শিক্ষার্থী মূল্যায়ন :

শিক্ষার্থী মূল্যায়ন অনুচ্ছেদের ২য় ও ৩য় লাইনে বলা হয়েছে, ‘পঞ্চম শ্রেণী শেষে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে’। ইতিমধ্যে এ পদ্ধতি চালু হয়ে গেছে। বাস্তবে দেখা গেছে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ বিষয় আরবী ও ধর্মীয় শিক্ষার নম্বর থাকছে মাত্র ২০। আর বাকিটা থাকছে সাধারণ বিষয় থেকে। যার কারণে অধিকাংশ মাদরাসা ছাত্র সমাপনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হচ্ছে। এটা মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বৈ কিছু নয়।

মাধ্যমিক শিক্ষা

উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য :

মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে বলা হয়েছে, ‘নতুন শিক্ষা কাঠামোয় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর হিসেবে বিবেচিত হবে’। অন্যদিকে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘দশম শ্রেণী শেষে জাতীয় ভিত্তিতে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষার নাম হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। দ্বাদশ শ্রেণীর শেষে আরো একটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এর নাম হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা’।

উপরোক্ত পয়েন্ট দু’টো স্ববিরোধী ও পরস্পর সাংঘর্ষিক। কেননা উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে বলা হ’ল, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর হিসাবে বিবেচিত হবে। অথচ পরীক্ষা ও মূল্যায়ন অনুচ্ছেদে বলা হ’ল, দ্বাদশ শ্রেণীর শেষে আরো একটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, এর নাম হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। মাধ্যমিক স্তরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয় কিভাবে? এটা একটি হাস্যকর বিষয় নয় কি? আর পরীক্ষা যদি বর্তমান ধারার মত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দু’টোই হয় তাহ’লে এই হযবরল অবস্থার উদ্দেশ্যটা কি? বা এতে নতুনত্বের কারিশমাই বা কি?

শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচী ও পাঠ্যপুস্তক :

