শরী‘আহ আইন বনাম সাধারণ আইন : একটি পর্যালোচনা

ভূমিকা :

শরী‘আহ আইন ও সাধারণ আইন দু’টি ভিন্ন ভিন্ন আইনী পদ্ধতি, যার মধ্যে নীতিগত এবং পদ্ধতিগত মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। একটি হ’ল আল্লাহ প্রদত্ত আইন, অপরটি মানবরচিত ও আদালতে বিচারিক সিদ্ধান্ত ও পূর্ব উদাহরণের উপর ভিত্তিশীল আইনী ব্যবস্থা। একজন মুসলিমের জন্য শরী‘আহ নির্ধারিত আইনসমূহ পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করা অপরিহার্য। সে আইন পারিবারিক হোক, অপরাধ আইন হোক কিংবা আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত আইন হোক। প্রগতি বা আধুনিকতার দোহাই দিয়ে সে কখনও মানবরচিত সাধারণ আইনকে আল্লাহর আইনের উর্ধ্বে স্থান দিতে পারে না। দুর্ভাগ্যজনকভারে বর্তমান মুসলিম বিশ্বে শুধুমাত্র সঊদী আরব, সুদান, নাইজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশে শরী‘আহ আইন মোটামুটি প্রয়োগ করা হয়। আর অন্যান্য দেশগুলোতে কেবল পারিবারিক আইনের ক্ষেত্রে শরী‘আহ আইন অনুসৃত হয়, অন্য কোন ক্ষেত্রে নয়। অথচ শরী‘আহ আইন কুরআন ও হাদীছভিত্তিক একটি পূর্ণাঙ্গ ও চিরন্তন আইনী ব্যবস্থা, যা ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও মানবকল্যাণমূলক নীতিমালার উপর সুপ্রতিষ্ঠিত। দুর্বল, অস্থিতিশীল মানবরচিত সাধারণ আইন কোন বিচারেই শরী‘আহ আইনের সমকক্ষ হ’তে পারে না। অথচ শরী‘আহ আইন নয়, বরং অমুসলিম দেশগুলোর মত সাধারণ আইনই অনুসৃত হচ্ছে স্বয়ং মুসলিম দেশগুলোতে। আরো দুর্ভাগ্যজনক যে, আধুনিক মুসলিম প্রজন্ম শরী‘আহ আইন সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ ও বেখবর। নিম্নে শরী‘আহ আইনের পরিচয় এবং সাধারণ আইনের সাথে তার পার্থক্যগুলো সংক্ষেপে আলোচিত হ’ল। 

শরী‘আহ আইন-এর অর্থ :

শরী‘আহ আইন হ’ল ইসলামী শরী‘আত, যার আরবী রূপ- الشريعة الإسلامية। আশ-শারী‘আহ  (الشريعة) শব্দটি شرع মূলধাতু থেকে উৎপন্ন হয়েছে। শব্দটি একবচন, বহুবচনে شرائع ব্যবহৃত হয়। আভিধানিকভাবে الشريعة শব্দটি মৌলিক দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হয়। (১) مورد الماء বা পানির উৎসমুখ। যেখানে মানুষ বা পশু পানি পানের জন্য গমন করে। যেমন বলা হয় شرعت الإبل অর্থাৎ উট পানির উৎসমুখে উপস্থিত হয়েছে। এটা এমন এক উৎসস্থল যেখানে নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি নির্গত হয়, কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।[1] এই অর্থে শরী‘আত হ’ল আইন-কানূনের উৎসস্থল বা যেখান থেকে মানুষের জন্য বিধি-বিধান উৎসারিত হয়ে থাকে। (২) রাস্তা (الطريق), অনুসৃত পথ (المنهج), চলার পথ (المذهب), যাত্রাপথ (السبيل), অভ্যাস (العادة), অনুসৃত পদ্ধতি বা নীতি (السنة), সুস্পষ্ট সুপ্রতিষ্ঠিত পথ(الطريق المستقيمة الواضحة) প্রভৃতি।

ইসলামের আগমনের পূর্বে শব্দটি পানির উৎসমুখ থেকে উৎসারিত নালাসমূহকে বোঝানোর জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। পরবর্তীতে রূপকার্থে উপরোক্ত অর্থগুলো গ্রহণ করা হয়েছে।[2] পবিত্র কুরআনে ৫টি স্থানে শব্দটির বিশেষ্য, বিশেষণ ও ক্রিয়ারূপ ব্যবহৃত হয়েছে। যা নিম্নরূপ :

