পাঁচ. কুরআন তেলাওয়াত : সাধারণভাবে কুরআন তেলাওয়াতের ছওয়াব মৃতের জন্য বখশানো যাবে না। কারণ এ ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পূর্বে তাঁর একাধিক স্ত্রী ও ছয় সন্তান মৃত্যুবরণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি কারো নামে কুরআন তেলাওয়াত করে বখশিয়েছেন মর্মে কোন বর্ণনা নেই। ছাহাবায়ে কেরাম তাঁদের কোন আত্মীয়ের জন্য এমন কাজ করেছেন বলেও জানা যায় না। অতএব হাদীছে যতটুকু বর্ণিত হয়েছে তার উপরেই অটল থাকতে হবে।[1]

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, وَالْمَشْهُورُ فِي مَذْهَبِنَا أَنَّ قِرَاءَةَ الْقُرْآنِ لَا يَصِلُهُ ثَوَابُهَا، ‘আমাদের মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত হ’ল, কুরআন তেলাওয়াতের ছওয়াব মাইয়েতের নিকট পৌঁছবে না’।[2] তিনি আরো বলেন,وَأَمَّا قِرَاءَةُ الْقُرْآنِ وَجَعْلُ ثَوَابِهَا لِلْمَيِّتِ وَالصَّلَاةُ عَنْهُ وَنَحْوُهُمَا فَمَذْهَبُ الشَّافِعِيِّ وَالْجُمْهُورِ أَنَّهَا لَا تَلْحَقُ الْمَيِّتَ، ‘কুরআন তেলাওয়াত করে মাইয়েতের জন্য তা বখশানো, তার পক্ষ থেকে ছালাত আদায় করা এবং এ ধরনের দৈহিক ইবাদতের ব্যাপারে শাফেঈ ও জমহুর ওলামায়ে কেরামের মাযহাব হ’ল তা মাইয়েতের নিকটে পৌঁছবে না’।[3]

শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) কুরআন তেলাওয়াতের ছওয়াব মৃতের নিকটে পৌঁছা বা না পৌঁছার ব্যাপারে ইমামদের মতপার্থক্যের সমালোচনা করে বলেন,فَلَمْ يَكُنْ مِنْ عَادَةِ السَّلَفِ إذَا صَلَّوْا تَطَوُّعًا وَصَامُوا وَحَجُّوا أَوْ قَرَءُوا الْقُرْآنَ يَهْدُونَ ثَوَابَ ذَلِكَ لِمَوْتَاهُمْ الْمُسْلِمِينَ وَلَا لِخُصُوصِهِمْ بَلْ كَانَ عَادَتُهُمْ كَمَا تَقَدَّمَ فَلَا يَنْبَغِي لِلنَّاسِ أَنْ يَعْدِلُوا عَنْ طَرِيقِ السَّلَفِ فَإِنَّهُ أَفْضَلُ وَأَكْمَلُ وَالله أَعْلَمُ- ‘সালাফদের এটা নীতি ছিল না যে, যখন তারা নফল ছালাত আদায় করতেন, ছিয়াম পালন করতেন, হজ্জ সম্পাদন করতেন বা কুরআন তেলাওয়াত করতেন তখন সেগুলোর ছওয়াব তাদের মুসলিম মৃত ব্যক্তিগণ বা তাদের নিকটতম ব্যক্তিদের জন্য বখ্শে দিতেন। বরং তাদের নীতি ছিল যেমনটি পূর্বে আলোচিত হয়েছে। সুতরাং মানুষের জন্য সালাফদের পথ থেকে বিচ্যুত হওয়া সমীচীন নয়। কেননা সালাফদের পথই সর্বোত্তম ও পূর্ণাঙ্গ। আল্লাহ সঠিক অবগত’।[4] এটি ছিল ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ)-এর সর্বশেষ আমল ও ফৎওয়া।

ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, لاَ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ وَلاَ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍِِِ،ِ ‘কেউ কারো পক্ষ থেকে ছিয়াম রাখতে পারে না বা ছালাত আদায় করতে পারে না’।[5] কারণ এগুলি দৈহিক ইবাদত। যা জীবদ্দশায় যেমন কাউকে দেওয়া যায় না, মৃত্যুর পরেও তেমনি কাউকে দেওয়া যায় না। বরং আমল যার ফল তার। আল্লাহ বলেন,مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ أَسَاءَ فَعَلَيْهَا، ‘যে ব্যক্তি নেক আমল করল, সেটি তার নিজের জন্যই করল। আর যে ব্যক্তি মন্দ কর্ম করল, তার পাপ তার উপরেই বর্তাবে’ (হা-মীম সাজদাহ/ফুছছিলাত ৪১/৪৬)। অতএব অন্যের কোন নেক আমল মাইয়েতের আমলনামায় যোগ হবে না। কেবল অতটুকু ব্যতীত, যে বিষয়ে উপরে বর্ণিত হয়েছে।

সুতরাং সমাজে প্রচলিত ‘কুরআন ও কলেমাখানী’ অর্থাৎ পুরা কুরআন পাঠ করে ও এক লক্ষ বার কালেমা ত্বাইয়েবা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়ে মাইয়েতের উপর তার ছওয়াব বখ্শে দেওয়া বা ঈছালে ছওয়াবের প্রথা ইসলামের নামে একটি বিদ‘আতী প্রথা মাত্র। যাকে এদেশে ‘লাখ কালেমা’ বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যামানায় এর কোন অস্তিত্ব ছিল না। স্বর্ণযুগের পরে অমুসলিমদের দেখাদেখি এগুলি মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে। অনেকে হজ্জ ও ছিয়ামের বিষয়টিকে ঈছালে ছওয়াবের দলীল হিসাবে পেশ করে থাকেন। অথচ শরী‘আতে মাল ‘হেবা’ করার দলীল আছে। কিন্তু ছওয়াব ‘হেবা’ করার দলীল নেই। যেমন বদলী হজ্জকারী বলেন, ‘লাববাইক ‘আন ফুলান’ (অমুকের পক্ষ হ’তে আমি হাযির)। এখানে যদি কেউ নিজের হজ্জ করার পরে বলে যে, আমার এই হজ্জের নেকী অমুককে দিলাম। তবে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ নিজের হজ্জের নেকী সে নিজে পাবে, অন্যে পাবে না। আর ছওয়াব হ’ল আমলের প্রতিদান মাত্র। যেমন আল্লাহ বলেন, جَزَاءً بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ ‘(বান্দাগণ পাবে) তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ’ (সাজদাহ ৩২/১৭)

