আল্লাহ তা‘আলা মানুষের দেহে জিহবা ও দুই ঠোঁট সংযোজন করেছেন (বালাদ ৯০/৯), যাতে তারা কথা বলতে পারে। আর আল্লাহর দেওয়া মুখ ও ঠোঁট দিয়ে আল্লাহর নির্দেশিত সত্য কথা বলবে, সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিবে যদিও তা তার নিজের, নিজ পিতা-মাতার এবং আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয় (নিসা ৪/১৩৫)। অপরদিকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কথা বলার ন্যায় বড় পাপ। মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে যেমন ব্যক্তির অধিকার হরণ করা হয়, সাথে সাথে সামাজিক বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি হয়। এমনকি বিচার ব্যবস্থার প্রতিও মানুষের আস্থা নষ্ট হয়। আলোচ্য প্রবন্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দান ও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আলোকপাত করা হ’ল।
মিথ্যা সাক্ষ্য-এর পরিচয় : মিথ্যা সাক্ষ্যকে আরবীতেشهادة الزور বলে। شهادة শব্দের অর্থ সাক্ষ্য, সনদ, সার্টিফিকেট, প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি।[1] মহান আল্লাহ বলেন,قُل أَيُّ شَيءٍ أَكبَرُ شَهَادَةً ‘বল, কোন জিনিস সবচেয়ে বড় সাক্ষী? (আন‘আম ৬/১৯)। আর الزور অর্থ মিথ্যা, জাল, প্রতারণা ইত্যাদি।[2] যেমন আল্লাহ বলেন,فَقَدْ جَاءُوْا ظُلْمًا وَّزُوْرًا ‘সুতরাং অবশ্যই তারা যুলুম ও মিথ্যা নিয়ে এসেছে’ (ফুরক্বান ২৫/৪)। অতএব شهادة الزور অর্থ মিথ্যা সাক্ষ্য।
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) মিথ্যা সাক্ষ্যের পরিচয়ে বলেন,شهادة الزور هي الشهادة بالكذب ليتوصل بها إلى الباطل من إتلاف نفس أو أخذ مال أو تحليل حرام أو تحريم حلال، ‘মিথ্যা সাক্ষ্য এমন সাক্ষ্য, যা মানুষকে বাতিলের দিকে ধাবিত করে, চাই সেটা কোন মানুষের ধ্বংসসাধন অথবা সম্পদ কেড়ে নেওয়া অথবা হারামকে হালাল করা অথবা হালালকে হারাম করার ক্ষেত্রে হৌক’।[3]
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার হুকুম : সকল বিদ্বান একমত যে, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবীরা গুনাহ।[4] মিথ্যা সাক্ষ্য না দেওয়া আল্লাহর বান্দার অন্যতম গুণ। আল্লাহ বলেন,وَالَّذِيْنَ لاَ يَشْهَدُوْنَ الزُّوْرَ وَإِذَا مَرُّوْا بِاللَّغْوِ مَرُّوْا كِرَامًا، ‘যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয় তখন ভদ্রভাবে সে স্থান অতিক্রম করে’ (ফুরক্বান ২৫/৭২)।
আর মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হ’ল, না জেনে কথা কথা বলার ন্যায় অপরাধ’।[5] অনুরূপভাবে সাক্ষ্য গোপন করাও মিথ্যা সাক্ষীর মত। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَلَا تَكْتُمُوا الشَّهَادَةَ وَمَنْ يَّكْتُمْهَا فَإِنَّهُ آثِمٌ قَلْبُهُ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ، ‘আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে ব্যক্তি তা গোপন করে, তার হৃদয় পাপিষ্ঠ। বস্ত্ততঃ তোমরা যা কিছু কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত’ (বাক্বারাহ ২/২৮৩)। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, شَهَادَةُ الزُّوْرِ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ، وَكِتْمَانُهَا كَذَلِكَ، ‘মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া ও সাক্ষ্য গোপন করা সবচেয়ে বড় গুনাহ’।[6]
অনুরূপভাবে সাক্ষীর জন্যও ওয়াজিব হ’ল সত্য সাক্ষ্য দেওয়া ও মিথ্যা সাক্ষ্য থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদাতা হিসাবে, যদিও সেটি তোমাদের নিজেদের কিংবা তোমাদের পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে যায়। (বাদী-বিবাদী) ধনী হৌক বা গরীব হৌক (সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করো না)। কেননা তোমাদের চাইতে আল্লাহ তাদের অধিক শুভাকাঙ্ক্ষী। অতএব ন্যায়বিচারে প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বল অথবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে জেনে রেখ আল্লাহ তোমাদের সকল কর্ম সম্পর্কে অবহিত’ (নিসা ৪/১৩৫)।
