ভূমিকা :

মানুষের দো‘আ পাওয়া একটি কাঙ্খিত বিষয়। আমরা সবাই অন্যের কাছে দো‘আ প্রত্যাশা করি। সেই জন্য সুযোগ পেলেই দ্বীনদার মানুষের কাছে নিজের জন্য এবং নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য দো‘আ চেয়ে থাকি। কিন্তু ইসলামী শরী‘আত আমাদের জন্য এমন কিছু উপায় করে দিয়েছে, যা অবলম্বন করে আমরা অনায়াসে মানুষের দো‘আয় শামিল হ’তে পারি। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা অপরের উপর ওয়াজিব করে দেই যে, তারা আমাদের জন্য দো‘আ করবে। আবার কখনো কখনো দো‘আ না চাইতেই তারা অবলীলায় আমাদের জন্য দো‘আ করবে। আলোচ্য নিবন্ধে মানুষের দো‘আয় শামিল হওয়ার কতিপয় উপায় আলোকপাত করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।-

১. নেক সন্তান প্রতিপালন করা :

মানুষের দো‘আ লাভের অন্যতম উপায় হ’ল নেক সন্তান। নেককার সন্তান পিতা-মাতার ছওয়াব লাভের উপায়। কেননা এমন কত পরহেযগার মানুষ আছে, যাদের মৃত্যুর পর আমলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু যে পিতা-মাতা নেককার-পরহেযগার সন্তান রেখে কবরে যান, মৃত্যুর পর তার নেকী অর্জনের পথ বন্ধ হয় না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثَةٍ: إِلَّا مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ، ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার আমলের পথ বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি আমল ছাড়া, ছাদাক্বায়ে জারিয়া, এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং নেক সন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’।[1] অন্যত্র তিনি বলেন,

سَبْعٌ يَجْرِي لِلْعَبْدِ أَجْرُهُنَّ مِنْ بَعْدِ مَوْتِهِ، وهُو فِي قَبْرِهِ: مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا، أَوْ كَرَى نَهْرًا، أَوْ حَفَرَ بِئْرًا، أَوْ غَرَسَ نَخْلا، أَوْ بَنَى مَسْجِدًا، أَوْ وَرَّثَ مُصْحَفًا، أَوْ تَرَكَ وَلَدًا يَسْتَغْفِرُ لَهُ بَعْدَ مَوْتِهِ،

‘মৃত্যুর পরে কবরে থাকা অবস্থায় বান্দার সাতটি আমলের প্রতিদান অব্যাহত থাকে, (১) যে ব্যক্তি ইলম শিক্ষা দিবে অথবা (২) নদী খননের ব্যবস্থা করবে অথবা (৩) কূপ খনন করবে অথবা (৪) কোন খেজুর গাছ রোপণ করবে অথবা (৫) মসজিদ নির্মাণ করবে অথবা (৬) কুরআন মাজীদ (তেলাওয়াতের জন্য অথবা এর আহকাম জীবনে বাস্তবায়নের জন্য) কাউকে দান করবে, অথবা (৭) এমন কোন সন্তান রেখে যাবে, যে মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে’।[2]

পিতা-মাতা একজন নেক সন্তানের আন্তরিক ও একনিষ্ঠ দো‘আর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী উপকৃত হ’তে পারেন। তারা নেক সন্তানের মাধ্যমে সমাজের বুকে যেমন সম্মানিত হন, তেমনি আখেরাতেও তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ لَيَرْفَعُ الدَّرَجَةَ لِلْعَبْدِ الصَّالِحِ فِى الْجَنَّةِ فَيَقُولُ يَارَبِّ أَنَّــى لِـي هَذِهِ فَيَقُولُ بِاسْتِغْفَارِ وَلَدِكَ لَكَ، ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ জান্নাতে নেককার বান্দার মর্যাদা বুলন্দ করবেন, তখন সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কেন আমার জন্য এই উচ্চ মর্যাদা? তখন আল্লাহ বলবেন, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে’।[3] অর্থাৎ পিতার জন্য নেক সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনার কারণে সেই পিতাকে আল্লাহ জান্নাতের উচ্চাসন দান করবেন। শুধু তাই নয়, একটি ভাল ছেলেকে দেখলে মানুষ তার পিতা-মাতার ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করে এবং দো‘আ করে। অথচ সন্তান খারাপ হ’লে এর বিপরীতটা ঘটে।

