যেলা সম্মেলন

হে মানুষ! তোমরা নিজেদেরকে ও নিজেদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

সিরাজগঞ্জ, ২৩ নভেম্বর শুক্রবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ সিরাজগঞ্জ যেলার উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী রহমতগঞ্জ সুতাকল ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ ব্যতীত অন্য কোন পথ নেই। আর কুরআন ও হাদীছ ব্যতীত কোথাও ইসলাম নেই। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ সেদিকেই মানুষকে আহবান জানায়।

রহমতগঞ্জ পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য জনাব মুহাম্মাদ মঈনুদ্দীন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম, ‘সোনামণি’ কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন, ‘আন্দোলন’-এর অফিস সহকারী আনোয়ারুল হক ও যেলা নেতৃবৃন্দ।

আমীরে জামা‘আতের সাতক্ষীরা সফর :

(ক) ২৫শে নভেম্বর রবিবার : অদ্য দুপুরে রাজশাহী থেকে সাতক্ষীরা পৌঁছলে যেলা নেতৃবৃন্দ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। বাদ আছর তিনি দারুল হাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ মারকাযে ‘সালাফিইয়াহ ট্রাষ্টে’র বৈঠক করেন। অতঃপর বাদ মাগরিব ‘মাদরাসা কমিটি’র বৈঠক করেন ও শিক্ষকদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন।

(খ) দারুলহাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ মহিলা মাদরাসার ঘোষণা : বাদ মাগরিব মাদরাসা কমিটির বৈঠকে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সকলের সাথে পরামর্শ ক্রমে উপরোক্ত নামে মারকাযের পশ্চিম দিকের নিজস্ব জমিতে মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন এবং এজন্য নগদ অনুদান প্রদান করেন। অতঃপর উপস্থিত সকলে অনুদানের ওয়াদা দেন।

(গ) রাস্তা উদ্বোধন : পরদিন ২৬শে নভেম্বর সোমবার সকাল ১০-টায় তিনি স্বগ্রাম বুলারাটি ঈদগাহ থেকে মাহমূদপুর যাওয়ার রাস্তা উদ্বোধন করেন। এ সময় বুলারাটি, মাহমূদপুর, তালবেড়ে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাস্তায় জমি দাতাদের জন্য আল্লাহর নিকট দো‘আ করেন এবং এই ছাদাক্বায়ে জারিয়ার কাজে সকলকে উদারভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান এবং প্রথমে নিজস্ব অনুদান ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য যে, গত বছর ৯ই নভেম্বর বুধবার তিনি বুলারাটি থেকে ঈদগাহে আসার রাস্তা উদ্বোধন করেছিলেন এবং তা ইতিমধ্যে সুসম্পন্ন হয়েছে।

স্মরণ করা যেতে পারে যে, উক্ত তিন গ্রামের আহলেহাদীছগণ বহু পূর্ব থেকে স্ব স্ব গ্রামেই পৃথকভাবে ঈদের জামা‘আত আদায় করতেন। অতঃপর মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের পিতা মাওলানা আহমাদ আলী (১৮৮৩-১৯৭৬ খৃঃ) শিক্ষাজীবন শেষে দেশে ফিরে এই তিন গ্রামকে একত্রিত করে বর্তমান স্থানে বৃহদাকারে ঈদের জামা‘আত কায়েম করেন। তিনি আজীবন ঈদগাহের মুতাওয়াল্লী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র বর্তমান মুতাওয়াল্লী মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সময়ে ঈদগাহ সম্প্রসারিত হয় ও জরাজীর্ণ পুরাতন চুন-সুরকির দেওয়াল ভেঙ্গে ১৯৯১ সালে চারপাশে নতুন পাকা দেওয়াল নির্মাণ করা হয়। অতঃপর গত বছর বুলারাটি থেকে ঈদগাহ পর্যন্ত রাস্তা করা হয় এবং এ বছর মাহমূদ পুরের রাস্তার কাজ শুরু হ’ল। ফালিল্লা-হিল হাম্দ

দেশের উত্তরাঞ্চলে তিনদিনের সফরে আমীরে জামা‘আত

২৮-৩০শে নভেম্বর : ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচী অনুযায়ী গত ২৮-৩০ নভেম্বর বুধবার হ’তে শুক্রবার পর্যন্ত তিনব্যাপী দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি যেলা সফর করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ও তাঁর সফরসঙ্গীগণ। রাজশাহী হ’তে ২টি, মেহেরপুর হ’তে ১টি, বগুড়া হ’তে ২টি ও দিনাজপুর হ’তে ৩টি, মোট ৮টি মাইক্রো যোগে ৮১ জনের টিম নিয়ে তিনি গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় যেলা সফর করেন। এ সময়ে যেলা ও এলাকা সম্মেলন ছাড়াও পথিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতী কাজ করা হয় এবং ‘আন্দোলন’-এর পরিচিতি লিফলেট বিতরণ করা হয়। অতঃপর ১লা ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭-টায় তিনদিনের সফর শেষে তিনি সফরসঙ্গীদের নিয়ে সুষ্ঠুভাবে রাজশাহী মারকাযে ফিরে আসেন। ফালিল্লা-হিল হাম্দ। বিস্তারিত  রিপোর্ট নিম্নরূপ :