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার কুফল :
১. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবীরা গুনাহ : কবীরা গুনাহের অন্যতম হ’ল মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ)-কে কবীরাহ গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বললেন, الإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَعُقُوْقُ الْوَالِدَيْنِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ، وَشَهَادَةُ الزُّوْرِ، ‘আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া’।[7]
আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে সতর্ক করব না? আমরা বললাম, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তিনি বললেন,الإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَعُقُوْقُ الْوَالِدَيْنِ. وَكَانَ مُتَّكِئًا فَجَلَسَ فَقَالَ أَلاَ وَقَوْلُ الزُّوْرِ وَشَهَادَةُ الزُّوْرِ، أَلاَ وَقَوْلُ الزُّوْرِ وَشَهَادَةُ الزُّوْرِ فَمَا زَالَ يَقُوْلُهَا حَتَّى قُلْتُ لاَ يَسْكُتُ- ‘আল্লাহর সঙ্গে শরীক স্থাপন করা ও পিতা-মাতার নাফরমানী করা। এ কথা বলার সময় তিনি হেলান দিয়ে বসে ছিলেন। এরপর (সোজা হয়ে) বসে বললেন, সাবধান! মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। সাবধান! মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। অতঃপর ক্রমাগত বলেই চললেন। এমনকি আমি বললাম, তিনি মনে হয় থামবেন না’।[8]
উক্ত হাদীছ হ’তে মিথ্যা সাক্ষ্যদান যে একটি মহা পাপ তা তিনভাবে প্রমাণিত হয়। প্রথমত: এ কাজ করলে মহাপাপী হ’তে হয়, যা শিরকের মত মহাপাপের সাথে সংযুক্ত করে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমরা মূর্তিরূপ অপবিত্রতা বর্জন কর এবং মিথ্যা কথা (সাক্ষ্য) হ’তে দূরে থাক’ (হজ্জ ২২/৩০)।
দ্বিতীয়ত: রাসূল (ছাঃ) হেলান দিয়ে বসে ছিলেন। কিন্তু এই দুষ্কর্মের ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে সকলকে সাবধান করতে উঠে বসে তা উল্লেখ করলেন।
তৃতীয়ত: তা বার বার উল্লেখ করে তার অনিষ্টকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং জিহবার এমন পাপ অত সহজ নয়, যত সহজে মানুষ তা জিহবা দ্বারা করে থাকে।[9]
২. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া শিরকের সমতুল্য আপরাধ : মিত্যা সাক্ষ্য দেওয়া শিরকের ন্যায় মহাপাপ। এ সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন,عُدِلَتْ شَهَادَةُ الزُّوْرِ بِالْإِشْرَاكِ بِاللهِ ثُمَّ قَرَأَ فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوْا قَوْلَ الزُّوْرِ حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِيْنَ بِهِ- ‘মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া আল্লাহর সাথে শিরক করার সাথে সমতুল্য। অতঃপর তিনি কুরআনের আয়াত পড়লেন, ‘অতএব তোমরা মূর্তির অপবিত্রতা হ’তে দূরে থাক, মিথ্যা কথা পরিহার কর, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর বান্দা হয়ে যাও। তাঁর সাথে কাউকে শরীক কর না’ (হজ্জ ২২/৩০-৩১)।[10]
অন্যত্র তিনি বলেন,تعدل شهادة الزور بالشرك ‘মিথ্যা সাক্ষ্য শিরকের মত’ (হজ্জ ২২/৩০)।[11] এর কারণ হচ্ছে, ‘মিথ্যা কথা’ শব্দটি ব্যাপক। এর সবচেয়ে বড় প্রকার হচ্ছে শিরক। তা যে শব্দের মাধ্যমেই হোক না কেন। আল্লাহর সাথে অন্যদেরকে শরীক করা এবং তাঁর সত্তা, গুণাবলী, ক্ষমতা ও অধিকার তথা ইবাদতে তাঁর বান্দাদেরকে অংশীদার করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। অনুরূপভাবে পারস্পরিক লেন-দেন ও সাক্ষ্য প্রদানে মিথ্যাও এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। এ সঙ্গে মিথ্যা কসমও একই বিধানের আওতায় আসে।[12]
