ভূমিকা :

মানব জীবনে ইবাদতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কেননা আল্লাহ মানুষকে তাঁর ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে ইহকালীন জীবন যেমন সুন্দর ও সুচারুরূপে পরিচালিত হয়, পরকালীন জীবন তেমনি মঙ্গলময় হয়। আবার ইবাদত না করলে যেমন আল্লাহর নাফরমানী হয়, তেমনি রাসূল (ছাঃ)-এর বিরোধিতা হয়। সেই সাথে পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণের উদ্দেশ্য অপূর্ণ রয়ে যায়। তাই মানব জীবনে ইবাদত একটি যরূরী বিষয়। নিম্নে ইবাদত সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল।

ইবাদত অর্থ :

ইবাদত (العبادة) আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ: অনুগত হওয়া, নত হওয়া, বিনম্র হওয়া, আনুগত্য করা ইত্যাদি। আবার কেউ বলেন, ইবাদতের আসল অর্থ হচ্ছে আনুগত্য করা।[1] ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,والعبادة أصل معناه الذل، ‘ইবাদতের আসল অর্থ বিনয়’।[2] আবার বলা হয়, كل خضوع ليس فوقه خضوع فهو عبادة، ‘প্রত্যেক ঐ বিনয় যার উপরে কোন বিনয় নেই তাকে ইবাদত বলে’।[3] কেউ বলেন, هي الطاعة مع غاية الخضوع، ‘ইবাদত হচ্ছে চূড়ান্ত বিনয়ের সাথে আনুগত্য’।[4] ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, العبادة هي الطاعة مع خضوع، ‘ইবাদত হচ্ছে বিনয়ের সাথে আনুগত্য’।[5]

পারিভাষিক অর্থ :

মনীষীগণ ইবাদতের ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। যেমন-

১. শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) স্বীয় ‘আল-উবূদিয়াহ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন,الْعِبَادَةُ هِيَ اسْمٌ جَامِعٌ لِكُلِّ مَا يُحِبُّهُ اللهُ وَيَرْضَاهُ مِنْ الْأَقْوَالِ وَالْأَعْمَالِ الْبَاطِنَةِ وَالظَّاهِرَةِ، ‘ইবাদত হ’ল এক ব্যাপক অর্থবোধক বিশেষ্য, যাতে আল্লাহর পসন্দ ও সন্তুষ্টি অর্জিত হয় এমন সব প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কথা ও কাজ’।[6]

২. হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, الْعِبَادَةُ فِي اللُّغَةِ مِنَ الذِّلَّةِ، ... وَفِي الشَّرْعِ: عِبَارَةٌ عَمَّا يَجْمَعُ كَمَالَ الْمَحَبَّةِ وَالْخُضُوعِ وَالْخَوْفِ. ‘ইবাদতের শাব্দিক অর্থ হ’ল নীচতা-হীনতা। আর পারিভাষিক অর্থে ইবাদত বলা হয় পরিপূর্ণ ভালবাসা, বিনয় ও ভীতির সমষ্টিকে’।[7]

৩. ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন,وَالْعِبَادَةُ عِبَارَةٌ عَنْ تَوْحِيدِهِ وَالْتِزَامِ شَرَائِعِ دِينِهِ. وَأَصْلُ الْعِبَادَةِ الْخُضُوعُ وَالتَّذَلُّلُ، ‘ইবাদত হ’ল আল্লাহর একত্বের ঘোষণা দেওয়া এবং তাঁর দ্বীনের বিধান সমূহের অনুসরণ করা। আর ইবাদতের মূল হ’ল নম্রতা ও নিজেকে হীন করে প্রকাশ করা’।[8]

৪. শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন,العبادة هي توحيده وطاعته مع تعظيم أوامره ونواهيه، ‘ইবাদত হচ্ছে আল্লাহর একত্ব প্রকাশ করা এবং তাঁর আদেশ ও নিষেধের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করা’।[9] তিনি আরো বলেন,العبادة هي الخضوع لله والذل لله بطاعة أوامره وترك نواهيه سبحانه وتعالى، ‘ইবাদত হচ্ছে আল্লাহর জন্য বিনয় ও হীনতা প্রকাশ করা, তাঁর আদেশের প্রতি আনুগত্য করা ও তাঁর নিষিদ্ধ বিষয় পরিহার করার মাধ্যমে’।[10] মোটকথা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ প্রতিপালনের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করাই ইবাদত।