সার্বিক জীবনে ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে থাকুন

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

গাইবান্ধা-পশ্চিম যেলা সম্মেলন \ ২৮ নভেম্বর বুধবার: অদ্য বেলা ৩-ঘটিকায় স্বীয় সফরসঙ্গীদের নিয়ে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত তিনদিনের সফরের উদ্দেশ্যে রাজশাহী ত্যাগ করেন। অতঃপর বাদ আছর হ’তে গাইবান্ধা-পশ্চিম সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘে’র উদ্যোগে গোবিন্দগঞ্জ উপযেলা সদরের বি.পি.এড. কলেজ ময়দানে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে যোগদান করেন। উক্ত সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে সকলের উদ্দেশ্যে উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, যতদিন আমাদের ঈমান সঠিক না হবে, ততদিন আমাদের আমল সঠিক হবে না। তিনি বলেন, এ দেশে তিনটি ঈমানের অনুসারী লোক রয়েছে। শৈথিল্যবাদী, চরমপন্থী ও মধ্যপন্থী। আহলেহাদীছগণ সর্বদা মধ্যপন্থী ঈমানের অনুসারী। তিনি সূরা আছরের ব্যাখ্যা পেশ করে সকলকে চারটি গুণের অধিকারী হওয়ার উদাত্ত আহবান জানান।

যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রধান উপদেষ্টা জনাব নূরুল ইসলাম প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম ও যেলা নেতৃবৃন্দ। আমীরে জামা‘আতের বক্তব্যের পূর্বে তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র ও আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া রাজশাহীর ছাত্র হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির পবিত্র কুরআন মাজীদ থেকে অর্থ সহ তেলাওয়াত করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডা. আওনুল মাবূদ ও যেলা ‘যুবসংঘে’র নেতৃবৃন্দ।

মাদরাসা উদ্বোধন : পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার : গাইবান্ধা যেলা সম্মেলন শেষে পরদিন ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৮-টায় রংপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত গাইবান্ধা যেলার পলাশবাড়ী থানাধীন নিশ্চিন্তপুর মতিজান মহিলা সালাফিয়া হাফেযিয়া মাদরাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং উদ্বোধন উপলক্ষে স্বীয় সফরসঙ্গীদের নিয়ে সেখানে যাত্রাবিরতি করেন। গাইবান্ধা যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রধান উপদেষ্টা জনাব নূরুল ইসলাম প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমবেত সুধীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমানিয়াতের সবচেয়ে বড় নিদর্শন হ’ল এই যে, তিনি মানবজাতিকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন ও তাকে কথা বলার শক্তি দান করেছেন। তিনি বলেন, মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ নিহিত রয়েছে যথাযথভাবে কুরআন শিক্ষার উপরে। তিনি বলেন, আমাদের সন্তানদের কুরআনের আলোকে চরিত্র গঠন করতে না পারলে অচিরেই সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি অজ পাড়াগাঁয়ে একক প্রচেষ্টায় একটি কুরআন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য প্রতিষ্ঠাতাকে ধন্যবাদ জানান এবং সকলকে এই মহতী উদ্যোগে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার আহবান জানান। সাথে সাথে তিনি নিজে ও সাথীরা অনুদান প্রদান করেন।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম ও অত্র মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ ইহসানুর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা ইহসানুর রহমান সরকারের উদ্যোগে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তিনি মাদরাসার জন্য ১৪ শতাংশ জমি দান করেন এবং নিজ অর্থে চার কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা টিনশেড ভবন নির্মাণ করেন। প্রাথমিকভাবে সেখানে হিফয বিভাগ চালু করা হ’ল।

