ভূমিকা :

নবীপত্নী উম্মুল মুমিনীন মায়মূনা বিনতুল হারেছ (রাঃ) ছিলেন বহু দুর্লভ গুণের অধিকারিণী এক বিদুষী মহিলা। ছাহাবায়ে কেরামের বিভিন্ন সমস্যায় তিনি অতি বিচক্ষণতার সাথে সমাধান দিতেন। উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আল্লাহভীতি, দানশীলতা, ইবাদত-বন্দেগী, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য প্রভৃতি গুণাবলীর জন্য তিনি ছিলেন সবার প্রিয় পাত্রী। অহি-র নির্মল আলোতে তাঁর জীবন ছিল উদ্ভাসিত। রিসালাতে মুহাম্মাদীর সংস্পর্শে এসে দ্বীন সম্পর্কে তিনি সম্যক জ্ঞান লাভ করেছিলেন। দ্বীনের জন্য জীবন উৎসর্গকারিণী এই বিদুষী মহিলার সংক্ষিপ্ত জীবনাদর্শ আমরা এখানে আলোচনার প্রয়াস পাব।

নাম ও বংশপরিচয় :

তাঁর প্রকৃত নাম ছিল বাররা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন মায়মূনা।[1] তাঁর পিতার নাম হারেছ। মাতার নাম হিন্দ বিনতু আওফ। মায়মূনা (রাঃ)-এর পূর্ণ বংশধারা হচ্ছে- মায়মূনা বিনতুল হারেছ ইবনু হাযান ইবনে বুজায়র ইবনিল হাযম ইবনে রুওয়ায়বা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হেলাল ইবনে ‘আমির ইবনে ছা‘ছা‘আহ[2] ইবনে মু‘আবিয়াহ ইবনে বকর ইবনে হাওয়াযিন ইবনে মানছূর ইবনে ইতরামা ইবনে খাফসা ইবনে কায়স ইবনে আয়লান ইবনে মুযার।[3] হাকিম নাইসাপুরী বুজায়র ইবনিল হাযম-এর স্থলে বুজায়র ইবনিল হুরম (بجير ابن الهرم) উল্লেখ করেছেন।[4] মায়মূনা (রাঃ)-এর মায়ের বংশধারা হচ্ছে- হিন্দ বিনতু আওফ ইবনে যুহায়র ইবনিল হারিছ ইবনে হাতামা ইবনে জারাশ মতান্তরে জারীশ।[5] তিনি হুমায়র[6] মতান্তরে কিনানা গোত্রের মহিলা ছিলেন।[7]

মায়মূনা (রাঃ) ছিলেন আববাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিবের স্ত্রী উম্মুল ফযল লুবাবা আল-কুবরা বিনতুল হারিছ, ওয়ালীদ ইবনুল মুগীরার স্ত্রী লুবাবা আছ-ছুগরা বিনতুল হারিছ ও আসমা বিনতুল হারিছের বোন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে الأخوات مؤمنات (মুমিনা বোনগণ) বলে অভিহিত করেছেন।[8] তিনি প্রখ্যাত ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস ও সাইফুল্লাহ খ্যাত খালিদ বিন ওয়ালীদের খালা ছিলেন।[9]

জন্ম ও শৈশব :

মায়মূনা (রাঃ)-এর জন্ম ও শৈশব সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণ কিছু বলেননি। ফলে তাঁর জন্ম ও শৈশব সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। তবে ৭ম হিজরী সনে ৩৭ বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়।[10] সে হিসাবে তাঁর জন্ম ৫৯২ হিজরীতে হয়েছিল বলে ধরে নেয়া যায়।

প্রথম বিবাহ :

জাহেলী যুগে তাঁর প্রথম বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল মাসঊদ ইবনু আমর ইবনে ওমাইর আছ-ছাক্বাফীর সাথে। কোন কারণে তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটলে আবু রুহম ইবনু আব্দুল ওয্যা ইবনে আবী কায়েস-এর সাথে তাঁর বিবাহ হয়। তিনি বানু মালেক ইবনে হাসাল ইবনে আমের ইবনে লুই-এর লোক ছিলেন। ৭ম হিজরীতে তিনি মারা যান।[11]

রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে বিবাহ :