সুতরাং সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে নেককার করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা যরূরী। পিতা-মাতা সেই সন্তানের মর্যাদা তখনই বুঝতে পারবে, যখন তার আমলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে এবং তাকে অসহায় অবস্থায় কবরে রাখা হবে। সেই সময় তার নিকট আসতে থাকবে একটির পর একটি উপহার, ইস্তিগফার, ছাদাক্বাহ, দো‘আ অথবা হজ্জের ছওয়াব। এসবই আসবে নেককার সন্তানের পক্ষ থেকে, যে সন্তান দুনিয়াতেও পিতা-মাতার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল এবং মৃত্যুর পরেও তারা সেই সন্তানের মাধ্যমে উপকৃত হ’তে থাকবেন।

আমরা পার্থিব ধন-সম্পদ অর্জনে কত মেহনত করি, অথচ আমাদের মৃত্যুর পর সেই সম্পদ থেকে আর উপকৃত হ’তে পারব না, সেই সুযোগই থাকবে না। অথচ নেক সন্তানই পিতা-মাতার মূল সম্পদ। জীবদ্দশায় অথবা মৃত্যুর পরে উভয় অবস্থায় পিতা-মাতা এই সম্পদের মাধ্যমে উপকৃত হ’তে পারেন। সুতরাং আসুন! পার্থিব স্বার্থ পরিহার করে আমাদের সন্তানদের আখেরাতমুখী করে গড়ে তুলি। কেননা পিতা-মাতার জন্য নেক সন্তানই দো‘আ লাভের প্রধান উপায়। কোন পিতা যদি তার সন্তানকে দ্বীনের সঠিক শিক্ষা দান করতে পারেন, তাহ’লে মৃত্যুর সময় ধন-সম্পদ রেখে যেতে না পারলেও তিনি একজন সফল পিতা হিসাবেই বিবেচিত হবেন।

তাছাড়া আলেমদের লিখিত বইগুলো নেক সন্তানের মতোই। ইমাম ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন,إن تصنيف العالم ولده المخلد، ‘নিশ্চয়ই আলেমের লিখিত রচনা তার চিরস্থায়ী সন্তান’।[4] মৃত্যুর পরে কোন ব্যক্তি তার নেক সন্তানের দো‘আর মাধ্যমে যেমন উপকৃত হ’তে পারেন, ঠিক তেমনি একজন আলেম মৃত্যুর পর তার লিখিত বইয়ের মাধ্যমে উপকৃত হ’তে পারেন। কেননা তাদের নাম উচ্চারণের সাথে সাথে মানুষ তাদের জন্য দো‘আ করে বলে ‘রহিমাহুল্লাহ’ (আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন)। হাদীছের পাতায় ছাহাবায়ে কেরামের নাম উচ্চারণ করলেই আমরা বলি ‘রাযিয়াল্লাহ আনহু’ (আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হৌন)’। ছাহাবীদের বর্ণিত হাদীছের ছওয়াব ১৪০০ বছর থেকে আজকের দিন পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদের আমলনামায় যোগ হচ্ছে, এমনকি ক্বিয়ামত পর্যন্ত এই ছওয়াব যোগ হ’তেই থাকবে। আলী (রাঃ) যথার্থই বলেন, العلماء باقون ما بقي الدهر، أعيانهم مفقودة، وآثارهم فـي القلوب موجودة، ‘আলেমগণ (দুনিয়াতে) অনন্তকাল ধরে স্থিত/জীবিত থাকেন, তাদের চোখ হারিয়ে গেলেও তাদের অবদান মানুষের হৃদয়ে জাগরুক থাকে’।[5]

ইলমকে চিরস্থায়ী সন্তান বানানোর জন্য কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে- (১) বই আকারে লিখে যাওয়া, (২) প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে ইলমকে চিরস্থায়ী করা, (৩) দ্বীনি বই রচনা করতে না পারলে, সেই বই প্রকাশের জন্য টাকা দিয়ে জ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে সাহায্য করা অথবা সেই বইগুলো কিনে ফ্রী বিতরণ করা এবং (৪) অনলাইনে দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে ইসলামী ও উপকারী জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া। কেননা বর্তমান যুগে এসবের প্রয়োজনীয়তা বইয়ের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।

