রূপকথার এক রাজ্য আছে বুদ্ধিজীবীর সম্মেলন,
শেয়াল জাতি করে সেথায় মুরগীবাদী আন্দোলন।
দেশের কথা বলছি না ভাই রাজ্য সেটা অনেক দূর,
বুদ্ধিজীবী বিজ্ঞানীদের পূণ্যভূমি শেয়ালপুর।
মুরগি বাঁচাও, মুরগি বাঁচাও, নই কো মোরা আফগানী
দিনে শেয়াল দিচ্ছে শ্লোগান, রাতে মুরগি কুরবানী।
শ্লোগান শুনেই মুরগি এখন গৃহস্থকে ভাবছে পর,
শেয়ালরা তার আপন বলে ছাড়ছে এরা নিজের ঘর।
শেয়াল ভাবে কত সময় নষ্ট হ’ল ফাঁদ পেতে,
এত সহজ বুদ্ধি কেন আসেনি তার খুপরিতে।
যাদুর শ্লোগান দিয়ে হচ্ছে কল্পনাতীত আজব কাজ
মুক্ত হবার স্বপ্ন নিয়ে মুরগি জাতি জাগছে আজ!
হাযার হাযার পালক বিহীন মুরগি এসে রাজপথে
পালক ফেলার দাবী নিয়ে দিচ্ছে শ্লোগান একসাথে।
গৃহস্থরা পালকছাড়া নিরাপদে যদি রয়
মোদের দেহ শুধু কেন পালক দিয়ে ঢাকতে হয়?
গৃহস্থরা বাইরে ঘুরে আমরা শুধু বন্দি রই
মুরগিওয়ালা সব বাড়িতে গৃহস্থরাই কর্তা হয়।
আজকে থেকে এই যুলুম আর শেয়ালপুরে চলবে না
ফেলব পালক থাকব বিলে পুষিয়ে নেব সব দেনা।
কারো সেবক নই কো মোরা, মোদের কোন কর্তা নাই
যেথাই ইচ্ছা রাত কাটাবো, করবো মোরা যাচ্ছেতাই।
শেয়াল বলে, বাপ-দাদারা দেখত যদি এই দিবস,
নাদুস-নুদুস মুরগিগুলো শ্লোগান শুনে হচ্ছে বশ!
মোদের নিয়ে গর্ব করে পড়ত নেমে লুটপাটে,
হয়ত তাদের দিন যেত না খাবার পানির সংকটে।
থাক ওকথা, কাজ করি ভাই, সময় হাতে অনেক কম
চারটে হাতে মুরগি আছে, রান্না হবে আটরকম।
আজ শ্লোগানের তালে তালে কড়াই-চুলা ছন্দময়,
পালকফেলা মুরগিগুলো বাঁচিয়ে দিচ্ছে ঢের সময়।
মুরগি জাতি দেখল, তাদের স্বাধীনতার বিল জুড়ে
মুক্তিকামী শ্লোগান দেয়া মুরগিগুলোর হাঁড় পড়ে।
শ্লোগান দেয়ার অন্তরালে শুরু হ’ল হা-হুতাশ,
অন্তরালে ভক্ষক শেয়াল, লোক সমুখে দেয় সাবাশ!
নিজ ঘরে আর যায় না ফেরা, নাম লিখিয়ে এই দলে।
সেই কুঠিতে ফিরলে আবার লোকে জানি কি বলে!
প্রচার করে খবর তারা, মুক্ত হ’লাম আমরা সব,
গোপন রেখে সকল ব্যথা, গগনফাটা কান্নারব।
এমনভাবেই যায় এগিয়ে মুরগিবাদি আন্দোলন,
সুখগুলো সব প্রকাশ করে, দুঃখগুলো রয় গোপন।
মুরগি জাতির একটি ভুলে শেয়াল পেল এমন স্বাদ,
কে জানে আর থামবে কি-না শেয়ালপুরের মুরগিবাদ।
-সারওয়ার মিছবাহ, নওদাপাড়া, রাজশাহী।