খায়বার যুদ্ধের পরে ৭ম হিজরীর শাওয়াল মতান্তরে যুলক্বাদাহ মাসে কাযা ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় গমনের পথে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে বিবাহ করেন।[12] এ সময় মায়মূনা (রাঃ)-এর বয়স হয়েছিল ২৬ বছর[13] মতান্তরে ৩৭ বছর।[14] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কর্তৃক মায়মূনা (রাঃ)-কে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়ার ব্যাপারে কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়। ১. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কাযা ওমরা আদায়ের বছর মক্কার উদ্দেশ্য রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে আওস ইবনু খাওলী ও আবু রাফে‘কে আববাস (রাঃ)-এর নিকটে পাঠান। কিন্তু তারা পথ হারিয়ে ফেলে ‘রাবেগ’ উপত্যকায় কয়েকদিন অবস্থান করেন। অবশেষে ‘কুদাইদ’ নামক স্থানে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে পেয়ে তাঁর কাফেলার সাথে যুক্ত হয়ে মক্কায় গমন করেন। রাসূল মক্কায় পৌঁছে আববাস (রাঃ)-এর নিকট দূত পাঠান। দূত উক্ত বিষয়টি আববাসের নিকটে উল্লেখ করে। অন্য বর্ণনায় আছে, মায়মূনা তার বিষয়টি রাসূলের নিকটে পেশ করে। তখন রাসূল (ছাঃ) আববাসের বাড়ীতে গিয়ে মায়মূনাকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে আববাস (রাঃ) তাকে রাসূলের সাথে বিবাহ দেন।[15]

(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জা‘ফর ইবনু আবু তালেবের মাধ্যমে মায়মূনার নিকটে প্রস্তাব পাঠালে তিনি বিষয়টি আববাস (রাঃ)-এর নিকটে উপস্থাপন করেন। তখন আববাস (রাঃ) তাকে রাসূলের সাথে বিবাহ দেন।[16]

(৩) মায়মূনা (রাঃ) রাসূলের প্রতি তার মনের আকর্ষণের কথা স্বীয় সহোদর বোন উম্মুল ফযল-এর নিকট ব্যক্ত করেন। তখন উম্মুল ফযল তার স্বামী আববাস (রাঃ)-এর সাথে এ বিষয়ে আলাপ করেন। আববাস (রাঃ) একথা রাসূলের নিকটে পেশ করেন। এমনকি তিনি রাসূলের নিকট মায়মূনাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে মায়মূনা (রাঃ)-কে বিবাহ করেন।[17]

(৪) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আবু রাফে‘ ও অন্য একজন আনছার লোককে মায়মূনার নিকটে পাঠান। তারা মায়মূনাকে রাসূলের সাথে বিবাহ দেন তিনি মদীনা থেকে (মক্কার উদ্দেশ্যে) বের হওয়ার পূর্বে।[18]

(৫) বাররা বিনতুল হারিছ ওরফে মায়মূনা (রাঃ) নিজেকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্য দান করেছিলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন, وَامْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَنْ يَّسْتَنْكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِنْ دُوْنِ الْمُؤْمِنِيْنَ- ‘কোন মুমিনা নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পণ করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য, অন্য কোন মুমিনের জন্য নয়’ (আহযাব ৫০)[19]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে যখন বিবাহের প্রস্তাব পাঠান তখন মায়মূনা (রাঃ) একটি উটে চড়েছিলেন। রাসূলের প্রস্তাবে তিনি খুশি হয়ে বলেন, اَلْجَمَلُ وَمَا عَلَيْهِ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم- ‘এ উট এবং এর উপর যা আছে সব রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্য’।[20] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে ৪০০ দিরহাম মতান্তরে ৫০০ দিরহাম মহর দিয়েছিলেন।[21] তিনি ছিলেন নবী করীম (ছাঃ)-এর সর্বশেষ বিবাহিতা স্ত্রী।[22]

বাসর যাপন :

৭ম হিজরীর শাওয়াল মাসে কাযা ওমরা সম্পন্নের পর মদীনায় প্রত্যাবর্তনের পথে ‘তানঈম’-এর নিকটবর্তী মক্কা থেকে ১০ বা ১২ মাইল দূরে ‘সারিফ’ নামক স্থানে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-এর সাথে বাসর যাপন করেন।[23]