বস্ত্ততঃ কুরআন এসেছিল জীবিতদের পথ দেখানোর জন্য (ইয়াসীন ৩৬/৭০), মৃতদের জন্য নয়। আব্দুর রহমান বিন শিবল (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে,إِقْرَءُوْا الْقُرْآنَ وَلاَ تَغْلُوْا فِيْهِ وَلاَ تَجْفُوْا عَنْهُ وَلاَ تَأْكُلُوْا بِهِ وَلاَ تَسْتَكْثِرُوْا بِهِ- ‘তোমরা কুরআন পাঠ কর। এতে বাড়াবাড়ি করো না এবং এর তেলাওয়াত থেকে দূরে থেকো না। এর মাধ্যমে তোমরা খেয়ো না ও সম্পদ বৃদ্ধি করো না’।[6] অথচ ‘কুলখানী’ ও ‘কুরআনখানী’ প্রভৃতির মাধ্যমে কুরআন এখন আমাদের খাদ্য ও সম্পদ বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এতে কুরআন আমাদের জন্য শাফা‘আত করবে না। বরং লা‘নত করবে। এজন্যেই প্রবাদ বাক্য চালু হয়েছে, رُبَّ تَالٍ لِلْقُرْآنِ وَالْقُرْآنُ يَلْعَنُهُ ‘বহু কুরআন তেলাওয়াতকারী আছে, কুরআন যাদের উপর লা‘নত করে থাকে’।[7] যেমন খারেজী চরমপন্থীদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَلاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ، ‘তারা কুরআন তেলাওয়াত করবে। কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না...’।[8] অর্থাৎ কুরআনের প্রকৃত মর্ম তারা অনুধাবন করবে না। ফলে কুরআন আগমনের উদ্দেশ্য বিরোধী কাজে তারা কুরআনকে ব্যবহার করবে।[9] এ কারণেই রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهَذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِهِ آخَرِينَ، ‘আল্লাহ এই কিতাব দ্বারা বহু দলকে উঁচু করেন ও বহু দলকে নীচু করেন’।[10]

বর্তমান মুসলিম সমাজে ইসলামের নামে বহু কিছু চালু রয়েছে। যা আদৌ ইসলামী প্রথা নয়। এ বিষয়ে মূলনীতি হিসাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ، ‘যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে নতুন কিছু উদ্ভাবন করল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[11]

ঈছালে ছওয়াব সম্পর্কে বর্ণিত কিছু যঈফ ও জাল বর্ণনা পর্যালোচনা :

এ বিষয়ে মূলতঃ কিছু যঈফ ও জাল হাদীছ বলা হয়ে থাকে, যা বিভিন্ন অপ্রসিদ্ধ হাদীছ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। যেমন-

(١) عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :مَنْ مَرَّ عَلَى الْمَقَابِرِ وَقَرَأَ قُلْ هُوَ الله أَحَدٌ إِحْدَى عَشْرَةَ مَرَّةً، ثُمَّ وَهَبَ أَجْرَهُ لِلْأَمْوَاتِ أُعْطِيَ مِنَ الْأَجْرِ بِعَدَدِ الْأَمْوَاتِ-

(১) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কবরে গিয়ে ১১ বার সূরা ইখলাছ পড়বে এবং তার ছওয়াব মৃত ব্যক্তিদের জন্য বখ্শে দিবে, সে ব্যক্তিকে মৃতদের সংখ্যা অনুপাতে ছওয়াব দেওয়া হবে’।[12]

পর্যালোচনা : বর্ণনাটি জাল ও বাতিল। উক্ত সনদে তিনজন মিথ্যাবাদী রাবী রয়েছে।[13]

(٢) عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ دَخَلَ الْمَقَابِرَ ثُمَّ قَرَأَ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَقُلْ هُوَ الله أَحَدٌ وَأَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ ثُمَّ قَالَ إِنِّي جَعَلْتُ ثَوَابَ مَا قَرَأْتُ مِنْ كَلَامِكَ لِأَهْلِ الْمَقَابِرِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ كَانُوا شُفَعَاءَ لَهُ إِلَى اللهِ تَعَالَى-

(২) আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কবরস্থানে গিয়ে সূরা ফাতিহা, ইখলাছ ও তাকাছুর পড়বে। অতঃপর বলবে যে, ‘আমি তোমার যে কালাম পড়লাম তার ছওয়াব কবরস্থানের সকল মুমিন-মুসলমানকে বখ্শে দিলাম। তাহ’লে ঐ মাইয়েতগণ আল্লাহর নিকট তার জন্য সুফারিশ করবেন’।[14]

পর্যালোচনা : উক্ত হাদীছটির সনদ যঈফ।

(٣) عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ دَخَلَ الْمَقَابِرَ فَقَرَأَ سُورَةَ يس خَفَّفَ الله عَنْهُمْ وَكَانَ لَهُ بِعَدَدِ مَنْ فِيهَا حَسَنَاتٌ-

(৩) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করবে ও সূরা ইয়াসীন পাঠ করবে, আল্লাহ ঐ মোর্দাদের কবরের আযাব হালকা করে দিবেন এবং পাঠকারীর জন্য কবরস্থ ব্যক্তিদের সমপরিমাণ ছওয়াব দিবেন’।[15]

পর্যালোচনা : উক্ত বর্ণনার সনদে তিনজন যঈফ, মাজহূল (অপরিচিত) ও মিথ্যাবাদী রাবী রয়েছে।[16]