আহলেহাদীছের আদর্শমূলে ঐক্যবদ্ধ হৌন

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

রংপুর যেলা সম্মেলন ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ রংপুর যেলার উদ্যোগে হারাগাছ পৌরসভার দরদী আহলেহাদীছ জামে মসজিদে যেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব খায়রুল আযাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সকলের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স-এর শাখা হিসাবে ‘আঞ্জুমানে আহলে হাদিস বাঙ্গালা ও আসাম’ নামে সংগঠন থাকা সত্ত্বেও অখন্ড ভারতে ১৯৪৬ সালের ২০শে এপ্রিল মাওলানা আব্দুল্লাহেল কাফী ছাহেবের নেতৃত্বে এই হারাগাছেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘নিখিল বঙ্গ ও আসাম জমঈয়তে আহলেহাদিছ’। যা পরবর্তীতে ‘বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলেহাদীস’ নামে পরিচিত হয়েছে। সেদিন যে লক্ষ্য ও আদর্শ নিয়ে এই সংগঠন গড়ে উঠেছিল, আজ কি উক্ত সংগঠনের সেই লক্ষ্য, আদর্শ ও চরিত্র বজায় আছে? আমাদেরকে ‘জমঈয়ত’ ভাঙ্গার জন্য দায়ী করা হয়। অথচ এটা স্রেফ মিথ্যাচার ব্যতীত কিছুই নয়। জমঈয়ত ভাঙ্গার জন্য দায়ী ছিল সে সময়ের আত্মম্ভরী নেতৃত্ব। আমরা ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র মাধ্যমে লক্ষ্যহীন আহলেহাদীছ তরুণদেরকে তাদের লক্ষ্যপথে ফিরিয়ে আনার ও ঐক্যবদ্ধ জামা‘আতী শক্তিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছিলাম মাত্র। এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তাহ’লে এ অপরাধ আমরা সারা জীবন করে যাব এবং এ অপরাধ করা থেকে কোন শক্তি আমাদের ফিরাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আহলেহাদীছের মহান আদর্শ নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। বিজাতীয় কুফরী মতাদর্শ এবং শৈথিল্যবাদী, চরমপন্থী ও বিদ‘আতীদের দলভুক্ত হয়ে ও ঐসব বাতিল মতবাদের জন্য জীবনপাত করে কেউ ‘আহলেহাদীছ’ থাকতে পারে না। আমরা রংপুরবাসীকে বলব, সকল তন্ত্র-মন্ত্র ছেড়ে আল্লাহর পথে ফিরে আসুন। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ার যে আপোষহীন আন্দোলন চলছে তাতে যোগ দিন এবং আহলেহাদীছের আদর্শমূলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেকে জান্নাত লাভের যোগ্য করে গড়ে তুলুন।

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন ও কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা : রংপুর যেলা সম্মেলনের পূর্ব নির্ধারিত স্থান ছিল যেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দান। সে লক্ষ্যে একমাস পূর্বেই প্রশাসনের লিখিত অনুমতিপত্রও হাতে পেয়েছিল যেলা ‘আন্দোলন’-এর নেতৃবৃন্দ। সেভাবে মঞ্চ, প্যান্ডেল, পোষ্টারিং, মাইকিং, দাওয়াতপত্র বিতরণ ইত্যাদি সকল ধরনের প্রস্ত্ততিও সম্পন্ন হয়। কিন্তু এক অদৃশ্য ইঙ্গিতে সম্মেলনের পূর্ব রাত ১২-টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পত্র দিয়ে সম্মেলনের অনুমতি বাতিল করা হয়। মৌখিকভাবে জানানো হয় যে, যেলা সদর ব্যতীত অন্যত্র সম্মেলন করতে কোন বাধা নেই। অতঃপর তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরবর্তী হারাগাছ হাইস্কুল ময়দানে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং চারিদিকে মাইকিং শুরু হয়। কিন্তু স্থানীয় কাউনিয়া থানা পুলিশ প্রশাসন সেখানেও বাধা প্রদান করে। অবশেষে আগত কর্মী ও সুধীদেরকে স্থানীয় দরদী আহলেহাদীছ জামে মসজিদে সমবেত হ’তে বলা হয়। অপরদিকে দূর-দূরান্তের কর্মী ও সুধীদেরকে সম্মেলনে না আসার জন্য মোবাইলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বহু রিজার্ভ গাড়ী রাস্তা থেকে ফিরে যায়। অতঃপর বাদ আছর থেকে দরদী আহলেহাদীছ জামে মসজিদে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। এখানেও মাইক ব্যবহার করতে বাধা দেওয়া হয়। অবশেষে সাউন্ড বক্স এবং মসজিদের নিজস্ব মাইকের  মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। বিপুল সংখ্যক সুধীর উপস্থিতি ও মুহুর্মুহু শ্লোগান সম্মেলনকে প্রাণবন্ত করে তুলে। মসজিদের ভিতর, বাহির ও রাস্তায় তিল ধারনের জায়গা ছিল না। সম্মুখের পাকা রাস্তায়, দোকানে, গাড়ীতে ও বাড়ীর ছাদে শত শত নারী-পুরুষকে বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।

সম্মেলন শেষে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত স্বীয় সফরসঙ্গীদের নিয়ে রংপুর শহরের মেডিকেল মোড় সংলগ্ন হারাগাছ ক্লিনিকের মালিক ডা. মুহাম্মাদ শাহজাহান ছাহেবের আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। অতঃপর রাত ১০-টায় সেখান থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান।

তেঁতুলিয়া ও বাংলাবান্ধায় আমীরে জামা‘আত :