ক. شَرَعَ (ক্রিয়ারূপ) : شَرَعَ لَكُمْ مِنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ...الخ অর্থাৎ তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করা হয়েছে... (শূরা ২১)

খ. شَرَعُوا (ক্রিয়ারূপ) : أَمْ لَهُمْ شُرَكَاءُ شَرَعُوا لَهُمْ مِنَ الدِّينِ ...الخ অর্থাৎ ‘নাকি তাদের কোন শরীক আছে, যারা তাদের জন্য আল্লাহর নির্দেশ বহির্ভূত ধর্মীয় বিধিবিধান রচনা করেছে’ (শূরা ১৩)

উপরোক্ত দু’টি আয়াতে শব্দটি পরিচিত করা, উন্মুক্ত করা, সুস্পষ্ট করা বা বিধিবিধান প্রবর্তন করা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

গ. شَرِيعَةٍ (বিশেষ্যরূপ) : ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَى شَرِيعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا অর্থাৎ ‘আমি তোমাকে দ্বীনের বিশেষ বিধান দান করেছি। সুতরাং তুমি তারই অনুসরণ কর’ (জাছিয়া ১৮)। এই আয়াতে শব্দটি বিধিবদ্ধ রীতি, অনুসৃত পথ অর্থে এসেছে।

ঘ. شِرْعَةً (বিশেষ্যরূপ) : لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا অর্থাৎ ‘তোমাদের প্রত্যেকই আমি বিধিবদ্ধ আইন ও স্পষ্ট পথ বাতলিয়ে দিয়েছি’ (মায়েদাহ ৫/৪৮)। এই আয়াতেও শব্দটি বিধিবদ্ধ রীতি কিংবা রাস্তা বা পথ অর্থে এসেছে।

ঙ. شُرَّعًا (বিশেষণরূপ) : إِذْ تَأْتِيهِمْ حِيتَانُهُمْ يَوْمَ سَبْتِهِمْ شُرَّعًا، ‘যখন তাদের নিকট শনিবারে মাছগুলো তাদের কাছে ভেসে আসত’ (আ‘রাফ ৬৩)। এই আয়াতে শব্দটি (মাছের) পানির উপর ভেসে ওঠা ও মুখ বাড়িয়ে দেয়া অর্থে এসেছে।

কুরআনে ব্যবহৃত উক্ত শব্দগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে, شَرِيعَةٍ এবং شِرْعَةً শব্দগুলি মৌলিক অর্থের পরিবর্তে রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখান থেকেই ফক্বীহগণ شَرِيعَةٍ বলতে বুঝিয়েছেন ‘আল্লাহ কর্তৃক বিধিবদ্ধ আইন’ কিংবা ‘আল্লাহর পথ’ অর্থাৎ যা মানুষ অনুসরণ করে ইলাহী দিকনির্দেশনা ও হুকুম-আহকাম জানার জন্য। কেউ কেউ বলেন, ইসলামী বিধিবিধানকে شَرِيعَة নামকরণ করার কারণ হ’ল তা মানুষের আত্মিক অপবিত্রতাকে পরিচ্ছন্ন করে দেয়, যেমনভাবে ‘পানির উৎস’ ব্যবহারকারীর শারীরিক অপবিত্রতাকে পরিচ্ছন্ন করে দেয়। পানি যেভাবে মানুষের শরীরকে সঞ্জীবিত করে, শরী‘আতও তেমন মানুষের আত্মা ও জ্ঞান-বিবেককে সঞ্জীবিত করে।[3]

আর الإسلامية শব্দটি সম্বন্ধসূচক যা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর অবতারিত দ্বীন ইসলামের দিকে সম্বন্ধযুক্ত হয়েছে।

শরী‘আহ আইন-এর পরিচয় :

ফিক্বহবিদ ও উছূলবিদদের পরিভাষায় ইসলামী শরী‘আত হ’ল, দ্বীনের আক্বীদা ও আমল সংক্রান্ত যাবতীয় হুকুম-আহকামের সমষ্টি, যা আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মাধ্যমে দুনিয়ার মানুষের নিকট অহী হিসাবে প্রেরণ করেছেন। যাতে মানুষ তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তা কর্মে বাস্তবায়ন করে। নিম্নে বিশেষজ্ঞদের কিছু সংজ্ঞা প্রদান করা হ’ল। যেমন-

