ভূমিকা : ‘লায়লাতুল ক্বদর’ তথা ক্বদরের রাত একটি মহিমান্বিত রজনী। এ রাতে সাধ্যমত ইবাদত করা এবং পাপ মোচন করিয়ে নেয়ার যে সুযোগ আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দান করেছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। একজন মুমিন যেভাবে বছরব্যাপী রামাযানের প্রতীক্ষায় প্রহর গুণতে থাকে তেমনিভাবে রামাযান মাস আগমন করার পর ক্বদরের রাতের প্রতীক্ষায়ও ব্যাকুল থাকে। এর জন্য চলে মানসিক প্রস্ত্ততি। আলোচ্য নিবন্ধে ক্বদরের রাত সম্পর্কে কুরআন- হাদীছের আলোকে নাতিদীর্ঘ আলোচনা তুলে ধরা হ’ল।-
লায়লাতুল ক্বদরের নামকরণ :
‘ক্বদর’ (اَلْقَدْرُ) অর্থ اَلشَّرَفُ، اَلْمَنْزِلَةُ সম্মান, মর্যাদা। لَيْلَةُ الْقَدْرِ অর্থ মর্যাদার রাত্রি। অথবাلَيْلَةٌ ذُوْ قَدْرٍ মহিমান্বিত রজনী। যেমন আল্লাহ বলেন,إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِيْنَ- فِيْهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيْمٍ- أَمْرًا مِنْ عِنْدِنَا إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِيْنَ- ‘আমরা একে নাযিল করেছি বরকতময় রাত্রিতে। আর আমরা তো সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। আমাদের আদেশক্রমে। আর আমরাই তো প্রেরণকারী’ (দুখান ৪৪/৩-৫)।
এ
রাতের নেক আমল সমূহের ছওয়াব তুলনাহীন। তাছাড়া এ রাতে সর্বাধিক
মর্যাদামন্ডিত কিতাব সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূলের নিকট অবতীর্ণ হয়েছে। সেকারণেও এ
রাতকে লায়লাতুল ক্বদর বা মহিমান্বিত রজনী হিসাবে অভিহিত করা হয়ে থাকতে
পারে। এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, মানবজাতির
হেদায়াতের জন্য আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ এলাহী গ্রন্থ
আল-কুরআন নাযিলের সূচনা হয়েছে ক্বদরের রাত্রিতে। এ রাত্রিটা কোন্ মাসে? সে
বিষয়ে আল্লাহ বলেন, شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيْ أُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْآنُ
هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ- ‘রামাযান
মাস। যে মাসে নাযিল হয়েছে কুরআন, মানবজাতির জন্য হেদায়াত ও হেদায়াতের
স্পষ্ট ব্যাখ্যা হিসাবে এবং হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্যকারী হিসাবে’ (বাক্বারাহ ২/১৮৫)। অর্থাৎ ক্বদরের রাত্রি হ’ল রামাযান মাসে, কথিত শা‘বান মাসে নয়।[1]
ফযীলত :
ক্বদরের রাতের কতিপয় ফযীলত রয়েছে। যেমন- (১) এ রাতে শয়তান বের হয় না।[2] (২) হাযার রাত্রির চাইতেও উত্তম (ক্বদর ৯৭/৩)। (৩) জিবরীল (আঃ) এবং ফেরেশতারা নেমে আসেন (ক্বদর ৯৭/৪)। (৪) ফজর পর্যন্ত সালাম বা শান্তি বর্ষিত হয় (ক্বদর ৯৭/৫)। (৫) এটি বরকতময় রাত (দুখান ৪৪/৩)।
ক্বদরের রাতে কল্যাণ হাছিল করা যরূরী :
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ هَذَا الشَّهْرَ قَدْ حَضَرَكُمْ، وَفِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، مَنْ حُرِمَهَا فَقَدْ حُرِمَ الْخَيْرَ كُلَّهُ، وَلَا يُحْرَمُ خَيْرَهَا إِلَّا مَحْرُومٌ
‘এই
রামাযান মাসটি তোমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে। এতে এমন একটি রাত রয়েছে, যা
