পৃথিবীর প্রতিটি গৃহে প্রত্যেক ব্যক্তি সন্তান কামনা করে। সন্তানের উপস্থিতি যেমন কল্যাণ বয়ে আনে, তেমনি গৃহের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে। তাই যে গৃহে নিষ্পাপ শিশুর কল-কাকলি থাকে না, সে গৃহের শোভা ও সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। শিশুর শোভা ও সৌন্দর্য সম্পর্কে জনৈক কবি সুন্দর করে বলেছেন,
إِنَّمَا أَوْلاَدُنَا بَيْنَنَا * أَكْبَادُنَا تَمْشِىْ عَلَى الْأَرْضِ
لَوْ هَبَّتِ الرِّيْحُ عَلَى بَعْضِهِمْ * لاَمْتَنَعَتْ عَيْنِىْ عَنِ الْغُمْضِ.
সন্তানেরা মনে হয় যেন আমাদের মাঝে,
মোদেরি অন্তর মূর্ত হয়ে মাটিতে হাঁটে।
দমকা হাওয়াও বয়ে যায় যদি কোনও সাঁঝে,
ঘুম আসে না আমাদের চোখে সারাটি রাতে।
সন্তান আল্লাহ তা‘আলার অগণিত নে‘মতের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নে‘মত ও তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ। আল্লামা আলূসী (রহঃ) বলেছেন, ‘ধন-সম্পদ হচ্ছে প্রাণ বাঁচানোর উপায় আর সন্তান-সন্ততি হচ্ছে বংশ তথা মানব প্রজাতি রক্ষার মাধ্যম’। পিতা-মাতার নিকট থেকে স্নেহ-মমতাসহ সন্তানের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবার অধিকার আছে। সালমান ফারেসী (রাঃ) বলেন, إِنَّ لِرَبِّكَ عَلَيْكَ حَقًّا، وَإِنَّ لِنَفْسِكَ عَلَيْكَ حَقًّا، وَلِأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا، فَأَعْطِ كُلَّ ذِىْ حَقٍّ حَقًّهُ. ‘তোমার উপর তোমার রবের হক রয়েছে, তোমার শরীরের হক রয়েছে এবং তোমার পরিবারের হক রয়েছে। অতএব প্রত্যেককে তার অধিকার দাও’। রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে সালমান (রাঃ)-এর এ বক্তব্য পেশ করা হ’লে তিনি বলেন, ‘সালমান সত্য বলেছে’।[1] কারণ মানব সন্তান পশু-পাখির মত নয় বিধায় তারা পুরোপুরি আদর-যত্ন, স্নেহ-মমতা না পেলে তাদের পক্ষে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।
সন্তান পিতা-মাতার যৌথ ফসল। মহান আল্লাহ তা‘আলার সর্বোৎকৃষ্ট সৃষ্টি মানব সন্তান পিতা-মাতার নিকট পবিত্র আমানত। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যাদের প্রচুর সম্পদ রয়েছে, কিন্তু তা ভোগ করার মতো কোন উত্তরাধিকারী নেই। তারা হাযারও চেষ্টা-সাধনা ও কামনা করে একটি সন্তান লাভ করতে পারছে না। অপরপক্ষে বহু লোক আছে যাদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও বহু সংখ্যক সন্তানের জনক। সন্তান লাভ করা আল্লাহর পক্ষ হ’তে এক বিশেষ নে‘মত। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ يَهَبُ لِمَنْ يَّشَاءُ إِنَاثاً وَّيَهَبُ لِمَن يَّشَاءُ الذُّكُوْرَ- أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَاناً وَّإِنَاثاً وَّيَجْعَلُ مَنْ يَّشَاءُ عَقِيْماً إِنَّهُ عَلِيْمٌ قَدِيْرٌ.