৩. অন্যের প্রতি যুলুম : মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া অন্যের প্রতি যুলুম করার শামিল। এই যুলুমের দ্বারা কখনো অন্যের সম্পদ এমনকি কখনো অন্যের জীবনও চলে যেতে পারে। উম্মে সালামা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন দু’ব্যক্তি উত্তরাধিকার সম্পর্কীয় ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়ে সাক্ষী ব্যতীত শুধু প্রাপ্যের দাবী নিয়ে নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসেছিল। এমতাবস্থায় তিনি বললেন, আমি যদি তোমাদের কাউকে তার ভাইয়ের হক (তোমাদের একজনের মিথ্যা বলার দরুন) প্রদান করি, তখন আমার সে ফায়ছালা দোষী ব্যক্তির জন্য হবে জাহান্নামের একখন্ড আগুন। এ কথা শুনে তারা উভয়েই বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার অংশটি আমার সঙ্গীকে দিয়ে দিন। তখন তিনি বললেন, না, বরং তোমরা উভয়ে (সমানভাবে) বণ্টন করে নাও। আর বণ্টনে হক পন্থা অবলম্বন করবে এবং পরস্পরের মধ্যে লটারী করে নিবে। অতঃপর তোমরা একে অপরকে ঐ অংশ থেকে ক্ষমা করে দিবে।[13]
৪. অন্যের হক নষ্ট করা হয় : মিথ্যা সাক্ষ্যর প্রদানের মাধ্যমে অন্যের হক নষ্ট করা হয়। একজনের হক অন্যকে দিয়ে দেওয়া হয় এবং অন্যকে তার প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত করা হয়। আর এটা যেহেতু বান্দার হক সেহেতু বান্দা ক্ষমা না করলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তোমরা কি জান নিঃস্ব কে? ছাহাবীগণ বললেন, আমাদের মাঝে নিঃস্ব সেই ব্যক্তি যার কোন অর্থ ও বাহন নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে নিঃস্ব হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে ছালাত, ছিয়াম ও যাকাতের নেকী নিয়ে ক্বিয়ামতের মাঠে উপস্থিত হবে। অপরদিকে সে (দুনিয়াতে) অন্যায়ভাবে কাউকে গালি দিয়েছে, অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ ভক্ষণ করেছে, কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে, এমন ব্যক্তিরাও উপস্থিত হবে। তখন তার নেকী হ’তে তাদেরকে এক এক করে পরিশোধ করা হবে। কিন্তু তাদের পাপ্য পরিশোধের পূর্বে তার নেকী শেষ হয়ে গেলে তাদের পাপ থেকে (যুলম পরিমাণ) নিয়ে তার উপর চাপানো হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’।[14]
৫. মিথ্যা সাক্ষ্যদাতার ভাল আমল কবুল হবে না : মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে ব্যক্তির ভাল আমলও আল্লাহর নিকটে গ্রহণীয় হবে না। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) ছিয়াম সম্পর্কে বলেন,مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّوْرِ وَالْعَمَلَ بِهِ وَالْجَهْلَ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ، ‘যে লোক মিথ্যা কথা এবং সে অনুসারে কাজ করা আর মূর্খতা পরিহার করল না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই’।[15]
৬. হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল করা : মিথ্যা সাক্ষ্যের দ্বারা আল্লাহর হালালকৃত বিষয় অনেক সময় হারাম করা হয় আবার অনেক সময় হারামকে হালাল করা হয়।
