প্রখ্যাত আলেম, জনপ্রিয় বাগ্মী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী (৮৩) কারাবন্দী অবস্থায় গত ১৪ই আগস্ট সোমবার দিবাগত রাত ৮.৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন। ঢাকায় জানাযার অনুমতি না পাওয়ায় পরদিন মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩-টায় জন্মস্থান পিরোজপুরের ইন্দুরকানী থানার সাঈদখালী গ্রামে ‘সাঈদী ফাউন্ডেশন’ মসজিদের পার্শ্বে জ্যেষ্ঠ পুত্র রফীক সাঈদীর কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়। প্রায় এক কি. মি. ব্যাপী বিশাল জানাযায় ইমামতি করেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজীবুর রহমান। 

উল্লেখ্য যে, জ্যেষ্ঠ পুত্র রফীক সাঈদী ৪৩ বছর বয়সে ২০১২ সালের ১৩ই জুন হার্টঅ্যাটাকে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। অতঃপর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে পিতা সাঈদী ছাহেব পুত্রের জানাযায় ইমামতি করেন।

১৩ই আগস্ট রবিবার বিকালে কাশিমপুর কারাগারে মাওলানা সাঈদী হার্টে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করলে প্রথমে তাকে গাজীপুরের ‘শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ’ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সেখান থেকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

মাওলানা সাঈদীর হার্টে পাঁচটি রিং পরানো ছিল। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। এছাড়াও তিনি বার্ধক্যজনিত নানান জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন।

মাওলানা সাঈদী ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। তিনবছর পর তিনি ‘রুকন’ হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ‘মজলিসে শূরা’ এবং ১৯৯৬ সালে ‘নির্বাহী পরিষদ সদস্য’ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসন থেকে তিনি পরপর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি জামায়াতের নায়েবে আমীর ছিলেন।

২০১০ সালের ২৯শে জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। পরে ২রা আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। অতঃপর ২০১৩ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তাঁকে মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করে। অতঃপর আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর তাঁকে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়। মৃত্যুকালে তিনি শামীম সাঈদী, মাসঊদ সাঈদী ও নাসীম সাঈদী নামে ৩ পুত্র রেখে যান।

[আমরা তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি (সম্পাদক)]।






আরও
আরও
.