‘আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা তাকে করে দেন বন্ধ্যা। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান’ (শূরা ৪২/৪৯-৫০)। সন্তানের লালন, পরিপুষ্টি, সংরক্ষণ, পরিবৃদ্ধি সর্বোপরি আল্লাহর মর্যি মোতাবেক একজন সুন্দর মানুষ হিসাবে তার জীবন গঠন করার দায়িত্ব মাতা-পিতা উভয়ের। শিশুকে বড় করে তোলার ক্ষেত্রে পিতা-মাতা পরস্পর পরিপূরক দায়িত্ব পালন করেন। উপার্জন, শাসন, নিয়ন্ত্রণ ও বহিরাঙ্গনের শ্রমসাধ্য দায়িত্ব পিতাকে পালন করতে হয়। অভ্যন্তরীণ কাজ-কর্ম, শিশুর লালন-পালন ও প্রাথমিক শিক্ষার মত মৌলিক ও ধৈর্যসাধ্য কাজগুলি সাধারণতঃ মায়ের উপর বর্তায়। শিশু নির্দোষ প্রকৃতি নিয়ে পৃথিবীতে আসে। তাকে দৈহিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলে উপযুক্ত নাগরিক করার দায়িত্ব পিতা-মাতার। মহানবী (ছাঃ) বলেছেন,
مَا مِنْ مَوْلُوْدٍ إِلاَّ يُوْلَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ.
‘প্রতিটি শিশুই ফিতরাতের (ইসলাম) ওপর জন্মগ্রহণ করে। তারপর তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদী, খৃষ্টান অথবা অগ্নিপূজক বানায়’।[2]
সন্তান পিতা-মাতার যৌথ উদ্যোগের এক অনুপম উপহার। পিতা-মাতা উভয়ের নিকট সন্তানের অধিকার স্বীকৃত। আমরা সন্তানের অধিকারকে দু’ভাগে বিভক্ত করতে পারি।
(১) মাতার নিকট থেকে প্রাপ্ত অধিকার সমূহ :
মাতার নিকট হ’তে সন্তানের যে অধিকার স্বীকৃত তা দু’টি পর্যায়ে বিভক্ত।
(ক) গর্ভকালীন বা জন্মপূর্ব অধিকার।
(খ) জন্ম পরবর্তী অধিকার।
(ক) গর্ভকালীন অধিকার সমূহ :
গর্ভধারণ :
আল্লাহর অপার অনুগ্রহে গর্ভে আগত সন্তানকে মা অত্যন্ত আনন্দচিত্তে গ্রহণ করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বহন করবেন। এজন্য তিনি তার দেহ-মনকে সুস্থ, পূত-পবিত্র ও কলুষমুক্ত রাখবেন। সন্তানের মঙ্গলের নিমিত্তে নিজ স্বাস্থ্যের প্রতি সদা সতর্ক থাকবেন। সন্তানকে আপদ মনে করে বিনষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে নিজের সবটুকু বিলিয়ে দিবেন গর্ভস্থ সন্তানের জন্য এবং সাগ্রহে যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট মাথা পেতে নিতে প্রস্ত্তত থাকবেন। তবেই সন্তানের প্রতি মায়ের যথাযথ কর্তব্য পালন করা হবে। মায়ের এ কঠিন দায়িত্ব সম্পর্কে এরশাদ হচ্ছে, حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْناً عَلَى وَهْنٍ. ‘তার মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেছেন’ (লোকমান ৩১/১৪)।
দৈহিক গঠন :
সন্তান গর্ভে অবস্থানকালীন সময়ে মায়ের কঠোর পরিশ্রম ও বেপরোয়া চলাফেরা তার দৈহিক গঠন প্রক্রিয়ার ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। সন্তানের কল্যাণের জন্য চলাফেরার সময় তাকে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন পূর্বক কঠোর পরিশ্রম হ’তে বিরত থাকতে হবে। অসাবধানতার কারণে সন্তান বিকলাঙ্গ হ’তে পারে, এমনকি গর্ভপাত পর্যন্তও ঘটতে পারে। এ সময় পুষ্টিকর ফলমূল এবং উত্তম খাদ্য মা গ্রহণ করবেন। ফলমূল অন্যান্য খাদ্যের তুলনায় বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। আধুনিক বিজ্ঞানের মতে ফলমূলে অধিক পরিমাণে সুগার আছে যা সহজে হজম হয় এবং এ থেকে শরীর গ্রহণ করে জীবনী শক্তি ও খাদ্যপ্রাণ। ফলমূল দেহের ক্ষয়প্রাপ্ত শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। এ কারণে মহান আল্লাহ মারয়াম (আঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন,
وَهُزِّيْ إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَباً جَنِيًّا- فَكُلِيْ وَاشْرَبِيْ وَقَرِّيْ عَيْناً.
