অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ১২ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে
বলে স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক ব্যাপক-ভিত্তিক
গবেষণা থেকে জানা গেছে। এইডস কিংবা ম্যালেরিয়াতে প্রতিবছর যত সংখ্যক লোক
মারা যায়, এই সংখ্যা তার দ্বিগুণ বলে গবেষণায় জানা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের
ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ২০৪টি দেশে
এই গবেষণা চালান।
এর থেকে রক্ষা পেতে হ’লে ওষুধ নিয়ে গবেষণায় আরো বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে এবং বর্তমান যেসব অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে তা প্রয়োগে বিশেষভাবে সতর্ক হ’তে হবে বলে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ছোটখাটো অসুখে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার প্রয়োগের ফলে মারাত্মক অসুখ-বিসুখের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা অনেকখানি কমে যায়। ফলে আগে সাধারণ অসুখে আরোগ্য হ’ত এমন সব রোগে এখন মানুষ মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশুরা। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে এখনই সতর্ক না হ’লে কোভিড মহামারির অবসানের পর এটাই বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
তাদের মতে যেসব কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্ট হয়ে থাকে, এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হ’ল- (১) বিনা প্রেসক্রিপশনে ঘনঘন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা (২) পুরো কোর্স শেষ না করে মাঝপথে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করা (৩) প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া (৪) ভাইরাসজনিত কোন অসুখে, অর্থাৎ যেসব ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এমনি সেরে যেত, সেখানে বিশেষ করে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া।
ধঢাকাস্থ আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান যাকির হোসাইন হাবীব বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে অনেক ওষুধই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অপেক্ষাকৃত কম কার্যকর হয়ে পড়ছে।