রংপুর থেকে রওয়ানা হয়ে রাত সাড়ে বার টায় আমীরে জামা‘আত দিনাজপুর শহরের নিকটবর্তী তের মাইল গড়েয়া পৌঁছেন। সেখানে যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব ইদরীস আলী ও অন্যান্য দায়িত্বশীলগণ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। পরদিন শুক্রবার সকাল ৭-টায় তিনি বাংলাদেশের সর্বউত্তর-পশ্চিমে পঞ্চগড় যেলার তেঁতুলিয়া ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পরিদর্শনের জন্য রওয়ানা হন। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক হাফেয আব্দুল ক্বাহহার, প্রাথমিক সদস্য হাবীবুর রহমান, ডা. শাহজাহান আলী ও আব্দুল ক্বাইয়ূম দিনাজপুর থেকে ২টি মটরসাইকেল যোগে এবং যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব ইদরীস আলীর জামাতা ইসলামী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখায় কর্মরত নূরে আলম ছিদ্দীকী ও তার সহকর্মী ফিরোজ হোসাইন মটরসাইকেল যোগে পঞ্চগড় শহর থেকে গাইড হিসাবে উক্ত কাফেলার সাথে যোগ দেন এবং বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে সার্বিক সহযোগিতা করেন। আমীরে জামা‘আত প্রথমে তেঁতুলিয়া সীমান্ত নদী মহানন্দা ও পর্যটন কেন্দ্র, অতঃপর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময়ে তিনি বিজিবি সদস্যদের সাথে কথা বলেন ও বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। সেখানে নতুন আহলেহাদীছ ও বাংলাবান্ধা গ্রামের বাসিন্দা ও পঞ্চগড় এম. আর. সরকারী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র মুহাম্মাদ নাছীরুল ইসলাম ও স্থানীয় তরুণ ব্যবসায়ী হোসেন আলী মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সাথে সাক্ষাত করেন। তারা আমীরে জামা‘আতের নিকটে তাদের আহলেহাদীছ হওয়ার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন এবং বর্তমান সংকটাবস্থা তুলে ধরেন।  আমীরে  জামা‘আত  তাদেরকে সান্ত্বনা দেন ও হক-এর উপর দৃঢ় থাকার উপদেশ দেন। পরে তিনি নাছীরুল ইসলামের পিতাকে ডেকে ছেলের উপর নির্যাতন না করার ও তাকে আহলেহাদীছ হয়ে যাওয়ার আহবান জানান। অতঃপর গাড়ীতে উঠে তিনি কর্মীদের বলেন, ‘টেকনাফ হ’তে তেঁতুলিয়া, আহলেহাদীছ আছে দেশ জুড়িয়া’। কর্মীরা খুশীতে ‘আমীন’ বলেন। অতঃপর আমীরে জামা‘আত বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সংলগ্ন বিওপি জামে মসজিদে জুম‘আর ছালাত আদায় করেন এবং মসজিদ কমিটির কয়েকজন নেতা ও মুছল্লীকে ডেকে নিয়ে আহলেহাদীছ আন্দোলনের দাওয়াত প্রদান করেন। তিনি তাদেরকে মসজিদের মেহরাবের উপর বড় করে আরবীতে ‘আল্লাহ’ লেখাটি মুছে ফেলতে বলেন। এ সময়ে ‘আন্দোলন’-এর পরিচিতি লিফলেটও বিতরণ করা হয়। 

অতঃপর ফেরার পথে পঞ্চগড় সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরবর্তী ভিতরগড় গ্রামে ১২০ বিঘা জমির উপর খননকৃত বর্তমানে সরকারীভাবে সংরক্ষিত প্রাচীন ও বিশাল ‘মহারাজার দীঘি’ পরিদর্শন করেন। অতঃপর সেখান থেকে রওয়ানা হয়ে মাগরিবের ছালাতের সময় তাঁরা পুনরায় দিনাজপুরের তের মাইল গড়েয়া ফিরে আসেন।

উল্লেখ্য যে, এখানেও পঞ্চগড় শহর সংলগ্ন ফুলতলা বাজারে পূর্ব নির্ধারিত পঞ্চগড় যেলা সম্মেলন প্রশাসনের বাধার কারণে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি।

হে মানুষ! ক্বিয়ামত দিবসকে ভয় কর

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

কাহারোল, ৩০ নভেম্বর শুক্রবার : তেঁতুলিয়া থেকে ফিরে আমীরে জামা‘আত দিনাজপুর যেলার কাহারোল উপযেলা সদরের রামচন্দ্রপুর দারুস সুন্নাহ আরাবিইয়াহ মাদরাসা ময়দানে আয়োজিত ইসলামী সম্মেলনে যোগদান করেন। রামচন্দ্রপুর পাইলট হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক জনাব আশরাফুল হক -এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে সমবেত সুধীদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বলেন, হে মানুষ! তোমরা ভয় কর সেদিনকে যেদিন পিতা পুত্রের বা পুত্র পিতার কোন কাজে আসবে না। তিনি বলেন, সেদিন বাঁচতে গেলে আমাদেরকে সার্বিক জীবনে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অনুসারী হ’তে হবে।