‘তোমার দিকে খেজুর বৃক্ষের কান্ডকে ঝুঁকিয়ে নাও, সে তোমার উপর পতিত করবে তাজা উপাদেয় খেজুর, তা তুমি খাও ও পান কর এবং নয়ন জুড়াও’ (মারয়াম ১৯/২৫-২৬)।
আহার্য গ্রহণের ব্যাপারে নিয়মানুবর্তিতা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য কল্যাণকর। সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে রামাযানের ছিয়াম থেকে বিরত থাকার বিষয়ে শরী‘আতের অনুমোদন আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ اللهَ وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ شَطْرَ الصَّلَواةِ وَالصَّوْمَ عَنِ الْمُسَافِرِ وَعَنِ الْمُرْضِعِ وَالْحُبْلَى. ‘আল্লাহ তা‘আলা মুসাফির হ’তে অর্ধেক ছালাত এবং মুসাফির, স্তন্যদানকারিনী মাতা ও গর্ভবতী স্ত্রী লোক হ’তে ছিয়াম উঠিয়ে নিয়েছেন’। অর্থাৎ ছিয়ামের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।[3]
মানসিক গঠন :
দৈহিক কাজ-কর্মের ন্যায় এ সময় মায়ের মানসিক কর্মেরও প্রভাব সন্তানের উপর প্রতিফলিত হয়। অত্যন্ত প্রতিকূল অবস্থাতেও নিজেকে সংযত রেখে ঝগড়া-বিবাদ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি হ’তে দূরে থাকা মায়ের অপরিহার্য কর্তব্য। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ) থেকে বিমুখ করতে পারে এরূপ বই-পত্র ও ধ্যান-ধারণা হ’তে মনকে পূত-পবিত্র রাখতে হবে। কেননা যাবতীয় খারাপ, অশ্লীল চিন্তা-ভাবনা পরিহার করে সৎ চিন্তা ও কুরআন-হাদীছ এবং নবীদের জীবনী পঠন ও শ্রবণ গর্ভস্থ সন্তানের সুশীল মানসিকতা গঠনে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। হারাম এবং অবৈধ উপায়ে অর্জিত খাদ্যদ্রব্য গর্ভের শিশুর উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। তাই এসব হ’তে মাকে অনেক দূরে অবস্থান করতে হবে। হারাম বর্জন করে হালাল বস্ত্ত খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করার ব্যাপারে কুরআন মাজীদে এরশাদ হয়েছে, وَكُلُواْ مِمَّا رَزَقَكُمُ اللهُ حَلاَلاً طَيِّباً. ‘আল্লাহ তোমাদের যা কিছু রিযিক দান করেছেন, তার মধ্যে হালাল ও পবিত্র বস্ত্ত আহার কর’ (মায়েদাহ ৫৪/৮৮)।