পবিত্র কুরআনে ইবাদত :

কুরআনে দুইটি অর্থে ইবাদত শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যথা-

১. العبودية العامة (সাধারণ ইবাদত) : অর্থাৎ আললাহর রাজত্ব ও বড়ত্বের দাসত্ব। যেমন আল্লাহ বলেন,إِنْ كُلُّ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آَتِي الرَّحْمَنِ عَبْدًا، ‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকটে উপস্থিত হবে না দাস রূপে’ (মারিয়াম ১৯/৯৩)

এ আয়াতের আলোকে সৃষ্টিজগতের সৎকর্মশীল-পাপী, মুমিন-কাফের সকলেই আল্ল­াহর দাস। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়, তারা অনেক ক্ষেত্রে আল্লাহর দাসত্ব করে। তবে তাদের মধ্যে অধিকাংশ হবে মুশরিক। যেমন আল্লাহ বলেন,وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ، ‘তাদের অধিকাংশ আল্লাহকে বিশ্বাস করে। অথচ তারা শিরক করে’ (ইউসুফ ১২/১০৬)। আল্লাহ আরো বলেন,وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِيْنَ، ‘তুমি যতই চাও না কেন অধিকাংশ লোকতো বিশ্বাসী নয়’ (ইউসুফ ১২/১০৩)

২. العبودية الخاصة (বিশেষ ইবাদত) : ইচ্ছাধীন আনুগত্য ও মুহাববত। যে ইবাদত মানুষ নিজের ইচ্ছায় সম্পাদন করে। যেমন আল্লাহ বলেন,وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِيْنَ يَمْشُوْنَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوْا سَلَامًا، ‘রহমান’ (দয়াময়)-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ লোকেরা (বাজে) সম্বোধন করে, তখন তারা বলে ‘সালাম’ (ফুরক্বান ২৫/৬৩)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,فَبَشِّرْ عِبَادِ الَّذِيْنَ يَسْتَمِعُوْنَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُوْنَ أَحْسَنَهُ، ‘অতএব সুসংবাদ দাও আমার বান্দাদেরকে। যারা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনে, অতঃপর তার মধ্যে যেটা উত্তম সেটার অনুসরণ করে’ (যুমার ৩৯/১৭-১৮)। এ প্রকার ইবাদতে কেবল মুমিনগণ অন্তর্ভুক্ত। কোন কাফির এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।

সাধারণ ইবাদত ও বিশেষ ইবাদতের মধ্যে পার্থক্য :

১. ইবাদতে আম্মাহ বা সাধারণ ইবাদতের মাঝে সকল সৃষ্টি অর্ন্তভুক্ত। সুতরাং মুমিনগণও কাফিরদের সাথে সাধারণ ইবাদতে অর্ন্তভুক্ত। আর ইবাদতে খাচ্ছাহ বা বিশেষ ইবাদতে শুধু মুমিনগণ অর্ন্তভুক্ত। ইবাদতে খাচ্ছাহর ক্ষেত্রে মুমিনগণ কাফিরদের থেকে আলাদা।

২. সাধারণ ইবাদতে সকলেই অর্ন্তভুক্ত। কেউই তার বাইরে নয়। আর ইবাদতে খাচ্ছাহ ইচ্ছাধীন ও স্বাধীন।

৩. ক্বিয়ামতে শাস্তি ও পুরষ্কার হবে ইবাদতে খাচ্ছাহর উপর ভিত্তি করে। কারণ ইবাদতের মধ্যে এটাই হচ্ছে উদ্দেশ্য। আর সাধারণ ইবাদত কাউকে ঈমানের মধ্যে প্রবেশ করাতে পারে না। আবার কাউকে কুফরী থেকেও বের করতে পারে না।

হাদীছে নববীতে ইবাদত :

হাদীছে ইবাদতের বিষয়টি বিভিন্নভাবে উল্লেখিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি হাদীছ উল্লেখ করা হ’ল।-

  1. عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ (قَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِى أَسْتَجِبْ لَكُمْ).