১. الموسوعة العربية العالمية -এ সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে,هي أحكام الدين الإسلامي الذي نُزِّل على محمد صلي الله عليه وسلم سواءٌ منها مايتعلق بالعقيدة أو الفقه وقد أخذت الشريعة معنى أخص لتدل على الفقه خاصة، অর্থাৎ ‘ইসলামী শরী‘আত হ’ল, মুহাম্মাদ (ছাঃ) উপর নাযিলকৃত দ্বীন ইসলামের আক্বীদাগত বা ফিক্বহ সংক্রান্ত বিধি-বিধানসমূহ। তবে খাছভাবে ‘শরী‘আত’ বলতে ইসলামী ফিক্বহকে বুঝানো হয়’।[4]

২. আব্দুল করীম যায়দান (১৯১৭-২০১৪খ্রি.) বলেন,

هي الأحكام التي شرعها الله لعباده، سواء أكان تشريع هذه الأحكام بالقرآن أم بسنة النبي محمد صلي الله عليه وسلم من قول أو فعل أو تقرير فالشريعة الإسلامية إذن في الاصطلاح ليست الا هذه الأحكام الموجودة في القرآن الكريم وفي السنة النبوية والتي هي وحي من الله الي نبيه محمد صلي الله عليه وسلم ليبلغها الي الناس، ‘ইসলামী শরী‘আত হ’ল, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর যে হুকুম-আহকাম নাযিল করেছেন, চাই তা কুরআনের মাধ্যমে হোক কিংবা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর সুন্নাহ তথা তাঁর কথা, কর্ম ও স্বীকৃতির মাধ্যমে হোক। সুতরাং ইসলামী শরী‘আত হ’ল কেবলমাত্র সে সকল হুকুম-আহকাম, যা পবিত্র কুরআনে কিংবা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতে বিধৃত হয়েছে এবং মানুষের মাঝে প্রচার করার জন্য তা অহী হিসাবে রাসূল (ছাঃ)-এর উপর অবতারিত হয়েছে’।[5]

৩. Encyclopedia of Islam-এ উল্লিখিত হয়েছে, Shari'a designates the rules and regulations governing the lives of Muslims, derived in principal from the Kur'an and hadith. In this sense, the word is closely associated with fikh, which signifies academic discussion of divine law ‘শরী‘আত’ হ’ল মৌলিকভাবে কুরআন ও হাদীছ থেকে উদ্ভূত সেই সকল আইন-কানূন, যা মুসলমানদের জীবন পরিচালনা করে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে শব্দটি ‘ফিক্বহ’ তথা ইলাহী (ইসলামী) আইনের একাডেমিক আলোচনার সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট’।[6] 

উল্লেখ্য যে, ইসলামী শরী‘আত বলতে সাধারণভাবে উছূলবিদদের পরিভাষায় ‘ইলমুল ফিক্বহ’ বুঝানো হয়ে থাকে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই এর সীমানা আরো বিস্তৃত করেছেন। যেমন আশ-শাত্বিবী (৭৯০হি.) বলেন, أن معنى الشريعة أنها تحد للمكلفين حدودا؛ في أفعالهم، وأقوالهم، واعتقاداتهم، وهو جملة ما تضمنته ‘শরী‘আত হ’ল, যা মুকাল্লাফ (শারঈ হুকুম পালনের জন্য দায়িত্বশীল) ব্যক্তিদের জন্য তাদের কর্মে, কথায় এবং বিশ্বাসের ব্যাপারে সীমারেখা নির্ধারণ করে দেয়। শরী‘আত এগুলোরই সমষ্টি।’[7] তাঁর বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, ‘শরী‘আহ’ শব্দটি ‘দ্বীন’ শব্দের সমার্থক। আর দ্বীন বলতে কেবল ‘ইলমুল ফিক্বহ’কেই বুঝানো হয় না, ‘ইলমুল আক্বাইদ’ও এর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং ‘ইসলামী শরী‘আত’ বলতে ‘ইলমুল ফিক্বহ’, ‘ইলমুল আক্বাইদ’ তথা ইসলামের যাবতীয় হুকুম-আহকাম সংক্রান্ত বিষয়াদিকে নির্দেশ করে।

আধুনিক বিশ্বে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সকলের নিকট ‘শরী‘আহ আইন’ কথাটি প্রচলিত। এই ‘শরী‘আহ আইন’ দ্বারা মূলত ইসলামের মু‘আমালাত এবং আদালতের ‘হুদূদ’ সংক্রান্ত আইনগুলোকে বুঝানো হয়ে থাকে।

শরী‘আহ আইন-এর পরিধি :