সন্তানকে সুষ্ঠু ও সুন্দর মনের একজন আদর্শবান মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার প্রধান দায়িত্ব মায়ের। মায়ের মন-মানসিকতার উপর নির্ভর করে সন্তানের মন-মানসিকতা। পৃথিবীর অধিকাংশ মা এ বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান না করার কারণে সন্তান হয় দুশ্চরিত্র। তাই একজন সুন্দর মনের সন্তান পেতে হ’লে মাকে সুন্দর পূত-পবিত্র মানসিকতাসম্পন্ন হ’তে হবে। গর্ভস্থ সন্তানের স্বার্থেই এটি প্রত্যেক মায়ের কর্তব্য এবং ভবিষ্যৎ সন্তানের এটি অধিকার। সন্তানের জন্য গর্ভবতী মাতার এসব মু‘আমালাত অবশ্যই পালনীয়। এতে মাতা ও সন্তানের পার্থিব কল্যাণ নিহিত রয়েছে এবং পরকালে মাতার জন্য রয়েছে উত্তম প্রতিদান।
(খ) জন্ম পরবর্তী অধিকার :
মায়ের স্তনে সন্তানের অধিকার :
গাছের শাখা যেমন মূলের মুখাপেক্ষী, তেমনি শিশু জন্মের পর মায়ের উপর নির্ভরশীল। শিশুর জন্মের সাথে সাথে আল্লাহর রহমতে মাতৃস্তনে সৃষ্টি হয় শিশুর উপযোগী খাবার। সুতরাং পৃথিবীতে কোন মা যেন বিশেষ কারণ ছাড়া স্বীয় দুধপান থেকে সন্তানকে বঞ্চিত করে শিশুর অধিকার অস্বীকার না করেন। সন্তানকে দুধপান করানোর জন্য আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ প্রদান করে বলেছেন, وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلاَدَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يُُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ. ‘যে সকল জননী সন্তানদের পুরো সময় পর্যন্ত দুগ্ধ দান করতে ইচ্ছা রাখে, তারা নিজেদের শিশুদেরকে পুরো দু’বছর ধরে দুগ্ধ পান করাবে’ (বাক্বারাহ ২/২৩৩)।
মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানযুক্ত আল্লাহ প্রদত্ত এমন তৈরী খাবার, যা শিশু সহজেই হজম করতে পারে এবং তা শিশুর শরীরের বৃদ্ধি ঘটানোতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুর শরীরের খাদ্য চাহিদার যে পরিবর্তন ঘটে, মায়ের বুকের দুধে অনুরূপ পরিবর্তন প্রতিদিনই ঘটে থাকে। শিশুর দেহ যে পরিমাণ তাপমাত্রা হ’লে দুধ তার দেহে কাজে লাগতে পারে, সেরূপ তাপমাত্রা মায়ের বুকের দুধে বিদ্যমান থাকে। শিশুকে সুস্থ-সুন্দর করে গড়ে তুলতে হ’লে মায়ের বুকের দুধের বিকল্প নেই। মায়ের বুকের দুধে বেশ কিছু রোগ প্রতিরোধক উপাদান থাকে। যেমন- আই.জি.এ ল্যাকটোফেরিন এবং লাইসোজাইম। এছাড়াও মায়ের বুকের দুধে প্রচুর শ্বেত রক্তকণিকা থাকে যেগুলো আবার আই.জি.