
পাবনার
ঈশ্বরদী উপযেলায় দুম্বার খামার করে সফলতা পেয়েছেন সোহেল হাওলাদার নামে এক
যুবক। পাঁচ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম আজ তাকে স্বপ্ন ছোঁয়ার আশা দেখাচ্ছে।
প্রতি বছর খরচ বাদে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। দুম্বার পাশাপাশি
খামারে মূল্যবান তোতাপুরি, হরিয়ানা, পাকিস্তানী বিটল ও দেশীয় মোট ৮০টি ছাগল
প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। সোহেল এখন পরিকল্পনা করছেন উট পালনের।
উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে পিতার সাথে ভারত থেকে পণ্য আমদানির ব্যবসায় নেমে পড়েন। রাজস্থানে যেয়ে সে দুম্বা ও তোতাপুরি পালনে আগ্রহী হন। বাড়িতেই গড়ে তোলেন ছোট পরিসরে খামার।
সোহেল জানায়, এখন তার খামারে ৩৪টি দুম্বা, ৮টি তোতাপুরি, ৬টি পাকিস্তানী বিটল, ১৫টি হরিয়ানাসহ মোট ৮০টি মূল্যবান প্রজাতির ছাগল রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের কাছে যার বেশ চাহিদা রয়েছে।
তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে খামারে দুম্বাসহ অন্যান্য প্রজাতির অনেক বাচ্চা হয়েছে। তিনি এখন নিজেই নিয়মিত দুবাই, সঊদী আরব ও ভারতের রাজস্থান থেকে এগুলো আমদানি করার পর প্রতিপালন করে বিক্রি করছেন। বড় সাইজের দুম্বা দেড় থেকে দুই লাখ টাকা, তিন মাস বয়সী এক লাখ টাকা এবং ছয় মাস বয়সী এক লাখ ২০ হাযার টাকায় বিক্রি করছেন। তোতাপুরি ও হরিয়ানা জাতের বাচ্চা ৩০-৩৫ হাযার টাকা এবং বড় ৬০-৮০ হাযার টাকায় বিক্রি করছেন। পাকিস্তানি বিটলের বাচ্চা ৫০ হাযার আর বড় এক লাখ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। দুম্বা পাঁচ মাসে একটি কোন কোন ক্ষেত্রে দু’টি বাচ্চাও প্রসব করে। দেড় বছরে দুইবার বাচ্চা পাওয়া যায়। আর এসব বাচ্চা বিক্রির উপযোগী হ’তে বেশি সময় লাগে না। এদের পেছনে খাদ্যের খরচও খুব বেশি লাগে না। ফলে লাভটা একটু বেশিই থাকে।
সোহেল জানান, দুম্বাসহ এসব সুন্দর প্রাণী প্রতিপালনে তেমন কষ্ট নেই এবং অসুখ-বিসুখও কম হয়। প্রতিদিন খাবার খায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকার। সময়মতো ভ্যাকসিন দিলে ঠিকমতো বেড়ে ওঠে। এ জন্য এটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। তিনি নিজে এবং দু’জন কর্মচারী খামার দেখাশোনা করেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সব খানেই তিনি দুম্বা সরবরাহ করছেন এবং বছরে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করছেন। বিশেষ করে কুরবানী দেয়ার জন্য অনেক বেশি দামে মানুষ সখ করে দুম্বা ক্রয় করেন। দুম্বাসহ এসব দামী প্রজাতির ছাগলের ব্যবসা করে সৎ পথে সফল হওয়ার স্বপ্ন এখন তার বাস্তবায়নের পথে।
ঈশ্বরদী উপযেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফীকুল ইসলাম বলেন, দুম্বা মূলত মরু অঞ্চলের প্রাণী। তবে বাংলাদেশের পরিবেশগত কোন সমস্যা নেই। চরাঞ্চল দুম্বা পালনের জন্য উপযোগী। দুম্বা পালন একটি লাভজনক পেশা। সোহেলের মতো আরো যুবক এগিয়ে এলে দেশে বেকার সমস্যা কমে যাবে। \সংকলিত\