১২ই অক্টোবর শনিবার, নওদাপাড়া, রাজশাহী : অদ্য সকাল ৮-টায় রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়াস্থ আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর পূর্ব পার্শ্বস্থ ময়দানে ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক রবীউল ইসলামের সভাপতিত্বে ‘২২তম বার্ষিক কেন্দ্রীয় সোনামণি সম্মেলন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্ল­­­াহ আল-গালিব। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের সাবেক উপ-প্রধান চিকিৎসক ডা. মুহাম্মাদ হেলালুদ্দীন ও ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মাদ আযীযুর রহমান।

প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বলেন, শিশু-কিশোরদের মাঝে ভালো ও মন্দ কাজের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে ভালো কাজ দেখলে তাদের অন্তরে তার ছাপ পড়ে। তাই প্রত্যেক অভিভাবক ও মুরববীর উচিত তাদের দ্বীনী অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া যাতে তারা ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত হয়। কিছু আলেম আছেন যারা বাচ্চাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করেন এমনকি মসজিদে বাচ্চাদের দেখলে তাদের তাড়িয়ে দেন। যা কখনোই ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শিশুদের দেখলে তাদের আদর-স্নেহ করতেন। তিনি নাতনী উমামাকে কোলে নিয়ে জুম‘আর খুৎবা দিয়েছেন। তাই আমাদেরও উচিত শিশুদের ভালো কাজে উৎসাহিত করা এবং তাদের প্রতিভার মূল্যায়ন করা। সবশেষে তিনি সম্মেলনের বিশেষ অতিথিবৃন্দ, ‘আন্দোলন’, ‘যুবসংঘ’, ‘সোনামণি’ আল-‘আওন’ ও ‘পেশাজীবী ফোরাম’-এর সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীল, অভিভাবক ও সোনামণিদের ধন্যবাদ জানান।

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, যুববিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার, ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পৃষ্ঠপোষক ও ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম, উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ শিহাবুদ্দীন আহমাদ, নওদাপাড়া মারকাযের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. নূরুল ইসলাম। অতিথিগণ স্ব স্ব ভাষণে সম্মেলনকে স্বাগত জানান এবং সোনামণি বালক-বালিকাদের রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শে গড়ে তোলার এই সুন্দর প্রচেষ্টার জন্য মাননীয় প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদকে ধন্যবাদ জানান।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন সম্মেলনের আহবায়ক ‘সোনামণি’ কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালক নাজমুন নাঈম। অতঃপর কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালকদের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন আবু রায়হান ও আবু তাহের মিছবাহ। যেলা পরিচালকদের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন নওদাপাড়া মারকায সাংগঠনিক যেলার ‘সোনামণি’ পরিচালক আজমাঈন আদীব, সিরাজগঞ্জ যেলার ‘সোনামণি’ পরিচালক মুহাম্মাদ মুসলিমুদ্দীন, দিনাজপুর-পশ্চিম সাংগঠনিক যেলার পরিচালক জিহাদুল ইসলাম ও কুমিল্লা যেলার পরিচালক আব্দুস সাত্তার। সম্মেলনে ‘আন্দোলন’, ‘যুবসংঘ’, ‘সোনামণি’, ‘আল-‘আওন’ ও ‘আহলেহাদীছ পেশাজীবী ফোরাম’-এর কেন্দ্রীয় ও যেলা দায়িত্বশীলবৃন্দ এবং ২৮টি যেলার নির্বাচিত সোনামণি প্রতিযোগী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক সুধী ও সোনামণি সদস্য অংশগ্রহণ করে। সোনামণি সদস্যাগণ ও তাদের অভিভাবিকাগণ মারকাযের বালিকা শাখায় অবস্থান করেন ও সেখানেই তাদের কেন্দ্রীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তাদের উত্তীর্ণদের নাম সমূহ মূল প্যান্ডেল থেকে ঘোষণা করা হয় এবং বালিকা ক্যাম্পাস থেকে তাদের পুরস্কার হস্তান্তর করা হয়। সম্মেলনের পুরা অনুষ্ঠান প্রজেক্টরের মাধ্যমে বালিকা শাখায় সরাসরি দেখানো হয়।

সম্মেলনে কুরআন তেলাওয়াত করে সোনামণি মুহাম্মাদ সামিউল্লাহ (মেহেরপুর) এবং জাগরণী পরিবেশন করে মুহাম্মাদ হুযায়ফা (সাতক্ষীরা)। সম্মেলনে ১জন যুবসংঘ সদস্য সহ ‘সোনামণি’ মারকায শাখার ১৫ জন সদস্য মিলে ‘যুলুমের পরিণাম’ বিষয়ে একটি মনোজ্ঞ ও শিক্ষণীয় ‘সংলাপ’ পরিবেশন করে। যা সকলের প্রশংসা কুড়ায়। সবশেষে বিভিন্ন বিষয়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালক আবু রায়হান।

