মাত্র ১১ থেকে ১২
সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭ থেকে ১২ গ্রাম ওযনের ছোট্ট পাখি ‘গোল্ডেন উইং
ওয়ার্বলার’ ঘূর্ণিঝড়ের অনেক আগেই পূর্বাভাস পেয়ে যায়! মধ্য ও দক্ষিণ
আমেরিকাতেই এদের দেখা যায়। আর ভারতে রয়েছে গ্রিন ওয়ার্বলা। মিনেসোটা
বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ইকোলজিস্ট গোল্ডেন ওয়ার্বলার পাখির মাইগ্রেশন
প্যাটার্ন নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তখনই পাখিগুলোর এই গুণের কথা প্রকাশ পায়।
এরা পুরো শীত মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় কাটায়। ডিম পাড়ে ও বাচ্চা প্রতিপালনের
জন্য উত্তর-পূর্ব আমেরিকার আপ্পালাচিয়ানসের গ্রেট লেকে চলে যায়। মাইগ্রেশন
প্যাটার্ন পর্যালোচনার জন্য বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আমেরিকার টেনেসির এক ঝাঁক
ওয়ার্বলারের উপর পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। তাদের অবস্থান জিয়োলোকেটর দিয়ে নযর
রাখা হচ্ছিল। টেনেসিতে পৌঁছে অবাক হয়ে যান বিজ্ঞানীরা। ঐ এলাকা সে সময়
প্রচুর ওয়ার্বলারে ভরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে এলাকা ফাঁকা
ছিল। কোন এক অজ্ঞাত কারণে তারা এলাকা ছেড়ে ৯০০ মাইল দূরে চলে যায়। এই
অদ্ভূত আচরণের কারণটা কিছু দিন পরেই আঁচ করতে পারেন বিজ্ঞানীরা।
ওয়ার্বলাররা টেনেসি ছেড়ে যাওয়ার পরই টর্নেডো আসে সেখানে। মারা যান ৩৫ জন
মানুষ। টর্নেডোর প্রভাব কেটে যাওয়ার কয়েক দিন পরই আবার পাখিরা ফিরে আসে।
বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, টর্নেডোর জন্যই আগাম চলে গিয়েছিল পাখিগুলো।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসের অনেক আগে কিভাবে দুর্যোগের কথা জেনে ফেলে
পাখিগুলো? ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফির তথ্য বলছে, ঝড় থেকে এক প্রকার ইনফ্রাসাউন্ড
বের হয়। সেই ইনফ্রাসাউন্ডের কম্পাঙ্ক এতটাই কম যে মানুষ সেটা শুনতে পায়
না। কিন্তু ওয়ার্বলার শুনতে পায়। অনেক দূর থেকেই তাই ঝড় আঁচ করে নেয় তারা।
এজন্য সহজেই টর্নেডো এড়াতে পেরেছিল গোল্ডেন উইং ওয়ার্বলাররা। এই তথ্য অবশ্য
শুধু গোল্ডেন উইং ওয়ার্বলারের ওপর প্রযোজ্য বলেই জানা গেছে।