সম্পত্তির
লোভে সন্তানদের মারধরের শিকার হয়ে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকিতে পালিয়ে বেড়াতে
হচ্ছে আবুল কালাম বাবুল (৬৫) নামের এক অসহায় পিতাকে। গত ১১ই ডিসেম্বর
রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন ঐ
হতভাগা পিতা। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে সন্তানদের বড় করেছি। উচ্চশিক্ষার
জন্য বিদেশে পাঠিয়েছি। সেই আদরের সন্তানদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হবে
স্বপ্নেও ভাবিনি। কান্নারত অবস্থায় তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহলের
প্ররোচনায় শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভে জন্মদাতা পিতাকে পিটিয়ে আহত করতে
দ্বিধাবোধ করেনি তারা। শুধু তাই নয়, পিটিয়ে কাজ না হওয়ায় সম্পূর্ণ সুস্থ
পিতাকে জোর করে পাগল সাজিয়ে ভর্তি করা হয় মানসিক হাসপাতালে। আর এখন দুনিয়া
থেকে সরিয়ে দিতে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকিসহ নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে তারা।
তিনি বলেন, কখনো ভাবিনি নিজের সন্তানদের বিরুদ্ধে এভাবে সংবাদ সম্মেলন করতে
হবে। কিন্তু এখন তাদের হাত থেকে বাঁচার তাকীদে প্রধানমন্ত্রীসহ
সংশিষ্টদের সহায়তা কামনা করছি। বাবুল বলেন, তিনি আমদানী-রপ্তানীর ব্যবসা
করেন। দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। অনেক কষ্ট করে পিতার
রেখে যাওয়া ব্যবসা ও সম্পত্তি রক্ষা করেছেন। ভাই-বোনদের মধ্যে পিতার
সম্পত্তি ভাগ হওয়ার পর নিজের অংশ নিয়ে বেশ চলে যাচ্ছিল তার। বড় ছেলে একজন
কেমিস্ট। মেয়েকে লন্ডনে লেখা-পড়া করিয়েছেন। ছোট ছেলেও দেশের একটি নামী
ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ছে। তিনি বলেন, সন্তানরা তাদের মা ও মামাদের প্ররোচনায়
পিতার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা পিতার স্থাবর-অস্থাবর পুরো সম্পত্তি তাদের
নামে লিখে দেওয়ার জন্য দাবী করে। তারা ঐ সম্পত্তি বিক্রি করে লন্ডনে বাড়ি
কিনবে। বাবুল বলেন, আমার কষ্টে গড়া ব্যবসা ও পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করতে
রাযী না হওয়ায় সন্তানরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং নানা ধরনের অত্যাচার শুরু করে।
দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চললেও সমাজিক সম্মান ও লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কখনো
বলিনি। কিন্তু বাধ্য হয়ে সবকিছু বলতে হচ্ছে। তিনি বলেন, গত ১৮ই অক্টোবর
রাতে আমার ১৩ নম্বর পরীবাগের বাসায় বড় ছেলে, তার মা ও দুই মামা সম্পত্তি
লিখে দিতে চাপ সৃষ্টি করে। আমি রাযী না হওয়ায় তারা বেধড়ক কিলঘুষি মারতে
শুরু করে। একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফেরে তখন নিজেকে
তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি মানসিক হাসপাতালের সামনে দেখতে পাই। ঐ সময় ছেলে ও
তার সহযোগীরা কিছু সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলে। কিন্তু না করায়
পুনরায় বেধড়ক মারধর করে কয়েকটি লেখা ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ঐ
হসপিটালে ভর্তি করে রেখে আসে।
বাবুল আরও বলেন, ঐ হসপিটালে ৩৩ দিন ধরে বন্দী ছিলাম। একপর্যায়ে আমার ভাই-বোন ও ব্যবসায়িক ম্যানেজার আমার খোঁজ পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়। পরবর্তীতে আদালত আমাকে সুস্থ সাব্যস্ত করে নিজ যিম্মায় থাকার অনুমতি দেন। তিনি বলেন, বর্তমানে আমি মুক্ত অবস্থায় থাকলেও সন্তান এবং তাদের মা ও মামাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তারা প্রতিনিয়ত আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এবার ধরতে পারলে তারা আর বাঁচিয়ে রাখবে না এমন কথা বলে।
[বস্ত্তবাদী শিক্ষা ব্যবস্থার হাযারো কুফলের এটি অন্যতম। এছাড়াও প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন, সন্তান কর্তৃক মাতৃহত্যা, পিতৃহত্যার খবর আসছে মিডিয়াতে। অতএব অনতিবিলম্বে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী নীতিমালা অপরিহার্য করুন (স.স.)]