অত্র অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে তিনটি ধারা থাকবে, সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি’। শিক্ষা ধারা বিভক্ত করা এটা আমাদের রীতি নয়, বৃটিশদের রেখে যাওয়া রীতি। এদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও বিচার ব্যবস্থা সবই চলছে বৃটিশদের নীতি ও রীতির অনুসরণে। তাদের মূলনীতি ছিল ‘বিভক্ত কর ও শাসন কর’। এ লক্ষ্যে তারা সাধারণ শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষা নামে প্রথমে শিক্ষাকে দু’ভাগ করে। সাধারণ শিক্ষাকে তারা পুরোপুরি সেক্যুলার অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষ করে ঢেলে সাজায়। এতে তাদের চিন্তা-চেতনায় এমনকি চেহারায় ও পোশাকে আমূল পরিবর্তন আসে। ইসলামের নাম নেওয়া এমনকি নিজেদের ‘মুসলিম’ পরিচয়কেও তারা সংকীর্ণতা বলে ভাবতে থাকে। এই অবস্থা আজও অব্যাহত আছে বৈকি? তারপর ধর্মীয় শিক্ষিতরা যাতে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হ’তে না পারে সেজন্য মাদরাসা শিক্ষাকে দু’ভাগে ভাগ করে। একটি হ’ল, সরকারী সিলেবাসভুক্ত ও সরকারী অনুদানপ্রাপ্ত আলিয়া মাদরাসা এবং আরেকটি জনগণের স্বেচ্ছাকৃত দানে প্রতিষ্ঠিত কওমী মাদরাসা। দু’ধরনের মাদরাসায় শিক্ষাদান পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় তাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হ’তে থাকে। এভাবে একই পিতার তিনটি ছেলে তিনমুখী হয়ে পড়ে। যা মুসলিম সমাজকে দ্বিধাবিভক্ত করে এবং তা ইংরেজদের উদ্দেশ্য হাছিলে সহায়ক হয়। এই বিভক্তিকে হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত করে দেওয়ার জন্য তারা মাদরাসা শিক্ষার সিলেবাসে কুরআন ও হাদীছকে গৌণ রেখে নির্দিষ্ট একটি মাযহাবের ফিকহকে পাঠ্যসূচীভুক্ত করে দেয়। যার এমন পৃষ্ঠা পাওয়া যাবে না, যেখানে একই বিষয়ে বিভিন্ন মাযহাবের বিদ্বানগণের মধ্যে মতভেদ না আছে। ফলে ছাত্রদের তরুণ মনে এগুলো দারুণ প্রভাব বিস্তার করে এবং ইসলামকে তারা একটি ঝগড়ার ধর্ম বলে ভাবতে থাকে। ইংরেজ পৃষ্ঠপোষকতায় ১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্যালকাটা আলিয়া মাদরাসা (পরবর্তীতে সেটি হয় ঢাকা সরকারী আলিয়া মাদরাসা)। হাস্যকর হ’লেও সত্য যে, এ মাদরাসার পর পর ২৬ জন অধ্যক্ষ ছিলেন ইংরেজ নাছারা। এর প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন ড. এ স্প্রেঙ্গার (১৮৫০-৫৭)। সর্বশেষ ইংরেজ অধ্যক্ষ ছিলেন আলেকজান্ডার হেমিলটন হার্লি (১৯১১-২৩ ও ১৯২৫-২৭)। ১৮৫০ সালে প্রথম অধ্যক্ষ নিয়োগের পূর্বে (১৭৮০-১৮৫০) ক্যালকাটা মাদরাসার প্রধান নির্বাহীর পদবী ছিল সেক্রেটারী। সেক্রেটারীও হ’তেন ইংরেজ। ক্যাপ্টেন আয়রন ছিলেন প্রথম সেক্রেটারী। ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদরাসার নির্বাহী প্রধান ইংরেজ নাছারা। এখান থেকেই বুঝা যায় যে, তারা শিক্ষা ব্যবস্থা বিভক্ত করেছিল তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে। ইংরেজরা এদেশ ছেড়ে চলে গেলেও আজও আমরা তাদের রেখে যাওয়া শিক্ষানীতি অনুসরণ করে তাদের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে আছি। মাধ্যমিক স্তরে বাধ্যতামূলক হিসাবে যে সকল বিষয়ের নামোল্লেখ করা হয়েছে, তাতে ধর্মীয় শিক্ষার কোন বিষয় নেই। এতে বুঝা যাচ্ছে, পুরো মাধ্যমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক বিষয় হিসাবে থাকবে না। যার ফলে এ স্তর থেকে ধর্ম বিবর্জিত নাস্তিক প্রজন্মেরই আগমন ঘটবে। কোন আস্তিক ধার্মিক প্রজন্ম নয়।

মাদরাসা শিক্ষা

মাদরাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে শুরু থেকে তৃতীয় পয়েন্ট পর্যন্ত যা বলা হয়েছে, তা মোটামুটি ইতিবাচক। তাই জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটিকে এ বিষয়ে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু চতুর্থ পয়েন্টে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে অন্যান্য ধারার সঙ্গে মাদরাসা শিক্ষায় সাধারণ আবশ্যিক বিষয় সমূহে অভিন্ন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচী বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণ করা’। এটি খুবই আপত্তিজনক। কেননা এতে মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বিনষ্ট হবে। ফলে মাদরাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার মাঝে কোন পার্থক্য থাকবে না এবং মাদরাসাগুলো কালক্রমে স্কুলে পরিণত হবে। মাদরাসা শিক্ষার স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে হ’লে ইসলামী ভাবধারায় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচী প্রণয়ন করতে হবে।

মাদরাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে অনেক ভাল ভাল কথা বলা হ’লেও কর্মকৌশলের ৩নং পয়েন্টে বলা হয়েছে, শিক্ষার অন্যান্য ধারার সঙ্গে সমন্বয় রেখে ইবতেদায়ী পর্যায়ে নির্দিষ্ট শ্রেণীর শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নির্ধারিত বিষয় সমূহ বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণ করা হবে। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাক-বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা প্রদান করা হবে। দাখিল পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশ স্টাডিজ বিষয় বাধ্যতামূলক থাকবে। এখানে আবশ্যিক বিষয় সমূহের যে ফিরিস্তি দেয়া হয়েছে তাতে মাদরাসা শিক্ষার মূল বিষয় সমূহ যথা- কুরআন, হাদীছ, আরবী, ফিকহ-আকাইদ ইত্যাদির নাম নেই। এসব মূল বিষয়গুলো যদি আবশ্যিক না থাকে তাহ’লে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, মাদরাসা শিক্ষা ধ্বংসের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র পাকাপাকি করা হয়েছে।

২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতির মাদরাসা শিক্ষা অধ্যায়ের ২নং কর্মকৌশলে বর্তমান ফাযিল দুই বছর মেয়াদী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি এ্যাক্ট ২০০৬-এর ৬-এর ২২A (4) ধারা মোতাবেক ২৭.০৩.২০০৭ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে ১৯৩ সভায় অনুমোদিত হয়ে ২০০৬-২০০৭ শিক্ষাবর্ষ হ’তে ফাযিল তিন বছরের কোর্স চালু হয়েছে। অথচ আঠার সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির কোন সদস্যই এ বিষয়ে কোনই খবর রাখেন না বলেই মনে হয়। আরোও আশ্চর্য লাগে এজন্য যে, উক্ত কমিটির মধ্যে একজন মাওলানা ছাহেব আছেন, যিনি সিলেট ও ঢাকা সরকারী আলিয়া মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনিও কি বিষয়টি অবগত নন? নাকি জাতীয় শিক্ষানীতিতে কি প্রণীত হচ্ছে এ বিষয়ে তিনি আদৌ অবগত ছিলেন না? নাকি এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের চোখে ধুলো দেয়ার জন্য তাকে নাম সর্বস্ব সদস্য করা হয়েছিল? নাকি তিন বছর মেয়াদী স্নাতক সম্মান ফাযিলকে আবারো দুই বছর মেয়াদী করে স্নাতকের সমমান বিলুপ্তির পায়তারা হচ্ছে?

মাদরাসা শিক্ষার কর্মকৌশলের ১নং পয়েন্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে মাদরাসা শিক্ষা জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশরূপে প্রতিষ্ঠিত। এই শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রেখে একে আরোও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে যাতে এ শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়

নিঃসন্দেহে এটি একটি ইতিবাচক ভূমিকা। তবে ইতিবাচক ভূমিকার অন্তরালে যদি নেতিবাচক মানসিকতায় মাদরাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার কথা বলে মাদরাসার মৌলিক বিষয় সমূহের মান কমিয়ে দিয়ে আরো সাধারণ বিষয় চাপিয়ে দেয়া হয়, তবে মাদরাসা শিক্ষার স্বতন্ত্রতা ব্যাহত হবে। যা আদৌ কাম্য নয়। উচ্চ শিক্ষার জন্য মাদরাসা শিক্ষার্থীগণ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও খোড়া অজুহাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজিসহ কিছু ডিসিপ্লিনের কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ বিদ্বেষপরায়ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকেন। অথচ ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজিতে ১০০ নম্বরের প্রশ্ন তোলা হয় না। মাদরাসা শিক্ষাধারার ক্ষেত্রেও একই নীতি হওয়া উচিত। কেননা এটা দেখা গেছে যে, মাদরাসা শিক্ষার্থীরা কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হ’লে তারা অন্যান্য ধারার শিক্ষার্থীদের চেয়ে পিছিয়ে থাকছে না। বরং অনেক ক্ষেত্রে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা শীর্ষস্থান অধিকার করে আসছে। আমরা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস বাণী (‘সবরকম বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সকলের জন্য শিক্ষার অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্য শিক্ষানীতির মৌলিক ভিত্তি হিসেবে অনুসরণ করা হয়েছে’)-এর যথাযথ বাস্তবায়ন কামনা করি।

সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাযিল ও কামিলকে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমমান দেয়া হয়েছে। তার পরেও ফাযিল ও কামিল পাশ করে এম.ফিল, পিএইচ.ডি, বিসিএস সহ গবেষণামূলক উচ্চ শিক্ষার কোন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ এ ব্যাপারে কোনই দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। অতি সম্প্রতি ৩১টি মাদরাসায় ফাযিল অনার্স খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর পরেও তারা এম.ফিল, পিএইচ.ডি, বিসিএস করার সুযোগ পাবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা

‘ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ নামে জাতীয় শিক্ষানীতিতে একটি অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টি কোন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে এবং তার পাঠক্রম, পাঠ্যসূচী কি হবে এ ব্যাপারে কোন দিক নির্দেশনা নেই। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা নামে আলাদা অধ্যায় সংযোজন করার রহস্যটা কি এ ব্যাপারেও কিছু উল্লেখ করা হয়নি। যে স্তরে এ বিষয়টি পাঠ্য করা হবে ঐ স্তরের অধ্যায়ে এটি উল্লেখ করলেই তো যথেষ্ট ছিল। বাস্তবে এ নামের কোন বিষয়ের অস্তিত্ব নেই। আজ থেকে তিন বছর পূর্বে শিক্ষানীতি চূড়ান্ত হ’লেও আজ পর্যন্ত কোন শ্রেণীতে এটি পাঠ্য করা হয়নি। মনে হচ্ছে এটি একটি বায়বীয় বিষয়, যা শুধু শিক্ষানীতিতেই শোভা পাবে, বাস্তবে নয়।

ইসলাম ধর্ম শিক্ষা অনুচ্ছেদে ইসলামকে আংশিকভাবে তুলে ধরার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। শুধু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং কালেমা, ছালাত, ছাওম, যাকাত ও হজ্জের মধ্যেই ইসলাম সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ শাশ্বত সার্বজনীন জীবন বিধান। জীবনের প্রতিটি সেক্টরে রয়েছে এর অনুপম কল্যাণকামী জীবন বিধান। তাই সকল বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা প্রয়োজন ছিল।

নৈতিক শিক্ষা অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নৈতিকতার মৌলিক উৎস ধর্ম। তবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ এবং দেশজ আবহও গুরুত্বপূর্ণ উৎস। নৈতিকতার মৌলিক উৎস ধর্ম এটা সত্য। আর এ সত্য উপলব্ধির জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটিকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই। কিন্তু পরবর্তী লাইনে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ এবং দেশজ আবহকে নৈতিকতার গুরুত্বপূর্ণ উৎস বলে ভাষার চাতুর্যে অধর্মকে ধর্ম হিসাবে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টার কারণে তাদেরকে ধিক্কার ও নিন্দাবাদ জানাই। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং দেশজ আবহ কোনক্রমেই নৈতিকতার উৎস হ’তে পারে না। একমাত্র ধর্মীয় মূল্যবোধ ও পরকালীন জবাবদিহিতার ভয়ই মানুষকে নৈতিকতা সস্পন্ন করে গড়ে তুলতে পারে। আর এর মূলভিত্তি হবে কুরআন ও হাদীছ।