১. নো‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘দো‘আও একটি ইবাদত। তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব’ (মুমিন ৪০/৬০)[11] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, أفضل العبادة الدعاء ‘উত্তম ইবাদত হচ্ছে দো‘আ’।[12]

  1. عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ صلى الله عليه وسلم الْعِبَادَةُ فِى الْهَرْجِ كَهِجْرَةٍ إِلَىَّ.

২. মা‘কিল ইবনে ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কলহ ও বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বিরাজমান কালে ইবাদতে লিপ্ত থাকা আমার কাছে হিজরত করে চলে আসার সমতুল্য’।[13]

  1. عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِى قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا كَانَ عَلَى طَرِيقَةٍ حَسَنَةٍ مِنَ الْعِبَادَةِ ثُمَّ مَرِضَ قِيلَ لِلْمَلَكِ الْمُوَكَّلِ بِهِ اكْتُبْ لَهُ مِثْلَ عَمَلِهِ إِذَا كَانَ طَلِيقاً حَتَّى أُطْلِقَهُ أَوْ أَكْفِتَهُ إِلَىَّ.

৩. আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘বান্দা যখন ইবাদতের কোন সুন্দর নিয়ম-পদ্ধতি পালন করে এবং তারপর যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে (ইবাদতের ধারা বন্ধ হয়ে যায়), তখন তার আমলনামা লিখার জন্য নিযুক্ত ফেরেশতাকে বলা হয়, এ বান্দা সুস্থ অবস্থায় যে আমল করত (অসুস্থ অবস্থাও) তার আমলনামায় তা লিখতে থাকো। যে পর্যন্ত না তাকে মুক্ত করে দিই অথবা তাকে আমার কাছে ডেকে আনি’।[14] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, خُذُوْا مِنَ الْعِبَادَة مَا تُطِيْقُوْنَ، ‘তোমরা সাধ্যমত ইবাদত কর’।[15]

  1. عَنْ حُذَيْفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : فَضْلُ الْعِلْمِ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ فَضْلِ الْعِبَادَةِ، وَخَيْرُ دِينِكِمُ الْوَرَعُ.

৪. হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমার নিকটে ইবাদতের ফযীলত অপেক্ষা ইলম অর্জনের ফযীলত অধিক পসন্দনীয়। আর তোমাদের উত্তম দ্বীন হচ্ছে আল্লাহভীতি’।[16]

ইবাদতের ভিত্তি :

ইবাদতের মধ্যে আসল হচ্ছে আনুগত্য। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর কিতাব এবং তাঁর রাসূলের সুন্নাতে যে বিষয় প্রমাণিত নয় তাকে ইবাদত ভাবা কোন মাখলূকের জন্য বৈধ নয়। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا، فَهْوَ رَدٌّ، ‘যে ব্যক্তি কোন কাজ করল অথচ ঐ কাজে আমার কোন অনুমোদন নেই, তা প্রত্যাখাত’।[17] অন্য বর্ণনায় এসেছে, নবী করীম (ছাঃ) বলেন,مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ، ‘যে ব্যক্তি আমার এ শরী‘আতে কোন নতুন আবিষ্কার করল, যা শরী‘আতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[18]

রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশনা বহির্ভূত কোন ইবাদত কবুল হয় না। সে ইবাদত যত ভাল আর বড়ই হোক না কেন। একটি হাদীছে এসেছে,

جَاءَ ثَلاَثَةُ رَهْطٍ إِلَى بُيُوتِ أَزْوَاجِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُونَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أُخْبِرُوا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوهَا فَقَالُوا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِىِّ صـ قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ. قَالَ أَحَدُهُمْ أَمَّا أَنَا فَإِنِّى أُصَلِّى اللَّيْلَ أَبَدًا. وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُومُ الدَّهْرَ وَلاَ أُفْطِرُ. وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلاَ أَتَزَوَّجُ أَبَدًا. فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَنْتُمُ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللهِ إِنِّى لأَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ، لَكِنِّى أَصُومُ وَأُفْطِرُ، وَأُصَلِّى وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِى فَلَيْسَ مِنِّى.