ইসলামী শরী‘আত মানুষের জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগকেই শামিল করে। পবিত্র কুরআন ও হাদীছে যেমন ‘ইবাদত’গত বিধি-বিধান এসেছে, তেমনি এসেছে ‘মু‘আমালাত’ তথা পারিবারিক বিধান, সামাজিক বিধান, অপরাধীর শাস্তিবিধান, রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি প্রভৃতি। এ কথা সুপ্রসিদ্ধ যে, পবিত্র কুরআনে ৫০০-এর অধিক সরাসরি আয়াত রয়েছে আহকাম সংক্রান্ত। শুধুমাত্র আহকাম সংক্রান্ত আয়াতসমূহকে শামিল করে বিদ্বানগণ অতীত ও বর্তমানে বেশ কিছু তাফসীরগ্রন্থ্ও রচনা করেছেন।[8]

শরী‘আহ আইন-এর উৎস :

ইসলামী শরী‘আতের মৌলিক ও প্রধানতম দু’টি উৎস হ’ল কুরআন ও হাদীছ। সমস্ত যুগের সকল আহলে ইলম এ বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এ দু’টিই ছিল ইসলামী শরী‘আতের উৎস। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পর খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে আরও কিছু উৎসের আবির্ভাব হয়, যা মূলত প্রথমোক্ত উৎসেরই অনুগামী।

ইসলামী শরী‘আতের এই প্রধান দু’টি উৎসের গুরুত্ব সম্পর্কে ইমাম শাফেঈ (২০৪ হি.) বলেন, وأنه لا يلزم قول بكل حال إلا بكتاب الله أو سنة رسوله وأن ما سواهما تبع لهماকারও কোন বক্তব্য কোন অবস্থাতেই বাধ্যতামূলক হয় না আল্লাহর কিতাব এবং রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাহ দ্বারা সাব্যস্ত হওয়া ব্যতীত। আর কিতাব ও সুন্নাহ ব্যতীত যা কিছু রয়েছে, তা এ দু’টির অনুগামী মাত্র’।[9]

ইবনু তায়মিয়া (৭২৮হি.) বলেন, وكان من أعظم ما أنعم الله به عليهم اعتصامهم بالكتاب والسنة فكان من الأصول المتفق عليها بين الصحابة والتابعين لهم بإحسان ‘মুসলমানদের উপর আল্লাহর সবচেয়ে বড় নে‘মতের একটি হ’ল, কিতাব ও সুন্নাহর উপর তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া। ছাহাবী ও তাদের যথার্থ পদাংক অনুসরণকারী তাবিঈগণ সকলের মধ্যেই এটি একটি সর্বসম্মত মূলনীতি ছিল’।[10]

অতঃপর বিদ্বানগণ উপরোক্ত মূল উৎসদ্বয়ের আলোকে আরও কিছু বর্ধিত উৎসসমূহ নির্ধারণ করেছেন। যেমন ইজমা‘ ও ক্বিয়াস। ইমাম শাফেঈ (রহ.) বলেন,ليس لأحد أبداً أن يقول في شيء حلَّ ولا حرُم إلا من جهة العلم. وجهةُ العلم الخبرُ: في الكتاب، أو السنة، أو الإجماع، أو القياس ‘কারও পক্ষে কোন বিষয়ে জ্ঞান ব্যতীত হালাল বা হারাম বলা উচিৎ নয়। আর জ্ঞান হ’ল যা কুরআন বা সুন্নাহ বা ইজমা‘ বা ক্বিয়াস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে’।[11]

তিনি আরও বলেন,والعلم طبقات شتى الأولى الكتاب والسنة إذا ثبتت السنة ثم الثانية الإجماع فيما ليس فيه كتاب ولا سنة والثالثة أن يقول بعض أصحاب النبي - صلى الله عليه وسلم - ولا نعلم له مخالفا منهم والرابعة اختلاف أصحاب النبي - صلى الله عليه وسلم - في ذلك، الخامسة القياس على بعض الطبقات ولا يصار إلى شيء غير الكتاب والسنة وهما موجودان وإنما يؤخذ العلم من أعلى، ‘জ্ঞানের কয়েকটি স্তর রয়েছে। (১) কিতাব ও ছহীহ সুন্নাহ। (২) ইজমা‘ বা ঐক্যমত, যে বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে কিছু বর্ণিত হয়নি। (৩) কোন ছাহাবীর বক্তব্য, যে সম্পর্কে অন্য ছাহাবীর বিপরীত বক্তব্য আসেনি। (৪) ছাহাবীদের মতদ্বৈততা। (৫) ক্বিয়াস, যা উপরোক্ত যে কোন স্তরের ভিত্তিতে প্রযোজ্য। তবে কিতাব ও সুন্নাহে কোন হুকুম বর্ণিত হ’লে অন্য কোন স্তরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কেননা জ্ঞান অর্জিত হয় ঊর্ধ্বতন স্তর থেকে’।[12]

