৯ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার :
অদ্য সকাল ৮-টা থেকে যোহর পর্যন্ত রাজশাহী নওদাপাড়ায় দারুল হাদীছ
বিশ্ববিদ্যালয় (প্রা.) জামে মসজিদে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর বার্ষিক
কর্মী সম্মেলন ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়। হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকিরের অর্থসহ
কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। অতঃপর স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন,
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম (জয়পুরহাট)। এরপর উদ্বোধনী ভাষণ পেশ
করেন কর্মী সম্মেলনের সভাপতি ও ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. আহমাদ
আব্দুল্লাহ ছাকিব (মারকায)। এরপর যেলা সভাপতি ও প্রতিনিধিগণের মধ্য থেকে
বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য পেশ করেন (১) ‘দাওয়াতী কার্যক্রম বৃদ্ধির উপায়’ বিষয়ে
পিরোজপুর যেলা সভাপতি আবু নাঈম ও (২) সাতক্ষীরা যেলা সভাপতি নাজমুল হোসাইন।
(৩) ‘সাংগঠনিক মযবূতীর উপায়’ বিষয়ে রাজশাহী সদর যেলা সভাপতি ফায়ছাল মাহমূদ
ও (৪) ময়মনসিংহ যেলা সভাপতি মুহাম্মাদ আলী। (৫) ‘দায়িত্বশীলদের কর্তব্য’
বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ যেলা সভাপতি মুহাম্মাদ আল-আমীন ও (৬) গাযীপুর যেলা সভাপতি
শরীফুল ইসলাম। (৭) ‘যুবসংঘে’র সংস্কার তৎপরতা সমূহ’ বিষয়ে দিনাজপুর-পূর্ব
যেলা সভাপতি রায়হানুল ইসলাম ও (৮) কুমিল্লা যেলা সভাপতি আব্দুস সাত্তার এবং
(৯) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘যুবসংঘে’র ভূমিকা’ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের
কর্মী মামূন বিন হাশমত (কুষ্টিয়া)।
অতঃপর ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের মধ্য থেকে (১) ‘সমাজসেবায় ‘যুবসংঘে’র ভূমিকা ও করণীয়’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান (সাতক্ষীরা), (২) ‘আমানতদারিতা এবং সঠিকভাবে হিসাব সংরক্ষণের গুরুত্ব ও পদ্ধতি’ বিষয়ে অর্থ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম (রাজশাহী), (৩) ‘শিক্ষাঙ্গনে যুবসংঘ’ বিষয়ে ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুন নূর (দিনাজপুর), (৪) ‘কর্মী মানোন্নয়নে মানোন্নয়ন সিলেবাস’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ সম্পাদক আহমাদুল্লাহ (কুমিল্লা), (৫) ‘কর্মপদ্ধতির অনুসরণ ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি’ বিষয়ে প্রচার সম্পাদক আসাদুল্লাহ মিলন (ঝিনাইদহ), (৬) ‘ইক্বামতে দ্বীন : বিভ্রান্তি নিরসন’ বিষয়ে সহ-সভাপতি ড. মুখতারুল ইসলাম (রাজশাহী), (৭) ‘কর্মীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য’ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম (জয়পুরহাট)।
অতঃপর অতিথিদের বক্তব্যে (১) ‘সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির উপায়’ বিষয়ে সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুস্তাকীম আহমাদ (রাজশাহী), (২) ‘গঠনতন্ত্র অনুসরণের গুরুত্ব’ বিষয়ে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশীদ আখতার (কুষ্টিয়া), (৩) ‘কুসংস্কার ও ভ্রান্ত আক্বীদা নির্মূলে ‘যুবসংঘে’র ভূমিকা’ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম (রাজশাহী), (৪) ‘কর্মীদের ইলমী দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব’ বিষয়ে সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. নূরুল ইসলাম (মারকায), (৫) ‘যুবসমাজের সমসাময়িক সমস্যা ও তা থেকে উত্তরণের উপায়’ বিষয়ে ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ‘আন্দোলন’-এর দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম (মারকায) এবং (৬) ‘সংগঠনের জন্য ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা’ বিষয়ে ‘আন্দোলন’-এর প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (মারকায)। (৭) তারপর কর্মীদের প্রতি নছীহতমূলক বক্তব্য পেশ করেন খুলনা যেলা সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, (৮) মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল (পাবনা) ও (৯) ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম (মেহেরপুর)। অতঃপর কর্মীদের শপথ নেন ও পুরস্কার বিতরণ করেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব।
অতঃপর প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব সূরা আলে ইমরানের ১১০ আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন সৎকাজের আদেশ, অসৎকাজের নিষেধ ও আল্লাহর প্রতি ঈমান। যারা সৎকাজের আদেশ দেয় ও অসৎকাজের নিষেধ করে কিন্তু নিজেরা আমল করে না, তারা দ্বিমুখী নীতির অধিকারী। এ থেকে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সাত শ্রেণীর মানুষ ক্বিয়ামতের কঠিন দিবসে আল্লাহর ছায়ার নীচে ছায়া পাবে। তার মধ্যে একশ্রেণী হ’ল ঐ যুবক যারা আল্লাহর ইবাদতের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে’ (বুখারী হা/৬৬০)। এখানে যুবকদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেননা যুবকরাই সমাজের মূল চালিকাশক্তি। তারা যদি সৎকর্মশীল হয়, তাহ’লে সমাজে অন্যায় কর্ম হ’তে পারে না। আর তারা যদি অন্যায় পথে পরিচালিত হয়, তাহ’লে দেশ ও জাতি টিকবে না। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহার মত যুবকদের দৃঢ়তায় বাইজানটাইন সম্রাট হিরাক্লিয়াসের আড়াই লক্ষ সৈন্যের বিরুদ্ধে মুসলমানরা বিজয় লাভ করেন। সেদিনের সেই বিজয়ের ফলে পুরা মধ্যপ্রাচ্য আজকে মুসলিম। আমরা ঐসব তেজোদ্দীপ্ত যুবকদের খুঁজে বের করার জন্যই ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ প্রতিষ্ঠা করেছি। ভীরু কাপুরুষ ও চরিত্রহীনদের দিয়ে কিছুই হবে না। শয়তান তোমাদের ধ্বংস করার জন্য চারিদিক থেকে লেগে আছে। তাই শয়তানের খপ্পর থেকে সাবধান!
তিনি বলেন, তোমরা বেলায়েত আলীর দাওয়াত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। তিনি কোথাও বের হ’লে গন্তব্যস্থল পৌঁছতে দুই থেকে আড়াই মাস লেগে যেত। রাস্তায় পথিক, কৃষক, দোকানদার যাকেই পেতেন, তাকেই দাওয়াত দিতেন। অতঃপর তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার আববা মাওলানা আহমাদ আলী জোঁকের কামড় খেয়ে দাওয়াত দিয়েছেন বলেই সাতক্ষীরার আশাশুনি উপযেলা ও বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে কালাবগী-সুতারখালী গ্রামগুলি এখন আহলেহাদীছ। তাই তোমাদের দ্বারা একজনও হেদায়াত পেলে সেটাই তোমাদের জান্নাতের অসীলা হবে ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে সঞ্চালক ছিলেন ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইহসান ইলাহী যহীর, প্রচার সম্পাদক আসাদুল্লাহ মিলন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আহমাদুল্লাহ ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আব্দুন নূর।