إليهم، ‘এটা সৃষ্টজীবের প্রতি মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ যে, তিনি তাদের প্রতি তাদেরই মধ্য হ’তে তাদেরই ভাষাভাষী রাসূল পাঠিয়েছেন, যাতে তারা তাদের প্রত্যাশিত বিষয় তাদের বুঝিয়ে নিতে পারেন এবং যে কারণে পাঠানো হয়েছে সে বিষয়ে জানতে পারে।[1] হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, এটি আল্লাহ তা‘আলার নিয়ম যে, তিনি কোন জাতির কাছে কোন নবী পাঠাননি যদি না তিনি তাদের ভাষাভাষী হন। সেজন্য তিনি প্রত্যেক নবীকে কেবল তার উম্মতের নিকট রিসালাতের দায়িত্ব পালনের জন্য খাছ করেছেন। আর আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ (ছাঃ)-কে সমগ্র মানবজাতির নিকট বাণী পৌঁছে দেওয়ার জন্য মনোনীত করেছেন।[2] আল্লাহ তা‘আলা ইসলামী দাওয়াতের মূলনীতি উল্লেখ করে বলেন,وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ، ‘আর মুমিনদের এটা সঙ্গত নয় যে, সবাই একত্রে (জিহাদে) বের হবে। অতএব তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং ফিরে এসে নিজ কওমকে (আল্লাহর নাফরমানী হ’তে) সতর্ক করতে পারে, যাতে তারা সাবধান হয়’ (তওবা ৯/১২২)। অত্র আয়াত প্রমাণ করে যে, আরবী ভাষা ও দ্বীনের উচ্চতর জ্ঞান অর্জন করা সবার জন্য আবশ্যক নয়। বরং প্রত্যেক গোত্রের কিছু মানুষ দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে ফিরে আসবে এবং স্বজাতিকে নিজ ভাষায় দ্বীন শিখাবে। আর শিক্ষার বড় একটি মাধ্যম বা ক্ষেত্র হচ্ছে জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে নিজ ভাষায় জুম‘আ বা ঈদায়নের খুৎবা প্রদান দোষণীয় নয়। বরং ক্ষেত্র বিশেষে মুস্তাহাব।

হাদীছে নববী থেকে দলীল : ছহীহ হাদীছও প্রমাণ করে নিজ কওমের ভাষায় খুৎবা হওয়া বাঞ্ছণীয়। কারণ খুৎবার উদ্দেশ্য উপদেশ। যেমন হাদীছে এসেছে,عَنْ أَبِى ذَرٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَبْعَثِ اللهُ نَبِيًّا إِلاَّ بِلُغَةِ قَوْمِهِ- ‘আবু যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন নবী পাঠাননি যারা স্বজাতির ভাষাভাষী ছিলেন না’।[3] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আবু যার (রাঃ)-কে বলেন,أُعْطِيتُ خَمْسَ خِصَالٍ لَمْ يُعْطَهُنَّ أَحَدٌ كَانَ قَبْلِي: أُرْسِلَ كُلُّ نَبِيٍّ إِلَى أُمَّتِهِ بِلِسَانِهَا، وَأُرْسِلْتُ إِلَى كُلِّ أَحْمَرَ وَأَسْوَدَ مِنْ خَلْقِهِ، وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَلَمْ يُنْصَرْ بِهِ أَحَدٌ قَبْلِي، وَأُحِلَّتْ لِيَ الْغَنَائِمُ، وَجُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُورًا، ‘আমাকে এমন পাঁচটি বস্ত্ত দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে অন্য কাউকেও দেয়া হয়নি। প্রত্যেক নবীকে তার উম্মতের ভাষাভাষী করে পাঠানো হয়েছে। আর আমাকে তাঁর সৃষ্টির সাদা-কালো সবার নিকটে পাঠানো হয়েছে। আমার জন্য গণীমতের সম্পদ হালাল করা হয়েছে। আমাকে শত্রুর মাঝে ভীতি সঞ্চার করার ক্ষমতা প্রদান করে সাহায্য করা হয়েছে, যা পূর্বের কোন নবীকে করা হয়নি। আর আমার জন্য মাটিকে মসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ করা হয়েছে’।[4]