(٤) عن عَليّ بن أبي طَالب مَا من مُؤمن وَلَا مُؤمنَة يقْرَأ آيَة الْكُرْسِيّ وَيجْعَل ثَوَابهَا لأهل الْقُبُور لَا يبْقى على وَجه الأَرْض قبر إِلَّا أَدخل الله فِيهِ نورا ووسع قَبره من الْمشرق إِلَى الْمغرب وَأَعْطَاهُ الله بِكُل ملك فِي السَّمَوَات عشر حَسَنَات وَكتب الله للقاري ثَوَاب سبعين شَهِيدا-

(৪) আলী বিন আবী তালেব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন কোন মুমিন পুরুষ বা নারী আয়াতুল কুরসী পড়বে ও তার ছওয়াব কবরবাসীদের জন্য বখ্শে দিবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা ভূপৃষ্ঠের সকল কবরে নূর প্রবেশ করিয়ে দিবেন, তার কবরকে পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত প্রশস্ত করে দিবেন, আকাশের প্রত্যেক ফেরেশতার বিপরীতে দশটি করে ছওয়াব দান করবেন এবং পাঠকারীর জন্য সত্তর জন শহীদের ছওয়াব লিখে দিবেন’।[17]

পর্যালোচনা : বর্ণনাটি জাল ও বাতিল। ইবনু ইরাক আল- কিনানী (রহঃ) বলেন, এই আছারের সনদে আলী বিন ওছমান আল-আশাজ্জ নামে একজন মহামিথ্যুক রাবী রয়েছে।[18] ইমাম যাহাবীও তাকে মহামিথ্যুক বলে অভিহিত করেছেন।[19]

আনাস (রাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে আরেকটি বর্ণনায় এসেছে যে, إذا قرأ المؤمن آية الكرسي، وجعل ثوابها لأهل القبور، أدخل الله تعالى في كل قبر مؤمن من المشرق إلى المغرب أربعين نوراً، ووسع الله عز وجل عليهم مضاجعهم، وأعطى الله للقارئ ثواب ستين نبياً، ورفع له بكل ميت درجة، وكتب له بكل ميت عشر حسنات، ‘যখন কোন মুমিন আয়াতুল কুরসী পড়বে ও তার ছওয়াব মৃতদের জন্য বখ্শে দিবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের সকল মুমিনের কবরে চল্লিশটি নূর প্রবেশ করিয়ে দিবেন এবং তাদের কবরগুলিকে প্রশস্ত করে দিবেন। পাঠকারীকে ৬০ জন নবীর ছওয়াব দিবেন। প্রত্যেক মাইয়েতের বিপরীতে তার মর্যাদার স্তর একটি করে বৃদ্ধি করে দিবেন এবং প্রত্যেক মাইয়েতের বিপরীতে তার আমলনামায় দশটি করে নেকী লিপিবদ্ধ করবেন’।[20]

পর্যালোচনা : উক্ত সনদে একাধিক মাজহূল বা অপরিচিত রাবী রয়েছে। সেজন্য মুহাদ্দিছগণ বর্ণনাটিকে জাল বলেছেন।

ছাহেবে তুহফা বলেন, উপরোক্ত হাদীছগুলি ঈছালে ছওয়াবের পক্ষে বলা হয়ে থাকে। অথচ এগুলি সবই যঈফ। মুহাদ্দিছ বিদ্বানগণ যে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন’।[21]

আল্লাহ বলেন,وَأَنْ لَيْسَ لِلْإِنْسَانِ إِلاَّ مَا سَعَى، وَأَنَّ سَعْيَهُ سَوْفَ يُرَى، ثُمَّ يُجْزَاهُ الْجَزَاءَ الْأَوْفَى- ‘মানুষ তাই পায়, যা সে চেষ্টা করে’। ‘আর তার কর্ম সত্বর দেখা হবে’। ‘অতঃপর তাকে পূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে’ (নাজ্ম ৫৩/৩৯-৪১)। আল্লাহর এই স্পষ্ট বক্তব্য থাকার পরেও আমল না করে মাইয়েত কিভাবে অন্যের আমলের ছওয়াব পেতে পারেন? তাহ’লে তো ধনী মানুষেরা তাদের সম্পদের বিনিময়ে বিভিন্ন লোককে দিয়ে কুরআন তেলাওয়াত, ছালাত, ছিয়াম করিয়ে তাদের পিতা-মাতাদের আমলনামা ভারী করতে পারেন। যা কখনোই সম্ভব নয়। অথবা দ্বীনদার সন্তান প্রতিদিন তার ছালাতের সঙ্গে পিতা-মাতার জন্য অতিরিক্ত ছালাত যোগ করে তাদের আমলনামা ভরে দিতে পারেন। বস্ত্ততঃ এগুলি সবই কল্পনা মাত্র। যার ব্যাপারে শরী‘আতের কোন দলীল নেই। তবে সন্তানের আর্থিক ইবাদতের ছওয়াব মাইয়েত পাবেন। এ বিষয়ে বিদ্বানগণের মধ্যে কোন মতভেদ নেই।

(٥) عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ دِينَارٍأَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ إنَّهُ كَانَ لِي أَبَوَانِ أُبِرُّهُمَا فِي حَالِ حَيَاتِهِمَا، فَكَيْفَ لِي بِبِرِّهِمَا بَعْدَ مَوْتِهِمَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : إنَّ مِنَ الْبِرِّ بَعْدَ الْبِرِّ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَيْهِمَا مَعَ صَلاَتِكَ، وَأَنْ تَصُومَ عْنهُمَا مَعَ صِيَامِكَ، وَأَنْ تَصَدَّقَ عَنْهُمَا مَعَ صَدَقَتِك-

(৫) হাজ্জাজ ইবনু দীনার হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি আমার পিতা-মাতার জীবদ্দশায় তাদের সাথে নেকীর কাজ করতাম। এখন তাদের মৃত্যুর পর তাদের সাথে কিভাবে নেকীর কাজ করব? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, নেকীর পরে নেকী এই যে, নিজের ছালাতের সাথে তাদের জন্য ছালাত আদায় করবে এবং নিজের ছিয়ামের সাথে তাদের জন্য ছিয়াম রাখবে। আর তোমার ছাদাক্বার সাথে ছাদাক্বা করবে’।[22]

