কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, ২৯-৩০শে অক্টোবর, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ২০২০ : গত ২৯-৩০শে অক্টোবর ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর উদ্যোগে দ্বিতীয় বার্ষিক কেন্দ্রীয় শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়। দু’দিন ব্যাপী উক্ত শিক্ষা সফরে অংশগ্রহণ করেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, সহ-সভাপতি মুখতারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, প্রচার সম্পাদক আসাদুল্লাহ মিলন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আহমাদুল্লাহ, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুন নূর, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ আজমাল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য ও বাহরাইনের আল ফোরক্বান ইসলামিক সেন্টারের দাঈ শরীফুল ইসলাম সহ দেশের ২১টি যেলা থেকে মোট ১০২ জন কর্মী। মেহমান হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. নূরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক্বীম আহমাদ প্রমুখ। ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্বে ছিলেন যুবসংঘ-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুস্তাফিযুর রহমান সোহেল, নারায়ণগঞ্জ যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক রবীউল ইসলাম এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক রাসেল মিয়া।

২৯ই অক্টোবর সকাল ৭-টায় দু’টি রিজার্ভ কোচ নিয়ে সফরকারী দলটি নারায়ণগঞ্জ যেলা অফিস কাঞ্চন বাজার থেকে যাত্রা শুরু করে এবং বেলা ১১-টায় কিশোরগঞ্জ যেলার বাজিতপুর উপযেলার গজারিয়া বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পৌঁছে। এ সময় তাদেরকে স্বাগত জানান এবং আতিথেয়তা করেন স্থানীয় দ্বীনী ভাই সঊদী আরবের আল-খাবজী শাখা ‘আন্দোলন’-এর দফতর সম্পাদক আব্দুল হামীদ, কিশোরগঞ্জ ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক আহবায়ক মাহফূযুর রহমান রতন, আব্দুল মুমিন, রোকন আহমাদ, আহমাদ আলী প্রমুখ। সফরকারীগণ এখানে সকালের নাশতা গ্রহণ করেন। এসময় স্থানীয় দ্বীনী ভাইদের সাথে মতবিনিময় বৈঠকে কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুন নূরের সঞ্চালনায় দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম। অতঃপর সেখান থেকে তারা বেলা ২-টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর থেকে ২৫ কি. মি. দূরে নিকলী বেড়িবাঁধে গমণ করেন। অতঃপর ২টি ট্রলারে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জলাভূমি ‘নিকলী হাওরে’র মধ্য দিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা নৌভ্রমণের পর তারা মিঠামইন বাজারে পৌঁছান এবং সেখান থেকে নিকলী হাওরের মধ্য দিয়ে নবনির্মিত মিঠামইন-অষ্টগ্রাম হাইওয়ে ধরে ভাতশালা বড় ব্রীজ এলাকায় যান। সেখানে মাগরিবের ছালাত আদায় করে মিঠামইনে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামীদের বাসভবন পরিদর্শন করে পুনরায় ট্রলারে চড়ে চাঁদনী রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে নিকলী বেড়িবাঁধ পৌঁছান।

হোটেলে রাতের খাবারের পর সফরকারীরা স্থানীয় বাজারে দাওয়াতী কাজ করেন এবং বই ও প্রচারপত্র বিতরণ করেন। স্থানীয়দের অনেকেই দাওয়াতী কাফেলার সংবাদ পেয়ে খুশী হন এবং নিজেদের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করেন। তারা জানান, ধীরে ধীরে অত্র অঞ্চলের মানুষ দ্বীন সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন এবং ছহীহ দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। এসময় কিশোরগঞ্জ থেকে যুক্ত হওয়া দ্বীনী ভাই মাহফূযুর রহমান রতনসহ নতুন আহলেহাদীছ ৬ জন ভাই বিদায় গ্রহণ করেন এবং তাদের আবেগময় অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এসময় কেন্দ্রীয় সভাপতি তাদেরকে সাংগঠনিকভাবে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করেন। অতঃপর রাতেই সফরকারী দলটি নেত্রকোণার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় রাত ২-টায় নেত্রকোণার বিরিশিরিতে পৌঁছে। অতঃপর স্থানীয় এক রেস্টহাউজে তারা অবস্থান গ্রহণ করেন।

পরদিন সকালে সফরকারী দলটি ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কোলে সোমেশ্বরী নদী ভ্রমণ করে। এসময় তাদের সাথে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ উত্তর সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’ দফতর সম্পাদক আকবর আলী, যুবসংঘ-এর সভাপতি মুহাম্মাদ আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামূন ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাইসুল হূদা প্রমুখ যোগদান করেন। অতঃপর স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প, জিরো পয়েন্ট, কমলাবাগান প্রভৃতি স্পট পরিদর্শন করে চিনামাটির পাহাড়ে পৌঁছান। সেখানে জুম‘আর ছালাতের সময় হলে স্থানীয় এক হানাফী মসজিদে তারা ছালাত আদায় করেন। ছালাতের পর দেওবন্দ পড়ুয়া খত্বীব ছাহেবের অনুমতিক্রমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য শরীফুল ইসলাম মাদানী। সুন্নাতের অনুসরণের ব্যাপারে তাঁর সংস্কারমূলক বক্তব্যকে স্থানীয়রা সাদরে গ্রহণ করেন এবং খত্বীব ছাহেব তাঁকে ধন্যবাদ জানান। অতঃপর চিনামাটির পাহাড় ও লেক পরিদর্শন করে তারা রেষ্টহাউজে ফিরে আসেন। বাদ মাগরিব বিরিশিরি থেকে রওয়ানা হয়ে তারা রাত ৯টায় নেত্রকোনা শহরের উপকন্ঠে মাধবপুরে অবস্থিত একমাত্র আহলেহাদীছ মসজিদে পৌঁছান। নেত্রকোণা জমঈয়তে আহলেহাদীসের সেক্রেটারী জনাব আনোয়ারুল হক, মসজিদের জমিদাতা খালেদ হোসাইন, মসজিদ কমিটির সদস্য আবুল হাশিম, মুখলেছুর রহমানসহ স্থানীয় মুছুল্লীগণ তাদেরকে সেখানে স্বাগত জানান। সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের পর তারা মসজিদ কমিটির আতিথেয়তায় রাতের খাবার গ্রহণ করেন। অতঃপর কেন্দ্রীয় সভাপতি সফর কারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে বিদায়ী বক্তব্য রাখেন। রাত ১১টায় তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে স্ব স্ব গন্তব্যের পথে রওয়ানা হন।






আরও
আরও
.