ইবনু তায়মিয়া (৭২৮হি.) বলেন,إذا قلنا: الكتاب والسنة والإجماع فمدلول الثلاثة واحد فإن كل ما في الكتاب فالرسول صلى الله عليه وسلم موافق له والأمة مجمعة عليه من حيث الجملة فليس في المؤمنين إلا من يوجب اتباع الكتاب وكذلك كل ما سنه الرسول صلى الله عليه وسلم فالقرآن يأمر باتباعه فيه والمؤمنون مجمعون على ذلك. وكذلك كل ما أجمع عليه المسلمون فإنه لا يكون إلا حقا موافقا لما في الكتاب والسنة، ‘যদি বলি যে, কিতাব, সুন্নাহ ও ইজমা‘ (একত্রিতভাবে) তিনটিরই অর্থ একই। কেননা কুরআনে যা কিছু রয়েছে তার প্রতি রাসূল (ছাঃ) যেমন একমত, তেমনি সমগ্র মুসলিম উম্মাহও। মুমিনদের এমন কেউ নেই, যে কুরআনের অনুসরণকে অপরিহার্য মনে করে না। আবার যা কিছু রাসূল (ছাঃ) প্রচলন করেছেন, সে বিষয়ে তাঁর অনুসরণের জন্য কুরআন নির্দেশ দিয়েছে এবং সকল মুমিনও এর ওপর ঐক্যমত পোষণ করেছে। অনুরূপভাবে প্রত্যেক যে বিষয়ের ওপর মুসলিম উম্মাহ ইজমা‘ বা ঐক্যমত পোষণ করেছে, তাও প্রকৃতঅর্থে কুরআন ও সুন্নাহরই যথাযথ অনুগামী।’[13]

আব্দুল করীম যায়দান (২০১৪খ্রি.) বলেন, ‘শরী‘আতের উৎস’ কিংবা ‘ইসলামী আইনের উৎস’ যা-ই বলা হোক না কেন, ইসলামী ফিক্বহের সকল উৎস আল্লাহর অহীর ওপর ভিত্তিশীল। সে অহী হয় কুরআন নতুবা সুন্নাহ। এজন্য ইসলামী শরী‘আতের উৎসকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করি। (১) মৌলিক উৎস (مصادر أصلية) : কুরআন ও সুন্নাহ। (২) অনুগামী উৎস (مصادر تبعية) : যা বস্ত্তত কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারাই সাব্যস্ত। যেমন ইজমা‘ ও ক্বিয়াস।[14]

এছাড়াও ইসলামী শরী‘আতের আরও কিছু উৎস রয়েছে, যা কোন কোন উছূলবিদ গ্রহণ করেছেন, আবার কেউ করেননি। যেমন ছাহাবীর অভিমত বা ফৎওয়া (قول الصحابي), কল্যাণকর বিবেচনা (الاستحسان), সম্ভাব্য অনিষ্ট প্রতিরোধ করা (سد الذرائع), পূর্বহুকুম বজায় রাখা (الاستصحاب), সামাজিক প্রচলন (العرف), বৃহত্তর জনস্বার্থ (المصالح المرسلة) প্রভৃতি। বলাবাহুল্য, প্রতিটি উৎসই মূলত কুরআন ও হাদীছের মৌলিক দিক-নির্দেশনার উপর ভিত্তিশীল ও অনুগামী।

সমষ্টিগতভাবে এগুলো সবই مصادر الشريعة (শরী‘আতের উৎস) বা مصادر التشريع الإسلامي (ইসলামী আইনের উৎস) হিসাবে পরিচিত।

শরী‘আহ আইন বনাম ফিক্বহ :

শরী‘আহ ও ফিক্বহ উভয়ই প্রচলিত পরিভাষায় একই অর্থে ব্যবহৃত হ’লেও উভয়ের মাঝে মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন শরী‘আহ হ’ল আল্লাহ কর্তৃক নাযিলকৃত দ্বীন। পক্ষান্তরে ফিক্বহ হ’ল শরী‘আহ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বা বুঝ। যদি আমার বুঝটি সঠিক হয়, তবে ফিক্বহটি সেক্ষেত্রে শরী‘আহ’র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আর যদি প্রেরিত সত্য সম্পর্কে আমাদের বুঝটি ভুল হয়, তবে এই ভ্রান্তিপূর্ণ বুঝটি শরী‘আহর অন্তর্ভুক্ত নয়। নিম্নে বর্ণিত কিছু পার্থক্য থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।-

