বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী পাট থেকে এমন এক ধরনের পলিমার তৈরী করেছেন যেটি দেখতে পলিথিনের মত হ’লেও সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব। এই পলিমারের তৈরী ব্যাগ ফেলে দিলে ৩/৪ মাসের মধ্যে পচে গিয়ে মাটির সাথে মিশে যায়। ফলে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় না। বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোবারক আহমাদ খান ছয় বছরের গবেষণার পর এই পলিমার তৈরী করেন। তার এই উদ্ভাবন পাট ব্যবহারের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে এর সোনালী অতীতকে ফিরিয়ে আনবে বলে আশ করা হচ্ছে।

বর্তমানে রাজধানীর ডেমরার রাষ্ট্রায়ত্ত লতীফ বাওয়ানী জুট মিলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিদিন দু’হাযারের মত তৈরী হচ্ছে পাট থেকে তৈরী এই পলিমার ব্যাগ। দেখতে সাধারণ পলিথিনের মত এই ব্যাগগুলো তুলনামূলকভাবে অধিক টেকসই ও ভার বহনে সক্ষম। পানিনিরোধক এ ব্যাগের দামও খুব বেশী নয়। এক কেজি পলিথিন ব্যাগের দাম যেখানে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা সেখানে পাটের পলিমার ব্যাগের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। পচনশীল হ’লেও এই ব্যাগের ভেতর বাতাস বা পানি প্রবেশ করতে পারে না। ব্যাগটি সম্পর্কে ড. মোবারক বলেন, পলিথিনের তুলনায় পাটের পলিমার দেড় গুণ বেশী ভার বহন করতে পারে। এটি পানি শোষণ না করলেও ফেলে দেওয়ার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে পচে মাটির সাথে মিশে যায়। তিনি বলেন, শুরুতে এর উৎপাদন খরচ বেশী হ’লেও ব্যাপক পরিমাণে উৎপাদন শুরু হ’লে পলিথিনের মতই খরচ কমে যাবে।

এই ব্যাগের রফতানী সম্ভাবনাও বিপুল। ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ ব্যাগ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের পচনশীল পলিব্যাগের চাহিদা রয়েছে বিশ্বে। বাংলাদেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ পাট উৎপাদিত হয় তার পুরাটাও যদি পলিমার ব্যাগ তৈরীতে ব্যবহার করা যায়, তবু বিশ্ব চাহিদার অর্ধেকও পূরণ হবে না। অতএব এ ব্যাপারে সরকারী-বেসরকারী সমন্বিত উদ্যোগ একান্তভাবে আবশ্যক।







আরও
আরও
.