নবী করীম (ছাঃ) মক্কায় তিন দিন অবস্থান করেন। তৃতীয় দিনে হুয়াইতাব ইবনু আব্দুল ওয্যা আরো কয়েক জন কুরাইশ লোক নিয়ে এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলে, তোমার (মক্কায় অবস্থানের) সময় শেষ হয়ে গেছে। সুতরাং তুমি আমাদের এখান থেকে চলে যাও। তিনি বললেন, ‘তোমাদের কি হ’ল, তোমরা আমাকে পরিত্যাগ করেছ, আর আমি তোমাদের সামনে বাসরের আয়োজন করেছি এবং তোমাদের জন্য খাদ্য প্রস্ত্তত করেছি! ইতিমধ্যে তোমরা হাযিরও হয়েছ’। তারা বলল, তোমার খাদ্যের আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। তুমি আমাদের এখান থেকে চলে যাও। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে নিয়ে বের হ’লেন এবং ‘সারিফ’ নামক স্থানে এসে যাত্রা বিরতি করেন। এখানেই তিনি বাসর যাপন করেন।[24]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কি মুহরিম অবস্থায় মায়মূনা (রাঃ)-কে বিবাহ করেছিলেন?

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে হালাল অবস্থায় না মুহরিম অবস্থায় বিবাহ করেছিলেন এ সম্পর্কে বিভিন্ন গ্রন্থে দু’ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। মুহাম্মাদ ইবনু সা‘দ ‘আত-তাবাক্বাতুল কুবরা’ গ্রন্থে ১১টি বর্ণনা পেশ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে হালাল অবস্থায় বিবাহ করেছেন। পক্ষান্তরে তিনি বিভিন্ন সূত্রে ১৭টি বর্ণনা উপস্থাপন করেছেন যে, তাঁদের বিবাহ মুহরিম অবস্থায় সম্পন্ন হয়েছিল।[25] অনুরূপভাবে হাকিম নাইসাপুরী (রহঃ)ও পক্ষে-বিপক্ষে কয়েকটি বর্ণনা পেশ করেছেন।[26] হাফেয শামসুদ্দীন যাহাবী পক্ষে-বিপক্ষে কতিপয় বর্ণনা উল্লেখ করে মুহরিম অবস্থায় বিবাহ সংক্রান্ত বর্ণনাকে মুতাওয়াতির বলেছেন।[27] উক্ত বর্ণনাগুলোর মধ্যে দু’একটি নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল-

عَنْ يَزِيْدَ بْنِ الْأَصَمِّ حَدَّثَتْنِيْ مَيْمُوْنَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزَوَّجَهَا وَهُوَ حَلاَلٌ قَالَ وَكَانَتْ خَالَتِيْ وَخَالَةَ ابْنِ عَبَّاسٍ-

ইয়াযীদ ইবনুল আছাম হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, মায়মূনা বিনতুল হারিছ (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে হালাল অবস্থায় বিবাহ করেছেন। রাবী বলেন, তিনি আমার ও ইবনু আববাসের খালা ছিলেন।[28] অন্য বর্ণনায় আছে,

عَنْ يَزِيْدَ بْنِ الْأَصَمِّ ابْنِ أَخِيْ مَيْمُوْنَةَ عَنْ مَيْمُوْنَةَ قَالَتْ تَزَوَّجَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ حَلاَلاَنِ بِسَرِفَ-

ইয়াযীদ ইবনুল আছাম (মায়মূনার ভাগ্না) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, মায়মূনা (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ ‘সারিফ’ নামক স্থানে আমাকে বিবাহ করেন এবং আমরা হালাল অবস্থায় ছিলাম’।[29]

অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ عِكْرِمَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزَوَّجَ مَيْمُوْنَةَ وَهُوَ مُحْرِمٌ-

ইকরিমা ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে মুহরিম অবস্থায় বিবাহ করেছেন।[30] আবুশ শা‘ছা থেকেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।[31]

সমন্বয় :

উপরোক্ত দুই ধরনের বর্ণনার মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে মনীষীগণ বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যথা- ১. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মুহরিম অবস্থায় বিবাহ করেছেন এবং হালাল অবস্থায় বাসর যাপন করেছেন। ২. ঐ সময় পর্যন্ত মুহরিম অবস্থায় বিবাহ করা হারাম হয়নি।[32] ৩. কারো মতে, তিনি তখন হারামের সীমানার মধ্যে ছিলেন। এজন্য তাকে মুহরিম বলা হয়েছে। কিন্তু মূলতঃ তিনি হালাল ছিলেন। ৪. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হালাল অবস্থায় বিবাহ করেছিলেন ও বাসর যাপন করেছিলেন এবং বিবাহের কথা প্রকাশ করেছিলেন মুহরিম অবস্থায়।[33] যেরূপ ইমাম মুহিউস সুন্নাহ বাগাভী (রহঃ) বলেন, وَالْاَكْثَرُوْنَ عَلٰى أَنَّهُ تَزَوَّجَهَا حَلاَلاً وَظَهَرَ أَمْرَ تَزْوِيْجِهَا وَهُوَ مُحْرِمٌ ثُمَّ بَنَى بِهَا وَهُوَ حَلاَلٌ بِسَرِفَ فِىْ طَرِيْقِ مَكَّةَ. ‘অধিকাংশ বিদ্বান এ মতে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হালাল অবস্থায় তাকে (মায়মূনাকে) বিবাহ করেছেন এবং বিবাহের বিষয়টি মুহরিম অবস্থায় প্রকাশ করেছেন। আর মক্কার পথে ‘সারিফ’ নামক স্থানে তার সাথে বাসর যাপন করেন হালাল অবস্থায়।[34]

