কম্যুনিজমের কঠিন দিনগুলোতেও ধর্মদ্রোহিতার নিগড়ে আবদ্ধ রাশিয়ার মানুষের মাঝে সেখানকার ওলামায়ে কেরাম কিভাবে কুরআন সংরক্ষণ এবং তার প্রশিক্ষণ দিতেন, সম্প্রতি তার এক প্রেরণাদায়ক বিবরণ উঠে এসেছে ৯৫ বছর বয়সী এক রাশিয়ান মুসলিম বৃদ্ধের যবানীতে। রাশিয়ান মুসলমানদের উপর কম্যুনিস্ট নির্যাতনের শুরুকালে তার বয়স ছিল ২৫ বছর। তিনি বলেন,
‘আমরা আমাদের বাসাগুলো বেশ বড় করে তৈরী করতাম এবং চারদিকের কক্ষগুলোর ঠিক মাঝখানে একটি ছোট খোলা জায়গা থাকত। এই খোলা জায়গা বা হলটির চারপাশে সাউন্ড-প্রুফ কিছু ছোট ছোট চেম্বার তৈরী করা হ’ত। হলের একটি গোপন দরজা থাকতো যা দিয়ে এইসব চেম্বারে যাতায়াত করা হ’ত। এই দরজাটি ছিল মূলত একটি শো-কেস, যেখানে আমরা মদ ও অন্যান্য পানীয় সাজিয়ে রাখতাম। এছাড়া এই গোপন দরজার আশেপাশে আমরা লেনিনের ছবি, টেলিভিশন এবং এধরনের আরও কিছু দৃষ্টিকটু জিনিস সাজিয়ে রাখতাম।
যখনই বাসা-বাড়ী সার্চ করবার জন্য পুলিশ আসতো, তারা সেখানে সন্দেহ করবার মত কিছুই দেখতে পেত না। মদের বোতল ও ছবিগুলো দেখে ভেবে নিত যে এই লোকদের আদর্শ ঠিকই আছে। তারা ঘুর্ণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেনি যে, ঐ মদের শো-কেসের পেছনে মাত্র কয়েক হাত ভিতরেই শিশুরা কুরআন শিখছে। আমরা প্রায় ছয় মাস এইসব গোপন চেম্বারে থাকতাম এবং কুরআন শিক্ষা সম্পন্ন করতাম। এর পাশাপাশি ছহীহ বুখারীও পড়ানো হ’ত। বদ্ধ ঐ চেম্বারগুলোতে কম্যুনিস্ট রাশিয়ার কালো দূষিত হাওয়া আসা যাওয়া করত ঠিকই, কিন্তু এর মাঝেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শিক্ষাগুলো তিলাওয়াত এবং মুখস্থ করে নেয়া হ’ত’।
[শত্রুসঙ্কুল পরিবেশে দূরদর্শী ও মুত্তাকী এইসব ওলামায়ে কেরামের কঠিন আত্মত্যাগ এবং নিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তাদের সর্বোত্তম বিনিময় দান করুন। চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও ইসলাম ও ইসলামী জ্ঞানার্জনে আগ্রহী মানুষের জন্য তাদের এই অবদান যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে (স.স.)]