২. পরোপকার ও সদাচরণ :

মানুষের দো‘আর ছায়ায় আশ্রয় লাভের অন্যতম উপায় হ’ল পরোপকার ও সদাচরণ। মানুষ তার সচ্চরিত্র ও উপকারের জ্যোতি দিয়ে অন্যের মন জয় করতে পারে। তাই উপকারকারীর জন্য দো‘আ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি বলেন,مَنِ اسْتَعَاذَ بِاللهِ فَأَعِيذُوهُ، وَمَنْ سَأَلَ بِاللهِ فَأَعْطُوهُ، وَمَنْ دَعَاكُمْ فَأَجِيبُوهُ، وَمَنْ صَنَعَ إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِئُوهُ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا مَا تُكَافِئُونَهُ، فَادْعُوا لَهُ حَتَّى تَرَوْا أَنَّكُمْ قَدْ كَافَأْتُمُوه ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে আশ্রয় কামনা করে, তাকে নিরাপত্তা দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে যাচ্ঞা করে, তাকে তা দিয়ে দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের দাওয়াত দেয়, তার দাওয়াত গ্রহণ কর। আর যে ব্যক্তি তোমাদের উপকার করে, তাকে বিনিময় দিয়ে দাও। যদি বিনিময় আদায়ের মতো কোন কিছু না থাকে, তার জন্য দো‘আ করো, যতদিন না তুমি বুঝবে যে, তার উপকারের বিনিময় আদায় হয়েছে’।[6]

অন্যত্র তিনি বলেছেন, ‘যার প্রতি উত্তম আচরণ করা হবে (উপকার করা হবে) সে যেন সদাচরণকারী ব্যক্তির জন্য দো‘আ করে বলে, جَزَاكَ اللهُ خَيْرًا ‘(জাযাকাল্লাহু খায়রান) আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন’।[7] যদি উপকৃত ব্যক্তির দো‘আ করার এই বাক্য জানা থাকে, তাহ’লে হয়ত তিনি উপকারকারী বা সদাচরণকারী ব্যক্তির জন্য ‘জাযাকাল্লাহু খাইরান’ বলে দো‘আ করবে। কিন্তু তার যদি এই বাক্যটি জানা না থাকে, তবুও উপকারকারী তার দো‘আ থেকে মাহরূম হন না। ছহাবী আনাস (রাঃ) বলেন, ‘একবার মুহাজিরগণ বললেন,

يَا رَسُولَ اللهِ، ذَهَبْتِ الْأَنْصَارُ بِالْأَجْرِ كُلِّهِ، مَا رَأَيْنَا قَوْمًا أَحْسَنَ بَذْلًا لَكَثِيرٍ، وَلَا أَحْسَنَ مُوَاسَاةٍ فِي قَلِيلٍ مِنْهُمْ، وَلَقَدْ كَفَوْنَا الْمُؤْنَةَ. قَالَ: أَلَيْسَ تُثْنُونَ عَلَيْهِمْ بِهِ، وَتَدْعُونَ اللهَ لَهُمْ؟ قَالُوا: بَلَى قَالَ: فَذَاكَ بِذَاكَ،

‘হে আল্লাহর রাসূল! আনছারগণ তো সব ছওয়াব নিয়ে গেল। আমরা কোন সম্প্রদায়কে তাদের চেয়ে অধিক দানশীল এবং অল্প সম্পদ থাকা সত্ত্বেও এত উত্তমরূপে সহানুভূতি প্রদর্শন করতে দেখিনি। তাদের জোগানো রসদসামগ্রী আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে গেছে। রাসূল (ছাঃ) বললেন, এজন্য কি তোমরা তাদের প্রশংসা করছ না এবং দো‘আ করছ না?’ তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহ’লে এর বিনিময়ে তোমরাও নেকী পাচ্ছ’।[8] অর্থাৎ উপকৃত ব্যক্তি যদি উপকারকারীর প্রশংসা করে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তাহ’লে এর মাধ্যমেও উপকারকারীর জন্য দো‘আ করা হয়ে যায় এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীও প্রতিদান লাভ করেন।[9] এভাবে কল্যাণকামী বান্দাদের প্রশংসা তাদের মৃত্যুর পরেও জগৎবাসীর হৃদয় জুড়ে অম্লান থাকে। পৃথিবীবাসি শ্রদ্ধার সাথে তাদের স্মরণ করে।