বিবাহের কারণ :

তৎকালীন আরব সমাজে বিভিন্ন গোত্রের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল। এ সম্পর্কের কারণেই ছোট ছোট গোত্রগুলো বিশালাকার ধারণ করে। এই বৈবাহিক সম্পর্ক ও পরিচিতির সূত্র ধরে মরুর পথে মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে বহু দূর দূরান্ত থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে যাতায়াত করত। এ সম্পর্কের ফলে নির্ভয়ে তারা এক শহর থেকে অন্য শহরে ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে সফর করত। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিপ্লব সাধিত হয়। অনুরূপভাবে বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে ইসলামী দাওয়াত সুদীর্ঘ কাল থেকে ব্যাপকতা লাভ করে আসছে। সেই দিক থেকে এ বিবাহ ছিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কর্তৃক মায়মূনা (রাঃ)-কে বিবাহ করার উল্লেখযোগ্য কতিপয় কারণ হচ্ছে- (১) আববাস (রাঃ)-এর পরিবার-পরিজনের সাথে সুসম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করা। কেননা তারা এ বিবাহ বন্ধনকে মনে-প্রাণে কামনা করছিলেন। (২) মায়মূনা (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করে তা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন। এতে তিনি বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার মানসিক অবস্থা ঠিক করার জন্য এবং বিভিন্ন সমস্যা থেকে হেফাযত করার জন্য তাকে বিবাহ করেন। (৩) মক্কার মুশরিকদের অন্তরকে প্রভাবিত করার জন্য, বিশেষতঃ মায়মূনা (রাঃ)-এর গোত্র বনু হেলালের উপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য রাসূল (ছাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-কে বিবাহ করেন। কেননা আরবরা এ বৈবাহিক সম্পর্ককে মহৎ মানবিকতা, আশ্রয় দান ও সহায়তা হিসাবে গণ্য করত। এ বিবাহের ফলে দেখা যায়, ঐ গোত্রের লোক দলে দলে ইসলাম কবুল করছে।[35]

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য :

উম্মুল মুমিনীন মায়মূনা (রাঃ) বহু দুর্লভ গুণ ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারিণী ছিলেন। নিম্নে তাঁর কতিপয় উত্তম গুণাবলী উপস্থাপন করা হ’ল।-

ক. তাকওয়া বা আল্লাহভীতি : বিশ্ব জাহানের মালিক মহান আল্লাহকে তিনি সবচেয়ে বেশী ভয় করতেন। জীবনের প্রতিটি কাজে তা প্রতিফলিত হ’ত এবং তাঁর সাথে যারা ওঠা-বসা করতেন তারা তাঁর এ বৈশিষ্ট্যকে সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারতেন। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা ছিদ্দীকা (রাঃ) মায়মূনা সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে তাঁর এ অনুপম গুণ প্রতিভাত হয়েছে। তিনি বলেন, أَمَا اَنَّهَا كَانَتْ مِنْ أَتْقَانَا لِلَّهِ، وَأَوْصَلَنَا لِلرِّحْمِ، ‘জেনে রেখো, নিশ্চয়ই তিনি ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহভীরু এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারীণী।[36]

খ. দানশীলতা : মায়মূনা (রাঃ) অতীব দানশীলা মহিলা ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার এগুণটি পসন্দ করতেন। মায়মূনা (রাঃ)-এর একজন দাসী ছিল। তিনি তাকে আল্লাহর নামে আযাদ করে দেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট একথা বর্ণনা করলে তিনি বললেন, তুমি যদি ঐ অর্থ তোমার ভাই ইবনুল হারিছকে দিতে তবে অধিক ছওয়াব পেতে।[37]