(১) শরী‘আহ এবং ফিক্বহের মধ্যে সম্পর্ক হ’ল আম ও খাছ। সুতরাং যেক্ষেত্রে মুজতাহিদ সঠিকভাবে আল্লাহর হুকুম নিরূপণ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে শরী‘আহ ও ফিক্বহ একই স্থানে মিলিত হয়। আর মুজতাহিদ ভুল করলে ফিক্বহ ও শরী‘আহ ভিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া আক্বীদাগত বিষয়সমূহ, আদব-আখলাক এবং পূর্ববর্তী উম্মাতসমূহের কাহিনী বর্ণনার ক্ষেত্রে শরী‘আত এবং ফিক্বহের মাঝে পার্থক্য তৈরী হয়।

(২) শরী‘আহ হ’ল পূর্ণাঙ্গ, কিন্তু ফিক্বহ তা নয়। শরী‘আত হ’ল বিধি-বিধান, সাধারণ মূলনীতি। আর এসকল বিধি-বিধান এবং মূলনীতির আলোকে আমরা জীবনের সকল ক্ষেত্রে হুকুম-আহকাম নির্ণয় করে থাকি, যে বিষয়গুলিতে শরী‘আতে সরাসরি কোন বিবরণ আসেনি। কিন্তু ফিক্বহ হ’ল মুজতাহিদ বিদ্বানগণের মতামতসমূহ।

(৩) শরী‘আহর গন্ডি হ’ল সর্বব্যাপী, যা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য অবশ্য অনুসরণীয়। কিন্তু ফিক্বহ তা নয়। একজন মুজতাহিদের রায় অপর মুজতাহিদের জন্য গ্রহণ করা অপরিহার্য নয়। এমনকি কোন সাধারণ মানুষের জন্যও তা অপরিহার্য নয়, যখন সে অন্য কোন মুজতাহিদের মত অধিক অনুসরণীয় মনে করে। ফিক্বহ একটি নির্দিষ্ট সময় ও স্থানের বিদ্বানদের গৃহীত মত, যা অন্য স্থান বা সময়ের জন্য প্রযোজ্য নাও হ’তে পারে। কিন্তু শরী‘আত সকল স্থান-কাল-পাত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য। 

(৪) শরী‘আহর বিধানসমূহ সঠিক ও নির্ভুল। আর ফকবীহদের বুঝ কখনও ভুলও হ’তে পারে।

(৫) শরী‘আহর বিধি-বিধান চিরস্থায়ী।[15]

শরী‘আহ আইন বনাম সাধারণ আইন :

ইসলামী শরী‘আত ও প্রচলিত সাধারণ আইন দর্শন ও কর্মগতভাবে পুরোপুরি পৃথক। যেমন :

(১) সাধারণ আইন হ’ল মানুষের নিজস্ব সৃষ্টি, যাতে মানবীয় দুর্বলতা ও অক্ষমতা জড়িত থাকে। ফলে তা সবসময় পরিবর্তন-পরিবর্ধন এবং সংস্কারের মুখাপেক্ষী। ফলে সাধারণ আইন কখনও পূর্ণাঙ্গ হয় না। কেননা এখানে আইনপ্রণেতারা পূর্ণাঙ্গ নয়। অতীতের খবর জানতে পারলেও তাদের কোন ভবিষ্যৎজ্ঞান নেই। অপরপক্ষে শরী‘আত হ’ল আল্লাহ প্রদত্ত বিধান। আল্লাহ পূর্ণাঙ্গ এবং তিনি মানুষের ভূত-ভবিষ্যত, কল্যাণ-অকল্যাণ সম্পর্কে পূর্ণ অবগত। এজন্য তাঁর প্রদত্ত বিধান চিরস্থায়ী, যা কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধনের অপেক্ষা রাখে না।

(২) সাধারণ আইন সাময়িককালের জন্য প্রযোজ্য, যা নির্দিষ্ট একটি যুগ বা একটি সমাজের জন্য উপযোগী। অপরপক্ষে শরী‘আত আল্লাহ কর্তৃক নাযিলকৃত চিরস্থায়ী বিধানের নাম, যা বিশেষ সময় কিংবা বিশেষ জাতি নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জীবন পরিচালনার জন্য অপরিহার্য বিধান।