এ ল্যাকটোফেরিন, লাইসোজাইম, ইন্টারফেরন তৈরী করে। বাইফিজস ফ্যাকটর নামে আরও একটি পদার্থ মাতৃদুগ্ধে পাওয়া যায়। এগুলো সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে। যার ফলে বাচ্চার দেহে ডায়রিয়া, কান পাকা রোগ, শ্বাসনালীর রোগ কম হয়। এছাড়া মাতৃদুগ্ধ পানে হৃৎপিন্ডের রোগ, করোনারী, খাদ্যনালীর রোগ প্রভৃতি প্রতিরোধ করে। মায়ের দুধ পান শিশুর চেহারার লাবণ্য সৃষ্টি করে, বাকশক্তি ও সাধারণ বুদ্ধি বিকাশে সাহায্য করে।
বিশেষ কারণ ছাড়া কোন মা শিশুকে দুধ পান হ’তে বঞ্চিত করে যে ক্ষতি সাধন করে, তা অপূরণীয়। কারণ স্তন্যদান মায়ের মধ্যে সৃষ্টি করে শিশুর প্রতি এক বিশেষ স্নেহ প্রবণতা ও আবেগ-অনুভূতি। যে সকল মহিলা তাদের চাকচিক্য ও রূপ-লাবণ্য নষ্ট হবার ভয়ে শিশুকে বুকের দুধ পান করানো হ’তে বিরত থাকে, তাদের এ হীন মানসিকতা এখুনি পরিত্যাগ করা উচিত।
শিশুর স্বাস্থ্য, মন-মানসিকতা, চরিত্র ও রুচি গঠনে মায়ের দুধের ভূমিকা যথেষ্ট। বিশেষ কারণ বশতঃ কোন শিশুকে আপন মা ব্যতীত অন্য মহিলার দুধ পান করানোর প্রয়োজন হয়ে পড়লে, সেক্ষেত্রে দুশ্চরিত্রা ও অসুস্থ মহিলার দুধ পান করানো হ’তে বিরত রাখতে হবে।
স্নেহের পরশে প্রতিপালন :
সন্তান মায়ের হৃদয়ের দরদ ও পরম স্নেহ-যত্নের দাবীদার। মা কোন প্রকার ঘৃণা না করে আন্তরিক ভালবাসা দিয়ে সন্তানের পরিচর্যা করবে। আদর-স্নেহ হ’তে বঞ্চিত সন্তানদের স্বভাব-চরিত্রে বিরূপ পড়ে থাকে। স্নেহের পরশে প্রতিপালনকারী মা আল্লাহর অনুগ্রহের অংশীদারিণী হয়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একবার হাসান বিন আলী (রাঃ)-কে স্বস্নেহে চুম্বন করেন। আকরা বিন হাবিস আত-তামিমী (রাঃ) এ দৃশ্য দেখে বললেন, إِنَّ لِىْ مِنَ الْوَلَدِ عَشَرَةً مَا قَبَّلْتُ أَحَدًا مِِّنْهُمْ. ‘আমার দশটি সন্তান আছে, আমি তাদের কাউকেই কোন দিন চুম্বন করিনি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, إِنَّهُ مَنْ لاَ يَرْحَمْ لاَ يُرْحَمْ ‘যে দয়া করে না, তাকে দয়া করা হয় না’।[4]
অন্য আরেকটি হাদীছে এসেছে-
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : قَدِمَ نَاسٌ مِّنَ الْأَعْرَابِ عَلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوْا : أَتُقَبِّلُوْنَ صِبْيَاَكُمْ؟ قَالُوْا : نَعَمْ، فَقَالُوْا لَكِنَّا وَاللهِ! مَانُقَبِّلُ فَقََالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَمْلِكُ أَنْ كَانَ اللهُ قَدْ نَزَعَ مِنْكُمُ الرَّحْمَةَ.