সুতরাং যিনি যত বেশী মানুষের সাথে সদাচরণকারী হবেন, তাদের জন্য উপকার ও কল্যাণের রসদ জোগাবেন, তিনি তত বেশী মানুষের দো‘আ লাভ করবেন। কারো কাছে তার দো‘আ চাইতে হবে না; বরং তার জন্য মানুষের মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই দো‘আ বেরিয়ে আসবে।

তাই এমন জীবন গঠন করা উচিত, যেন পৃথিবীবাসী আমাদের মাধ্যমে প্রশান্তি খুঁজে পায়। কারো উপকার করতে না পারলেও অন্তত যেন তাদের কষ্টের কারণ না হ’তে হয়। কেননা যারা মানুষকে কষ্ট দেয় তাদের উপর লা‘নত বর্ষিত হয়।[10]

৩. মানুষের কাছে দো‘আ চাওয়া :

মানুষের দো‘আয় নিজেকে শামিল করার আরেকটি উপায় হ’ল সৎকর্মশীল বান্দাদের কাছে দো‘আ চাওয়া। আবুদ্দারদা (রাঃ)-এর জামাই ছাফওয়ান ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ‘আমি সিরিয়াতে আবুদ্দারদা (রাঃ)-এর বাড়িতে গেলাম। আমি তাকে বাড়িতে পেলাম না; বরং সেখানে উম্মুদ্দারদা (রাঃ)-কে পেলাম। তিনি আমাকে বললেন, أَتُرِيدُ الْحَجَّ الْعَامَ؟ ‘তুমি কি এই বছর হজ্জে যেতে চাও?’ আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, فَادْعُ اللهَ لَنَا بِخَيْرٍ، فَإِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: دَعْوَةُ الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ لِأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ مُسْتَجَابَةٌ، عِنْدَ رَأْسِهِ مَلَكٌ مُوَكَّلٌ كُلَّمَا دَعَا لِأَخِيهِ بِخَيْرٍ، قَالَ الْمَلَكُ الْمُوَكَّلُ بِهِ: آمِينَ وَلَكَ بِمِثْلٍ، ‘আল্লাহর নিকটে আমাদের জন্য কল্যাণের দো‘আ করো। কেননা নবী (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন মুসলিম ব্যক্তি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতে দো‘আ করলে তা কবুল হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকেন। যখন সে তার ভাইয়ের কল্যাণের দো‘আ করে, তখন নিয়োজিত ফেরেশতা বলে, আমীন! তোমার জন্যও অনুরূপ কল্যাণ বর্ষিত হোক’। ছাফওয়ান (রহঃ) বলেন, আমি বাযারে গিয়ে আবুদ্দারদা (রাঃ)-এর দেখা পেলাম, তিনিও আমাকে এই হাদীছ শুনালেন।[11]

অন্যের কাছে দো‘আ চাওয়া অবৈধ নয়; বরং এটা ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। ছাহাবায়ে কেরাম, সালাফে ছালেহীন নেককার বান্দাদের কাছে নিজেদের জন্য দো‘আ চাইতেন। বিশেষ করে পিতা-মাতার প্রতি আনুগত্যশীল সদাচরণকারী ব্যক্তিদের কাছে তারা দো‘আ চাইতেন। হাদীছের পাতায় সোনালী হরফে লেখা উওয়াইস ইবনু আমের আল-কারণী (রহঃ)-এর কাহিনীতে এর প্রকৃষ্ট নমুনা খুঁজে পাওয়া যায়।