(গ) ইবাদত-বন্দেগী : মায়মূনা (রাঃ) অতি ইবাদতগুযার মহিলা ছিলেন। তিনি ছালাত আদায়ের সময়ে তনুত্রাণ পরিধান করে তথা আপাদমস্তক বস্ত্রাবৃত করে ছালাত আদায় করতেন।[38] তিনি হজ্জ করতে গিয়ে ইহরাম অবস্থায় মাথা কামিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায়ই তিনি ইন্তিকাল করেন। তাঁর মাথায় তখন নতুন চুলে ভরা ছিল।[39] মায়মূনা (রাঃ)-এর সম্ভবতঃ জানা ছিল না যে, হজ্জ বা ওমরায় মহিলাদের মাথা কামানো নিষেধ, বরং চুল ছোট করতে হয়। কেননা হাদীছে এসেছে,

عَنْ عَلِيٍّ رضي الله عنه قَالَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تَحْلِقَ الْمَرْأةُ رَأسَهَا-

আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মহিলাদের মাথা কামাতে নিষেধ করেছেন।[40] অন্য বর্ণনায় এসেছে, لَيْسَ عَلَى النِّسَاءِ الْحَلْقُ إِنَّمَا عَلَى النِّسَاءِ التَّقْصِيْرُ

‘মহিলাদের উপর মাথা কামানো নেই, তাদের জন্য আবশ্যক চুল খাটো করা’।[41]

(ঘ) দ্বীনের বিধানের প্রতি কঠোরতা : আল্লাহ ও রাসূলের আদেশ-নিষেধের প্রতি তিনি খুবই মনোযোগী ছিলেন। আল্লাহর হুকুমের বিপরীত কোন কাজ হ’তে দেখলে, তিনি তা বরদাশত করতেন না। একদা তাঁর এক নিকটাত্মীয় তাঁর গৃহে আসল। তখন লোকটির মুখ থেকে শরাবের গন্ধ আসছিল। তিনি বললেন, যদি তুমি মুসলমানদের নিকটে যাও, তাহ’লে তারা তোমাকে বেত্রাঘাত করবে কিংবা তোমাকে পবিত্র করে ছাড়বে। তুমি আমার নিকটে আর কখনো আসবে না।[42]

(ঙ) বুদ্ধিমত্তা : তাঁর বর্ণিত অনেক হাদীছ থেকে তাঁর ফিক্বহী সূক্ষ্মতার পরিচয় মেলে। উদাহরণ স্বরূপ একটি হাদীছ উল্লেখ করা হ’ল- একবার ইবনু আববাস (রাঃ) মলিন মুখে বসে আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে বৎস! তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেন, উম্মু আম্মার (তাঁর স্ত্রী) আমার চুলে চিরুণী করে দিত। কিন্তু সে মাসিক স্রাবে রয়েছে। তিনি বললেন, কী চমৎকার! আমার ঐ রকম দিনে নবী করীম (ছাঃ) আমার কোলে মাথা রেখে শয়ন করতেন ও কুরআন মাজীদ পড়তেন। আমি ঐ অবস্থায় মসজিদে বিছানা (চাটাই) রেখে আসতাম। বৎস! হাতেও কি এসব হয় কখনও?[43]

ইলমী খিদমত :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ইন্তিকালের পরও দীর্ঘ দিন মায়মূনা (রাঃ) জীবিত ছিলেন। মহানবী (ছাঃ)-এর অনেক হাদীছই উম্মুল মুমিনীনদের মাধ্যমে পরবর্তীদের কাছে সম্প্রসারিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মায়মূনা (রাঃ)-এর অবদান অনস্বীকার্য। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হ’তে তিনি হাদীছ শিক্ষা লাভ করেছেন এবং তা বর্ণনাও করেছেন। ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন, মায়মূনা (রাঃ) হ’তে ৭৬টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[44] হাফেয যাহাবী বলেন, তাঁর থেকে মোট ১৩টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। ইমাম বুখারী ও মুসলিম যৌথভাবে ৭টি, ইমাম বুখারী এককভাবে ১টি এবং ইমাম মুসলিম (রহঃ) এককভাবে ৫টি হাদীছ বর্ণনা করেছেন।[45] তবে আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাঁর থেকে বর্ণিত পুনরুক্তিসহ ছহীহ বুখারীতে ২১টি, ছহীহ মুসলিমে ১৮টি, জামি আত-তিরমিযীতে ৪টি, সুনান আবু দাঊদে ১৫টি, সুনান নাসাঈতে ২৬টি এবং সুনান ইবনু মাজাহতে ১১টি হাদীছ সংকলিত হয়েছে।

