ক্ষয়ে যাওয়া হাঁটু নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকে। বর্তমানে
কৃত্রিম জানু প্রযুক্তি ও সার্জিক্যাল কৌশলের উন্নতিতে প্রতিস্থাপন এখন
অনেক বেশি কার্যকর হচ্ছে। এ প্রযুক্তি শুরু হয়েছে ২০ বছর বা এরও বেশী
পূর্বে। তবু ডাক্তাররা এখনো প্রতিস্থাপনের রোগীদেরকে অসুস্থ না হওয়া
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলছেন। ফলে অনেক রোগী তাদের জানুসন্ধির কোমলাস্থি
পুরোপুরি ক্ষয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকেন। এভাবে তারা গৃহবন্দী হয়ে
পড়েন, জানুতে প্রচুর ব্যথা নিয়ে হয়ে পড়েন শয্যাশায়ী। সমস্যা হ’ল, যে রোগীরা
অনেক দিন অপেক্ষা করেন, তারা এত রুগ্ন হয়ে পড়েন যে, সেরে উঠা কঠিন হয়ে
পড়ে। হাঁটুর কার্যক্ষমতা ফিরে পাওয়াও সম্ভব হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের দেলাওয়ার
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি বিভাগের অধ্যাপক লিন স্নাইডার বলেন, ‘খুব
দীর্ঘসময় অপেক্ষা করলে এমন এক অবস্থায় উপনীত হয়ে যায়, যেখান থেকে ফেরত আসার
সম্ভাবনা ক্রমেই কমে যেতে থাকে। উন্নত দেশের পরিসংখ্যান মতে, পূর্ণবয়স্ক
পাঁচ জনের মধ্যে একজনের থাকে আথ্রাইটিস বা হাড়ের গিঁটের ক্রনিক ব্যথা।
মানুষের বয়স যত বাড়ে, ততই কোমলাস্থি ক্ষয়ে যেতে থাকে। ফলে প্রদাহ হওয়াতে
ফোলা হয়, ব্যথা হয় এবং নিশ্চল হয় সন্ধি। বিশেষ চাকুরী বা এমন কোন ক্রীড়া
যার জন্য বিশেষ হাড়ের গিটে পুনঃপুনঃ সঞ্চালণ ঘটে, এতে সেই হাড়ের গিঁটে হয়
আথ্রাইটিস। পারিবারিক ইতিহাস ও ওযন বৃদ্ধিরও ভূমিকা রয়েছে এখানে। তবে
আথ্রাইটিস সূচিত হ’লেই হাড়ের গিটের প্রতিস্থাপন অবশ্যম্ভাবী হয় না। ব্যথা ও
প্রদাহের চিকিৎসা আশানুরূপ হ’লে কর্মক্ষমতা দীর্ঘদিন থাকে। ব্যথার ওষুধ
এবং গন্ধুকোস্যামাইন ও কনড্রায়াটিন এর মত সাপ্লিমেন্ট দিলে উপশম হয়।
স্বাস্থ্যকর ওযন বজায় রাখলে জানুতে আথ্রাইটিসের ঝুঁকি কমে যায়। মাঝারি
ধরনের ব্যায়ামে কিছু কাজ হয়। সার্জারির ব্যাপারে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি
দিন অপেক্ষা করেন। হয়ত দুর্বল হয়ে যাওয়া হাড়ের সীমারেখা একা গ্রহণ করতে
পারেন বেশিক্ষণ। জার্নাল অব বোন অ্যান্ড জয়েন্ট সার্জারিতে ২০০৯ সালের শেষ
দিকে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে ডাঃ স্নাইডার ম্যাকলেরার ও সহকর্মীরা ৯৫ জন
পুরুষ ও ১২৬ জন নারীর উপর গবেষণা করেন। এদের জানু প্রতিস্থাপনের কথা জানান।
দেখা যায়, পুরুষদের তুলনায় নারীদের সার্জারি বেছে নেয়ার প্রস্ত্ততির সময়
শারীরিক অবস্থা ও হাড়ের গিটের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ। গত বছরের গোড়ার দিকে
ক্যানাডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে রিপোর্টে দেখা যায়,
ডাক্তাররা নারীদের চেয়ে পুরুষদের অনেক বেশি বার সার্জারির পরামর্শ
দিয়েছিলেন। টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একজন পুরুষ ও একজন নারী বেছে
নিলেন, দুজনেরই বয়স ৬৭ বছর। যাদের জানুতে ওস্টিওআথ্রাইটিস ছিল একই মাপের।
এদের প্রত্যেকে ২৯ জন অর্থোপেডিক সার্জন ও ৩৮ জন পারিবারিক চিকিৎসকের কাছে
ভিন্নভাবে গেলেন। যদিও তারা উভয়েই একই রকম উপসর্গের কথা বললেন। তবুও
দুই-তৃতীয়াংশ চিকিৎসক পুরুষকে দিলেন জানু প্রতিস্থাপনের পরামর্শ, অথচ কেবল
একতৃতীয়াংশ মনে করেন যে নারীদের জন্যও এটি প্রয়োজ্য। ভিনদেশী ষাটোর্ধ একজন
মহিলার বক্তব্য, বছরের পর বছর যন্ত্রণা ভোগের পর তার চিকিৎসক তাকে জানু
প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিলেন। তিনি জানান, সম্পূর্ণ অক্ষম হয়ে পড়ার পরও
চিকিৎসকরা এ ব্যাপারে মত দিতে দ্বিধান্বিত ছিলেন।
চিনি কম খান
চিনি
থেকে বিপদ : বেশী মিষ্টি খেলে ওযন বাড়ে। চিনিতে ব্যাপক পরিমাণে কেলরি
থাকে। মিষ্টি জিনিসে চর্বিও বেশী থাকে। চিনিতে কোনও ভিটামিন, মিনারেল বা
পৌস্টিক তত্ত্ব থাকে না। তাই শুরু থেকেই কম করে মিষ্টি খেতে হয়। বয়স বেড়ে
যাওয়ার সাথে সাথে মিষ্টি জিনিসের প্রতি দুর্বলতাও বেড়ে যায়। তখন বেশী করে
চিনি খেলেও তাদের জিভে লাগে না।
কতটুকু চিনি খাওয়া দরকার : কোন
স্বাস্থ্যবান যুবক ১৬০০ কেলরিযুক্ত আহার গ্রহণ করলে সে ৬ চামচ অর্থাৎ ২৪
গ্রাম চিনি খেতে পারে। অন্যদিকে ২,২০০ কেলরিযুক্ত আহার গ্রহণ করা ব্যক্তির
১২ চামচ অর্থাৎ ৪৮ গ্রাম চিনি খাওয়া প্রয়োজন।
মিষ্টি খাওয়াটা
নিয়ন্ত্রণে রাখুন : ফলের রস, আইসক্রিম ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের শরীরে যে
পরিমাণ চিনি প্রবেশ করে, সেটা সুগারের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর
ফলে শরীরে অবশ ভাব নেমে আসে।
* লেবুর পানি, চা, কফি ইত্যাদিতে চিনির পরিবর্তে মধু খাওয়া প্রয়োজন।
* মিষ্টি খেতে মন চাইলে মিষ্টির পরিবর্তে ফল খেতে হবে।
* প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় চামচের বেশী চিনি খাওয়া ঠিক নয়।
\ সংকলিত \