কুরআনের আয়াত ও হাদীছসমূহ স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, প্রত্যেক নবী-রাসূল স্বজাতির কাছে নিজ ভাষায় দাওয়াত ও উপদেশ দিতেন এবং উম্মতের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে সমাধান দিতেন। কারণ ভাষা না বুঝলে নছীহতের কোন মূল্য নেই। সুতরাং জুম‘আ ও ঈদসহ যেকোন খুৎবার প্রথম অংশ তথা খুৎবাতুল হাজাত পাঠ করার পর স্বজাতির ভাষায় আলোচনা করা একান্ত প্রয়োজন যাতে ইসলামের বিধি-বিধান পরস্পরের মধ্যে আদান প্রদানে সুবিধা হয়।

ইমাম নববী (রহঃ) খুৎবা আরবী ভাষায় হওয়া শর্ত কি-না সে বিষয়ে দু’টি মত উল্লেখ করার পর বলেন,مُسْتَحَبٌّ وَلَا يُشْتَرَطُ لِأَنَّ الْمَقْصُودَ الْوَعْظُ وَهُوَ حَاصِلٌ بِكُلِّ اللُّغَاتِ، ‘খুৎবা আরবী ভাষায় হওয়া মুস্তাহাব তবে শর্ত নয়। কেননা এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে উপদেশ দেওয়া। আর উপদেশ যেকোন ভাষায় দিলেই উদ্দেশ্য হাছিল হয়’।[5]

ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, إِنَّمَا يُبْعَثُ بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ ثُمَّ يَحْصُلُ الْبَيَانُ لِغَيْرِهِمْ بِتَوَسُّطِ الْبَيَانِ لَهُمْ إِمَّا بِلُغَتِهِمْ وَلِسَانِهِمْ وَإِمَّا بِالتَّرْجَمَةِ لَهُمْ وَلَوْ لَمْ يَتَبَيَّنْ لِقَوْمِهِ أَوَّلًا لَمْ يَحْصُلْ مَقْصُودُ الرِّسَالَةِ لَا لَهُمْ وَلَا لِغَيْرِهِمْ، ‘শুধুমাত্র তাকে তার সম্প্রদায়ের ভাষায় প্রেরণ করা হয়েছে যাতে তিনি তাদের নিকট বর্ণনা করে দিতে পারেন। অতঃপর অন্যদের কাছে বর্ণনার মাধ্যমে স্পষ্টকরণ করা হয়েছে, হয় তাদের ভাব ও ভাষার মাধ্যমে অথবা তাদের কাছে অনুবাদ করে দেওয়ার মাধ্যমে। যদি তাঁর লোকেদের কাছে স্পষ্ট না হয়ে ওঠে তাহ’লে প্রথমত: রিসালাতের উদ্দেশ্য অর্জিত হয় না, না তাদের জন্য বা অন্যদের জন্য’।[6]

চার মাযহাবের অভিমত :