হাযার মাসের চাইতেও উত্তম। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ হ’তে বঞ্চিত হ’ল সে সকল
প্রকার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়ে গেল। আর প্রকৃত বঞ্চিত ব্যক্তিরাই এ থেকে
মাহরূম হয়ে থাকে’।[3]
লায়লাতুল ক্বদর-এর কিছু আলামত :
এ
রাতের কতিপয় নিদর্শন হাদীছে বিধৃত হয়েছে। যদিও এগুলির দ্বারা নিশ্চিৎভাবে
বলা যাবে না যে, অমুক রাতটি ক্বদরের রাত। যেমন- (১) মনোরম আবহাওয়া এবং
প্রশান্তিদায়ক বাতাস প্রবাহিত হওয়া।[4] (২) এ রাত বেশী ঠান্ডাও হবে না গরমও হবে না।[5] (৩) এ রাতের পরবর্তী সকালে কিরণহীন সূর্য উদিত হওয়া ইত্যাদি।[6]
ক্বদরের রাত কোন্টি :
লায়লাতুল ক্বদর কোন্টি তা নিয়ে বিদ্বানগণ বিভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন। যেমন- (১) রামাযানের শেষ দশকের কোন একদিনে ক্বদরের রাত্রি সংঘটিত হয়ে থাকে।[7] (২) শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলিতে।[8] (৩) শেষ সাতদিনে।[9] (৪) ২৭শে রামাযানে।[10] (৫) ২৩শে রামাযানে।[11] (৬) রামাযানের শেষ রাতে।
মু‘আবিয়া
বিন আবূ সুফিয়ান বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, الْتَمِسُوا لَيْلَةَ
الْقَدْرِ فِي آخِرِ لَيْلَةٍ ‘তোমরা শেষ রাতে লায়লাতুল ক্বদরকে তালাশ কর’।[12]
এ প্রসঙ্গে আবূ ক্বিলাবাহ (রহঃ) বলেন যে,لَيْلَةُ القَدْرِ تَنْتَقِلُ فِي العَشْرِ الأَوَاخِر ‘লায়লাতুল ক্বদর রামাযানের শেষ দশকে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে’।[13] অর্থাৎ কোন বছরে ২১ তারিখে, কোন বছরে ২৩ তারিখে, কোন বছরে ২৫ তারিখে বা ২৭ তারিখে অথবা ২৯ তারিখে হয়ে থাকে। অথবা একই বছরে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন তারিখে ক্বদর এসে থাকে। মহান আল্লাহ্ই সর্বাধিক অবগত।
ক্বদরের রাত ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে :
ক্বদর
সম্পর্কে হাদীছে একাধিক রাতের উল্লেখ রয়েছে। যাতে বোঝা যায় যে, সঠিক তারিখ
রাসূল (ছাঃ)-কে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) নিজেই বলেছেন,إِنِّيْ
أُرِيْتُ لَيْلَةَ القَدْرِ، ثُمَّ أُنْسِيْتُهَا أَوْ نُسِّيتُهَا ‘আমাকে
লায়লাতুল ক্বদর দেখানো হয়েছে। অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে’।[14]
অন্যত্র তিনি বলেন,أُرِيْتُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ، ثُمَّ أَيْقَظَنِيْ بَعْضُ
أَهْلِيْ، فَنُسِّيتُهَا ‘আমাকে লায়লাতুল ক্বদর দেখানো হ’ল। অতঃপর আমার
কোন এক স্ত্রী আমাকে জাগালেন। তারপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হ’ল’।[15]
ভুলিয়ে দেয়ার কারণ :
যখন মানুষের জানা থাকবে যে, অমুক রাতে ক্বদর হবে তখন তারা অন্যান্য রাতে বেশী ইবাদত করতে চাইবে না। কেবল নির্ধারিত রাতের অপেক্ষায় থাকবে। সেজন্য আল্লাহ হয়তো এটা ভুলিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আল্লাহ্ই অধিক অবগত।
২৭শে রাতে ক্বদর হওয়ার যুক্তি খন্ডন :