উসাইর বিন জাবির (রাঃ) বলেন, ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর অভ্যাস ছিল, যখন ইয়ামনের কোন সাহায্যকারী দল তার কাছে আসত, তখন তিনি তাদের জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের মধ্যে কি উওয়াইস ইবনু আমের আছে? অবশেষে তিনি উওয়াইসকে পেয়ে যান। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, তুমি কি উওয়াইস ইবনু আমের? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি মুরাদ গোত্রের কারান বংশের? বললেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি শ্বেত রোগ ছিল এবং তা নিরাময় হয়েছে, কেবল এক দিরহাম স্থান ব্যতীত? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি মা আছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, يَأْتِي عَلَيْكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أَمْدَادِ أَهْلِ الْيَمَنِ، مِنْ مُرَادٍ، ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ، كَانَ بِهِ بَرَصٌ فَبَرَأَ مِنْهُ إِلَّا مَوْضِعَ دِرْهَمٍ، لَهُ وَالِدَةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ، لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ، فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ فَافْعَلْ، فَاسْتَغْفِرْ لِي، فَاسْتَغْفَرَ لَهُ، ‘তোমাদের কাছে মুরাদ গোত্রের কারান বংশের উয়াইস ইবনু আমের নামে এক ব্যক্তি ইয়ামানের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে আসবে। তার ছিল শ্বেত রোগ। পরে তা নিরাময় হয়ে গেছে। কেবল এক দিরহাম ব্যতিরেকে। তার মা আছেন। সে তাঁর প্রতি অতি সেবাপরায়ণ। সে (উওয়াইস) আল্লাহর উপর কসম করে নিলে আল্লাহ তা পূর্ণ করে দিবেন। কাজেই যদি তুমি তোমার জন্য তার কাছে মাগফিরাতের দো‘আ কামনার সুযোগ পাও, তাহ’লে তা করবে’। এরপর ওমর (রাঃ) বললেন, সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দো‘আ করুন। অতঃপর উওয়াইস তাঁর মাগফেরাতের জন্য দো‘আ করলেন’।[12]

ওমর (রাঃ) দো‘আ চেয়েছেন একজন সাধারণ মানুষের কাছে। যিনি ছাহাবী ছিলেন না, কোন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি ছিলেন না। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় ছিল তিনি পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণকারী ছিলেন।

সুতরাং হাদীছের পাতায় যাদের দো‘আ কবুলের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছে বেশী বেশী দো‘আ চাওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لَا شَكَّ فِيهِنَّ: دَعْوَةُ الـمَظْلُومِ، وَدَعْوَةُ الـمُسَافِرِ، وَدَعْوَةُ الوَالِدِ عَلَى وَلَدِهِ ‘তিন ব্যক্তির দো‘আ অবশ্যই কবুল করা হয়, এতে কোন সন্দেহ নেই। মাযলূমের দো‘আ, মুসাফিরের দো‘আ এবং সন্তানের জন্য পিতার দো‘আ’।[13] নবী করীম (ছাঃ) আরো কয়েক শ্রেণীর লোকের কথা উল্লেখ করেছেন, যাদের দো‘আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। অর্থাৎ কবুল করা হয়। যেমন- ন্যায়পরায়ণ শাসক, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী বান্দা,[14] ছায়েম,[15] নেক সন্তান,[16] হজ্জ সম্পাদনকারী, ওমরাহ পালনকারী, আল্লাহর পথে জিহাদকারী প্রমুখের দো‘আ আল্লাহ কখনো ফিরিয়ে দেন না[17]। সুতরাং এই সকল মানুষের কাছে দো‘আ চেয়ে তাদের প্রার্থনায় শামিল হওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

৪. হাঁচি দিয়ে সরবে আলহামদুলিল্লাহ বলা অথবা হাঁচির জবাব দেওয়া :

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে ইসলামের সুমহান আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে। এমনকি হাঁচি দেওয়ার ক্ষেত্রেও। হাঁচির মাধ্যমে হাঁচিদাতা এবং এর উত্তরদাতা পরস্পর পরস্পরের দো‘আয় নিজেকে শামিল করে নিতে পারে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ، فَإِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ وَحَمِدَ اللهَ كَانَ حَقًّا عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَهُ أَنْ يَقُولَ لَهُ يَرْحَمُكَ اللهُ. وَأَمَّا التَّثَاؤُبُ فَإِنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإِذَا تَثَاوَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا تَثَاءَبَ ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ، ‘আল্লাহ হাঁচি দেওয়া পসন্দ করেন এবং হাই তোলা অপসন্দ করেন। যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে, তখন তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লা’ (আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন) বলা ওয়াজিব হয়ে যায়। আর হাই তোলা শয়তাদের পক্ষ থেকে হয়। কাজেই তোমাদের কোন ব্যক্তির হাই উঠলে, সে যেন সাধ্যানুযায়ী তা রোধ করে। কেননা হাই তুললে শয়তান তাকে দেখে হাসে’।[18]