পর্যালোচনা : হাদীছটি যঈফ।[23] ইমাম নববী বলেন, এর সনদ মুনকাতে‘। এর দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যাবে না।[24] ছাহেবে তুহফাও উক্ত হাদীছের সনদকে যঈফ প্রমাণ করেছেন।[25] সম্ভবতঃ এ হাদীছের উপরে ভিত্তি করেই অনেকে ‘উমরী ক্বাযা’ আদায় করেন। যা ঠিক নয়।

(٦) عَن صَالِحِ بْنِ دِرْهَمٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبِى يَقُولُ انْطَلَقْنَا حَاجِّينَ فَإِذَا رَجُلٌ فَقَالَ لَنَا إِلَى جَنْبِكُمْ قَرْيَةٌ يُقَالُ لَهَا الأُبُلَّةُ قُلْنَا نَعَمْ. قَالَ مَنْ يَضْمَنُ لِى مِنْكُمْ أَنْ يُصَلِّىَ لِى فِى مَسْجِدِ الْعَشَّارِ رَكْعَتَيْنِ أَوْ أَرْبَعًا وَيَقُولَ هَذِهِ لأَبِى هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ خَلِيلِى أَبَا الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : إِنَّ اللهَ يَبْعَثُ مِنْ مَسْجِدِ الْعَشَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُهَدَاءَ لاَ يَقُومُ مَعَ شُهَدَاءِ بَدْرٍ غَيْرُهُمْ.

(৬) ছালেহ বিন দিরহাম হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি যে, আমরা হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হ’লাম। তখন এক ব্যক্তি আমাদেরকে বললেন, তোমাদের পাশেই একটি গ্রাম আছে যার নাম উবুল্লাহ। আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছ যে আমার নিকট এই মর্মে অঙ্গীকার করবে যে, সে আমার জন্য মসজিদে ‘আশ্শারে গিয়ে ২ অথবা ৪ রাক‘আত ছালাত পড়বে এবং বলবে যে, এটি আবু হুরায়রার জন্য। কারণ আমি আমার বন্ধু মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা মসজিদে ‘আশ্শার থেকে শহীদদের উঠাবেন। তারা ছাড়া কেউ বদরী শহীদদের সমতুল্য হবে না’।[26]

পর্যালোচনা : ঈছালে ছওয়াবের পক্ষে এই হাদীছটি দলীল হিসাবে পেশ করা হয়, যা নিতান্তই ভুল। কারণ প্রথমতঃ হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ। উক্ত বর্ণনায় ইবরাহীম ও তার পিতা ছালেহ বিন দিরহাম উভয়ই যঈফ। ইমাম বুখারী, যাহাবী, দারাকুৎনী, ঊকায়লী, আলবানী প্রমুখ মুহাক্কিকগণ তাদেরকে যঈফ বলেছেন।[27] দ্বিতীয়তঃ এখানে ঈছালে ছওয়াব বুঝানো হয়নি, বরং প্রতিনিধিত্ব (নিয়াবত) বুঝানো হয়েছে। যা আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর হুকুমে ও তাঁর অছিয়ত মোতাবেক ছিল। এর দ্বারা কেবল ছালাত বুঝানো হয়েছে, ছালাতের ছওয়াব বখ্শে দেওয়া বুঝানো হয়নি।[28]

(٧) عن عَبْد اللهِ بْن عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَلَا تَحْبِسُوهُ وَأَسْرِعُوا بِهِ إِلَى قَبْرِهِ وَلْيُقْرَأْ عِنْدَ رَأْسِهِ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ وَعِنْدَ رِجْلَيْهِ بِخَاتِمَةِ الْبَقَرَةِ فِي قَبْرِهِ -

(৭) আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘তোমাদের কেউ মারা গেলে তাকে আটকে রেখ না। বরং দ্রুত কবরস্থ কর। আর তার মাথার নিকটে সূরা ফাতিহা এবং পায়ের দিকে সূরা বাক্বারাহ-এর শেষাংশ পাঠ কর’।[29]

পর্যালোচনা : হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ। এর সনদে ইয়াহ্ইয়া বিন আব্দুল্লাহ বাবেলতী ও আইউব বিন নুহায়েক রয়েছে, যারা অত্যন্ত যঈফ। যাদেরকে হাফেয যাহাবী, ইবনু হাজার, হায়ছামী, আযদী, আবু যুর‘আ, আবু হাতেম ও আলবানীসহ বহু মুহাক্কিক্ব যঈফ, মুনকারুল হাদীছ ও মাতরূকুল হাদীছ বলেছেন। এমনকি ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে মওকূফ সূত্রটিও যঈফ। উক্ত সনদে আব্দুর রহমান বিন আলালাজলাজ নামে একজন অপরিচিত বর্ণনাকারী রয়েছে, যে সর্বসম্মতিক্রমে যঈফ।[30]

(٨) عَن أبي بكر الصّديق رَضِي الله عَنهُ قَالَ: قَالَ رَسُول الله مَنْ زَارَ قَبْرَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدِهِمَا فِي كُلِّ جُمُعَةٍ فَقَرَأَ عِنْدَهُمَا يس غُفِرَ لَهُ بِعَدَدِ كُلِّ حَرْفٍ مِنْهَا-

(৮) আবুবকর ছিদ্দীক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক জুম‘আর দিন তার পিতা-মাতা বা তাদের একজনের কবর যিয়ারত করবে এবং তাদের নিকট সূরা ইয়াসীন পাঠ করবে তাকে ঐ সূরার প্রত্যেকটি বর্ণ পরিমাণ ক্ষমা করে দেওয়া হবে’।[31]

উক্ত বর্ণনাটি জাল ও ভিত্তিহীন। উক্ত সনদে আমর বিন যিয়াদ নামে একজন রাবী রয়েছে, যে হাদীছ জাল করত। তার ব্যাপারে সকল মুহাক্কিক্ব আলেম একমত যে, তার বর্ণিত হাদীছ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।[32]

(٩) عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ الله عَنْهُ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيه وسَلَّم : مَا مِنْ مَيِّتٍ يَمُوتُ فَيُقْرَأُ عِنْدَهُ يس إِلاَّ هَوَّنَ الله عَلَيْهِ-