২৭শে রামাযানের রাতে ক্বদর হয় মর্মে যুক্তির অবতারণা করে বলা হয়, ‘লায়লাতুল ক্বদর’ বাক্যাংশে মোট বর্ণ আছে নয়টি। আর সূরা ক্বদরে তিনবার ‘লায়লাতুল ক্বদর’ বাক্যাংশটি এসেছে। তাই নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে হয় সাতাশ। সুতরাং ক্বদর ২৭শে রামাযানের রাতে হবে।
জবাব : এভাবে ক্বদরের তারিখ নির্ধারণ করা সম্পূর্ণ কপোলকল্পিত। কোন বিদ্বান লায়লাতুল ক্বদরের রাতকে এ পদ্ধতিতে নির্ধারণ করেননি। সুতরাং এ থেকে বিরত থেকে শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলিতে ক্বদর তালাশ করা উচিত।
লায়লাতুল ক্বদরের করণীয় :
(ক) দীর্ঘ রুকূ ও সিজদার মাধ্যমে বিতরসহ ১১ রাক‘আত তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ ছালাত আদায় করা।[16] (খ) প্রয়োজনে একই সূরা, তাসবীহ ও দো‘আ বারবার পড়ে ছালাত দীর্ঘ করা।[17] (গ) অধিকহারে কুরআন তেলাওয়াত করা।[18] (ঘ) একনিষ্ঠ চিত্তে দো‘আ-দরূদ ও তওবা-ইস্তেগফার করা।
এতদ্ব্যতীত নিম্নোক্ত আমলগুলি করা যায়-
(১) নিজে জাগ্রত হওয়া ও স্ত্রী-পরিবারকে জাগ্রত করা :
আয়েশা
(রাঃ) বলেন,كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا
دَخَلَ العَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَهُ، وَأَحْيَا لَيْلَهُ، وَأَيْقَظَ
أَهْلَهُ ‘রামাযানের শেষ দশক উপস্থিত হ’লে নবী করীম (ছাঃ) কোমর বেঁধে
নিতেন। রাত্রি জাগরণ করতেন ও স্বীয় পরিবারকে জাগাতেন’।[19]
(২) পূর্বের তুলনায় অধিক ইবাদত করা :
আয়েশা (রাঃ) বলেন,كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
يَجْتَهِدُ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ، مَا لَا يَجْتَهِدُ فِي غَيْرِهِ
‘শেষ দশকে রাসূল (ছাঃ) যত কষ্ট করতেন, অন্য সময় তত করতেন না’।[20]
(৩) ক্বিয়াম করা :
রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ قَامَ لَيْلَةَ القَدْرِ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا،
غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، وَمَنْ صَامَ رَمَضَانَ
إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‘যে
ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং নেকীর আশায় লায়লাতুল ক্বদরে ছালাতে রত থাকবে তার
পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’।[21]
(৪) বিশেষ দো‘আ পাঠ করা :
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাকে বললেন, তুমি বলবে,اللَّهُمَّ إِنَّكَ
عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই তুমি
ক্ষমাশীল। ক্ষমা করতে ভালবাস। অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও’।[22]
লায়লাতুল ক্বদর উপলক্ষে সমাজে প্রচলিত কতিপয় আমল :
এ রাতকে কেন্দ্র করে সমাজে বিভিন্ন কর্মকান্ড চালু রয়েছে। যেমন (১) ছালাত আদায় করার পর শেষ রাতে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা। (২) বিশেষ ভোজনের সাথে সাথে ওয়ায-নছীহতের আয়োজন করা। (৩) শুধু এ রাতের জন্য বিশেষভাবে ই‘তিকাফ করা। (৪) এ রাতে বিশেষ ফযীলত রয়েছে মনে করে কুরআন খতম করা। (৫) কবরস্থানে গিয়ে জামা‘আতবদ্ধভাবে দো‘আ করা। (৬) মীলাদের আয়োজন করা। (৭) এ রাতে তারাবীহ্তে কুরআন খতম করাকে সুন্নাত মনে করা বা যরূরী মনে করা। এ জাতীয় যা কিছু করা হয় তা সবই পরিত্যাজ্য।