হানাফী মাযহাবের অবস্থান : ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) সাধারণভাবে যেকোন ভাষায় জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা প্রদানের অনুমোদন দিয়েছেন। অন্যদিকে তার দুই শিষ্য ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ ইবনু হাসান আরবী বলতে অদক্ষদের জন্য নিজ ভাষায় খুৎবা প্রদান জায়েয হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। যেমন হানাফী বিদ্বান ইবনু আবেদীন হানাফী মাযহাবের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, لَمْ يُقَيِّدْ الْخُطْبَةَ بِكَوْنِهَا بِالْعَرَبِيَّةِ اكْتِفَاءً بِمَا قَدَّمَهُ فِي بَابِ صِفَةِ الصَّلَاةِ مِنْ أَنَّهَا غَيْرُ شَرْطٍ وَلَوْ مَعَ الْقُدْرَةِ عَلَى الْعَرَبِيَّةِ عِنْدَهُ خِلَافًا لَهُمَا حَيْثُ شَرَطَاهَا إلَّا عِنْدَ الْعَجْزِ- ‘আরবীতে কথা বলতে দক্ষ ব্যক্তিদের জন্যও তিনি (আবু হানীফা) খুৎবাকে আরবী ভাষায় সীমাবদ্ধ করেননি ও শর্ত হিসাবেও গণ্য করেননি, এক্ষেত্রে তিনি ছালাতের বিবরণ অধ্যায়ে যা উপস্থাপন করেছেন তাই যথেষ্ট। তবে তার ছাত্রদ্বয় তার বিরোধিতা করে সক্ষমতার ভিত্তিতে আরবীকে শর্ত হিসাবে উল্লেখ করেছেন’।[7]

হানাফী বিদ্বান বুরহানুদ্দীন ইবনু মাযাহ বুখারী (রহঃ) হানাফী মাযহাবের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘কেউ যদি ফার্সী ভাষায় খুৎবা দেন তাহ’লে তা আবূ হানীফার মতে সর্বাবস্থায় জায়েয’।[8]

ইমাম আবূ ইউসুফ (রহঃ) বলেন,إذا خطب بالفارسية وهو يحسن العربية لا يجزئه إلا أن يكون ذكر الله في ذلك العربية في حرف أو أكثر من قبل أنه يجزىء في الخطبة ذكر الله، وما زاد فهو فضل. ‘যদি ইমাম ফার্সী ভাষায় খুতবা দেন এবং আরবীতে সাবলীল হন, তবে তা যথেষ্ট নয়। তবে যদি তিনি অন্য ভাষায় কথা বলার পূর্বে আরবীতে এক বা একাধিক অক্ষরে আল্লাহর যিকরের কথা উল্লেখ করেন তাহ’লে যিকরুল্লাহ হিসাবে এটাই যথেষ্ট। আর বেশী বেশী যিকরুল্লাহ তথা আরবীতে আয়াত বা হাদীছ উল্লেখ করা উত্তম’।[9] বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে অনারব ভাষায় খুৎবা হয় সেগুলো ইমাম আবু ইউসুফের নির্দেশনার বাইরে যায় না। কারণ প্রত্যেক ইমাম খুৎবাতুল হাজাত পাঠ করে কুরআন ও সুন্নাহ পাঠ করার পর নিজ ভাষায় খুৎবা দিয়ে থাকেন।

হানাফী মাযহাবের মতামত উল্লেখ করে বলা হয়েছে,تجوز الخطبة بغير العربية ولو لقادر عليها، سواء كان القوم عرباً أو غيرهم، ‘আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুৎবা দেওয়া জায়েয, যদিও কেউ আরবী বলতে সক্ষম হয়, লোকেরা আরবী ভাষাভাষী হোক বা অনারবী হোক।[10]

মালেকী মাযহাবের অভিমত : ইমাম মালেক ও তাঁর মাযহাবের ওলামায়ে কেরাম আরবীতে খুৎবা দেওয়াকে শর্ত হিসাবে উল্লেখ করেছেন। অনারব ভাষায় খুৎবা দেওয়াকে তারা অনেকটাই নাজায়েয বলেছেন। মালেকী মাযহাবের মতামত সম্পর্কে বলা হয়েছে,وَأَمَّا الْخُطْبَةُ فَلاَ تَجُوْزُ عِنْدَهُمْ بِغَيْرِ الْعَرَبِيَّةِ وَلَوْ كَانَ الْجَمَاعَةُ عَجَمًا لاَ يَعْرِفُونَ الْعَرَبِيَّةَ، فَلَوْ لَمْ يَكُنْ مِنْهُمْ مَنْ يُحْسِنُ الإِْتْيَانَ بِالْخُطْبَةِ عَرَبِيَّةً لَمْ تَلْزَمْهُمْ جُمُعَةٌ. ‘আর জুম‘আর খুৎবা; শ্রোতামন্ডলী অনারব হ’লেও এবং আরবী ভাষা না বুঝলেও তাদের নিকটেও অনারব ভাষায় খুৎবা দেওয়া জায়েয নয়। যদি তাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি না থাকে যে সুন্দর আরবী বলতে পারে তাহ’লে তাদের উপর জুম‘আ আবশ্যিক নয়’।[11]