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদল বেদুঈন নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, তোমরা কি তোমাদের সন্তানদেরকে চুমু দাও? উপস্থিত সবাই বলল, হ্যাঁ। তখন তারা বলল, কিন্তু আল্লাহর কসম! আমরা তাদেরকে চুমু দেই না। তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, ‘আল্লাহ তোমাদের অন্তর থেকে মায়া-মমতা তুলে নিলে আমি কী করতে পারি’।[5]
সন্তান জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে মায়ের নিকট অধিক সময় থাকে। তাই মায়ের অপত্য স্নেহের পরশ না পেলে সে নিজেকে অসহায় মনে করবে। মনরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অসহায়ত্বের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এমন রূপ ধারণ করবে যা সারা জীবন খেসারত দিয়েও পরিশোধ করা যাবে না।
পিতৃহারা সন্তানের প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ :
সন্তানকে সমাজ ও সংসার জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পিতা যেমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, অনুরূপভাবে মাকেও তাতে অংশগ্রহণ করতে হবে। আর পিতা মারা গেলে মা-ই এ মহান দায়িত্ব পালনে সব রকম সহযোগিতা প্রদানে ব্রতী হবেন। স্বামীর মৃত্যুর পর চেহারা-সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও অন্যের গৃহে না গিয়ে ইয়াতীম সন্তানদের প্রতিপালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে পারেন এমন মহিলা সত্যিই নারী জাতির গৌরব। এ গৌরব অর্জনের জন্য তাকে প্রতিটি পদে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
প্রাথমিক জ্ঞান দান :
শিশু জন্ম হ’তে বিদ্যালয়ে গমনের পূর্ব পর্যন্ত মায়ের সান্নিধ্যে লালিত-পালিত হয়। আর মায়ের কোল থেকেই শিশুর শিক্ষা তথা জ্ঞান আহরণের যাত্রা শুরু হয়। শিশুর মন এ সময় অত্যন্ত কোমল থাকে, সে জন্য তখন তাকে যে শিক্ষা দেয়া হয়, তা সে সহজে গ্রহণ করে। এ শিক্ষা তার ভবিষ্যৎ জীবনের পাথেয় হিসাবে কাজ করে। তাই শিশুর মুখে আধো আধো বুলি ফুটতে শুরু করলে মাকে কথা বলার সময় অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সন্তানের সামনে কটু বা খারাপ বাক্য উচ্চারণ করা হ’তে সংযত হওয়া বাঞ্ছনীয়। ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করা প্রয়োজন। মায়ের মিষ্টিমিষ্টি কথা শিশুর অন্তরে প্রবলভাবে রেখাপাত করে। মা ইসলামের সুমহান শিক্ষার কথা সুমধুর ভাষায় শিশুর মাঝে ছড়িয়ে দিবেন। তাকে ইসলামের প্রাথমিক বিষয়সমূহ শিক্ষা দিবেন। অধিক ভোজনের অপকারিতা, জোরে চীৎকার করে কথা না বলা সম্পর্কে জ্ঞান দান করবেন। দুষ্টু প্রকৃতির ছেলে-মেয়েদের সাথে মিশতে, মিথ্যা ও অহেতুক কথা বলার মত অশালীন কাজ থেকে তাদেরকে বিরত রাখবেন। নিজেদের কাজ যথাসম্ভব নিজ হাতে করার অভ্যাস গড়ে তুলতে শিক্ষা দিবেন। ভাল কাজ করলে ধন্যবাদ প্রদান এবং মন্দ কাজ করলে মৃদু শাসন করতে হবে।
শিশু একটি পুষ্পকলি। মা তার মধ্যে মানবীয় গুণাবলী, সুন্দর চরিত্রের রং, রূপ ও গন্ধ ভরে দিবেন। মায়ের অভিপ্রেত অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে শিশুর শিক্ষা হ’লে বৃহত্তর সমাজ ও জাতি নিঃসন্দেহে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে অভ্যস্ত করা :