ক্বদর কি সমগ্র বিশ্বে একই সাথে হয় :
এখানে একটি বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন উত্থাপন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়। সেটা হ’ল, ‘গোটা বিশ্ব সঊদী আরবের সাথে একসাথে ছিয়াম ও ঈদ পালন করবে এবং তাদের সাথেই সমগ্র বিশ্বে লায়লাতুল ক্বদর পালিত হবে’।
জবাব : এখানে কতিপয় বিষয় লক্ষণীয়। (১) গোটা পৃথিবীতে একদিনেই ঈদ, ছিয়াম ও লায়লাতুল ক্বদর পালিত হ’তে হবে এর কোন দলীল নেই। (২) নবী করীম (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর যুগে একদিনে ছিয়াম ও ঈদ পালিত হয়েছে মর্মে কোন প্রমাণ নেই। যুক্তির নিরীখেও এটা বাস্তবতা বিরোধী এবং অসম্ভব ব্যাপার। উদাহরণস্বরূপ- আমেরিকার সাথে কোরিয়ার সময়ের ব্যবধান প্রায় ১৫ ঘন্টা। যদি আজ রাতে এশার পরে (রাত ৮-টায়) আমেরিকায় ক্বদর শুরু হয় তাহ’লে আমেরিকার সাথে কোরিয়া কিভাবে ক্বদর পালন করবে? কারণ আমেরিকায় যখন রাত কোরিয়ায় তখন দিন। তাহ’লে তারা কি দিনের বেলা ক্বদর তথা নাহারুল ক্বদর পালন করবে? আরো পূর্বের দেশ নিউজিল্যান্ডের সাথে আমেরিকার আলাস্কার সময়ের পার্থক্য প্রায় ২৩/২৪ ঘন্টা। তাহ’লে এখানে আমেরিকার সাথে নিউজিল্যান্ড কিভাবে একসাথে ক্বদর পালন করবে?
যদি এর জবাবে তারা বলেন যে, ‘ক্বদর এক সাথে সবাইকে পেতে হবে এমন নয়। বরং এক তারিখের মধ্যে পেলেই হবে। কেননা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ক্বদর গোটা বিশ্বে আবর্তিত হ’তে থাকবে’।
জবাব : এটাও ভিত্তিহীন এবং হাস্যকর যুক্তি। ধরুন, এখন সঊদী আরবে ভোর পাঁচটা বাজে। সেখানে ক্বদরের সময়সীমা শেষ হয়ে গেল। যখন সেখানে ভোর পাঁচটা তখন বাংলাদেশে রাত ২-টা। এক্ষণে আমাদের প্রশ্ন যে, এক্ষেত্রে কি সঊদীর সাথে সাথে ক্বদর শেষ হয়ে যাবে নাকি আরো তিনঘন্টা বাকী থাকবে। যদি ক্বদর সেখানকার সময় হিসাবে শেষ হয়ে থাকে তাহ’লে বাংলাদেশে রাত ২-টার মধ্যেই ক্বদর শেষ হয়ে যাবে। অথচ ফজর পর্যন্ত ক্বদর থাকবে যা কুরআন দ্বারা প্রমাণিত। আর যদি ক্বদর সঊদীর সাথে শেষ হয়ে না যায় বরং প্রত্যেক দেশের স্থানীয় সময় অনুসারে অবশিষ্ট থাকে তাহ’লে তো আর একই দিনে ক্বদর পালন করা সম্ভব হ’ল না।
অতএব ক্বদর কিভাবে কখন কোথায় শুরু হবে তা আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ জানে না। সুতরাং গায়েবের বিষয় নিয়ে সৃষ্টিকুলের মাথা ঘামানো অনর্থক। যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে কেবল তারাই অস্পষ্ট বিষয় নিয়ে গবেষণা করে নিজে বিভ্রান্ত হয় এবং অন্যদেরকে গোমরাহ করে।
উপসংহার :
উপরের আলোচনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, লায়লাতুল ক্বদর একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। এ রাতে বেশী বেশী ইবাদত করা যরূরী। যেহেতু ক্বদরের রাত নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না তাই রামাযানের শেষ দশদিনে বেশী বেশী ইবাদত করতে হবে। তাহ’লেই ক্বদরের ফযীলত পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে লায়লাতুল ক্বদর লাভ করার তাওফীক দান করুন-আমীন!