(৩) সাধারণ আইন কোন একটি সমাজের মানুষ দ্বারা প্রণীত, যা সমাজটি পরিচালনার লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়। সুতরাং তা মানুষের চাল-চলন, স্বভাব-চরিত্র এবং তাদের পূর্ব ইতিহাসের অনুগামী। মানুষের উত্থান-পত্তনের সাথে তা গভীরভাবে সম্পর্কিত। কিন্তু শরী‘আত আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এবং তা মানবসমাজকে চিরকল্যাণের পথপ্রদর্শন করে। সুতরাং তা মানুষের খেয়াল-খুশী বা স্বভাব-চরিত্রের অনুগামী নয়, বরং মানুষের স্বভাব-চরিত্রই শরী‘আতের অনুগামী।[16]

(৪) সাধারণ আইন কেবল ব্যক্তিসমষ্টির পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ করে এবং সর্বোচ্চ তা রাজনৈতিক বিষয়সমূহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অতঃপর বিংশ শতাব্দীর সংবিধানগুলোতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়াদি কিছুটা সন্নিবেশিত হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামী শরী‘আতের প্রাতিষ্ঠানিকতা, সুউচ্চ লক্ষ্যমুখীতা বহুগুণ ঊর্ধ্বে। এই আইন সীমাবদ্ধতা, মূর্খতা এবং প্রবৃত্তিপরায়ণতামুক্ত। এই আইন সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় নয়, বরং সর্বব্যাপী পরিব্যাপ্ত। যেমন মানুষের মৌলিক বিশ্বাস, নৈতিক শিষ্টাচার, সামাজিক আচারবিধি এগুলো সাধারণ আইনে নেই বললেই চলে। কিন্তু ইসলামী শরী‘আত তা গুরুত্বসহকারে বর্ণনা করেছে। মানবজীবনের কোন একটি অংশকে ইসলামী শরী‘আত খন্ডিতভাবে দেখেনি। বরং একক স্রষ্টার অধীনে একটি সামগ্রিক ও সুশৃংখল বিধি-বিধান প্রদান করেছে। ইসলামী শরী‘আতের এই সর্বব্যাপ্ততা পৃথিবীর আর কোন আইনে পাওয়া যাবে না। এমন কোন প্রয়োজনীয় বিষয় নেই, যে বিষয় কুরআন ও সুন্নাহে কিছু বলা হয়নি।[17]

উপসংহার :

সুতরাং শরী‘আহ আইন ও প্রচলিত সাধারণ আইনশাস্ত্র কেবল ভিন্নতাই নির্দেশ করে না; বরং উভয়ের মধ্যে রয়েছে বিশ্বাস ও নীতিগত বিস্তর পার্থক্য। রয়েছে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগত আসমান-যমীন তফাৎ। সর্বোপরি একটি স্বয়ং মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাববুল আলামীন নির্দেশিত, অপরটি মানবিক অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত। একটি অপরিবর্তনীয় ও অকাট্য; অপরটি পরিবর্তনশীল এবং দুর্বল ভিত্তির কারণে নিঃশর্তভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরূপভাবে ফিক্বহও ইসলামী শরী‘আহর প্রতিশব্দ নয়। কারণ ফিক্বহও মানবীয় ইজতিহাদভিত্তিক হওয়ায় সংশোধনধর্মী। কিন্তু ইসলামী শরী‘আহ কোন প্রকার সংশোধন বা সংস্কারের অনুগামী নয়। অতএব যাবতীয় আইনী আলাপ ও ফিক্বহী পর্যালোচনাকালে শরী‘আহ আইনকে মৌলিক মানদন্ড হিসাবে সম্মুখে রাখতে হবে, যেন তা অন্যান্য আইনের সাথে এক সমতলে ব্যবহৃত না হয় এবং আল্লাহর আইনের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে।


[1]. ইউসুফ আল-কারযাভী, মাদখালুন লি দিরাসাতিশ শারীআতিল ইসলামিয়াহ (বৈরূত : মুআসসাসতুর রিসালাহ, ১৯৯৩খ্রি.), পৃ. ৯।

[2]. জামালুদ্দীন ইবনু মানযূর, লিসানুল আরাব (বৈরূত : দারু ছাদের, ১৪১৪হি.), ৮/১৭৫; মাজদুদ্দীন আল-ফিরোযাবাদী, আল-কামূসুল মুহীত (বৈরূত : মু’আস্সাসাতুর রিসালাহ, ১৯৮৬ খ্রি.), পৃ. ৭৩২; মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আয-যুবায়দী, তাজুল আরূস ২১/২৫৯।