তিনি স্থানীয় আলেমদের বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে পরস্পর বিভেদে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আলেমদের কর্তব্য সমাজে ঐক্য ও ভালবাসা সৃষ্টি করা। এমনকিছু করা উচিত নয়, যা সমাজকে বিভক্ত করে এবং মানুষে মানুষে হানাহানি সৃষ্টি করে; যেভাবে এখন রাজনৈতিক নেতারা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সামাজিক ঐক্য ও সংহতি কামনা করে। অতএব আসুন আমরা হিংসা ভুলে পরস্পরে ভাই-ভাই হয়ে যাই।

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়ার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম ও আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর প্রধান জনাব শফীকুল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে, গড়েয়া থেকে কাহারোল যাওয়ার পথে তিনি উচিৎপুর বাজারে নির্মানাধীন আহলেহাদীছ জামে মসজিদ পরিদর্শন করেন ও জনাব আবুল হোসাইনসহ অন্যান্যদের সাথে মতবিনিময় করেন।

রাজশাহী প্রত্যাবর্তন : কাহারোল সম্মেলন শেষে রাত ১২-টার দিকে আমীরে জামা‘আত তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে রওয়ানা হয়ে সকাল সাড়ে ৭-টায় রাজশাহী পৌঁছেন। ফালিল্লা-হিল হাম্দ

উল্লেখ্য যে, ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমীরে জামা‘আত গড়েয়া তের মাইলে মাগরিবের ছালাত আদায়ের পর সাথীদের উদ্দেশ্যে বিদায়ী ভাষণ পেশ করেন। তিন দিনের এই সফরে যোগদানের জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং সফরের কষ্ট ও দ্বীনে হক-এর এই দাওয়াতের বিনিময়ে মহান আল্লাহর নিকটে সকলের জন্য উত্তম বদলা কামনা করেন।

তিনদিন ব্যাপী সফরে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সফরসঙ্গী ছিলেন তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম, হাদীছ ফাউন্ডেশন বই বিক্রয় বিভাগের ম্যানেজার হাফেয আব্দুল বারী, রাজশাহী মহানগরী ‘আন্দোলন’-এর সদস্য অধ্যাপক গিয়াছুদ্দীন, আশরাফুল হক ও মীযানুর রহমান, চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল লতীফ, অর্থ সম্পাদক দুররুল হুদা, দফতর সম্পাদক জনাব ঈছারুল হক, চাপাই- উত্তর যেলা যুবসংঘের সভাপতি মোখতার হুসাইন, সাধারণ সম্পাদক হাফেয আব্দুল বারী, জয়পুরহাট যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাহফূযুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুয্যাম্মিল হক, অর্থ সম্পাদক ও আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর প্রধান শফীকুল ইসলাম, জয়পুরহাট যেলা ‘যুবসংঘে’র সাবেক সভাপতি আমীনুল ইসলাম, বগুড়া যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব আব্দুর রহীম, সহ-সভাপতি হাফেয মুখলেছুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ছহীমুদ্দীন, উপদেষ্টা মাওলানা রামাযান আলী, সদস্য জনাব রফীকুল ইসলাম, যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি আব্দুর রাযযাক, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দিনাজপুর-পূর্ব সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব শাহ, সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ কেতাবুদ্দীন,  সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রুস্তম আলী, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক, প্রশিক্ষণ সম্পাদক  আব্দুল হক, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আব্দুল ওয়ারেছ, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক মুহাম্মাদ আফাযুদ্দীন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আবূ তাহের, দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ হারূনুর রশীদ, মেহেরপুর যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক তরীকুযযামান, মেহেরপুর সদর উপযেলা সভাপতি আলহাজ্জ আযীমুদ্দীন ও গাংনী উপযেলা আহলেহাদীছ যুবসংঘের সভাপতি আওরঙ্গযেব প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

উপযেলা সম্মেলন

কুরআন থেকে আলো নিয়ে জীবন পরিচালনা করুন

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

কলারোয়া, সাতক্ষীরা ২৬শে নভেম্বর সোমবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ কলারোয়া উপযেলার উদ্যোগে কলারোয়া পাইলট হাইস্কুল ময়দানে অনুষ্ঠিত উপযেলা সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব জনগণের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, কুরআন বিশ্ব মানবতার জন্য আলোকস্তম্ভ স্বরূপ; যা জীবন পথে মানুষকে কল্যাণের নির্দেশনা দেয়। তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে আল্লাহ প্রেরিত অহি-র বিধান পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সামনে মাথা নত করার ও সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনার আহবান জানান।

‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা ও যশোর সরকারী এম.এম. কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ প্রফেসর নযরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন ও ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইন প্রমুখ। মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের ভাষণের পূর্বে তাঁর কনিষ্ঠপুত্র হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির পবিত্র কুরআন মাজীদ থেকে তেলাওয়াত ও তরজমা পেশ করেন। সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক শহীদুযযামান ও কাকডাংগা এলাকার সভাপতি আনোয়ার এলাহী।