উল্লে­­খ্য যে, কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় ২৪৭ জন বালক ও ১২০ জন বালিকাসহ মোট ৩৬৭ জন সোনামণি অংশগ্রহণ করে। তন্মধ্যে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী মোট ৩৬ জন বিজয়ীকে পুরস্কার, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। এছাড়াও প্রতিটি বিষয়ে আরও ৩ জন করে মোট ৩৬ জনকে বিশেষ পুরস্কার ও অন্যদের উৎসাহ পুরস্কার দেওয়া হয়। নিম্নে প্রতিযোগিতার বিষয় ও বিজয়ীদের নাম উল্লে­খ করা হ’ল।-গ্রুপ-ক : ১. অর্থসহ হিফযুল কুরআন ও হাদীছ (সূরা যিলযাল, হুমাযাহ ও কাওছার এবং কেন্দ্র কর্তৃক নির্বাচিত ১০টি হাদীছ )।

বালক : ১ম : মি‘রাজুল ইসলাম (সাতক্ষীরা), ২য় : তাজবীর হাসান (রাজশাহী), ৩য় : মুহাম্মাদ ফাহাদ (কুমিল্লা)।

বালিকা : ১ম : মা‘ছূমা (নওগাঁ), ২য় : লামিয়া আখতার (কুমিল্লা), ৩য় : ইফফাত জাহান হাফছাহ (রাজশাহী)।

গ্রুপ-খ ২. অর্থসহ হিফযুল কুরআন ও হাদীছ (সূরা হুজুরাত সম্পূর্ণ এবং কেন্দ্র কর্তৃক নির্বাচিত ১৫টি হাদীছ)।

বালক : ১ম : মুহাম্মাদ সামীউল্লাহ (মেহেরপুর), ২য় : আব্দুস সামী (কুমিল্লা), ৩য় : সালমান ফারেসী ফাহাদ (বগুড়া)।

বালিকা : ১ম : মুবাশশিরা (সিরাজগঞ্জ), ২য় : ছায়েমা (কুমিল্লা), ৩য় : তাওহীদা (কুমিল্লা)।

গ্রুপ-ক : ৩. সাধারণ জ্ঞান : বালক : ১ম : মুহাম্মাদ আব্দুল আহাদ (বগুড়া), ২য় : মুহাম্মাদ শিহাব (বগুড়া), ৩য় : মুহাম্মাদ আবরার যাহীন (কুমিল্লা)।

বালিকা : ১ম : মুসাম্মাৎ রওযা আমীন (বগুড়া), ২য় : তাসমীম আখতার (কুমিল্লা), ৩য় : ছিদরাতুল মুনতাহা (চাঁপাই নবাবগঞ্জ)।

গ্রুপ-খ:৪. সাধারণ জ্ঞান : বালক : ১ম : ওয়ালীদ (সিরাজগঞ্জ), ২য় : মুহাম্মাদ রিয়ায আলম (রাজশাহী), ৩য় : মুহাম্মাদ ছিয়াম (বগুড়া)।

বালিকা : ১ম : ফাতেমা খাতুন (রাজশাহী), ২য় : লুবনা (রাজশাহী), ৩য় : তাশরীফ জাহান রিফা (দিনাজপুর)।

গ্রুপ-ক : ৫. সোনামণি জাগরণী : বালক : ১ম : মুহাম্মাদ হুযায়ফা (সাতক্ষীরা), ২য় : আবরার যাহীন (রাজশাহী), ৩য় : মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল-ফাহীম (মেহেরপুর)।

গ্রুপ-খ : ৬. সোনামণি জাগরণী : বালক : ১ম : মুহাম্মাদ তামজীদ যামান হামযাহ (দিনাজপুর), ২য় : আসাদুল্লাহ (রাজশাহী), ৩য় : মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান (রাজশাহী)।

গ্রুপ-গ : ৭. দ্বীনিয়াত : বালক : ১ম : তাহমীদ আব্দুল্লাহ (কুমিল্লা), ২য় : মুহাম্মাদ রিযওয়ান (সাতক্ষীরা), ৩য় : মুহাম্মাদ হাসীবুল হাসান (সিরাজগঞ্জ)।

গ্রুপ-গ : ৮. দ্বীনিয়াত : বালিকা : ১ম : নাশিতা তাসনীম (রাজশাহী), ২য় : মুসাম্মাৎ জান্নাতী আখতার (সিরাজগঞ্জ), ৩য় : মুসাম্মাৎ আয়েশা ছিদ্দীকা (সিরাজগঞ্জ)।







আরও
আরও
.