. ড. আব্দুল করীম যায়দান, আল-মাদখাল লি দিরাসাতিশ শারী‘আতিল ইসলামিয়াহ (আলেকজান্দ্রিয়া : দারু উমার ইবনুল খাত্তাব, ২০০১খ্রি.), পৃ. ৩৮।

. আল-মওসূ‘আতুল আরাবিয়াহ আল-আলামিয়াহ, ড. আহমাদ শুয়াইখাত সম্পাদিত (www.intaaj.netকর্তৃক প্রকাশিত ই-বুক), ভুক্তি -الإسلام

[5]. ড. আব্দুল করীম যায়দান, আল-মাদখাল লি দিরাসাতিশ শারী‘আতিল ইসলামিয়াহ, পৃ. ৩৯।

[6]. Editorial board, The Encyclopedia of Islam (Leiden, Brill, New edition : 1997), p. 321.

[7]. আবূ ইসহাক্ব আশ-শাত্বিবী, আল-মুওয়াফাক্বাত (আল-খুবার, সঊদী আরব : দারু ইবনে আফফান, ১৯৯৭খ্রি.), পৃ. ১৩১।

[8]. ড. ইউসুফ আল-কারযাভী, আল-মাদখাল লি দিরাসাতিশ শারীআতিল ইসলামিয়াহ, পৃ. ১১।

[9]. মুহাম্মাদ ইবনু ইদরীস আশ-শাফেঈ, জিমা‘উল ইলম (ছান‘আ, ইয়েমেন : দারুল আছার, ২০০২খ্রি.), পৃ. ৩।

[10]. তাক্বীউদ্দীন ইবনু তায়মিয়া, মাজমূউ‘ল ফাতাওয়া (মদীনা : মাজমাঊল মালিক ফাহাদ, ১৯৯৫ খ্রি.), ১৩/২৮।

[11]. মুহাম্মাদ ইবনু ইদরীস আশ-শাফেঈ, আর-রিসালাহ, তাহক্বীক্ব : আহমাদ শাকির (মিসর : মাকতাবাতুল হালাবী, ১৯৪০ খ্রি.), পৃ. ৩৪।

[12]. তদেব।

[13]. ইবনু তায়মিয়া, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া, ৭/৪০।

[14]. আব্দুল করীম যায়দান, আল-মাদখাল লি দিরাসাতিশ শারীআতিল ইসলামিয়াহ, পৃ. ১৮২-১৮৩।

[15]. ড. নাছর আব্দুল করীম আক্বল, তারীখুল ফিক্হিল ইসলামী (আম্মান, জর্ডান : দারুন নাফাইস, ৩য় প্রকাশ : ১৯৯১খ্রি.), পৃ. ১৮-২০।

[16]. আব্দুল ক্বাদের আওদাহ, আত-তাশরী‘উল জিনাঈ আল-ইসলামী মুক্বারিনান বিল কানূনিল ওয়াযঈ (বৈরূত: দারুল কাতিব আল-আরাবী, তাবি), পৃ. ১৭-২৪।

[17]. ড. আলী জারীশাহ, মাছাদিরুশ শারী‘আহ আল-ইসলামিয়াহ মুকারানাতুন বিল মাছাদির আদ-দাস্ত্তরিয়াহ (আবিদীন : মাকতাবাহ ওয়াহাবাহ, ১৯৭৯খ্রি.), পৃ. ১৩-১৪।






বিষয়সমূহ: দণ্ডবিধি
নেতৃত্বের মোহ - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
দ্বীনের পথে ত্যাগ স্বীকার (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
বিতর্কের ক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আসাদুল্লাহ আল-গালিব
শায়খ আলবানীর তাৎপর্যপূর্ণ কিছু মন্তব্য (১ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
ইসলামে পোশাক-পরিচ্ছদ : গুরুত্ব ও তাৎপর্য - মুহাম্মাদ আবু তাহের, পরিচালক, কিউসেট ইনস্টিটিউট, সিলেট।
আমানত (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল (পূর্বে প্রকাশিতের পর) - আব্দুল্লাহ বিন আবদুর রাযযাক
আল-কুরআনের আলোকে ক্বিয়ামত (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ভালবাসা (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ইহসান ইলাহী যহীর
শিক্ষাঙ্গনে অপরাজনীতি ও অনৈতিক প্রভাব বন্ধ করতে হবে - জামালুদ্দীন বারী
সমাজ সংস্কারে ইমামগণের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
কুরআনের বঙ্গানুবাদ, মুদ্রণ প্রযুক্তি ও ঊনিশ শতকের মুসলিম সমাজে এর প্রভাব - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
আরও
আরও
.