তাঁর থেকে যারা হাদীছ বর্ণনা করেছেন :

তাঁর থেকে যারা হাদীছ বর্ণনা করেছেন তন্মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হ’লেন- ইবনু আববাস (মৃঃ ৮৬/৭০৫), আব্দুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ ইবনুল হাদ (মৃঃ ৮১/৭০০), আব্দুর রহমান ইবনুস সায়েব আল-হিলালী, ইয়াযীদ ইবনু আছাম, (এরা সকলেই তাঁর ভাগ্নে), তাঁর পূর্ব স্বামীর ছেলে ওবায়দুল্লাহ আল-খাওলানী, নদবা (দাসী), আতা ইবনু ইয়াসার, সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (মৃঃ ১০০/৭১৮), ইবরাহীম ইবনু আব্দুললাহ (মৃঃ ৪১/৬৬১), কুরায়ব (ইবনু আববাসের দাস) (মৃঃ ৯৮/৭১৬), ওবায়দা ইবনু সাববাক, ওবায়দুল্লাহ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনে উতবা (মৃঃ ৯৪/৭১২), আলিয়া বিনতু সাবী (রাঃ) প্রমুখ।[46]

খাদ্যশস্য দান :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খায়বারের উৎপাদিত ফসল থেকে মায়মূনা (রাঃ)-কে ৮০ ওয়াসাক্ব খেজুর এবং ২০ ওয়াসাক্ব যব বা গম প্রদান করেন।[47]

ইন্তিকাল :

মায়মূনা (রাঃ) ৫১হিঃ/৬৭১খৃঃ ‘সারিফ’ নামক স্থানে ইন্তিকাল করেন। সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়।[48] মুহাম্মাদ ইবনু ওমর আল-ওয়াকেদী বলেন, তিনি ইয়াযীদ ইবনু মু‘আবিয়ার খিলাফতকালে ৬১ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন।[49] হাফেয ইবনু কাছীর বলেন, তিনি ৬৩ হিজরীতে ইন্তিকাল করেন।[50] মায়মূনা (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রীগণের মধ্যে সর্বশেষে ইন্তিকাল করেন।[51] অথচ ইয়াযীদ ইবনুল আছামের বর্ণনা হ’তে জানা যায় যে, আয়েশা (রাঃ) মায়মূনা (রাঃ)-এর পরেও জীবিত ছিলেন। আর আয়েশা (রাঃ) সর্বসম্মতিক্রমে ৬০ হিজরীর পূর্বে ইন্তিকাল করেন। মায়মূনা (রাঃ)-এর মৃত্যু সন নিয়ে আরো কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। যেমন ৪৯ হিঃ, ৬৩ হিঃ ও ৬৬ হিঃ। তবে এ বর্ণনাগুলো সঠিক নয়। বরং প্রথম বর্ণনাটিই অধিক বিশুদ্ধ।[52] মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর মতান্তরে ৮১ বছর।[53]

জানাযা ও দাফন :

তিনি ‘সারিফে’ মৃত্যুবরণ করেন। কারো মতে, তিনি মক্কায় মৃত্যুবরণ করেন এবং সারিফে নীত হন।[54] যখন তাঁর লাশ কাঁধে উঠানো হয়, তখন ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রী। সুতরাং বেশী নাড়াচাড়া করো না। আদবের সাথে আস্তে নিয়ে চলো।[55] ইবনু আববাস (রাঃ) তাঁর জানাযা পড়ান। ‘সারিফ’ নামক স্থানে যেখানে তাঁর বাসর উদ্যাপিত হয়েছিল, সেখানে তাঁকে দাফন করা হয়। ইবনু আববাস (রাঃ), ইয়াযীদ ইবনুল আছাম, আব্দুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ ইবনুল হাদী এবং ওবায়দুল্লাহ আল-খাওলানী (রাঃ) তাঁকে কবরে নামান।[56] ইয়াযীদ ইবনু আছাম বলেন, যখন আমরা মায়মূনা (রাঃ)-এর মৃতদেহ কবরে রাখলাম, তখন তাঁর মাথাটা একদিকে ঝুকে গেল। তখন আমি চাদর খুলে তাঁর মাথার নীচে দিলে ইবনু আববাস তা উঠিয়ে ফেলেন এবং তাঁর মাথার নীচে কিছু নুড়ি পাথর দিয়ে দেন।৫৭ [57]