৭. ক্বিয়ামতের অন্যতম আলামত : আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ تَسْلِيمَ الْخَاصَّةِ وَفُشُوَّ التِّجَارَةِ حَتَّى تُعِيْنَ الْمَرْأَةُ زَوْجَهَا عَلِى التِّجَارَةِ وَقَطْعَ الأَرْحَامِ وَشَهَادَةَ الزُّوْرِ وَكِتْمَانَ شَهَادَةِ الْحَقِّ وَظُهُوْرَ الْقَلَمِ- ‘ক্বিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ব্যক্তি বিশেষকে নির্দিষ্ট করে সালাম দেয়ার প্রচলন ঘটবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। ফলে স্বামীর ব্যবসায়ে স্ত্রীও সহযোগিতা করবে। রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তা ছিন্ন করা হবে। মিথ্যা সাক্ষ্যদানের প্রচলন হবে এবং সত্য সাক্ষ্য গোপন করা হবে, লেখনীর প্রসার ঘটবে’।[16]
৮. জাহান্নামে যাওয়ার কারণ : মিথ্যা সাক্ষ্য অনেকের জাহান্নামে যাওয়ার কারণও হ’তে পারে। আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, কোন লোক জ্ঞাতসারে নিজ পিতাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পিতা বলে দাবী করলে সে আল্লাহর সাথে কুফরী করল এবং যে ব্যক্তি নিজেকে এমন বংশের সঙ্গে সম্পর্কিত দাবী করল যে বংশের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল’।[17]
মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানের শাস্তি :
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া অন্যতম কবীরা গুনাহ হ’লেও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার নির্দিষ্ট কোন শাস্তি ইসলামী শরী‘আতে নেই। তাই এর শাস্তি হ’ল তা‘যীর তথা ভৎর্সনা করা।[18] আর এটা অবস্থা অনুযায়ী বিচারক নির্ধারণ করবেন। তবে শাফেঈ, হাম্বলী ও মালেকী মাযহাবের কোন কোন ইমাম বলেন, এর শাস্তি ১০টি বেত্রাঘাতের অধিক হবে না। আর ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার শাস্তি দশ চাবুকের অধিক নয়।[19] নবী করীম (ছাঃ) বলতেন,لاَ يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ إِلاَّ فِيْ حَدٍّ مِنْ حُدُوْدِ اللهِ، ‘আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দন্ড প্রয়োগ করা যাবে না’।[20]
তবে ইচ্ছাকৃত মিথ্যা সাক্ষীর কারণে যদি হদ্দ জারী হয় এবং পরে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রকাশিত হয় তাহ’লে ক্বিছাছ কার্যকর করা হবে। আলী (রাঃ)-এর কাছে দু’জন লোক কোন এক ব্যক্তির চুরির ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করার কারণে ঐ ব্যক্তির হাত কাটা হয়। পরে ঐ দু’ব্যক্তি এসে তাদের ভুল স্বীকার করে এবং বলে, সে চোর নয়। তখন তিনি বলেন, যদি আমি জানতাম যে তোমরা ইচ্ছা করে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছ, তাহ’লে আমি তোমাদের দু’জনের হাত কেটে দিতাম।[21] অর্থাৎ মিথ্যা সাক্ষ্যের কারণে চুরির শাস্তি কার্যকর হয়ে থাকলে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারীর উপর অনুরূপ শাস্তি বর্তাবে। আর হত্যা কার্যকর হয়ে থাকলে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারীকেও বিচারক হত্যার নির্দেশ দিবেন।[22] তবে হানাফী ও মালেকী বিদ্বানগণ মনে করেন, মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণিত হ’লে সাক্ষ্য প্রদানকারীর উপর দিয়াত কার্যকর হবে, কিছাছ কার্যকর হবে না।[23] এই মাস‘আলার ক্ষেত্রে হানাফী ও মালেকী বিদ্বানের অভিমতই গ্রহণরযাগ্য। কারণ মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান হদ্দ কায়েমের কোন কারণ নয়।
কেউ মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে প্রমাণিত হ’লে করণীয় : ইমামদের মতে, যে ব্যক্তি আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা প্রমাণিত হবে তার নাম চারদিকে প্রচার করে দিতে হবে (কুরতুবী)। ওমর (রাঃ) বলেন, ‘তার পিঠে চাবুক মারতে হবে, মাথা ন্যাড়া করে দিতে হবে, মুখ কালো করে দিতে হবে এবং দীর্ঘদিন অন্তরীণ রাখতে হবে’। ওমর (রাঃ)-এর আদালতে এক ব্যক্তির সাক্ষ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনি তাকে একদিন প্রকাশ্যে জনসমক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখেন এবং ঘোষণা করে দেন যে, এ ব্যক্তি হচ্ছে অমুকের ছেলে অমুক, এ মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে, একে নিচে রাখো। তারপর তাকে কারাগারে বন্দী করেন’।[24]