উল্লেখ্য যে, সম্মেলনে যোগদানের পূর্বে কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য মুরববীদের নিয়ে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত পার্শ্ববর্তী ব্রজবাকসা সফর করেন। এ সময় তিনি তাঁর  আববার ও তাঁর অতীব আপনজন আলহাজ্জ আব্দুল হামীদ ও তাঁর মা আছিয়া বেগম, আলহাজ্জ আযীযার রহমান, তাঁর ছোট বেলার শিক্ষক মাষ্টার আতিয়ার রহমান ও কলেজ জীবনের বন্ধু চেয়ারম্যান আবু তালেবের মৃত পুত্রের কবর সমূহ যেয়ারত করেন। তিনি ‘আছিয়া বেগম হাফেযিয়া মাদরাসা’ পরিদর্শন করেন, যা তাঁর পিতার হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি মৃত শওকত আলীর বাড়ীতে যান ও তার বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে সাক্ষাৎ করেন ও সমবেদনা জানান। তিনি তাঁর হিতাকাংখী ও আত্মীয় আলহাজ্জ আব্দুর রহীমের সাথে তাঁর রোগ শয্যায় শায়িতা স্ত্রীকে দেখতে যান ও রোগমুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট দো‘আ করেন।

ফিরে আসুন নির্ভেজাল সত্যের পথে

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

তেরখাদা, খুলনা ৫ই ডিসেম্বর বুধবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ তেরখাদা উপযেলার উদ্যোগে স্থানীয় ইখড়ি কাটেঙ্গা হাইস্কুল ময়দানে অনুষ্ঠিত উপযেলা সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব সকলের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীতে বর্তমানে কোন ইলাহী গ্রন্থ নেই কুরআন ব্যতীত। যা নিজেকে ‘সন্দেহমুক্ত’ বলে তার বক্তব্য শুরু করেছে। পৃথিবীর সকল মানুষ এখন শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উম্মত। তাঁকে অস্বীকারকারী কোন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। অতএব সকলকে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর দিকেই ফিরে আসতে হবে। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ মানুষকে সেদিকেই আহবান জানায়। তিনি বলেন, এই আন্দোলনের বিরোধীরা নানাবিধ অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অকথ্য ভাষায় নেতৃবৃন্দকে গালি দিয়ে মিথ্যা নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে চটকদার বই ছাপিয়ে বিলি করছে। যার একটি কপি আজ এখানে এসে পেলাম। ২০০৫ সালে তারা একইভাবে মিথ্যাচার চালিয়েছিল। এরা প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থেকে আমাদের সম্মেলন সমূহ পন্ড করার চেষ্টা করছে। তিনি জনগণকে এদের ব্যাপারে সাবধান থাকার আহবান জানান।

খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম এবং প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম, সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান প্রমুখ।  

হিন্দু-মুসলিম সবাই এক আদমের সন্তান। সকলকে আমরা আল্লাহর পথে আহবান জানাই

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

চিতলমারী, বাগেরহাট ৬ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ চিতলমারী উপযেলার উদ্যোগে চিতলমারী আহলেহাদীছ মাদরাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত উপযেলা সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব জনগণের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, কুরআন-হাদীছ বিশ্বমানবতার কল্যাণে আল্লাহ প্রেরিত অভ্রান্ত অহী। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ মানুষের সার্বিক জীবনে অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এ আন্দোলন সকল মানুষের পরকালীন নাজাতের আন্দোলন। এ আন্দোলন বিশ্ব মানবতার মুক্তির আন্দোলন। অতএব সকল ভেদাভেদ ভুলে সকলে এ আন্দোলনের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হৌন।

তিনি এদিন বাগেরহাট খানজাহান আলীর মাযার পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তাঁর সফরসঙ্গী কনিষ্ঠ পুত্রের ভাষা নকল করে বলেন, ‘আজ হাতে-নাতে শিরক দেখলাম’। প্রায় ছয়শো বছর পূর্বে মৃত্যুবরণকারী একজন বিজয়ী সেনাপতির কবরকে পীরের কবর বানিয়ে স্বার্থান্ধ মানুষ সেখানে ব্যবসা খুলেছে। লোকেরা গিয়ে সেখানে প্রার্থনা করছে। জনকল্যাণে তাঁর খননকৃত বিশাল দীঘিতে পুণ্যস্নান করে পাপমুক্ত হচ্ছে। সন্তানকে কবরের গেলাফের মধ্যে ঢুকিয়ে বের করে এনে তাকে রোগমুক্ত ও বিপদমুক্ত ধারণা করছে। কোটিপতি লোকেরা বৌ-ছেলেমেয়ে নিয়ে সেখানে যাচ্ছে ও নোংরা জটাধারীদের কাছে মিনতি করছে। ওরসের জন্য গরু ও পীরের কুমীরের জন্য মোরগ কিনে দিচ্ছে। পানি ও তৈল পড়া, তাগা ও মাদুলী নিচ্ছে। একদিকে কবরে প্রার্থনা ও কান্নাকাটি হচ্ছে ও সাথেই মসজিদে ছালাত হচ্ছে। অথচ এরাই এদেশে খাঁটি দ্বীনদার মুসলমান বলে পরিচিত। মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সকলকে এসব শিরকী কর্মকান্ড থেকে তওবা করার ও এসব হ’তে দূরে থাকার আহবান জানান। সাথে সাথে সাংগঠনিকভাবে নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে মানুষকে জান্নাতের পথে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা যোরদার করার পরামর্শ দেন।