সমাপনী :

উম্মুল মুমিনীন মায়মূনা (রাঃ) ছিলেন সম্ভ্রান্ত বংশীয় ও অভিজাত পরিবারের এক বিদুষী মহিলা এবং বহু অনুপম গুণের অধিকারিণী। তিনি চরিত্র-মাধুর্যে যেমন অনুসরণীয় ছিলেন, তেমনি ইলমী খিদমতে তাঁর জীবনের অনেক সময় ব্যয় করেছেন। নবীপত্নী এই মহিয়সী ছাহাবীর জীবনী থেকে আমাদের জন্য অনেক শিক্ষা রয়েছে। তাঁর ঘটনাবহুল জীবনী থেকে ইবরাত হাছিল করতে পারলে আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন জীবন হবে সুন্দর ও সুখময়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণের তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!


[1]. হাফেয শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড (বৈরুত : মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ৩য় প্রকাশ, ১৯৮৫ খৃঃ/১৪০৫ হিঃ), পৃঃ ২৪৩; হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী, তাহযীবুত তাহযীব, ১২শ খন্ড (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১ম প্রকাশ, ১৯৯৪ খৃঃ/১৪১৫ হিঃ), পৃঃ ৪২৮।

[2]. মুহাম্মাদ ইবনু সা‘দ, আত-ত্বাবাক্বাতুল কুরবা, ৮ম খন্ড (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১ম প্রকাশ, ১৯৯০ খৃঃ/১৪১০ হিঃ), পৃঃ ১০৪; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৩৮।

[3]. আবু ওমর ইবনু আব্দুল বার্র, আল-ইস্তি‘আব, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ১৯১৫।

[4]. হাকিম নাইসাপুরী, আল-মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন, ৪র্থ খন্ড (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১ম প্রকাশ, ১৯৯০/১৪১১ হিঃ), পৃঃ ৩১।

[5]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৪।

[6]. আল-মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩১।

[7]. আল-ইস্তি‘আব, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ১৯১৫।

[8]. আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩৫।

[9]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৩৮; সাঈদ আইয়ূব, যাওজাতুন নবী (ছাঃ), (বৈরুত : দারুল হাদী, ১ম প্রকাশ, ১৪১৭/১৯৯৭), পৃঃ ৮০।

[10]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৩৯; মাহমূদ শাকির, আত-তারীখুল ইসলামী, ১ম ও ২য় খন্ড (বৈরুত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৪১১/১৯৯১), পৃঃ ৩৬১।

[11]. আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩২; আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৪; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৩৯।

[12]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৪-১০৫; আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩২; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৩৯।

[13]. ড. আয়েশা আব্দুর রহমান, তারাজিমু সায়্যিদাতি বায়তিন নবুওয়াত (কায়রো : দারুর রাইয়ান, তা.বি.), পৃঃ ৪১৫।

[14]. আত-তারীখুল ইসলামী, ১ম-২য় খন্ড, পৃঃ ৩৬১।

[15]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৩৯; আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৫।

[16]. তদেব; হাফেয ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ২য় খন্ড, ৪র্থ জুয (কায়রো : দারুর রাইয়ান, ১ম প্রকাশ, ১৯৮৮/১৪০৮), পৃঃ ২৩৩; আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩৩।

[17]. তারাজিমু সাইয়্যেদাতি বায়তিন নবুওয়াত, পৃঃ ৪১৫।

[18]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৫।

[19]. তারাজিমু সাইয়্যেদাতি বায়তিন নবুওয়াত, পৃঃ ৪১৫-১৬; আল-ইছাবাহ, ৪র্থ খন্ড, ৮ম জুয, পৃঃ ১৯২; ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৩য় খন্ড (কুয়েত : আল-ইরফান, ১ম প্রকাশ, ১৯৯৬)/১৪১৭ হিঃ), পৃঃ ৬৫৪।

[20]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ২য় খন্ড, ৪র্থ জুয, পৃঃ ২৩৩।

[21]. তদেব; ফাতহুল আল্লাম, ১ম খন্ড, পৃঃ ২৩৬।

[22]. তদেব; আত-তারীখুল ইসলামী, ১ম ও ২য় খন্ড, পৃঃ ৩৬১; আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩২; আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৮।

[23]. আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩২-৩৩; তারাজিমু সায়্যিদাতি বায়তিন নবুওয়াত, পৃঃ ৪১৭।