শাফেঈ মাযহাবের অভিমত : শাফেঈ মাযহাবের দু’টি অভিমত রয়েছে। মালেকী মাযহাবের মতই তারা জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা আরবীতে হওয়া শর্ত হিসাবে গণ্য করেছেন। তারা মনে করেন আরবীতে খুৎবা দিতে না পারলে অন্য ভাষায় খুৎবা দিবে এবং এরই মধ্যে আরবী শেখার চেষ্টা করবে। কেউও যদি না শিখে তবে সবাই গোনাহগার হবে। তবে শাফেঈ মাযহাবের গ্রহণযোগ্য অভিমত হচ্ছে আরবীতে খুৎবা দেওয়া মুস্তাহাব হ’লেও অনারব ভাষায় খুৎবা দেওয়া জায়েয। যেমন বলা হয়েছে, ‘শাফেঈ মাযহাবের অন্যতম অভিমত হচ্ছে জুম‘আর খুৎবা আরবীতে হওয়া মুস্তাহাব মাত্র। ইমাম নববী বলেন, কেননা খুৎবা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে উপদেশ। আর এটা যেকোন ভাষায় অর্জিত হয়’ (لأَِنَّ الْمَقْصُودَ الْوَعْظُ، وَهُوَ حَاصِلٌ بِكُل اللُّغَاتِ)।[12]

হাম্বলী মাযহাবের অভিমত : হাম্বলী মাযহাবের ওলামায়ে কেরাম অনারব ভাষায় জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা প্রদানকে জায়েয বলেছেন। তবে কুরআনের আয়াতগুলোর সরাসরি অনুবাদ না করে আরবী পাঠ করে অনুবাদ পাঠে উৎসাহিত করা হয়েছে। হাম্বলী মাযহাবের অভিমত সম্পর্কে বলা হয়েছে,لا تصح الخطبة بغير العربية إن كان قادراً عليها، فإن عجز عن الإتيان بها أتى بغيرها مما يسحنه، سواء كان القوم عرباً أو غيرهم. ‘আরবী বলতে সক্ষম ব্যক্তির জন্য অনারব ভাষায় খুৎবা দেওয়া শুদ্ধ নয়। যদি খত্বীব আরবীতে খুৎবা দিতে অক্ষম হন তাহ’লে তিনি যে ভাষায় দক্ষ সে ভাষায় খুৎবা দিবেন শ্রোতামন্ডলী আরবী ভাষী হৌক বা অনারব হৌক। কিন্তু দুই খুৎবায় আয়াত পাঠ করা খুৎবার অন্যতম রুকন বা স্তম্ভ, যা অনারব ভাষায় বলা জায়েয নয়। বরং এই স্থানে আয়াতের পরিবর্তে যেকোন যিকির পাঠ করবে। এতেও অক্ষম হ’লে আয়াত পাঠ করা সমপরিমাণ সময় চুপ থাকবে’।[13]

চার মাযহাবের মধ্যে একমাত্র মালেকী মাযহাবের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। তবে তাদের এই কঠোর মনোভাবের পিছনে কোন শক্তিশালী দলীল নেই। অন্যদিকে অন্য তিন মাযহাবের অবস্থান স্পষ্ট যে কেউ অনারব ভাষায় খুৎবা দিলে তাতে কোন দোষ নেই। বরং খুৎবার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে লোকদের উপদেশ দেওয়া। আর উপদেশ শ্রোতামন্ডলীর ভাষায় হওয়া বাঞ্ছণীয়। যদিও কোন কোন বিদ্বান আরবী শিক্ষার গুরুত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে আরবী ভাষায় খুৎবা দেওয়াকে উৎসাহিত করেছেন।