অপরদিকে হাঁচির উত্তরদাতার জন্যও ইসলাম দো‘আ লাভের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلْ: الحَمْدُ لِلَّهِ، وَلْيَقُلْ لَهُ أَخُوهُ أَوْ صَاحِبُهُ: يَرْحَمُكَ اللهُ، فَإِذَا قَالَ لَهُ: يَرْحَمُكَ اللهُ، فَلْيَقُلْ: يَهْدِيكُمُ اللهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ ‘যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয়, সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে। আর তার মুসলিম ভাই অথবা বন্ধু হাঁচিদাতার জবাবে বলবে, ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’। যখন শ্রোতা ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে, তখন হাঁচি দাতা বলবে, ইয়াহদিকুমুল্লাহু ওয়া ইয়ূছ্লিহ বা-লাকুম (আল্লাহ আপনাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং আপনাদের মনের অবস্থা সংশোধন করুন)’।[19]

ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ) থেকে ছহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, একবার ইমাম আবূদাঊদ একটি জাহাযে অবস্থান করছিলেন। জাহাযটি কিনারা থেকে একটু দূরে নোঙ্গর করা ছিল। হঠাৎ তিনি কিনারা থেকে এক ব্যক্তির হাঁচির আওয়াজ শুনতে পেলেন এবং হাঁচিদাতার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলাও শুনতে পেলেন। তখন তিনি এক দিরহাম দিয়ে একটি নৌকা ভাড়া করে কিনারায় আসলেন এবং লোকটাকে হাঁচির জবাবে ‘ইয়ারকামুকাল্লাহ’ শুনিয়ে দিয়ে আবার জাহাযে চলে গেলেন। জাহাযের লোকজন ইমাম আবূদাঊদ (রহঃ)-এর কাছে এমন করার কারণ জানতে চাইলে ইমাম আবূদাঊদ (রহঃ) বললেন, ‘হয়ত সে হাঁচির উত্তরদাতার জবাবে ‘ইয়াহদীকুমুল্লাহ ওয়া ইয়ূছলিহ বা-লাকুম’ বলবে এবং আল্লাহ তার সেই দো‘আ কবুল করবেন’। তখন এক ব্যক্তি চিৎকার দিয়ে বলে উঠল,يَا أَهْلَ السَّفِينَةِ إِنَّ أَبَا دَاوُدَ اشْتَرَى الْجَنَّةَ مِنَ اللهِ بِدِرْهَمٍ، ‘হে জাহাযের যাত্রীদল! আবূদাঊদ তো এক দিরহামের বিনিময়ে আল্লাহর কাছ থেকে জান্নাত কিনে নিল!’।[20]

সালাফে ছালেহীন মানুষের দো‘আ পাওয়ার জন্য কতটা উদগ্রীব থাকতেন, এই ঘটনার মাধ্যমে তা কিছুটা হ’লেও আঁচ করা যায়।

৫. অন্যকে মুসলিম উম্মাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনার শিক্ষা দেওয়া :