[24]. আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩৩।

[25]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৫-১০৮।

[26]. আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩৩-৩৪।

[27]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪০-৪১।

[28]. ছহীহ মুসলিম হা/১৪১১ ‘মুহরিমকে বিবাহ করা হারাম ও প্রস্তাব দেওয়া অপসন্দনীয়’ অনুচ্ছেদ; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৬৪।

[29]. আবু দাঊদ হা/১৮৪৩; তিরমিযী হা/৮৪৫; আহমাদ ৬/৩৩৩, ৩৩৫।

[30]. মুসলিম হা/২৫২৭; আহমাদ হা/২২০০; আবু দাঊদ হা/১৮৪৩; তিরমিযী হা/৮৪৩।

[31]. বুখারী; মুসলিম হা/১৪১০; তিরমিযী হা/৮৪৪; ইবনু মাজাহ হা/১৯৬৫।

[32]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ২য় খন্ড, ৪ জুয, পৃঃ ২৩৩; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪২।

[33]. মিরক্বাত, ৯ম খন্ড, পৃঃ ১৬৩।

[34]. মিশকাত, তাহক্বীক্ব : আলবানী, ২য় খন্ড (বৈরুত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৩য় প্রকাশ, ১৯৮৫/১৪০৫ হিঃ), পৃঃ ৮২২, ২৬৮৩ নং হাদীছের আলোচনা দ্রঃ।

[35]. ছালাহুদ্দীন মকবূল আহমাদ, আল-মার‘আতু বায়না হিদয়াতিল ইসলাম ওয়া গাওয়াতুল ই‘লাম, পৃঃ ২৭১।

[36]. আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৩৪; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৪, সনদ হাসান।

[37]. বুখারী হা/২৪০৩; মুসলিম হা/১৬৬৬।

[38]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১১০; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৩, সনদ ছহীহ।

[39]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১০৯; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৩, সনদ ছহীহ।

[40]. নাসাঈ, তিরমিযী, হা/৯১৩।

[41]. আবু দাঊদ হা/১৯৪৮, সনদ হাসান।

[42]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১১০; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৩, সনদ ছহীহ।

[43]. মুসনাদ ইমাম আহমাদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃঃ ৩৩১।

[44]. সাইয়েদ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল-জরদানী, ফাতহুল আল্লাম বিশারহি মুরশিদিল আনাম, ১ম খন্ড (কায়রো : দারুস সালাম, ৪র্থ প্রকাশ, ১৪১০/১৯৯০), পৃঃ ২৩৬; অবশ্য তাঁর থেকে বর্ণিত হাদীছের সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ‘মাতালিউল আনোয়ার’ গ্রন্থে ৭৭টি এবং ‘আল-কামাল ফী মা‘রিফাতির রিজাল’ গ্রন্থে ৪৬টি হাদীছের কথা এসেছে। দ্রঃ আসমাউছ ছাহাবা আর-রুয়াত, ৪৪নং টীকা, পৃঃ ৬৮।

[45]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৫।

[46]. তদেব, পৃঃ ২৩৯; আসমাউছ ছাহাবা আর-রুয়াত, পৃঃ ৬৮।

[47]. আত-তাবাকাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১১১।

[48]. আল-ইছাবা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১৯৩; তাহযীবুত তাহযীব, ১২শ খন্ড, পৃঃ ৪৮১।

[49]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৫।

[50]. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়াহ, ২য় খন্ড, ৪র্থ জুয, পৃঃ ২৩৪।

[51]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১৪০।

[52]. আল-ইছাবা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১৯৩; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৫।

[53]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১১১; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৫।

[54]. তদেব; আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১১১।

[55]. বুখারী, ২য় খন্ড, পৃঃ ৭৫৮।

[56]. আল-ইস্তি‘আব, ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ১৯১৮।

[57]. আত-তাবাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খন্ড, পৃঃ ১১১।






হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
খুবায়েব বিন আদী (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
উম্মুল মুমিনীন জুওয়াইরিয়া বিনতুল হারেছ (রাঃ) (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
হোসাইন বিন আলী (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
ঈমানী তেজোদীপ্ত নির্যাতিত ছাহাবী খাববাব বিন আল-আরাত (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আস‘আদ বিন যুরারাহ (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
হাসান বিন আলী (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
মায়মূনা বিনতুল হারেছ (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
উম্মু হাবীবা বিনতু আবী সুফিয়ান (রাঃ) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.