ফাতাওয়া লাজনা দায়েমার বক্তব্য : সউদী আরবের সর্বোচ্চ ফাতাওয়া বোর্ড এবং উচ্চ পর্যায়ের ওলামায়ে কেরাম মাতৃভাষায় জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা দেওয়াকে জায়েয বলেছেন। ফৎওয়া লাজনা দায়েমায় বলা হয়েছে,لم يثبت في حديث عن النبي صـ ما يدل على أنه يُشترط في خطبة الجمعة أن تكون باللغة العربية নবী করীম (ছাঃ)-এর কোন হাদীছে এমন কোন প্রমাণ নেই, যা নির্দেশ করে যে জুম‘আর খুৎবা আরবী ভাষায় হওয়া শর্ত। বরং নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আ এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানে আরবীতে খুৎবা দিতেন। কারণ এটি তাঁর ও তাঁর কওমের ভাষা। তাই তিনি যাদের কাছে খুৎবা দিতেন, উপদেশ দিতেন, দিক-নির্দেশনা দিতেন এবং তারা যে ভাষা বুঝত সে ভাষায় নছীহত করতেন। অতএব খত্বীবের জন্য করণীয় হচ্ছে দেশীয় ভাষায় জুম‘আর খুৎবা দেওয়া যদিও তা আরবী না হয়। আর এরই মাধ্যমে শরী‘আতের দিক-নির্দেশনা, শিক্ষা, দাওয়াত ও উপদেশ বোধগম্য হয় এবং খুৎবাটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়। তবে আরবীতে খুৎবা পাঠ করা এবং শ্রোতাদের কাছে তা অনুবাদ করে দেওয়া ভালো’।[14]

শায়খ উছায়মীনের অভিমত : বিংশ শতাব্দীর অন্যতম দিকপাল ও মুজাদ্দিদ শায়খ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) বলেন,الصحيح في هذه المسألة أنه لا يجوز لخطيب الجمعة أن يخطب باللسان الذي لا يفهم الحاضرون غيره، فإذا كان هؤلاء القوم ليسوا بعرب، ولا يعرفون اللغة العربية، فإنه يخطب بلسانهم؛ لأن هذا هو وسيلة البيان لهم، والمقصود من الخطبة هو بيان حدود الله سبحانه وتعالى للعباد، ووعظهم، وإرشادهم، إلا أن الآيات القرآنية يجب أن تكون باللغة العربية، ثم تفسر بلغة القوم، ‘এই বিষয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি হ’ল যে, জুম‘আর খত্বীবদের জন্য এমন ভাষায় খুৎবা দেওয়া জায়েয নয় যেটা উপস্থিত লোকেরা বুঝতে পারে না। অতএব জুম‘আর মুছল্লীরা যদি অনারব হয় এবং আরবী বুঝতে অপারগ হয় তাহ’লে খত্বীব তাদের ভাষায় খুৎবা দিবেন। কারণ এটি তাদের কাছে কুরআন ও সুন্নাহ স্পষ্টকরণের মাধ্যম। আর খুৎবার উদ্দেশ্য হ’ল বান্দার নিকটে সর্বশক্তিমান আল্লাহর সীমারেখা ব্যাখ্যা করা, তাদের উপদেশ দেওয়া এবং পথপ্রদর্শন করা। তবে কুরআনের আয়াতগুলি আরবী ভাষায় হ’তে হবে, তারপর স্বজাতির ভাষায় তাফসীর করতে হবে’।[15]

