সুদানের আল-নুবা গ্রাম। এই গ্রামে রামাযান মাসের সূর্য হেলে পড়তেই গ্রামের বাসিন্দারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন বাড়ির উঠানে গালিচা বিছাতে। তারপর শুরু হয় ইফতার সাজানোর পালা। পানীয়, সবজি-গোশত ও কেক দিয়ে সাজানো হয় বড় বড় থালা। এরপর বাসিন্দারা ছুটতে থাকেন প্রধান সড়কের দিকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা সড়কের মাঝখানে গিয়ে যানবাহন থামাতে থাকেন। যাত্রীদের ইফতারের জায়গার পথ দেখান। আকস্মিক ঘটনায় পর্যটকরা আশ্চর্য হ’লেও পরে আসল ঘটনা বুঝতে পারেন। কারণ বাস থামতেই বাসিন্দারা বলতে থাকেন, ‘ভাইয়েরা ইফতারের সময় হয়েছে। আসুন আমাদের সাথে ইফতার করুন’।
ইফতারের সময় যত ঘনিয়ে আসতে থাকে আল-নুবার বাসিন্দাদের অস্থিরতাও তত বাড়তে থাকে। সম্মানের সাথে যাত্রীদের গালিচায় বসানো, তাদের সামনে ইফতার দেয়া- সবই চলতে থাকে শৃঙ্খলার সাথে। ইফতারের ২০ মিনিট পর পর্যটক ও পথচারীদের সম্মানের সাথে আবার বাসে তুলে দেয়া হয়। তাদের সাথে ইফতার করা এক বাস চালক বলেন, ‘তারা মাঝ রাস্তায় এসে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। পুরো রাস্তা বন্ধ করে দেন। গাড়ি থামাতে বাধ্য করেন।
উল্লেখ্য, আল-নুবা গ্রামের বাসিন্দাদের সংখ্যা আনুমানিক দশ হাযার। তাদের অধিকাংশ পেশায় কৃষক। বছরের পর বছর ধরে এই গ্রামে পথচারী ও পর্যটকদের ইফতার করানোর প্রচলন চলে আসছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর বাড়ির ছোটদের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তারা বড়দের সাথে এই কাজে হাত লাগান। তাই ছোটবেলা থেকেই তাদের মনে গেঁথে যায় এই ঐতিহ্যবাহী প্রচলন। পরে বড় হয়ে তারাও সেই পথে হাঁটেন।
[আল্লাহর পবিত্র দ্বীন এভাবেই গরীবদের মাধ্যমে টিকে থাকবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত। আল্লাহ তাদের ঈমানী জাযবা বাড়িয়ে দাও এবং অন্যদেরকেও তা অনুসরণের তাওফীক দাও! (স.স.)]