যেলা ‘আন্দোলন’-এর সহ-সভাপতি মাওলানা আহমাদ আলী রহমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম, খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, বাগেরহাট যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আলী  প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে, এদিন সকালে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে মংলা সমুদ্রবন্দর পরিদর্শন করেন ও সেখান থেকে সরকারী তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ‘করমজল’ পর্যটন কেন্দ্রে গমন করেন।

এলাকা সম্মেলন

হানাহানি না করে দুই নেত্রী পরপর দেশ শাসন করুন অথবা ইসলামের বিধান মেনে দল ও প্রার্থীবিহীন নির্বাচন দিন

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

বাদুড়িয়া, রাজশাহী ১লা ডিসেম্বর শনিবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ বাসুন্ডী এলাকা সংগঠনের উদ্যোগে বাদুড়িয়া হাইস্কুল ময়দানে অনুষ্ঠিত এলাকা সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব দেশের দুই নেত্রীর প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে হরতাল-অবরোধ, গুম-খুন, চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা কখনোই জনকল্যাণ নয়। তিনি বলেন, নেতারা তওবা না করলে দেশে আল্লাহর গযব অবশ্যম্ভাবী। তিনি সকলকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর পথে ফিরে আসার আহবান জানান।

যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডাঃ মুহাম্মাদ ইদরীস আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়ার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম ও মাওলানা রফীকুল ইসলাম প্রমুখ।

\ প্রবাসী সংবাদ \

জেদ্দা, সঊদী আরব ১৯শে অক্টোবর শুক্রবার : অদ্য বাদ মাগরিব ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ জেদ্দা শাখার উদ্যোগে  শহরের গুলাইল সেন্টার পয়েন্ট জামে মসজিদে এক সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মসজিদের বাংলা বিভাগের দাঈ শায়খ বশীরুদ্দীন (সিলেট)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন হজ্জ সফরে আগত ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান ও কুষ্টিয়া-পূর্ব যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব আব্দুল ওয়াহহাব। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেদ্দা শাখার সভাপতি সাঈদুল ইসলাম ও অন্যান্য দায়িত্বশীলগণ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শতাধিক প্রবাসী বাঙ্গালী ভাইয়ের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান অতিথি বলেন, প্রবাসে আপনারা আমাদের আদর্শিক রাষ্ট্রদূত। আপনাদের আমলে ও আচরণে, দাওয়াত ও তাবলীগে অন্যদের মধ্যে ছহীহ দ্বীনের প্রচার ও প্রসার ঘটুক এটাই আমাদের একান্ত কামনা। তিনি বলেন, সংগঠন ব্যতীত একাকী প্রচেষ্টা আল্লাহর কাম্য নয় এবং তা ফলপ্রসূও নয়। অতএব আপনারা সমবেতভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ করুন।

মক্কা, সঊদী আরব ৫ই নভেম্বর সোমবার : অদ্য বাদ এশা মক্কার হোটেল হিল্টনে কর্মরত বাংলাদেশী ভাইদের উদ্যোগে আযীযীয়ার হিল্টন ভিলায় এক তাবলীগী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাঁর হজ্জ সফরের সাথী ও ‘আন্দোলন’-এর শুভানুধ্যায়ী ইঞ্জিনিয়ার এমরান হোসাইন (ঢাকা)। প্রবাসী ভাইদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বক্তব্যে প্রধান অতিথি বলেন, মানুষের পার্থিব জীবনের আমলের উপরে তার আখেরাত নির্ধারিত হয়। আমল বিশুদ্ধ ও সুন্দর হ’লে আখেরাত সুন্দর হবে। আর আমল ত্রুটিযুক্ত হলে আখেরাত বিভীষিকাময় হবে। সেকারণ অবশ্যই আমাদেরকে আক্বীদার ক্ষেত্রে শিরকমুক্ত তাওহীদপন্থী এবং আমলের ক্ষেত্রে বিদ‘আত মুক্ত সুন্নাতপন্থী হ’তে হবে। তিনি বলেন, আহলেহাদীছ আন্দোল উক্ত লক্ষ্যে সমাজে কাজ করে চলেছে। এই ‘আন্দোলন’-এর মৌলিক দাওয়াত হচ্ছে- ‘আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি’। তিনি জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। আলোচনা শেষে তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