মিথ্যা সাক্ষ্য থেকে তওবা করা : তওবা করলে আল্লাহ বান্দার সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন। বান্দা যখন তার ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে পাপের পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর দৃঢ় সংকল্প করে এবং আল্লাহর নিকট কৃত অপরাধের জন্য ইসতিগফার করে তখন আল্লাহ তার অতীতের সকল পাপ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,إِلَّا الَّذِيْنَ تَابُوْا مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ وَأَصْلَحُوْا فَإِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ، ‘তবে যারা (মুরতাদ হওয়ার পরে) তওবা করেছে এবং নিজেদের সংশোধন করেছে, সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আলে ইমরান ৩/৮৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, اَلتَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لاَ ذَنْبَ لَهُ ‘পাপ থেকে তওবাকারী নিষ্পাপ ব্যক্তির মতো’।[25] তিনি আরো বলেন,إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ بِذَنْبٍ ثُمَّ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ ‘বান্দা যখন গুনাহ করার পর তা স্বীকার করে (অনুতপ্ত হয়) আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, আল্লাহ তখন ক্ষমা করে দেন’।[26]
মিথ্যা সাক্ষ্য যেহেতু অন্যের হকের সাথে জড়িত সেহেতু যার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে অথবা মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে যার ক্ষতি করা হয়েছে তার নিকট থেকে ক্ষমা চাইতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যদি কেউ তার কোন ভাইয়ের সম্মান বা অন্য কিছুর ব্যাপারে তার উপর যুলুম করে থাকে, তাহ’লে সেই দিন আসার পূর্বেই যেন তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়, যে দিন তার কাছে কোন টাকা-পয়সা থাকবে না। যদি তার কোন সৎ আমল থাকে তাহ’লে তার অন্যায়ের সমপরিমাণ নেকী কেটে নেওয়া হবে। আর যদি তার সৎকর্ম না থাকে তাহ’লে যার সাথে অন্যায় করা হয়েছে, তার পাপ নিয়ে তার উপরে চাপিয়ে দেয়া হবে’।[27]
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরো বলেন,لَتُؤَدُّنَّ الْحُقُوْقَ إِلي أَهْلِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّي يُقَادَ لِلشَّاةِ الْجَلْحَاءِ مَنِ الشَّاةِ الْقَرْنَاءِ، ‘(আল্লাহ) ক্বিয়ামতের দিন অবশ্যই পাওনাদারের পাওনা আদায় করবেন। এমনকি শিংওয়ালা বকরী থেকে শিং বিহীন বকরীর প্রতিশোধও গ্রহণ করা হবে’।[28]
মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় :
১. অন্যায় কাজে সাক্ষ্য দেওয়া যাবে না : মুমিনগণ সব সময় সত্যের পক্ষে ও মিথ্যার বিপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করবেন। সে কখনো মিথ্যার সাক্ষী হবে না। আব্দুর রহমান ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) হ’তে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,لَعَنَ رَسولُ اللهِ آكِلَ الرِّبا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكاتِبَهُ، وَشاهِدَيْهِ، وَقالَ: هُمْ سَواءٌ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূদখোর, সূদদাতা, সূদের সাক্ষী ও এর দলীল লেখক সবাইকে অভিসম্পাত করেছেন। পাপের দিক দিয়ে তারা সবাই সমান’।[29]