(৯) আবুদ্দারদা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে কোন মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকটে সূরা ইয়াসীন পাঠ করা হ’লে আল্লাহ সহজে তার জান কবযের ব্যবস্থা করে দেন’।[33]

শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীছটি জাল। উক্ত বর্ণনায় মারওয়ান নামে একজন রাবী আছে, যে হাদীছ জাল করত। ইমাম বুখারী, মুসলিম ও আবু হাতেম (রহঃ) তার ব্যাপারে বলেন, সে মুনকারুল হাদীছ। আবু হারূবা হারানী বলেন, সে হাদীছ জালকারী। সাজী বলেন, সে মিথ্যুক, হাদীছ জালকারী।[34] ইমাম আহমাদ ও ইবনু মঈন বলেন, মারওয়ান বিশ্বস্ত নয়।[35]

(١٠) عَنِ الشَّعْبِيِّ قَالَ كَانَتِ الأَنْصَارُ يَقْرَؤُونَ عِنْدَ الْمَيِّتِ بِسُورَةِ الْبَقَرَةِ-

(১০) শা‘বী হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আনছারগণ মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকটে সূরা বাক্বারাহ তেলাওয়াত করতেন’।[36] এর সনদে মুজালিদ নামে একজন রাবী আছে, যার ব্যাপারে ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, সে শক্তিশালী নয়।[37] ইমাম আহমাদ, ইমাম বুখারী, ঊকাইলী, ইবনু হিববান, ইমাম নাসাঈ, দারাকুৎনী (রহঃ) প্রমুখ তাকে যঈফ বলেছেন।[38]

(١١) عَن الشّعبِيّ قَالَ كَانَت الْأَنْصَار إِذا مَاتَ لَهُم الْمَيِّت اخْتلفُوا إِلَى قَبره يقرءُون عِنْده الْقُرْآن-

(১১) শা‘বী হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনছারদের কেউ যখন মারা যেত তখন তারা তার কবরের নিকট এসে কুরআন পাঠ করত।[39] শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, ইবনু আবী শায়বাহ (রহঃ) ‘রোগীর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হ’লে তার নিকট যা বলতে হবে’ নামে অধ্যায় রচনা করেছেন। এ থেকে বুঝা যায় এটি কবরের নিকট পাঠের বিষয় নয় বরং মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকটে পাঠের বিষয়। দ্বিতীয়ত: হাদীছটি যঈফ।[40] এ বর্ণনার সনদেও মুজালিদ বিন সাঈদ যঈফ রাবী রয়েছে। যার হাদীছ গ্রহণযোগ্য নয়।[41]

(١٢) عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ : الْبَقَرَةُ سَنَامُ الْقُرْآنِ وَذُرْوَتُهُ، وَنَزَلَ مَعَ كُلِّ آيَةٍ مِنْهَا ثَمَانُونَ مَلَكاً وَاسْتُخْرِجَتْ (الله لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ) مِنْ تَحْتِ الْعَرْشِ فَوُصِلَتْ بِهَا أَوْ فَوُصِلَتْ بِسُورَةِ الْبَقَرَةِ وَ( يس) قَلْبُ الْقُرْآنِ لاَ يَقْرَأُهَا رَجُلٌ يُرِيدُ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى وَالدَّارَ الآخِرَةَ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ وَاقْرَءُوهَا عَلَى مَوْتَاكُمْ-

(১২) মা‘কিল বিন ইয়াসার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সূরা বাক্বারাহ কুরআনের কুঁজ এবং শীর্ষ চূড়া। এর প্রত্যেক আয়াতের সাথে আশিজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। অতঃপর আয়াতুল কুরসী আরশের নীচ হ’তে বের করে তার সাথে মিলানো হয়েছে। অথবা সূরা বাক্বারাহ এবং কুরআনের হৃদয় সূরা ইয়াসীনকে তার সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। যে ব্যক্তি পরকালে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তা পাঠ করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর তোমরা এটি তোমাদের মুমূর্ষু ব্যক্তিদের নিকটে পাঠ কর’।[42]

উক্ত বর্ণনাটি দু’টি কারণে যঈফ। প্রথমতঃ এর সনদে দু’জন রাবীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। অথচ রাবীর নাম উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও বর্ণনাকারীর দুর্বলতার কারণে হাদীছ যঈফ হয়ে যায়। দ্বিতীয়তঃ এর সনদে ইযতিরাব রয়েছে।[43]

(١٣) عن عَبْد الرَّحْمَنِ بْن الْعَلَاءِ بْنِ اللَّجْلَاجِ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ لِي أَبِي: يَا بُنَيَّ إِذَا أَنَا مُتُّ فَأَلْحِدْنِي، فَإِذَا وَضَعْتَنِي فِي لَحْدِي فَقُلْ: بِسْمِ اللهِ وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللهِ، ثُمَّ سِنَّ عَلَيَّ الثَّرَى سِنًّا، ثُمَّ اقْرَأْ عِنْدَ رَأْسِي بِفَاتِحَةِ الْبَقَرَةِ وَخَاتِمَتِهَا، فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ ذَلِكَ –

(১৩) আব্দুর রহমান ইবনুল আ‘লা ইবনুল লাজলাজ তার পিতা হ’তে বর্ণনা করে বলেন, আমার পিতা আমাকে বলেন, হে বৎস! আমি মৃত্যুবরণ করলে আমাকে কবরস্থ করবে। আর আমাকে যখন কবরে রাখবে তখন বলবে ‘বিসমিল্লাহি ওয়া ‘আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহি’। অতঃপর আমার উপর পূর্ণ মাত্রায় মাটি ঢেলে দিবে। এরপর আমার মাথার নিকট সূরা বাক্বারার শুরু ও শেষের অংশ পাঠ করবে। কারণ আমি রাসূল (ছাঃ)-কে তা বলতে শুনেছি’।[44]

উক্ত সনদে আব্দুর রহমান বিন আ‘লা বিন লাজলাজ মাজহূল বা অপরিচিত রাবী।[45] কারণ তার থেকে মুবাশ্শির বিন ইসমাঈল ব্যতীত কেউ হাদীছ বর্ণনা করেনি। অতএব অত্র আছারটি দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