শায়খ বিন বাযের অভিমত : বিংশ শতাব্দীর অন্যতম নক্ষত্র শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ) জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা স্বজাতির ভাষায় দেওয়াকে জায়েয বলেছেন। তিনি বলেন,إن كان معظم من في المسجد من الأعاجم الذين لا يفهمون اللغة العربية فلا بأس من إلقائها بغير العربية، أو إلقائها بالعربية ومن ثم ترجمتها ‘মসজিদের অধিকাংশ মুছল্লী যদি অনারব হয় যারা আরবী ভাষা বুঝে না তাহ’লে অনারব ভাষায় খুৎবা দেওয়ায় কোন দোষ নেই অথবা আরবীতে খূৎবা দিয়ে পরে স্বজাতির ভাষায় অনুবাদ করে দেওয়া। তিনি দলীল হিসাবে সূরা ইবরাহীমের ৪ আয়াত উল্লেখ করেন’।[16]

শায়খ ছালেহ আল-ফাওযান-এর অভিমত: ছালেহ আল-ফাওযান মনে করেন যদি মুছল্লীরা সবাই অনারব হয় তাহ’লে অনারব ভাষায় খুৎবা দানে কোন বাধা নেই। তবে যদি কিছু মুছল্লী আরবী ও কিছু অনারব হয় তাহ’লে আরবী ভাষায় খুৎবা হবে এবং অনারবদের জন্য উক্ত খুৎবা অনুবাদ করে দিতে হবে (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ-দারব, হালাকা নং ৪১৬)

রাবেতা আলামে ইসলামীর বিশেষ ফিক্বহ বোর্ডের সিদ্ধান্ত : খুৎবা শুরু হবে আরবী ভাষায় অতঃপর স্বজাতির ভাষায় খুৎবা অনুবাদ করতে হবে। আর এটাই সারা বিশ্বের সালাফী মসজিদগুলোতে হয়ে থাকে। উক্ত বোর্ডে বলা হয়েছে,الرأي الأعدل هو أن اللغة العربية في أداء خطبة الجمعة والعيدين في غير البلاد الناطقة بها ليست شرطاً لصحتها، ‘সবচেয়ে ইনছাফপূর্ণ মতামত হ’ল অনারব দেশে জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা আরবী ভাষায় দেওয়া শর্ত নয়। তবে খুৎবার ভূমিকায় এবং সংশ্লিষ্ট স্থানে কুরআনের আয়াত আরবী ভাষায় পাঠ করা উত্তম। যাতে অনারবরা আরবী ও কুরআন শ্রবণে অভ্যস্ত হয়। এতে আরবী শিক্ষা সহজ হয়। আর কুরআন তেলাওয়াত এমন ভাষায় হবে যে ভাষায় তা নাযিল হয়েছে। এরপর খত্বীব স্বজাতির বোধগম্য ভাষায় জাতিকে উপদেশ দিবেন’।[17]

জুম‘আর খুৎবা ও তা শ্রবণ করা কি ছালাতের স্থলাভিষিক্ত? জুম‘আর খুৎবা মূলতঃ লোকদের উপদেশ দেওয়ার একটি সাপ্তাহিক বড় মাধ্যম। কারণ লোকেরা সাধারণত সপ্তাহের ছয়দিন ব্যস্ত থাকে এবং একদিন কুরআন ও সুন্নাহর আলোচনা শ্রবণের সুযোগ পায়। জুম‘আর খুৎবা ছালাতের স্থলাভিষিক্ত কি-না এ প্রসঙ্গে বিদ্বানগণ বিভিন্ন হিকমত বর্ণনা করেছেন। কেউ বলেছেন, জুম‘আর ছালাত চার রাক‘আত হ’লে লোকদের জন্য খুৎবা ও চার রাক‘আত ছালাত কষ্টদায়ক হয়ে যেত। কেউ বলেছেন, এটা জুম‘আ এবং যোহরের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য। কেউ মনে করেন, এটা সাপ্তাহিক ঈদ। ঈদের সাথে সাদৃশ্য রাখার জন্য দুই রাক‘আতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ বলেছেন, দু’টি খুৎবা দুই রাক‘আত ছালাতের স্থলাভিষিক্ত।[18] এক্ষণে কোন কোন ব্যক্তি খুৎবাকে দুই রাক‘আত ছালাতের স্থলাভিষিক্ত বলে অনারব ভাষায় খুৎবা প্রদানকে নাজায়েয মনে করেন, যা সঠিক নয়।