নু‘মান বিন বাশীর (রাঃ) বলেন, আমার পিতা আমাকে কিছু দান করেছিলেন। তখন আমার মাতা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সাক্ষী রাখা ব্যতীত আমি সম্মত নই। তখন তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে গেলেন এবং বললেন, আমরা বিনতে রাওয়াহার গর্ভজাত পুত্রকে কিছু দান করেছি। হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনাকে সাক্ষী রাখার জন্য সে আমাকে বলেছে। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার সব ছেলেকেই কি এ রকম দান করেছ? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তবে আল্লাহকে ভয় কর এবং আপন সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা কর। [নু‘মান (রাঃ)] বলেন, অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং তার দান ফিরিয়ে নিলেন’।[30]
২. সাক্ষ্য গোপন করা যাবে না : মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া যেমন অপরাধ তেমনি সাক্ষ্য গোপন রাখাও অপরাধ। যেহেতু উভয়টি নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে। যখন কোন ব্যক্তি মিথ্যা সাক্ষ্যের কারণে অন্যায়ভাবে ফেঁসে যায়, তখন সত্য সাক্ষ্য দিয়ে তাকে উদ্ধার করা নৈতিক দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না এবং কেউ তা গোপন করলে, অবশ্যই তার অন্তর পাপী। আর তোমরা যা আমল কর, আল্লাহ সে ব্যাপারে সবিশেষ অবহিত’ (বাক্বারাহ ২/২৮৩)।
৩. মুসলিম, বালেগ, আক্বেল ও আদেল ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না : কোন বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য সাক্ষ্যদানকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই মুসলিম, জ্ঞানী ও ন্যায়পরায়ণ হ’তে হবে। এক্ষেত্রে কাফের, নাবালক ও ফাসেকের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না’ (তালাক ৬৫/৩, বাক্বারাহ ২/২৮২-এর তাফসীর দ্রষ্টব্য)।
৪. বিচারক প্রকাশ্য বিষয় দেখে ফায়ছালা দিবেন : বিচারক প্রকাশ্য বিষয় দেখেই বিচার করবেন, চাই সে সাক্ষ্য মিথ্যা হোক বা সত্য। উম্মে সালামা (রাঃ) সূত্রে নবী করীম (ছাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ وَإِنَّكُمْ تَخْتَصِمُونَ إِلَيَّ وَلَعَلَّ بَعْضَكُمْ أَنْ يَكُونَ أَلْحَنَ بِحُجَّتِهِ مِنْ بَعْضٍ وَأَقْضِيَ لَهُ عَلَى نَحْوِ مَا أَسْمَعُ فَمَنْ قَضَيْتُ لَهُ مِنْ حَقِّ أَخِيهِ شَيْئًا فَلاَ يَأْخُذْ فَإِنَّمَا أَقْطَعُ لَهُ قِطْعَةً مِنْ النَّارِ- ‘আমি তো একজন মানুষ। আর তোমরা আমার কাছে বিবাদ মীমাংসার জন্য এসে থাক। তোমাদের এক পক্ষ অন্য পক্ষ অপেক্ষা দলীল-প্রমাণ পেশ করায় বেশি পারদর্শী হ’তে পারে। ফলে আমি আমার শোনার কারণে যদি কাউকে তার অন্য ভাইয়ের হক দিয়ে দেই, তাহ’লে যেন সে তা গ্রহণ না করে। কেননা আমি তার জন্য জাহান্নামের একটা অংশই নির্ধারণ করে দিচ্ছি’।[31]
৫. বিচারকের নিকট সাক্ষ্য মিথ্যা প্রমাণিত হ’লে সে সাক্ষ্য অনুযায়ী বিচার করা যাবে না : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল। প্রত্যেকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’।[32] ইবনু বুরায়দাহ (রাঃ) হ’তে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘বিচারক তিন প্রকার। এক প্রকার বিচারক জান্নাতী, আর দুই প্রকার বিচারক জাহান্নামী। জান্নাতী বিচারক হ’ল, যে সত্যকে বুঝে এবং তদনুযায়ী ফায়ছালা করে। আর যে বিচারক সত্যকে জানার পর স্বীয় বিচারে যুলুম করে সে জাহান্নামী এবং যে বিচারক অজ্ঞতাপ্রসূত ফায়ছালা দেয় সেও জাহান্নামী।[33]
পরিশেষে বলা যায়, মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়া প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য। তাহ’লে পরিবার, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রীয় জীবনেও শান্তি নেমে আসবে। আল্লাহ আমাদেরকে সত্য বলার ও সত্যের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করার তাওফীক দান করুন-আমীন!