উল্লেখ্য যে, হোটেল হিল্টনে কর্মরত বাংলাদেশের মাগুরা যেলা সদরের পারনান্দুয়ালী গ্রামের হাসানুল ইসলাম প্রায় দেড় বৎসর আগে ল্যাপটপের মাধ্যমে তার সহকর্মীদেরকে আহলেহাদীছ আলেম-ওলামার বক্তব্য শুনাতে শুরু করেন। প্রতি সোমবার রাতে তিনি তাদের ভিলায় এই আয়োজন করেন। বক্তব্য শোনার পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর পর্যালোচনা করা হয়। প্রথম দিকে প্রচন্ড বাধার মুখে পড়লেও তার এই দাওয়াতী কর্মসূচীর মাধ্যমে বর্তমানে প্রায় ৪০ জন ভাই হক-এর দাওয়াত কবুল করে আহলেহাদীছ হয়ে গিয়েছেন। ফালিল্লা-হিল হাম্দ।

জেদ্দা, সঊদী আরব ৯ নভেম্বর শুক্রবার : অদ্য বাদ মাগরিব ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ জেদ্দা শাখার উদ্যোগে  শহরের বাব মক্কা সংলগ্ন কান্দুরা মাদরাসা ওরওয়া সাঈদ বিন জুবাইর মিলনায়তনে এক সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ জেদ্দা শাখার সভাপতি সাঈদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন অত্র মাদরাসার শিক্ষক জনাব মনীরুযযামান (সিলেট)। অনুষ্ঠান শেষে সাঈদুল ইসলাম (বি-বাড়িয়া)-কে সভাপতি, মুহাম্মাদ শাহজাহান (নারায়ণগঞ্জ)-কে সহ-সভাপতি ও কাযী বেলাল হোসাইন (কুমিল্লা)-কে সাধারণ সম্পাদক করে দশ সদস্য বিশিষ্ট ‘আন্দোলন’-এর জেদ্দা শাখা পুনর্গঠন করা হয়।

ইয়াম্বু‘, সঊদী আরব ১৬ই নভেম্বর শুক্রবার : অদ্য বাদ জুম‘আ মদীনা থেকে প্রায় দু’শো কিলোমিটার দূরবর্তী ইয়াম্বু‘ শহরের নিকটবর্তী ইয়াম্বু‘ ছানা‘ঈয়াহ রয়েল কমিশন ইসলামিক সেন্টারে এক তাবলীগী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেন্টারের বাংলা বিভাগের দাঈ জনাব আব্দুল্লাহিল কাফী (ঠাকুরগাঁও)-র পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হাফেয আব্দুল মতীন (রাজশাহী)। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন উক্ত সেন্টারের সমন্বয়কারী জনাব ফায়যুল্লাহ কাযী (খুলনা)। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জনাব মনীরুল ইসলাম (নোয়াখালী), আমজাদ হোসাইন (ঢাকা), আব্দুল আউয়াল (বাগেরহাট), ফযলুল করীম (মুন্সীগঞ্জ), আব্দুন নূর (মেহেরপুর) ও দেলোয়ার হোসাইন (কুমিল্লা)। প্রধান অতিথি তাঁর ভাষণে সূরা আছরের শিক্ষার উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন এবং সকলকে জামা‘আতবদ্ধভাবে দাওয়াতী কাজে অংশগ্রহণ করার উদাত্ত আহবান জানান। বক্তব্য শেষে তিনি শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

একই দিন বাদ মাগরিব তিনি উক্ত দা‘ওয়াহ সেন্টারের উদ্যোগে স্থানীয় কৃষি খামার (মাযরা‘আহ) ‘আরামকো রিক্রেশন সেন্টারে’ প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের নিয়ে আয়োজিত দাওয়াতী কর্মশালায় যোগদান করেন। সেখানে সমবেত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তিনি সকলকে তাক্বওয়াশীল জীবন যাপনের আহবান জানান। উক্ত অনুষ্ঠানের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উক্ত সেন্টারের দাঈ জনাব আব্দু্ল্লাহিল কাফী। অনুষ্ঠান শেষে বক্তব্যের উপরে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অতঃপর সেখান থেকে ফিরে রাত ৯-টায় উক্ত সেন্টার সংলগ্ন গেস্ট রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি জনাব মনীরুল ইসলাম (নোয়াখালী)-কে আহবায়ক ও জনাব আব্দুন নূর (মেহেরপুর)-কে যুগ্ম আহবায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ইয়াম্বু‘ শাখা গঠন করেন।

মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব ২১শে নভেম্বর বুধবার : অদ্য বাদ মাগরিব ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং ছাত্রাবাসের ৩য় তলায় হাফেয আব্দুল মতীনের কক্ষে এক দায়িত্বশীল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি হাফেয আব্দুল মতীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে দাওয়াতী কাজ যোরদার করার জন্য ছাত্রদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, বাতিল চারিদিকে সংঘবদ্ধ হয়ে হক-এর গলা টিপে ধরার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আর আমরা কি করব তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি। এটি মোটেও সমীচীন নয়। তিনি বলেন, যেকোন মূল্যে আমাদেরকে হক-এর পক্ষে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। সুসংগঠিত হয়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দাওয়াত নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।






আরও
আরও
.