উচ্চ শিক্ষা

উচ্চ শিক্ষা শিক্ষাজীবনের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ স্তর। এ স্তর থেকেই তৈরী হয় প্রথম শ্রেণীর নাগরিক ও জাতির কর্ণধার। যাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় দেশ, জাতি, অফিস-আদালত, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসালয়, সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীসহ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান। এদের দ্বারাই অর্জিত হয় দেশের উন্নতি-অবনতি, সুনীতি-দুর্নীতি, সুনাম-বদনাম, সম্মান-অসম্মান, কল্যাণ-অকল্যাণ। এক কথায় দেশের ভাল-মন্দ সব কিছুই নির্ভর করে এদের কর্মকান্ডের উপর। সুতরাং এ স্তরের শিক্ষার গুরুত্ব অন্যান্য স্তরের তুলনায় অনেক বেশী। কিন্তু এ স্তরের একমাত্র ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ব্যতীত অন্য কোন বিভাগে ধর্মীয় শিক্ষার কোন বিষয় আবশ্যিক তো দূরের কথা ঐচ্ছিক বা অতিরিক্ত হিসাবে নেওয়ারও কোন সুযোগ নেই। উচ্চ শিক্ষা স্তরে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীরা বস্ত্তবাদী ও নীতি বিবর্জিত মানুষে পরিণত হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনাচার-অবিচার, নীতিহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কর্মজীবনে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে ব্যক্তি কেন্দ্রিকতা, দয়া-মায়া হীনতা, নির্মমতা-নিষ্ঠুরতা ও পশুত্ববোধ বেড়েই চলছে। তাদের মধ্যে স্নেহ-মায়া-মমতা, ভালবাসা, মহত্ত্ব ইত্যাদি নৈতিক গুণাবলী নেই বললেই চলে। বিপরীত পক্ষে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতা বিবর্জিত হওয়ার কারণে শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী ও সহকর্মীর প্রতি যৌন হয়রানি, অবাধ যৌনাচার, ধর্ষণের সেঞ্চুরী এবং এ উপলক্ষে অনুষ্ঠান করে মিঠা-মন্ডা বিতরণ, যৌন ব্যবসা ও যৌনকর্মে বাধ্য করার মত অসংখ্য ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে। মাদকতার ভয়াল স্রোতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং জনপদ আজ ভাসছে। সর্বোপরি দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং নৈরাজ্য এখন দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনের উপায় হিসাবে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মনে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার কোনই বিকল্প নেই। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য উচ্চশিক্ষার সকল ক্ষেত্র ও ধারায় যেমন- মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আইন, প্রকৌশল, বাণিজ্য, মেডিকেল, সামরিক, টেকনিক্যাল প্রভৃতি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ন্যূনতম ২০০ নম্বরের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশ ও জাতির শিক্ষার মান এবং জাতির চরিত্র ও নৈতিকতা সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে এর কোন বিকল্প নেই। শতকরা ৫০ভাগ মুসলিম প্রধান দেশ মালয়েশিয়ায় শিশু শ্রেণী থেকে শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক। ফলে মালয়েশিয়া আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এবং উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করেছে। অথচ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম প্রধান দেশ বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা সবচেয়ে অবহেলিত। ফলে আমরা আজ সর্বক্ষেত্রে অধঃপতিত।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অদ্যাবধি আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় খোলা হয়নি। অথচ নাম বিশ্ববিদ্যালয়। টেকনিক্যাল, মেডিকেল বা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষার কোন নামগন্ধও নেই। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল সব অনুষদে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর হ’তে নানা মহলের ষড়যন্ত্র ও উন্মাসিকতায় তা আদৌ বাস্তবায়িত হয়নি। এমনকি ইসলামের ন্যূনতম মৌলিক জ্ঞান দেয়ার জন্য প্রতিটি বিষয়ের সাথে ২০০ নম্বরের ইসলামী শিক্ষা রাখা হয়েছিল। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তা বাদ দেয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে এখন ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তেমন কোনই পার্থক্য নেই। উচ্চ শিক্ষার কৌশল ১৩-এ বলা হয়েছে, সরকারী অনুদান ছাড়াও উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যয় নির্বাহের জন্য শিক্ষার্থীর বেতন ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যক্তিগত অনুদান সংগ্রহের চেষ্টা চালাতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ভর্তি ফি ও বেতন খুবই সামান্য। অভিভাবকের আর্থিক সচ্ছলতার প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীর বেতন নির্ধারণের চেষ্টা করা হবে।