আলী বিন মূসা আল-হাদ্দাদ বলেন,

كُنْتُ مَعَ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ وَمُحَمَّدِ بْنِ قُدَامَةَ الْجَوْهَرِيِّ فِي جَنَازَةٍ، فَلَمَّا دُفِنَ الْمَيِّتُ جَلَسَ رَجُلٌ ضَرِيرٌ يَقْرَأُ عِنْدَ الْقَبْرِ، فَقَالَ لَهُ أَحْمَدُ: يَا هَذَا إِنَّ الْقِرَاءَةَ عِنْدَ الْقَبْرِ بِدْعَةٌ، فَلَمَّا خَرَجْنَا مِنَ الْمَقَابِرِ قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ قُدَامَةَ لِأَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ: يَا أَبَا عَبْدِ اللهِ، مَا تَقُولُ فِي مُبَشِّرٍ الْحَلَبِيِّ؟ قَالَ: ثِقَةٌ ، قَالَ: كَتَبْت عَنْهُ شَيْئًا؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: فَأَخْبَرَنِي مُبَشِّرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْعَلَاءِ بْنِ اللَّجْلَاجِ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ أَوْصَى إِذَا دُفِنَ أَنْ يُقْرَأَ عِنْدَ رَأْسِهِ بِفَاتِحَةِ الْبَقَرَةِ، وَخَاتِمَتِهَا، وَقَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يُوصِي بِذَلِكَ، فَقَالَ أَحْمَدُ: ارْجِعْ فَقُلْ لِلرَّجُلِ يَقْرَأُ-

(১৪) ‘আমি আহমাদ বিন হাম্বল ও মুহাম্মাদ বিন কুদামা জাওহারীর সাথে কোন এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। মাইয়েতের দাফনকার্য সম্পন্ন হ’লে জনৈক অন্ধ কবরের নিকটে বসে কুরআন পাঠ শুরু করল। তখন ইমাম আহমাদ তাকে বললেন, ওহে! কবরের নিকটে কুরআন পাঠ বিদ‘আত। আমরা যখন কবরস্থান হ’তে বের হ’লাম তখন মুহাম্মাদ ইবনু কুদামা ইমাম আহমাদকে বললেন, হে আবু আব্দুল্লাহ! মুবাশ্শির আল-হালাবীর ব্যাপারে আপনার মতামত কি? তিনি বললেন, সে বিশ্বস্ত। আপনি তার থেকে কোন কিছু লিখেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন ইবনু কুদামা বললেন, মুবাশ্শির আব্দুর রহমান বিন আ‘লা বিন লাজলাজ হ’তে তিনি তার পিতা হ’তে বর্ণনা করেন যে, তিনি এ মর্মে অছিয়ত করেছেন যে, যখন তাকে দাফন করা হবে তখন যেন তার মাথার নিকট সূরা বাক্বারার শুরু ও শেষ অংশ পাঠ করা হয়। আর তিনি বলেন, আমি ইবনু ওমরকে এ মর্মে অছিয়ত করতে শুনেছি। তখন ইমাম আহমাদ তাকে বললেন, ফিরে গিয়ে ঐ লোকটিকে কুরআন পাঠ করতে বল’।[46]

এ বর্ণনায় এমন একজন রাবী আছে, যার পরিচয় জানা যায় না। তাছাড়া ইমাম আহমাদ কি করে লোকটিকে কবরের নিকট কুরআন পাঠ করতে বললেন? অথচ তিনি এ বিষয়টিকে বিদ‘আত বলেছেন। তাকে কবরের নিকটে কুরআন পাঠের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, তা করা যাবে না।[47] আহমাদ থেকে এ ঘটনা বর্ণনার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। কারণ খাল্লালের শায়খ হাসান বিন আহমাদের পরিচয় রিজাল শাস্ত্রের কিতাবে পাওয়া যায় না। অনুরূপ তার শায়খ আলী বিন মূসার পরিচয়ও অজ্ঞাত। আর যদি ঘটনা সত্যও হয়, তাহ’লে ইমাম আহমাদের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হ’ল কবরের নিকটে কুরআন পাঠ মাকরূহ। আহমাদের ঘটনা সত্য মনে করলেও ইবনু ওমর থেকে এরূপ অছিয়ত ছহীহ সনদে বর্ণিত হয়নি। কারণ আব্দুর রহমান বিন আ‘লা বিন লাজলাজ মাজহূল বা অপরিচিত রাবী।[48] কারণ তার থেকে মুবাশ্শির বিন ইসমাঈল ব্যতীত কেউ হাদীছ বর্ণনা করেনি। তাছাড়া সনদ সাব্যস্ত হ’লেও তা হবে মাওকূফ। যাতে মূলত কোন দলীল নেই।[49]

ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,وَنَقَلَ الْجَمَاعَةُ عَنْ أَحْمَدَ كَرَاهَةَ الْقُرْآنِ عَلَى الْقُبُورِ وَهُوَ قَوْلُ جُمْهُورِ السَّلَفِ وَعَلَيْهَا قُدَمَاءُ أَصْحَابِهِ وَلَمْ يَقُلْ أَحَدٌ مِنْ الْعُلَمَاءِ الْمُعْتَبَرِينَ، ‘একদল আলেম ইমাম আহমাদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি কবরে কুরআন তেলাওয়াতকে অপসন্দ করতেন। এটিই হচ্ছে অধিকাংশ সালাফের বক্তব্য এবং এর উপরেই তার প্রবীণ সাথীরা রয়েছে। আর কোন নির্ভরযোগ্য আলেম এর স্বপক্ষে কথা বলেননি’।[50] তিনি আরো বলেন,وَاِتِّخَاذُ الْمَصَاحِفِ عِنْدَ الْقَبْرِ بِدْعَةٌ وَلَوْ لِلْقِرَاءَةِ وَلَوْ نَفَعَ الْمَيِّتُ لَفَعَلَهُ السَّلَفُ ..وَالْقِرَاءَةُ عَلَى الْمَيِّتِ بَعْدَ مَوْتِهِ بِدْعَةٌ- ‘কবরের নিকটে কুরআন নেওয়া বিদ‘আত যদিও তা তেলাওয়াতের জন্য হয়। যদি কবরের নিকট কুরআন পাঠের মাধ্যমে মৃতরা উপকৃত হ’তেন তাহ’লে সালাফরা অবশ্যই তা করতেন। আর মৃত্যুর পর মৃতের নিকটে কুরআন তেলাওয়াত করা বিদ‘আত’।[51]

