উত্তর : প্রশ্নে বর্ণিত হাদীছ দু’টি সহ ‘রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন’ না করার পক্ষে যে সকল দলীল পেশ করা হয়, তার সবগুলিই যঈফ। প্রশ্নে বর্ণিত ১ম হাদীছটি ইমাম আবুদাঊদ বর্ণনা করে বলেন, هَذَا مُخْتَصَرٌ مِنْ حَدِيثٍ طَوِيلٍ وَلَيْسَ هُوَ بِصَحِيحٍ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ ‘এটা লম্বা হাদীছের সংক্ষিপ্ত রূপ। আর এই শব্দে এটি ছহীহ নয়’ (আবুদাঊদ হা/৭৪৮)। উল্লেখ্য যে, উপমহাদেশের ছাপা আবুদাঊদে হাদীছের শেষে ইমাম আবুদাঊদের উক্ত মন্তব্যটি নেই। কিন্তু অন্যান্য ছাপা আবুদাঊদে তা রয়েছে। এদেশে ছাপা আবুদাঊদ থেকে উক্ত মন্তব্য তুলে দেওয়ার রহস্য অজ্ঞাত।

দ্বিতীয় হাদীছটি সম্পর্কে তিনি বলেন,  هَذَا الْحَدِيثُ لَيْسَ بِصَحِيحٍ ‘এই হাদীছ ছহীহ নয়’ (আবুদাঊদ হা/৭৫২)। তাছাড়া বারা ইবনু আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত অন্য আরেকটি বর্ণনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অতঃপর তিনি আর হাত উঠাননি’ অংশটুকু অন্য সনদে তিনি বলেননি। সুফিয়ান বলেন, আমাদেরকে অনেক পরে কূফাতে ‘অতঃপর তিনি আর হাত উঠাননি’ অংশটুকু বলা হয়েছে। ইমাম আবুদাঊদ আরো বলেন, ইয়াযীদ থেকে হাদীছটি হুশাইম, খালেদ, ইবনু ইদরীসও বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তারা ‘অতঃপর তিনি আর হাত উঠাননি’ অংশটুকু বলেননি’ (আবুদাঊদ হা/৭৫০)। এভাবে ইমাম আবুদাঊদ (২০২-২৭৫) রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন না করার হাদীছ সমূহকে নাকচ করে দিয়েছেন।

ইবনু হিববান বলেন, ‘রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন’ না করার পক্ষে  কুফাবাসীদের এটিই সবচেয়ে বড় দলীল হ’লেও এটিই সবচেয়ে দুর্বলতম দলীল, যার উপরে নির্ভর করা হয়েছে। কেননা এর মধ্যে এমন সব বিষয় রয়েছে যা একে বাতিল বলে গণ্য করে (নায়লুল আওত্বার ৩/১৪ পৃঃ, ফিকহুস সুন্নাহ ১/১০৮)

ইমাম তিরমিযী (মৃঃ ২৭৯হিঃ) ১ম হাদীছটিকে সনদের দিক থেকে ‘হাসান’ বললেও তার আগের হাদীছে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারকের বক্তব্য তুলে ধরেছেন, لم يثبت حديث ابن مسعود ‘ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর হাদীছ প্রমাণিত হয়নি’ (তিরমিযী হা/২৫৫-এর আলোচনা)। আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীছটিকে ছহীহ মেনে নিলেও তা ‘রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন’-এর পক্ষে বর্ণিত ছহীহ হাদীছ সমূহের বিপরীতে পেশ করা যাবে না। কেননা এটি না বোধক এবং ঐগুলি হ্যাঁ বোধক। ইলমে হাদীছের মূলনীতি অনুযায়ী হ্যাঁ-বোধক হাদীছ না-বোধক হাদীছের উপর অগ্রাধিকার পাবে।

পক্ষান্তরে রাফ‘ঊল ইয়াদায়নের পক্ষে বহু ছহীহ হাদীছ রয়েছে। যেমন ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাতের শুরুতে, রুকূতে যাওয়াকালীন ও রুকূ হ’তে উঠাকালীন সময়ে... এবং তৃতীয় রাক‘আতে দাঁড়ানোর সময় রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন করতেন’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বুখারী, মিশকাত হা/৭৯৩-৯৪)