‘তিনজনের একটি দল নবী করীম (ছাঃ)-এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী করীম (ছাঃ)-এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হ’ল, তখন তার ইবাদতের পরিমাণ কম মনে করল এবং বলল, নবী করীম (ছাঃ)-এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হ’তে পারে না। কারণ তাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা রাত ছালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সব সময় ছিয়াম পালন করব এবং কখনও বাদ দিব না।অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। এরপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের নিকট আসলেন এবং বললেন, তোমরা কি ঐসব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশী অনুগত; অথচ আমি ছাওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। ছালাত আদায় করি ও নিদ্রা যাই এবং মেয়েদেরকে বিয়েও করেছি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়’।[19]

ব্যাপক অর্থে ইবাদত :

মানব সৃষ্টির তাৎপর্য হচ্ছে, আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহ ভীতি অর্জন করা। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায়, বছরের নির্দিষ্ট দিনে ছিয়াম পালন, জান-মাল পবিত্র করার জন্য সম্পদের যাকাত প্রদান, জীবনে একবার হজ্জ পালনের মধ্যে ইবাদতকে সীমাবদ্ধ করা ঠিক নয়। এগুলো অবশ্যই বড় ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এ কথা সত্য, উল্লে­খিত ইবাদতগুলো পালনে একজন মানুষের জীবনের খুব কম সময়ই ব্যয় হয়। কোন বিবেক সম্পন্ন মানুষ কি এটা মেনে নিবে যে, সে তার জীবনের অধিকাংশ সময় আল্ল­াহর ইবাদত ছাড়াই অতিবাহিত করবে? অথচ সে জানে যে, আল্লাহ তাকে ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন।

অনেক মানুষ এমন আছেন যারা ইবাদতকে ইসলামের আনুষ্ঠানিক কতিপয় কাজ মনে করে, শুধুমাত্র আল্ল­াহর সাথে বান্দার সম্পর্কের বিষয় বলে ধারণা করে, জীবনের সকল ক্ষেত্রে এর প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করে। এরূপ দাবী যারা করেন কুরআনুল কারীম তাদের এ দৃষ্টিভংগিকে বাতিল বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। আল্লাহ বলেন,وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ، ‘আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি, যেটি এমন যে, তাতে প্রত্যেক বস্ত্তর সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে’ (নাহল ১৬/৮৯)। এমনিভাবে আল্ল­াহর নবীর জন্য যে দিক নির্দেশনা আল্লাহ দিয়েছেন, সেখানে ইবাদতে ব্যাপকতাকে আল্লাহ পরিষ্কার করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ، ‘তুমি বল, আমার ছালাত, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই, আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি, আর আত্মসমর্পণ কারীদের মধ্যে আমি হ’লাম প্রথম’ (আন‘আম ৬/১৬২-১৬৩)

বিদ্বানগণ যুগে যুগে ইসলামী শরী‘আতে যে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাতেও প্রমাণিত হয় যে ইবাদত সীমিত গন্ডির কোন বিষয় অথবা আনুষ্ঠানিক বস্ত্ত নয়। প্রখ্যাত ছাহাবী আবু যর আল-গিফারী (রাঃ) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, রাসূল (ছাঃ) সকল বিষয় আমাদেরকে শিক্ষা দান করেছেন। এমনকি আকাশে উড়ন্ত পাখীর দু’টি ডানা কিভাবে নড়াচড়া করে তার গুঢ় রহস্য কি, তাও আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন।[20]

ইবাদতের ব্যাপকতা জীবনের সকল ক্ষেত্রে বিস্তৃত। জনৈক ব্যক্তি সালমান ফারসী (রাঃ)-কে বললেন, তোমাদেরকে তোমাদের নবী সব বিষয়ে জ্ঞান দিয়েছেন। এমনকি কিভাবে পেশাব-পায়খানা করবে তাও। সালমান (রাঃ) জবাব দিলেন, হ্যাঁ, নবী করীম (ছাঃ) আমাদের নিষেধ করেছেন কিবলামুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা করতে, তিনটির কম ঢিলা ব্যবহার করতে, ডান হাত দিয়ে ইস্তেঞ্জা করতে ও হাড্ডি অথবা শুকনা গোবর দিয়ে ইস্তেঞ্জা করতে।[21]

ইবাদতের প্রকার :

উপকার লাভের দিক থেকে ইবাদত দুই প্রকার। যথা-

১. ব্যক্তি সরাসরি আমলের উপকার লাভ করে। যেমন ছালাত আদায় করা, কুরআন তেলাওয়াত করা ও যিকর করা ইত্যাদি।