ইমাম মালেক (রহঃ) মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকটে কুরআন পাঠকে মাকরূহ মনে করতেন। কারণ এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ এবং এটি সালফে ছালেহীনদের আমল নয়।[52] কবরের নিকটে কুরআন পাঠের ব্যাপারে ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, আমি কাউকে এরূপ আমল করতে দেখিনি। এখান থেকে বুঝা যায় যে, ছাহাবী ও ত্বাবেঈগণের কেউ এরূপ আমল করেননি। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) কবরের নিকটে কুরআন পাঠকে বিদ‘আত বলেছেন।[53]

নফল ছালাত আদায় করে বা ছিয়াম পালন করে বা কুরআন পাঠ করে তার ছওয়াব মৃতদের জন্য বখশানো সালাফে ছালেহীনের নীতি নয়।[54] সালাফ-এর নীতি হ’ল তারা তাদের মৃত আত্মীয়দের জন্য দান-ছাদাক্বা করতেন এবং দো‘আ করতেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার তিনটি আমল ব্যতীত সকল আমল বন্ধ হয়ে যায় (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ বা প্রবাহমান ছাদাক্বাহ (২) এমন জ্ঞান, যার দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয় (৩) নেক সন্তান, যে পিতার জন্য দো‘আ করে’।[55]

উপসংহার :

যেকোন ইবাদত রাসূল (ছাঃ) নিদের্শিত পন্থায় করতে হবে। অন্যথা তা কবুল হবে না। দু’টি শর্ত পূর্ণ করলেই কেবল ইবাদত কবুল হবে। ১. শিরক, কুফর ও নিফাক-মুক্ত বিশুদ্ধ ঈমান সকল ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত। উপরন্তু ইবাদতটি পরিপূর্ণ ইখলাছের সাথে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সম্পাদিত হ’তে হবে। ২. রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতি অনুসরণ পূর্বক ইবাদত করতে হবে। কোন ব্যক্তির মনগড়া বা বিদ‘আতী পদ্ধতিতে ইবাদত করলে তা কবুল হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন বিধান তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং পরকালেও সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত’ (আলে ইমরান ৩/৮৫)। তিনি আরো বলেন, ‘আর রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা হ’তে বিরত থাক’ (হাশর ৫৯/৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে এমন কিছু নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই তা প্রত্যাখ্যাত’।[56] অতএব হাদীছে ঈছালে ছওয়াবের ব্যাপারে যে সকল পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে, কেবল সে সকল পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। এর বাইরে অন্য কিছু করলে তা প্রত্যাখ্যাত বা অগ্রহণযোগ্য হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে শারঈ পদ্ধতিতে সকল ইবাদত করার তাওফীক দান করুন।-আমীন!

আব্দুর রহীম

নিয়ামতপুর, নওগাঁ।


[1]. শায়খ বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৪/৩৪৮; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৯/৪৩

[2]. শরহে নববী আলা মুসলিম ৭/৯০

[3]. ঐ, ১১/৮৫

[4]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৪/৩২৩

[5]. মুওয়াত্ত্বা হা/১০৬৯, পৃ. ৯৪; মিশকাত হা/২০৩৫ ‘ছওম’ অধ্যায় ‘ক্বাযা’ অনুচ্ছেদ; বায়হাক্বী হা/৮০০৪, ৪/২৫৪।

[6]. আহমাদ হা/১৫৫৬৮; ছহীহাহ হা/৩০৫৭।

[7]. গাযালী, ইহইয়া ২/৩২

[8]. মুসলিম হা/১০৬৬ (১৫৪)।

[9]. মাওলানা আহমাদ আলী, কোরআন ও কলেমাখানী, সম্পাদনা : মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব (রাজশাহী : হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ২য় প্রকাশ, নভেম্বর ২০১৬), পৃঃ ৫-৭

[10]. মুসলিম হা/৮১৭; মিশকাত হা/২১১৫

[11]. মুসলিম হা/১৭১৮; বুখারী হা/২৬৯৭; মিশকাত হা/১৪০।

[12]. হাসান খাল্লাল, ফাযায়েলু সূরাতিল ইখলাছ হা/৫৪; সিলসিলা যঈফাহ হা/১২৯০

[13]. সিলসিলা যঈফাহ হা/১২৯০, ৩২৭৭; আহকামুল জানায়েয, পৃ: ১৯৩

[14]. সুয়ূতী, শারহুছ ছুদূর ৩০৩ পৃ: মাযহারী ৯/১২৯; মিরক্বাত ৩/১২২৮; তুহ্ফাতুল আহওয়াযী ৩/২৭৫, সনদ যঈফ

[15]. যঈফাহ হা/১২৪৬; আহকামুল জানায়েয ২৫৯ পৃ:

[16]. যঈফাহ হা/১২৪৬-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য

[17]. আল-ফিরদাউস বেমা‘ছুরিল খাত্তাব হা/৬০৮৬, ৪/২৮

[18]. তানযীহুশ শারী‘আহ হা/৬৪, ১/৩০১; আল-বুরহানুল মুবীন হা/২৭, ২/৫১৯

[19]. মীযানুল ই‘তিদাল ৩/১৪৫, রাবী নং ৫৮৯০

[20].  সাইয়েদ মুহাম্মাদ হাক্কী আন-নাযেলী, খাযীনাতুল আসরার ১/১৫৪; কুরতুবী, আত-তাযকিরাতু বিআহওয়ালি মাওতা ওয়া উমূরিল আখেরাহ ২২৭ পৃ:

[21]. আব্দুর রহমান মুবারকপুরী, কিতাবুল জানায়েয (উর্দূ); (এলাহাবাদ, ভারত : ৫ম সংস্করণ ১৪০৩ হি./১৯৮৩ খৃ.) ৯৬-৯৭ পৃ.।

[22]. মুকাদ্দামা মুসলিম হা/৩৪; ইবনু আবী শায়বাহ হা/১২২১০

[23]. কিতাবুল জানায়েয ১০০-০১ পৃ.; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/১২২১০।

[24]. শারহু মুসলিম ১/৮৯

[25]. তুহফাতুল আহওয়াযী ৩/২৭৬।

[26]. আবুদাঊদ হা/৪৩০৮; মিশকাত হা/৫৪৩৪ ‘ফিৎনা সমূহ’ অধ্যায়, হাদীছ যঈফ।

[27]. আলবানী, যঈফাহ হা/৩১১৬-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য

[28]. কুরআন ও কলেমাখানী, পৃঃ ১১

[29]. বায়হাক্বী, শো‘আব হা/৯২৯৪; তাবারাণী কাবীর হা/১৩৬১৩; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৪২৪২; মিশকাত হা/১৭১৭।

[30]. সাখাভী, আল-মাক্বাছিদুল হাসানাহ ১/১৪১; আলবানী, যঈফাহ হা/৪১৪০; আহকামুল জানায়েয ১/১৩; আলবানী, তালখীছু আহকামিল জানায়েয, মাসআলা ক্রমিক ৯৩, পৃ. ১০২; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ২৩৯ পৃ.।

[31]. ইবনু আদী ১/২৮৬; আবু নাঈম, আখবারে ইস্ফাহান হা/২০২৬

[32]. যঈফাহ হা/৫০; যঈফুল জামে‘ হা/৫৬০৬; ইবনুল জাওযী, আল-মাওযূ‘আত হা/৩/২৩৯; যাহাবী, তালখীছুল মাওযূ‘আত হা/৯৪০

[33]. দায়লামী হা/৬০৯৯; যঈফাহ হা/৫২১৯,৫৮৬১; ইরওয়া হা/৬৮৮

[34]. যঈফা হা/৫২১৯; মীযানুল ই‘তিদাল ৪/৯০, রাবী নং ৮৪২৫

[35]. আল-ইলাল ওয়া মা‘রিফাতুর রিজাল ৩/২১০, রাবী নং ৪৯০৯; তারীখু ইবনু মঈন ১/৫৫

[36]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/১০৯৫৩,১০৮৪৮; আহকামুল জানায়েয ১/৯৩

[37]. আত-তাক্বরীব ২/২২৯

[38]. তাহযীবুল কামাল ২৭/২৫; মীযান ৩/৪৩৮, রাবী নং ৭০৭০

[39]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আর-রূহ ১/১১; আহকামুল জানায়েয ১/১৯৩; মিরক্বাত ৩/১২২৮; আবুবকর আল-খাল্লাল, আল-আমরু বিল মারূফ, হা/২৪৯; আল-কিরাআতু ইনদাল কুবূর হা/০৯

[40]. আহকামুল জানায়েয ১/১৯৩

[41]. তাহযীবুল কামাল ২৭/২৫; মীযান ৩/৪৩৮, রাবী নং ৭০৭০

[42]. আহমাদ হা/২০৩১৫; মু‘জামুল কাবীর হা/৫৪১,৫১১; যঈফ তারগীব হা/৮৭৮; যঈফাহ হা/৬৮৪৩; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১০৮৪০

[43]. আলবানী, ইরওয়া ৩/১৫০-১৫১; যঈফাহ হা/৬৮৪৩-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য

[44]. মু‘জামুল কাবীর হা/৪৯১; আল-আমরু বিল মারূফ, হা/২৪৫; তারীখু দিমাশক ৫০/২৯, ৫৮৪৮৭; বাদরুল মুনীর ৫/৩৩৭

[45]. মীযান ৪/৩০৫, রাবী নং ৩৭৯২, ৪৯৩০; আলবানী, আহকামুল জানায়েয ১/১৯২

[46]. আবুবকর আল-খাল্লাল, আল-আমরু বিল মারূফ, হা/২৪৬;আল-কিরাআতু ইনদাল কুবূর হা/০৩; তারীখু বাগদাদ৪/১৪৫

[47]. আবূদাঊদ, আল-মাসায়েল ১/১৫৮

[48]. মীযান ৪/৩০৫, রাবী নং ৩৭৯২,৪৯৩০

[49]. আলবানী, আহকামুল জানায়েয ১/১৯২

[50]. আল-ফাতাওয়াল কুবরা ৫/৩৬২

[51]. ঐ, ৫/৩৬২-৬৩

[52]. আল-ফাওয়াকেহুদ দাওয়ানী ১/২৮৪; শারহু মুখতাছারু খালীল ২/১৩৭

[53]. ইবনু তায়মিয়াহ, ইক্বতিযাইছ ছিরাতিল মুস্তাক্বীম ১৯/০৫

[54]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৪/৩২৩

[55]. মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩ ‘ইল্ম’ অধ্যায়

[56]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০






ব্রেলভীদের কতিপয় আক্বীদা-বিশ্বাস - মুহাম্মাদ নূর আব্দুল্লাহ হাবীব
হকের পথে বাধা : মুমিনের করণীয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
মুনাফিকী (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছ আলেমগণের অগ্রণী ভূমিকা - ড. নূরুল ইসলাম
সংগঠনের গতিশীলতা বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা ও তা উত্তরণের উপায় - শেখ মুহাম্মাদ রফীকুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, পাইকগাছা সরকারী কলেজ, খুলনা
চিন্তার ইবাদত (৩য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
আহলেহাদীছ জামা‘আতের বিরুদ্ধে কতিপয় মিথ্যা অপবাদ পর্যালোচনা (৩য় কিস্তি) - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
ইবাদতে অলসতা দূর করার উপায় - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম (২য় কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
ইসলামী বাড়ীর বৈশিষ্ট্য - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
তাওফীক্ব লাভের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
সর্বনাশের সিঁড়ি - মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান
আরও
আরও
.