এ কৌশলের প্রস্তাবনা উচ্চশিক্ষা সম্প্রসারণে নেতিবাচক ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে এবং উচ্চশিক্ষা সংকোচননীতি ষোলকলায় পূর্ণ হ’তে পারে। এতে শিক্ষা বাণিজ্যও বাড়বে। মেধাবী ও গরীবদের জন্য শিক্ষা গ্রহণ সুদূর পরাহত হবে। এ দেশের সাধারণ অভিভাবকদের যে আয় ও কর্মসংস্থান তা দিয়ে দু’মুঠো খাবার যোগাড় করা যেখানে দুষ্কর, সেখানে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার বর্ধিত বেতন প্রস্তাব কিভাবে করা হ’ল বা কাদের স্বার্থে করা হ’ল? এ কৌশলের প্রস্তাবনা প্রত্যাহার করে শিক্ষার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারকেই বহন করা উচিত।

উপসংহার :

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ইং ৭৬ পৃষ্ঠাব্যাপী এক বিশাল নীতিমালা। এ নীতিমালার প্রাক-কথন থেকে শুরু করে এর প্রতিটি অধ্যায়, অনুচ্ছেদ, পয়েন্ট পর্যালোচনা করা স্বল্প পরিসরে সম্ভব নয়। এখানে কয়েকটি অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা করা হয়েছে মাত্র। পুরো শিক্ষানীতির সারসংক্ষেপ ও সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা হ’ল, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ কিছু ইতিবাচক দিক অবশ্যই আছে। কিন্তু এতে সংবিধান, জাতিসত্তা, জাতীয় বিশ্বাস-মূল্যবোধ, ঐতিহ্য-চেতনার পুরোপুরি প্রতিফলন হয়নি। যেমন- ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের পরিবর্তে অসাম্প্রদায়িকতা সংযোজন, সহজ জীবন যাপনের মানসিকতা, সমমৌলিক চিন্তা-চেতনা গড়ে তোলা, উপজাতিদের আদিবাসী বলা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ভেঙ্গে দিয়ে হ-য-ব-র-ল করা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সকল ধারায় এক ও অভিনণ শিক্ষাক্রম-পাঠ্যক্রম-পাঠ্যপুস্তক, প্রশ্নপত্র, পরীক্ষা মূল্যায়ন ব্যবস্থা, শিক্ষকদের বদলী নীতি, ক্যাডেট ও বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা, সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা ও মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঝে চরম বৈষম্যনীতি, ইংলিশ মিডিয়াম এন,জিও শিক্ষার্থীদের অনিয়ন্ত্রিত রাখা, মাদরাসা শিক্ষার মৌলিক বিষয় কমিয়ে এনে স্কুলে পরিণত করার অপকৌশল, কওমী মাদরাসার প্রতি ঔদাসীন্য, উচ্চশিক্ষায় ব্যাপক বৈষম্য ও সংকোচন নীতি এবং ব্যাপক গবেষণার পথ উন্মুক্ত না রাখা। প্রকৌশল-চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক টেকনিক্যাল শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষার একেবারেই অনুপস্থিতি, তথ্য প্রযুক্তির নামে আকাশ সংস্কৃতির নিয়ন্ত্রণহীনতা, নারীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করা, প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার নামে সংবেদনশীল বিষয়ে যৌন সুড়সুড়ি, কারুকলার নামে নৃত্য-অঙ্গবিক্ষেপ, যাত্রা-সিনেমা, ব্রতচারী শিক্ষা চালুকরণ। প্রতিরক্ষা ও সামরিক শিক্ষার ব্যাপারে ঔদাসীন্য, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র-শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি সম্পর্কে কোন কিছু না বলা, শিক্ষকদের সর্বোচ্চ স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রদানের ব্যাপারে কোন কিছু না বলা সহ আরো অনেক ব্যাপারে এ শিক্ষানীতিতে অপূর্ণাঙ্গতার ছাপ বিদ্যমান রয়েছে। একটি আস্তিক জাতিসত্তার শিক্ষানীতি হ’তে হবে স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক গড়ার উপযোগী ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা। যেহেতু মানুষ সামাজিক ও নৈতিক জীব এবং সেই নৈতিকতা শিক্ষার মৌলিক ও কার্যকর পন্থা হ’ল ধর্ম শিক্ষা। মানুষকে শুধু আইন দিয়ে নয়, বরং ধর্মভিত্তিক নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই সর্বযুগে সর্বকালে মানুষ সভ্য হয়েছে ধর্মভিত্তিক নৈতিকতা বোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ ধর্মভিত্তিক শিক্ষা সম্প্রসারণে কোন উদ্যোগ নেই বরং ধর্মভিত্তিক শিক্ষা সংকোচনের যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে।