২. ব্যক্তি অন্যের মাধ্যমে বা সহায়তায় আমলের উপকার লাভ করে। যেমন যাকাত ও দান-ছাদাকাহ। যাকাত দাতা বা দানকারী স্বীয় সম্পদের অংশ বের করে। অতঃপর হকদার বা দরিদ্রকে দান করে। যেমন হাদীছে এসেছে,السَّاعِى عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالْمِسْكِينِ كَالْمُجَاهِدِ فِى سَبِيلِ اللهِ، أَوِ الْقَائِمِ اللَّيْلَ الصَّائِمِ النَّهَارَ، ‘বিধবা ও মিসকীন-এর জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মত অথবা রাতে ছালাতে দন্ডায়মান ও দিনে ছিয়ামকারীর মত’।[22] আরেকটি হাদীছে এসেছে,أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِى الْجَنَّةِ كَهَاتَيْنِ. وَأَشَارَ بِأُصْبُعَيْهِ يَعْنِى السَّبَّابَةَ وَالْوُسْطَى. ‘আমি ও ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী এই দুই আঙগুলের অনুরূপ একসাথে জান্নাতে বসবাস করব। এই কথা বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙগুল দিয়ে ইশারা করে দেখান’।[23] এ হাদীছদ্বয় দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, দাতা বিধবা ও ইয়াতীমের সহায়তার মাধ্যমে ছওয়াব লাভ করবে। অনুরূপভাবে যাকাত দাতা যাকাত বের করে দরিদ্রদের প্রদান করার মাধ্যমে প্রতিদান পাবে।

গুরুত্ব ও অবস্থান বিবেচনায় ইবাদতকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. সার্বজনীন বা বিশ্বজনীন ও ২. শারঈ ইবাদত।

১. সার্বজনীন বা বিশ্বজনীন ইবাদত :

এটা হ’ল পার্থিব জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্য করা। এর মাঝে সৃষ্টির সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। যেমন আল্লাহ বলেন,إِنْ كُلُّ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَنِ عَبْدًا، ‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকটে উপস্থিত হবে না দাস রূপে’ (মারিয়াম ১৯/৯৩)। এ প্রকার ইবাদতের মধ্যে মুমিন ও কাফের সবাই শামিল। যেমন আল্লাহ বলেন,تُسَبِّحُ لَهُ السَّمَاوَاتُ السَّبْعُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيهِنَّ وَإِنْ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا يُسَبِّحُ بِحَمْدِهِ وَلَكِنْ لَا تَفْقَهُونَ تَسْبِيحَهُمْ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا، ‘সাত আসমান ও যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সবকিছু তাঁরই পবিত্রতা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নেই যা তাঁর প্রশংসাসহ মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু তাদের পবিত্রতা বর্ণনা তোমরা বুঝতে পারো না। নিশ্চয়ই তিনি অতীব সহনশীল ও ক্ষমাপরায়ণ’ (বনু ইসরাঈল ১৭/৪৪)

২. শারঈ ইবাদত :

শারঈ ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ-নিষেধের আনুগত্য করা। এই ইবাদত তাদের জন্য খাছ যারা আল্লাহর আনুগত্য করে এবং রাসূল (ছাঃ) যা নিয়ে এসেছেন তার আনুগত্য করে বা তা মেনে নেয়। যেমন আল্লাহ বলেন,وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِيْنَ يَمْشُوْنَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُوْنَ قَالُوْا سَلَامًا، ‘রহমান’ (দয়াময়)-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ লোকেরা (বাজে) সম্বোধন করে, তখন তারা বলে ‘সালাম’ (ফুরক্বান ২৫/৬৩)

প্রতিপালনের মাধ্যম ও পন্থার ভিত্তিতে ইবাদত পাঁচ প্রকার। যথা-

১. আত্মিক ইবাদত :