[1]. ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, তাফসীরুল কুরআন ৩০তম পারা, পৃঃ ৩৯০।
[2]. ছহীহ ইবনু হিববান হা/৩৬৮৮, শু‘আইব আরনাঊত্ব (রহঃ) ‘হাদীছ ছহীহ’ বলেছেন।
[3]. ইবনু মাজাহ হা/১৬৪৪; নাসাঈ হা/২১০৬; মিশকাত হা/১৯৬৪; ছহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১০০০।
[4]. আবূদাঊদ আত-ত্বায়ালিসী হা/২৮০২; শু‘আবুল ঈমান হা/৩৪১৯; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৪৭৫।
[5]. ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ হা/২১৯০, আলবানী শাওয়াহেদের ভিত্তিতে ছহীহ বলেছেন। অত্র হাদীছটির টীকা দ্রঃ; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৩৬৮৮, শু‘আইব আরনাঊত্ব একে ছহীহ বলেছেন।
[6]. মুসলিম হা/৭৬২; আবূদাঊদ হা/১৩৭৮; তিরমিযী হা/৭৯৩।
[7]. বুখারী হা/২০২১; মুসলিম হা/১১৬৯।
[8]. বুখারী হা/২০১৭।
[9]. বুখারী হা/১১৬৫।
[10]. মুসলিম হা/৭৬২।
[11]. মুসলিম হা/১১৬৭।
[12]. ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ হা/২১৮৯; ছহীহাহ হা/১৪৭১।
[13]. তিরমিযী হা/৭৯২।
[14]. বুখারী হা/২০১৬।
[15]. মুসলিম হা/১১৬৬।
[16]. বুখারী হা/১১৪৭; মুসলিম হা/৭৩৮।
[17]. ইবনু মাজাহ হা/১৩৫০; আবুদাঊদ হা/৮১৬; মিশকাত হা/৮৬২, ১২০৫।
[18]. বায়হাক্বী, মিশকাত হা/১৯৬৩।
[19]. বুখারী হা/২০২৪।
[20]. মুসলিম হা/১১৭৫; মিশকাত হা/২০৮৯।
[21]. বুখারী হা/১৯০১, ২০১৪; মুসলিম হা/৭৬০; আবূদাঊদ হা/১৩৭২; তিরমিযী হা/৬৮৩; নাসাঈ হা/২১৯৩; মিশকাত হা/১৯৫৮।
[22]. তিরমিযী হা/৩৫১৩; ইবনু মাজাহ হা/৩৮৫০; আহমাদ হা/২৫৩৮৪। শায়খ আলবানী (রহঃ) একে ‘ছহীহ’ (ছহীহা হা/৩৩৩৭) এবং ভারতীয় আলেম ড. যিয়া আ‘যামী একাধিক সনদের ভিত্তিতে হাসান বলেছেন (আল-জামি‘উল কামিল ৪/৮৩৭)।