অনেক বছর পূর্বে এ উপমহাদেশ থেকে বৃটিশ শাসনের অবসান হ’লেও আজও বৃটিশদের রেখে যাওয়া আইন-শাসন, বিচার ব্যবস্থাসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় পুরোপুরি তাদের পদাংক অনুসরণ করা হচ্ছে। যেন লর্ড মেকলের সেই ভবিষ্যত বাণীই বাস্তবায়িত হচ্ছে। বৃটিশ গভর্ণর লর্ড মেকলে দম্ভভরে বলেছিল, We must at present do our best to form a class who may be interpreters between us and millions whom with we govern, a class of person, Indians in blood and colour, but English in taste, in openions, in morals and intellect. ‘আমরা বর্তমানে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়োজিত করব এমন একটি শ্রেণী সৃষ্টির লক্ষ্যে, যারা আমাদের ও আমাদের শাসিত লক্ষ লক্ষ জনগণের মধ্যে দূত হিসাবে কাজ করবে। যারা রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়। কিন্তু রুচিতে, চিন্তা-চেতনায়, নৈতিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে হবে ইংরেজ’।

পরিশেষে বলব, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ হযবরল বাদ দিয়ে সঠিক ও সুষ্ঠু দিক নির্দেশনা সম্বলিত কার্যকর নীতিমালা করা হোক। সেই সাথে ধর্মীয় বিষয় শিক্ষার সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করা হোক এবং জাতিকে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তুলে দেশের কল্যাণে কাজ করার জন্য প্রস্ত্তত করা হোক। তাহ’লে দেশ উত্তরোত্তর উন্নতি ও সমৃদ্ধি লাভ করবে। সমাজে বইবে প্রশান্তির হাওয়া। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন- আমীন!


কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী

প্রধান মুহাদ্দিছ, বেলটিয়া কামিল মাদরাসা, জামালপুর।






বিষয়সমূহ: শিক্ষাব্যবস্থা
সম্মিলিত মুনাজাত কী ইজতিহাদী মাসআলা? - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ইমাম গাযালীর রাষ্ট্র দর্শন - ড. মুঈনুদ্দীন আহমদ খান
রোগ-ব্যাধির উপকারিতা - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
আদর্শ পরিবার গঠনে করণীয় - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ ভেঙ্গে দিচ্ছে ভারত - আহমদ সালাহউদ্দীন
আমানত (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান
আল্লাহর উপর ভরসা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
শরী‘আতের আলোকে জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
বাহাছ-মুনাযারায় ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছ আলেমগণের অগ্রণী ভূমিকা - ড. নূরুল ইসলাম
মাদ্রাসার পাঠ্যবই সমূহের অন্তরালে (শেষ কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
যাকাতুল ফিৎর : একটি পর্যালোচনা - মুহাম্মাদ খোরশেদ আলম
হকের পথে বাধা : মুমিনের করণীয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.