যে সকল ইবাদত অন্তর দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে আত্মিক বা অন্তরের ইবাদত বলে। এই ইবাদত অন্য সকল ইবাদতের মূল। এতে ত্রুটি হ’লে শিরকে আকবার বা শিরকে আছগার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আত্মিক ইবাদতের মধ্যে বড় এবং মূল ইবাদত হচ্ছে আক্বীদাহ বা এই বিশ্বাস করা যে, আল্লাহই এই জগতের প্রতিপালক। রাজত্ব তাঁর জন্য, সৃষ্টি তাঁর জন্য, কর্তৃত্ব তাঁর জন্য এবং এই বিশ্বাস করা যে, আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী রয়েছে। যে গুণাবলী সেŠন্দর্যের, পরিপূর্ণতার ও কর্তৃত্বের। আর এই বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ একক। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনিই একমাত্র ইবাদত পাবার যোগ্য, তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদত পাবার যোগ্য নয়। আত্মিক ইবাদতের মধ্যে আরো রয়েছে ইখলাছ, মুহাববত, ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্ক্ষা, তাওয়াক্কুল (ভরসা), সাহায্য প্রার্থনা ও আশ্রয় চাওয়া ইত্যাদি। উল্লেখ্য, কোন আত্মিক ইবাদতই আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য করা বৈধ নয়। সেটা প্রেরিত নবী-রাসূল, সম্মানিত ফেরেশতা, আল্লাহর অলী, পাথর, গাছ, সূর্য্য-চন্দ্র, নেতা, কোন সংবিধান, দল, বা অন্য যে কোন কিছুর জন্য হোকনা কেন।

২. মৌখিক ইবাদত :

মৌখিক ইবাদত হ’ল মুখ ও জিহবা দ্বারা সম্পাদিত ইবাদত। অর্থাৎ যা কথা ও শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমে আদায় হয়ে থাকে। এই মৌখিক ইবাদতের মধ্যে বড় ইবাদত হচ্ছে কালেমা উচ্চারণের মাধ্যমে ঈমানের স্বীকৃতি ও তাওহীদের ঘোষণা দেওয়া। যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করে অথচ কোন বাধা না থাকা সত্ত্বেও তাওহীদী কালেমা উচ্চারণ করে না, সে মুসলমান নয় এবং মৌখিক স্বীকৃতীবিহীন ইসলাম তার জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দিবে না। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন,

أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، وَيُقِيمُوا الصَّلاَةَ، وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ، فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّى دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّ الإِسْلاَمِ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللهِ

‘আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ করতে নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল, আর ছালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হ’তে তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করল। অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহ’লে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর অর্পিত’।[24]

যারা এই কালেমা উচ্চারণ করল তবে অন্তরে বিশ্বাস করল না, যেমন মুনাফিক। এ কালেমার উচ্চারণ তার প্রাণ ও সম্পদের নিরাপত্তা দিবে। কিন্তু তার চূড়ান্ত ফায়ছালা আল্লাহর হাতে। মৌখিক ইবাদতের মধ্যে যিকির, দো‘আ, তাসবীহ-তাহলীল, কুরআন শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেওয়া, কুরআন তেলাওয়াত করা, তওবা-ইস্তেগফার করা, সত্য কথা বলা ও সত্যের উপদেশ দেওয়া এবং আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়া ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

৩. দৈহিক ইবাদত :

যে সকল ইবাদত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে সম্পাদিত হয় তাকে দৈহিক বা শারীরিক ইবাদত বলে। যেমন ছালাত, ছিয়াম, তাওয়াফ ও সাঈ, পিতা-মাতার খেদমত করা, সন্তান প্রতিপালন করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, মৃতের কাফন-দাফন ও জানাযায় শরীক হওয়া, উপার্জনের জন্য শারীরিক পরিশ্রম করা ইত্যাদি।

৪. আর্থিক ইবাদত :

যে সকল ইবাদত অর্থ-সম্পদের মাধ্যমে আদায় হয়, সেগুলোকে আর্থিক ইবাদত বলে। যেমন যাকাত, ওশর, ছাদাক্বাতুল ফিৎর আদায়, আল্লাহর পথে দান, করযে হাসানাহ প্রদান, স্ত্রী-সন্তানের ভরণ-পোষণের জন্য ব্যয়, অতিথি আপ্যায়ন, বিধবা-ইয়াতীম ও দুস্থ-অসহায়দের সাহায্য করা ইত্যাদি।

৫. আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত :

যে সকল ইবাদত দৈহিক শ্রম ও সম্পদ ব্যয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যেমন হজ্জ ও ওমরাহ পালন করা এবং আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য অর্থ ব্যয় করা ইত্যাদি।  [ক্রমশঃ]


[1]. ইউসুফ আল-কারযাভী, আল-ইবাদাহ ফিল ইসলাম, (কায়রো : মাকতাবাতু ওয়াহবাহ, ১৪শ প্রকাশ, ১৪১৬হিঃ/১৯৯৫ খ্রিঃ), পৃঃ ২৮।

[2]. শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ, আল-উবূদিয়াহ (জিদ্দাহ ; মাকতাবুল ইলম, ২য় প্রকাশ, ১৪১৬হিঃ/১৯৯৫খ্রিঃ), পৃঃ ৩৩।

[3]. আল-ইবাদাহ ফিল ইসলাম, পৃঃ ২৮।

[4]. ঐ, পৃঃ ৩০; মির‘আত ৮/৩১৯৮।

[5]. মির‘আত ১/৬১ পৃঃ।

[6]. আল-উবূদিয়াহ, পৃঃ ২৩।

[7]. ইবনে কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ১/১৩৪ পৃঃ।

[8]. ইমাম কুরতুবী, আল-জামে‘ লি আহকামিল কুরআন, ১/২৫৫ পৃঃ।

[9]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায, ১/৩২৪, ২৭/৫৯।

[10]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায, ৭/৮৭।

[11]. বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৭১৪; আবূদাঊদ হা/১৪৭৯; তিরমিযী হা/২০৬৯, ‘তাফসীর’ অধ্যায়; ইবনু মাজাহ হা/৩৮২৮ ‘দো‘আ’ অধ্যায়, ‘দো‘আর ফযীলত’ অনুচ্ছেদ।

[12]. ছহীহাহ হা/১৫৭৯; ছহীহুল জামে‘ হা/১১২।

[13]. মুসলিম হা/২৯৪৮; তিরমিযী হা/২২০১; ইবনু মাজাহ হা/৩৯৮৫।

[14]. আহমাদ হা/৬৮৯৫; মিশকাত হা/১৫৫৯; ছহীহুত তারগীব হা/৩৪২১।

[15]. ছহীহুল জামে‘ হা/৩২১৭।

[16]. হাকেম হা/৩১৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৪২১৪; ছহীহুত তারগীব হা/৬৮।

[17]. বুখারী হা/২৪৯৯।

[18]. বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০।

[19]. বুখারী হা/৫০৬৩; মুসলিম হা/১৪০১; মিশকাত হা/১৪৫।

[20]. তাবারানী, মু‘জামুল কাবীর হা/১৬৪৭; ছহীহাহ হা/১৮০৩।

[21]. মুসলিম হা/২৬২; আবূ দাঊদ হা/৭; মিশকাত হা/৩৭০।

[22]. বুখারী হা/৫৩৫৩; মুসলিম হা/২৯৮২; মিশকাত হা/৪৯৫১।

[23]. বুখারী হা/৬০০৫; তিরমিযী হা/১৯১৮; ছহীহাহ হা/৮০০।

[24]. বুখারী হা/২৫; মুসলিম হা/২২; মিশকাত হা/১৭৯০।






বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সম্পর্কে কটূক্তিকারী নাস্তিকদের শারঈ বিধান - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
দ্বীনের পথে ত্যাগ স্বীকার (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
মানবাধিকার ও ইসলাম (৮ম কিস্তি) - শামসুল আলম
হকিং তত্ত্ব ও শাশ্বত সত্য - মুহাম্মাদ আব্দুল মান্নান, সহকারী শিক্ষক, রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ
জালূলার যুদ্ধ ও হুলওয়ান বিজয় - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আল্লাহর সতর্কবাণী - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
বিদায়ের আগে রেখে যাও কিছু পদচিহ্ন (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
শয়তানের চক্রান্ত থেকে আত্মরক্ষার উপায় (১ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম
সুন্নাত উপেক্ষার পরিণাম - লিলবর আল-বারাদী - যশপুর, তানোর, রাজশাহী
আদর্শ সমাজ গঠনে সালামের ভূমিকা - মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম
মোবাইল ব্যবহারের আদব ও সতর্কতা - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
নববী চিকিৎসা পদ্ধতি - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
আরও
আরও
.