যারা অপর মুসলিমের জন্য দো‘আ করে, তারা সৌভাগ্যবান। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি বলেন,مَنِ اسْتَغْفَرَ لِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ كَتَبَ اللهُ لَهُ بِكُلِّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ حَسَنَةً ‘যে ব্যক্তি মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে (দুনিয়ার) প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর বিনিময়ে একটি করে নেকী লিপিবদ্ধ করবেন’।[21] জীবিত ও মৃত সকল মুমিন পুরুষ ও নারী এই দো‘আতে শামিল হবে।[22] অর্থাৎ পৃথিবীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আগত সকল মুমিনের সংখ্যা সমপরিমাণ নেকী লেখা হবে ক্ষমা প্রার্থনাকারীর জন্য। তবে আগে নিজের জন্য দো‘আ করতে হবে, তারপর অপরের জন্য। যেমন আল্লাহ নির্দেশ দিয়ে বলেন, وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ‘আর তোমার ত্রুটির জন্য এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর’ (মুহাম্মাদ ৪৭/১৯)। নূহ (আঃ) ফরিয়াদ করে বলেছিলেন,رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَنْ دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، ‘হে রব! তুমি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যারা মুমিন হয়ে আমার বাড়ীতে প্রবেশ করে তাদেরকে এবং সকল মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা কর’ (নূহ ৭১/২৮)। ইবরাহীম (আঃ) দো‘আ করে বলেছিলেন,رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ، ‘হে আমার প্রতিপালক! যেদিন হিসাব হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল মুমিনকে ক্ষমা করে দিও’ (ইবরাহীম ১৪/৪১)। এই দো‘আগুলো যত বেশী অপর কাউকে শিখানো যাবে, নিজেকে তাদের দো‘আয় তত বেশী শামিল করা যাবে।

৬. সালামের প্রসার ঘটানো :

সালাম একটি সম্মানজনক ইসলামী অভিবাদন। মূলতঃ সালামের আদান-প্রদানের মাধ্যমে মুসলিমগণ পরস্পরের জন্য দো‘আ করে থাকেন। সালাম দেওয়া সুন্নাত এবং জবাব দেওয়া ওয়াজিব। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لِلْمُؤْمِنِ عَلَى الْمُؤْمِنِ سِتُّ خِصَالٍ: يَعُودُهُ إِذَا مَرِضَ، وَيَشْهَدُهُ إِذَا مَاتَ، وَيُجِيبُهُ إِذَا دَعَاهُ، وَيُسَلِّمُ عَلَيْهِ إِذَا لَقِيَهُ، وَيُشَمِّتُهُ إِذَا عَطَسَ، وَيَنْصَحُ لَهُ إِذَا غَابَ أَوْ شَهِدَ ‘একজন মুমিনের ওপর অপর মুমিনের ছয়টি হক রয়েছে। যথা- (১) যখন কোন মুমিনের রোগ-ব্যাধি হয়, তখন তার সেবা-শুশ্রূষা করা, (২) কেউ মৃত্যুবরণ করলে, তার জানাযা ও দাফন-কাফনে উপস্থিত হওয়া, (৩) কেউ দাওয়াত করলে তা গ্রহণ করা অথবা কারো ডাকে সাড়া দেয়া, (৪) সাক্ষাৎ হ’লে সালাম প্রদান করা, (৫) হাঁচি দিলে জবাব দেয়া এবং (৬) উপস্থিত-অনুপস্থিত সকল অবস্থায় মুমিনের কল্যাণ কামনা করা’।[23]

সালাম প্রদানের ভাষা হ’ল, اَلسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ ‘আসসালা-মু আলায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লা-হ’ (আপনার বা আপনাদের উপর শান্তি ও আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ষিত হৌক)’। জবাবে বলবে, وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ ‘ওয়া আলাইকুমুস সালা-মু ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহূ’

(আপনার বা আপনাদের উপরেও শান্তি এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া সমূহ বর্ষিত হৌক)। শুধু ‘আসসালা-মু আলায়কুম’ বললে ১০ নেকী, ‘ওয়া রাহমাতুল্লা-হ’ যোগ করলে ২০ নেকী এবং ‘ওয়া বারাকা-তুহূ’ যোগ করলে ৩০ নেকী পাবে।[24]

সুতরাং সালাম শুধু অভিবাদন নয়; বরং এর মাধ্যমে আমরা একজন অপরজনের জন্য দো‘আ করে থাকি এবং নেকী লাভ করে থাকি। যদি আমরা কাউকে সালাম দেই বা তার জন্য শান্তি বর্ষণের দো‘আ করি, তাহ’লে আমাদের জন্য দো‘আ করা তার উপরে ওয়াজিব করে দেই। কেননা সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। সুতরাং সালাম প্রদানের মাধ্যমেও আমরা অন্যের দো‘আয় শামিল হ’তে পারি।

অতএব আসুন! আলোচিত উপায়গুলো অবলম্বন করে আমরা অন্য মানুষের দো‘আয় শামিল হওয়ার চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!


আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ

এম. এ (অধ্যয়নরত) আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


[1]. মুসলিম হা/১৬৩১; আবূদাঊদ হা/২৮৮০; তিরমিযী হা/১৩৭৬; মিশকাত হা/২০৩।

[2]. মুসনাদে বায্যার হা/৭২৮৯; ছহীহুত তারগীব হা/৭৩, সনদ হাসান লিগাইরিহী।

[3]. আহমাদ হা/ ১০৬১০; মিশকাত হা/২৩৫৪, সনদ হাসান।

[4]. ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের, পৃ: ৩৪।

[5]. রাগেব ইসফাহানী, আয-যারি‘আহ ইলা মাকারিমিশ শারী‘আহ, পৃ: ১৭৮।

[6]. আবূদাঊদ হা/১৬৭২; নাসাঈ হা/২৫৬৭; মিশকাত হা/১৯৪৩, সনদ ছহীহ।

[7]. তিরমিযী হা/২০৩৫; ছহীহুল জামে’ হা/৬৩৬৮; মিশকাত হা/৩০২৪।

[8]. নাসাঈ, সুনানুল কুবরা হা/৯৯৩৮; ছহীহুত তারগীব হা/৯৭৭।

[9]. তুহফাতুল আহওয়াযী ৭/১৫৯; মির‘আতুল মাফাতীহ ৫/২০১২।

[10]. তাবারাণী, মু‘জামুল কাবীর হা/৩০৫০; ছহীহাহ হা/২২৯৪।

[11]. মুসলিম হা/২৭৩৩; আবূদাঊদ হা/২৮৯৫; ইবনু মাজাহ হা/৬২৫।

[12]. মুসলিম হা/২৫৪২।

[13]. তিরমিযী হা/১৯০৫; ইবনু মাজাহ হা/৩৭৬২; মিশকাত হা/২২৫০, সনদ হাসান।

[14]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৫৮২; ছহীহাহ হা/১২১১, সনদ হাসান।

[15]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৬৬১৯; ছহীহাহ হা/১৭৯৭, সনদ ছহীহ।

[16]. আহমাদ হা/১০৬১০; মিশকাত হা/২৩৫৪, সনদ হাসান।

[17]. ইবনু মাজাহ হা/২৮৯৩; শু‘আবুল ঈমান হা/৩৮১৩, সনদ হাসান।

[18]. বুখারী হা/৬২২৩; আবূদাঊদ হা/৫০২৮; তিরমিযী হা/২৭৪৭।

[19]. বুখারী হা/৬২২৪; মিশকাত হা/৯৭৩।

[20]. ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী ১০/৬১১; সুবুলুস সালাম ২/৬১৩।

[21]. ত্বাবারাণী, মুসনাদুশ শামিঈন হা/২১৫৫; ছহুীহুল জামে’ হা/৬০২৬, সনদ হাসান।

[22]. আত-তানওয়ীর শারহু জামি‘ইছ ছাগীর ১০/৯০।

[23]. নাসাঈ হা/১৯৩৮; তিরমিযী হা/২৭৩৭; মিশকাত হা/৪৬৩০, সনদ ছহীহ।

[24]. তিরমিযী হা/২৬৮৯; আবূদাঊদ হা/৫১৯৫, সনদ ছহীহ।






বিষয়সমূহ: দো‘আ
অল্পে তুষ্টি (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
দ্বীনের উপর অবিচলতা - আব্দুর রাক্বীব মাদানী, শিক্ষক, জামে‘আতুল ইমাম আল-বুখারী, কিষাণগঞ্জ, ভারত
ইসলামে প্রবীণদের মর্যাদা - মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও ফযীলত (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
দ্বীনের পথে ত্যাগ স্বীকার - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
আশূরায়ে মুহাররম - আত-তাহরীক ডেস্ক
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
শবেবরাত - আত-তাহরীক ডেস্ক
ইসলামী ভ্রাতৃত্বের আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
কুরআন ও সুন্নাহর বিশ্বজনীন আদর্শ প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজের ভূমিকা - শেখ ইমরান ইবনু মুয্যাম্মিল
মানবাধিকার ও ইসলাম (১৩তম কিস্তি) - শামসুল আলম
আরও
আরও
.