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সৌন্দর্যের মূল ভিত্তি। কোন ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত তার শরীরকে পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি করার ব্যাপারে সচেষ্ট না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে ইসলামের মানদন্ডে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত এবং সর্বদিকে সম্মানিত ব্যক্তি বলে বিবেচিত হবে না। আর যতক্ষণ পর্যন্ত পানাহার ও পোষাক-পরিচ্ছদের বেলায় সকল প্রকার ময়লা ও অপরিচ্ছন্নতা থেকে দূরে থাকতে পারবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত সে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে না। এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি মা তার ছোট্টমণিকে শিশুকাল থেকে শিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট হবেন। শরীরের রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকার নিমিত্তে কাপড়-চোপড় পরিচ্ছন্ন, খাদ্যদ্রব্য পবিত্র রাখা এবং খাদ্যের পাত্র পরিষ্কার করা একান্ত দরকার। এ ব্যাপারে মা সন্তানকে অভ্যস্ত করে তুলবেন। কারণ পবিত্রতা আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়তা দান করে। এ ব্যাপারে কুরআন মাজীদে এরশাদ হয়েছে, إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيْنَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِيْنَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ ২/২২২)।
যেমনিভাবে নিজের শরীর ও মনকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, তেমনিভাবে ঘর-দরজা, বাড়ীর চারপাশের পরিবেশ, রাস্তা-ঘাট, পরিষ্কার রাখতে হবে। একথা মা তার সন্তানকে শৈশব থেকে হাতে কলমে শিক্ষা দিয়ে এ ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলবেন। রাসূল (ছাঃ) এ সম্পর্কে বলেন, نَظِّفُوْا أَفْنِيَتَكُمْ. ‘তোমরা তোমাদের বাড়ির আঙ্গিনা ও সম্মুখ ভাগ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখ’।[6]
শৈশবে শিশুর মন অত্যন্ত পবিত্র এবং নরম থাকে। নরম মাটিকে কুমার যা ইচ্ছা তা করতে পারে। অনুরূপভাবে মা পবিত্র নরম হৃদয়ের শিশুটিকে পবিত্রতা তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যেরূপ প্রশিক্ষণ দান করবেন, সেভাবে জীবনের বাকী দিনগুলি সে অতিবাহিত করবে।
সৌজন্যবোধ শিক্ষা দান :
শিশু-সন্তান মাকে বেশী অনুসরণ করে। তাই মা শৈশবেই শিশুকে সৌজন্যবোধ শিক্ষা দিবে। যাতে করে শিশু প্রশংসনীয় কাজ ও সুন্দর চরিত্রে সজ্জিত হয়ে বড় হ’তে পারে। সন্তান যেহেতু বিশ্ব প্রকৃতির পবিত্র উপাদান এবং সমাজরূপী প্রাসাদের ইট সমতুল্য, সেহেতু সন্তানকে ভদ্রতা, বিনয়, সরলতা, সততা, সত্যবাদিতা ইত্যাদি গুণাবলী শিক্ষা দানে মাতা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। একজন শিশু পরবর্তী জীবনে পৃথিবীর সকলের নিকট এক আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠার জন্যই মায়ের নিকট হ’তে সে এই গুণাবলী অর্জনের অধিক হকদার।
উন্নত মন-মানসিকতা গঠন :
মানুষ আল্লাহর খলীফা। আল্লাহর হুকুম-আহকাম পালন করাই মানুষের প্রকৃত দায়িত্ব ও কর্তব্য। প্রতিটি মানুষের উপর একদিকে রয়েছে স্রষ্টার অধিকার, আর অপর দিকে রয়েছে অগণিত সৃষ্টির অধিকার। স্রষ্টা এবং সৃষ্টির অধিকার সুন্দররূপে আদায়ের জন্য সন্তানের উন্নত মন-মানসিকতা গঠন করার ব্যাপারে মাকে সচেষ্ট হ’তে হবে। শিশুর মনের সুকুমার বৃত্তিগুলি জাগ্রত করতে হবে। তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে আল্লাহর অধিকার পূর্ণরূপে আদায় করলে পরকালে চির সুখের স্থান জান্নাত পাওয়া যাবে। আর তা আদায় না করলে চরম শাস্তির সম্মুখীন হ’তে হবে। সৃষ্টির প্রতি অধিকার বলতে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন তথা বিশ্বের সকল সৃষ্টজীবের সাথে উত্তম আচরণ করলে ইহজীবনে শান্তি ও পরজীবনে পুরষ্কার লাভে সক্ষম হবে, একথা তাদের মনের মধ্যে গ্রোথিত করে দিতে হবে। এছাড়াও অপসংস্কৃতির সয়লাব থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাদেরকে মানসিকভাবে প্রস্ত্তত করতে হবে। তাদের মধ্যে বীরত্ব, দৃঢ়তা সৃষ্টি করা এবং ভীরুতা-কাপুরুষতা পরিহারের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বৈধ সীমানার মধ্যে অবস্থান করে নিজের আত্মসম্মানবোধ ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান দিতে হবে। অপরপক্ষে অন্যের সম্মান যেন বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মোটকথা তাদেরকে পরিকল্পিত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে, যাতে করে তারা নিজেদেরকে বিশ্ববাসীর সামনে এক উত্তম উদাহরণ হিসাবে পেশ করতে সক্ষম হয়।