সহকারী শিক্ষক, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল, খিলগাও, ঢাকা।
[1]. ড. মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান (ঢাকা: রিয়াদ প্রকাশনী), পৃ: ৬০৮।
[2]. ঐ, ৫৪১ পৃঃ।
[3]. হাশিয়া তাহতাবী আলা দুররিল মুখতার (বৈরূত: দারুল মা‘আরিফ), ৩/২৬০। গৃহীত: আল-মাউসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া (কুয়েত: ওয়াযারাতুল আওকাফ ওয়াশ শুঊনিল ইসলামিয়া), ২৬/২৫৩; নাযরাতুন নাঈম (জেদ্দা : দারুল ওয়াসিলাহ, ১ম প্রকাশ, ১৯৯৮), ১০/৪৭৭৬।
[4]. বুখারী হা/৫৯৭৬; মুসলিম হা/৮৭।
[5]. মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়া (রহঃ) বলেন, আল্লাহর বাণী,وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ এর অর্থ হ’ল ‘মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া’। দ্র. তাফসীর ইবনে কাছীর, সূরা ইসরা ৩৬ নং আয়াতের তাফসীর।
[6]. তাফসীর ইবনে কাছীর, সূরা বাক্বারাহ ২/২৮৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্র:।
[7]. বুখারী হা/২৬৫৩; মুসলিম হা/৮৮।
[8]. বুখারী হা/৫৯৭৬; মুসলিম হা/৮৭।
[9]. আবদুল হামিদ ফায়যী, জিভের আপদ পৃ: ৪০।
[10]. বায়হাকী শু‘আবুল ঈমান হা/৪৫২১; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৭০৩৯; ছহীহুত তারগীব হা/২৩০১, সনদ হাসান।
[11]. ইবনু কাছীর, সূরা হজ্জ ৩০-এর তাফসীর দ্রঃ; নাযরাতুন নাঈম ৮/৪৭৮০।
[12]. কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর) (সঊদী আরব: বাদশাহ ফাহদ কুরআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স ১৪৪০ হিঃ), পৃ. ১৭৬৬-১৭৬৭।
[13]. আবূদাঊদ হা/৩৫৮৪; ইরওয়া হা/১৪২৩; মিশকাত হা/৩৭৭০।
[14]. মুসলিম হা/২৫৮১; তিরমিযী হা/২৪১৮; মিশকাত হা/৫১২৮।
[15]. বুখারী হা/৬০৫৭; আবূদাঊদ হা/২৩৬২; তিরমিযী হা/৭০৭; ইবনু মাজাহ হা/১৬৮৯।
[16]. আহমাদ হা/৩৮৭০; ছহীহাহ হা/৬৪৭; ছহীহ আদাবুল মুফরাদ হা/৮০১।
[17]. বুখারী হা/৩৫০৮; মুসলিম হা/৬১।
[18]. তা‘যীর হবে ঐ সকল পাপের জন্য, যে পাপের কোন হদ্দ (দন্ড) বা কাফ্ফারা নির্ধারিত নেই।
[19]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া, ২৬/২৫৫।
[20]. বুখারী হা/৬৮৪৮, ৬৮৪৯, ৬৮৫০; মুসলিম হা/১৭০৮।
[21]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া, ২৬/২৫৮।
[22]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ২৬/৫৮।
[23]. কাসানী, বাদায়েঊছ ছানায়ে‘ ৭/২৮৬; আশ-শারহুছ ছাগীর ৪/২৯৫।
[24]. বায়হাকী, মা‘রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার, ১৪/২৪৩; কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর), পৃঃ ১৭৬৭।
[25]. ইবনু মাজাহ হা/৪২৫০; ছহীহুল জামে‘ হা/৩০০৮, হাদীছ হাসান।
[26]. বুখারী হা/২৬৬১; মুসলিম হা/২৭৭০; মিশকাত হা/২৩৩০।
[27]. বুখারী হা/২৪৪৯; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/২১০।
[28]. মুসলিম হা/২৫৮০; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/২০৪।
[29]. মুসলিম হা/১৫৯৮; আবূদাঊদ হা/৩৩৩৩; তিরমিযী হা/১২০৬।
[30]. বুখারী হা/২৫৮৭; মুসলিম হা/১৬২৩।
[31]. বুখারী হা/৬৯৬৭, ৭১৬৯; ইবনে হিববান হা/৫০৭০।
[32]. মুসলিম হা/১৮২৯।
[33]. আবূদাঊদ হা/৩৫৭৩; ইবনে মাজাহ হা/২৩১৫।