মূলত: জুম‘আর খুৎবা যোহরের দুই রাক‘আত ছালাতের স্থলাভিষিক্ত বলার কোন শারঈ ভিত্তি নেই। কারণ এটা ছালাতের স্থলাভিষিক্ত হ’লে খুৎবা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সুলাইক গাতফানীকে দুই রাক‘আত ছালাত আদায়ের নির্দেশ দিতেন না।[19]

জুম‘আর খুৎবা ছালাতের স্থলাভিষিক্ত হ’লে যারা খুৎবা শ্রবণের জন্য পরে আসে বা সরাসরি জুম‘আর জামা‘আতে অংশগ্রহণ করে তাদের ছালাত সিদ্ধ হ’ত না। অথচ এমন কোন দলীল বা ইতিহাস নেই। কেউ জুম‘আ না পাওয়ার কারণে পূর্ণ ৪ রাক‘আত ছালাত আদায় করেছেন। জুম‘আর খুৎবা ছালাতের স্থলাভিষিক্ত হ’লে তাতে কুরআন ছাড়া অন্য কোন কাহিনী, হাদীছ বা উপদেশ বলা যেত না। কারণ ছালাতে কুরআন ছাড়া অন্য কিছু তেলাওয়াত করা যায় না।[20]

জুম‘আর খুৎবা ছালাতের স্থলাভিষিক্ত হ’লে কারো সাথে কথা বলা যেত না। অথচ রাসূল (ছাঃ) ছাহাবায়ে কেরামের সাথে এবং ছাহাবীগণ রাসূলের সাথে কথা বলেছেন। এমনকি খুৎবা ছেড়ে ছাহাবায়ে কেরাম খাদ্য গ্রহণের জন্য রাসূল (ছাঃ)-কে মসজিদে একাকী রেখে বাইরে চলে গেছেন (সূরা জুমু‘আর তাফসীর দ্রষ্টব্য)। একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খুৎবাকালীন মেম্বার থেকে নেমে বাইরে গিয়ে চেয়ারে বসে জনৈক ছাহাবীকে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে মসজিদে এসে খুৎবা সম্পূর্ণ করেছেন।[21] অথচ রাসূলের ছালাত চলাকালীন এমন ঘটনা ঘটার ইতিহাস নেই। অতএব খুৎবা অনারব ভাষায় দেওয়া জায়েযের বিপক্ষে এই সব খোড়া যুক্তি দিয়ে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে নাজায়েয বলার কোন সুযোগ নেই।

খুৎবার ভাষা ইবাদত নয়; ইবাদতের মাধ্যম : খুৎবা মূলত ইবাদত এবং এর ভাষা ইবাদত পালনের মাধ্যম বা উপকরণ। আর উপকরণ সময়, স্থান বা পাত্রের পরিবর্তনের কারণে পরিবর্তন হ’তে পারে। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ আরবী ছিলেন তিনি তাদের আরবী ভাষায় খুৎবা দিয়েছেন। কখনো লম্বা সময় খুৎবা দিয়েছেন কখনো সংক্ষিপ্ত করেছেন বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন। এক্ষণে খুৎবার ভাষাকে যদি ইবাদত হিসাবে গণ্য করা হয় তাহ’লে রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় যেভাবে হয়েছে, যুগের পরিক্রমায় এবং স্থানের পরিবর্তন হ’লেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে যা অসম্ভব। কোন ধরনের ব্যতিক্রম করা যাবে না। করলেও আদায় হবে না। অতএব খুৎবাকে ইবাদত এবং এর ভাষাকে উপকরণ হিসাবে ধরে স্বজাতির ভাষায় খুৎবা দেওয়া জায়েয বরং ক্ষেত্রবিশেষে উত্তম।