‘রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন’ করা সম্পর্কে চার খলীফা সহ প্রায় ২৫ জন ছাহাবী থেকে বর্ণিত ছহীহ হাদীছ সমূহ রয়েছে। একটি হিসাব মতে ‘রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন’-এর হাদীছের রাবী সংখ্যা আশারায়ে মুবাশশারাহ সহ অন্যূন ৫০ জন ছাহাবী (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৭ পৃঃ) এবং সর্বমোট ছহীহ হাদীছ ও আছারের সংখ্যা অন্যূন চারশত (মাজদুদ্দীন ফীরোযাবাদী, সিফরুস সা‘আদাত ১৫ পৃঃ; বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), পৃঃ ৯২-৯৬)






বিষয়সমূহ: ছালাত
প্রশ্ন (১৪/৯৪) : সুস্থ ব্যক্তির পক্ষ থেকে ওমরাহ পালন করা যাবে কি? - -ওমর ফারূক, গোমস্তাপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (১৭/৩৩৭) : বিভিন্ন বিদ‘আতী দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেগুলিতে অংশগ্রহণ করা যাবে কি?
প্রশ্ন (২১/২৬১) : আমার ভাই আমার কাছে কিছু টাকা আমানত হিসাবে জমা রেখেছে। আমি ঐ টাকা কোন হালাল ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করলে তা আমানতের খেয়ানত হবে কি?
প্রশ্ন (৩৭/৭৭) : পৃথিবীর সকল মানুষ কি ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে? দলীল সহ জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (৬/৬) : সফরে ৩ জনে মিলে কুরবানী করলে গোশত কি ৩ ভাগ না ৭ ভাগ করতে হবে? - -শারাফাত, ঢাকা।
প্রশ্ন (৩৩/৩৩) : মাজমাউয যাওয়ায়েদ, কানযুল উম্মাল ও মুসনাদে বায্যার গ্রন্থ তিনটির লেখক ও কিতাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। - -শু‘আইব, হরতকিতলা, নীলফামারী।
প্রশ্ন (৩৭/১৫৭) : থার্টিফার্স্ট নাইট, ভালোবাসা দিবস, নববর্ষ ইত্যাদি পালন করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৪০/৪৮০) : তিরমিযী হা/২৫৭-এর ব্যাখ্যা জানতে চাই। - -রূহুল আমীন, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।
প্রশ্ন (৬/৪৬) : আমার স্বামী স্বেচ্ছায় আমার নামে কিছু জমি লিখে দিয়েছিল। এখন তার নিজ নামে নির্মিতব্য একটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় নির্বাহের জন্য উক্ত জমিটি আমার নিকট থেকে ফেরত নিয়ে বিক্রি করতে চাচ্ছে। এভাবে ফেরত নেওয়া কি তার জন্য ঠিক হবে? আর আমি যদি না দেই সেক্ষেত্রে আমি গোনাহগার হব কি? - -নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা।
প্রশ্ন (১৫/২১৫) : জনৈক আলেম দো‘আয় ‘আল্লাহুম্মা আমীন’-এর পরিবর্তে কেবল আমীন বলার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। তার দাবী ইহূদী খৃষ্টানরা যেমন ইমামের পিছনে মুক্তাদীর সূরা ফাতিহা না পড়ার জন্য চক্রান্ত করেছে, ঠিক তেমনি ‘আমীন’ না বলে ‘আল্লাহুম্মা আমীন’ বলা তাদেরই চক্রান্তের অংশ। এটি তারাই চালু করেছে। আলেমের উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
প্রশ্ন (২৫/১৪৫): আমার সন্তান নিঃসন্তান বড় ভাইয়ের নিকটে পালক সন্তান হিসাবে লালিত পালিত হওয়ায় সে তাদেরকেই পিতা-মাতা এবং আমাদেরকে কাকু-বৌমা বলে ডাকে। উল্লেখ্য যে, সে ১০ দিন ভাইয়ের স্ত্রীর দুধ পান করেছিল। এক্ষণে পিতা-মাতাকে অন্য নামে ডাকা যাবে কি?
প্রশ্ন (২৫/৪৬৫) : অবাধ্য স্ত্রীর ছালাত কবুল হবে কি?
আরও
আরও
.