ব্যবহারিক শিক্ষা দান :
দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজ রয়েছে, যা একজন মানুষ জীবনের ঊষালগ্ন হ’তে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হ’লে বড় হয়ে তা পালনে ব্যর্থ হয়। নিজের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় গোছানো, ঘর-দুয়ার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, অযূ-গোসল করে পাক-ছাফ হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে সন্তানকে শিক্ষা দিতে হবে। বিশেষ করে মেয়ে সন্তানকে গৃহস্থালী কাজ-কর্মে অভ্যস্ত করে তোলা, রান্না-বান্না ও অন্যান্য কাজের শিক্ষা দিয়ে দক্ষ ও সুনিপুণ করে গড়ে তুলতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে তারা আদর্শ গৃহিনী হ’তে পারে। মানুষের চলার পথে ব্যবহারিক জীবনের কাজগুলি শিক্ষা দিয়ে সন্তানকে ভবিষ্যৎ জীবনের সোপান তৈরী করে দিতে মা একটি উত্তম প্রতিষ্ঠান। একথা স্মরণ রেখে প্রত্যেক মায়ের স্বীয় দায়িত্ব পালন করাই সন্তানের অধিকার।
তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া :
সন্তানের তত্ত্বাবধান করা একজন আদর্শ মায়ের বড় কর্তব্য। সন্তানকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৎ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই মাকে তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হ’তে হয়। সন্তানকে উত্তমরূপে গড়ে তোলার ব্যাপারে মাকেই মমতাময়ীর ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলাম মাকে গৃহের দায়িত্বশীলরূপে স্থির করেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক আদম সন্তান কর্তা। পুরুষ তার পরিবারের কর্তা আর নারী তার ঘরের কর্ত্রী’।[7] হাদীছে এসেছে, وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجِهَا وَوَلَدِهِ، وَهِىَ مَسْئُوْلَةٌ عَنْهُمْ. ‘স্ত্রীরা নিজের স্বামীর ঘর ও তার সন্তানের রক্ষক, সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’।[8]
সন্তানের প্রতিটি ক্ষেত্রে মা উত্তম পরিচালক হিসাবে পরিচয় দিতে না পারলে শিশুর উপরে উঠার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। চালক একটু অমনোযোগী হবার কারণে যেমনভাবে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে, তেমনভাবে মা তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে সামান্যতম বেখেয়াল হ’লে সন্তানের জীবনের সোনালী সূর্য অস্তমিত হয়ে কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। অতএব এ বিষয়ে আমাদের আরো সচেতন হ’তে হবে।
[চলবে]
প্রভাষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী কোর্ট কলেজ।
[1]. বুখারী হা/১৮১, ১৮৪; রিয়াযুছ ছালেহীন, হা/১৪৯ ‘ইবাদতে মধ্য পন্থা’ অনুচ্ছেদ।
[2]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ; মিশকাত হা/৯০।
[3]. আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ; মিশকাত হা/২০২৫, সনদ জাইয়িদ বা উত্তম।
[4]. তিরমিযী হা/১৯১১; আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৯১, হাদীছ ছহীহ।
[5]. ইবনু মাজাহ হা/৩৬৫, হাদীছ ছহীহ।
[6]. তিরমিযী হা/২৭৯৯; মিশকাত হা/৪৪৮৭, হাদীছ হাসান।
[7]. সিলসিলা ছহীহা ৫/৬৯ পৃঃ, হা/২০৪১।
[8]. বুখারী হা/৫২০০; মিশকাত হা/৩৬৮৫।