উপসংহার : জুম‘আর দিন উপদেশ দেওয়া এবং তা শ্রবণের একটি সুবর্ণ সুযোগ। এর মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে যেমন জানা যায় তেমনি বিভিন্ন ইবাদতের গুরুত্ব, ফযীলত ও সেগুলো বর্জনের ভয়াবহতা এবং বিভিন্ন মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কেও জানা যায়। আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের উপদেশ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে তারা উপকৃত হয় (যারিয়াত ৫৪/৫৫)। আর এই উপদেশ অবশ্যই বোধগম্য ভাষায় হ’তে হবে। অন্যথা উপদেশের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। সেজন্য দেখা যায় পৃথিবীতে যত নবী-রাসূল এসেছেন তারা সকলেই নিজ গোত্রের নিকট স্বজাতির ভাষায় দাওয়াত পেশ করেছেন। যদিও বিশ্ব নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) সকল ভাষাভাষী মানুষের নবী ছিলেন। আর এই কারণেই সালাফী বিদ্বানগণ স্বজাতির ভাষায় জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবা প্রদানকে জায়েয বলেছেন। কারণ খুৎবার মূল উদ্দেশ্য লোকদের ইসলামের বিধিবিধান সম্পর্কে অবহিত করা। আর এটা তখনই ফলপ্রসূ হবে যখন তা বোধগম্য হবে।


[1]. তাফসীরে ইবনু কাছীর ৪/৪৭৭, অত্র আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য

[2]. তাফসীরে ইবনু কাছীর ৪/৪৭৭, অত্র আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য

[3]. আহমাদ হা/২২০২০; ছহীহাহ হা/৩৫৬১

[4]. মুসনাদুল হারেছ হা/৯৪২; হিলইয়াতুল আওলিয়া ৫/১১৭

[5]. আল-মাজমূ‘ ৪/৫২২

[6]. আল জাওয়াবুছ ছহীহ ২/৭০-৭১

[7]. হাশিয়াতু ইবনু আবেদীন ২/১৪৭

[8]. ইবনু মাযাহ, আল-মুহীতুল বুরহানী ফী ফিক্বহিন নু‘মানী ২/৭৪

[9]. ইবনু মাযাহ, আল-মুহীতুল বুরহানী ফী ফিক্বহিন নু‘মানী ২/৭৪

[10]. আল-ফিক্বহু আলাল মাযাহিবিল আরবা‘আ ১/৩৫৫

[11]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ১১/১৭১; আল-ফিক্বহু ‘আলাল মাযাহিবিল আরবা‘আ ১/৩৫৫

[12]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ১১/১৭২

[13]. আল-ফিক্বহু ‘আলাল মাযাহিবিল আরবা‘আ ১/৩৫৫

[14]. ফৎওয়া লাজনা দায়েমাহ ৮/২৫৩

[15]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৬/১১২; ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম ৩৯৩ পৃ.

[16]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/১৭২

[17]. কারারাতিল মুজাম্মাঈল ফিক্বহী ৯৯ পৃ.

[18]. উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৬/১১৩

[19]. মুসলিম হা/৮৭৫

[20]. মুসলিম হা/৫৩৭; মিশকাত হা/৯৭৮।

[21]. মুসলিম হা/৮৭৬






বিষয়সমূহ: জুম‘আ ও ঈদ
যাকাত ও ছাদাক্বা - আত-তাহরীক ডেস্ক
বিদ‘আত ও তার পরিণতি (৭ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আল্লাহর উপর ভরসা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
ইখলাছ মুক্তির পাথেয় (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
ইসলামে প্রবীণদের মর্যাদা - মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম
সমাজ সংস্কারে ইমামগণের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
বিদ‘আত ও তার ভয়াবহতা (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আল-কুরআনে বিজ্ঞানের নিদর্শন - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ঈমান (শেষ কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাক্বলীদ (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে কতিপয় ভ্রান্ত আক্বীদা (৩য় কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত পরিচিতি (৫ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
আরও
আরও
.