যখন পৃথিবীর আবহাওয়া ছিল উত্তপ্ত, পরিবেশ ছিল বিষাক্ত, চারিদিকে লংঘিত মানবতার করুণ আর্তনাদ, মযলূম জনতার হাহাকার, শোষকের অত্যাচারে শিশু-নারী-অসহায় মানুষের ক্রন্দনরোল দ্যুলোক-ভুলোককে করেছিল কম্পমান; একই ভাবে দেশে যখন চরম আকার ধারণ করেছিল শাসনের নামে দুঃশাসন, ধর্মের নামে অধর্ম, রাজনীতির নামে কুরাজনীতি, বিচারের নামে অবিচার, তখনই নবসূচনা হয়েছিল দেশের সাড়া জাগানো বিশুদ্ধ আক্বীদার গবেষণা পত্রিকা মাসিক আত-তাহরীক-এর।

১৯৮৯-৯০ সালের কথা। তখন আমি নতুন আহলেহাদীছ হ’তে যাচ্ছি। প্রথম দাওয়াত আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র বলিষ্ঠ কর্মী ভাই শেখ শফীকুল ইসলাম (সাতক্ষীরা)-এর মাধ্যমে। অতঃপর তিনি রাজশাহী শহরের রাণী বাজারস্থ ‘যুবসংঘ’ অফিসে পরিচয় করিয়ে দেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব স্যারের সাথে। সে সময়ে তিনি আমাকে অনেক উপদেশ প্রদান করেন। যাতে আমার জীবনের মোড় ঘুরে যায়।

একদিন শফীক ভাই শহীদ শামসুযযোহা হলের ২১৬ নং কক্ষে আমাকে নিয়ে যান ‘যুবসংঘে’র একটা অনুষ্ঠানে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ‘যুবসংঘে’র তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম (যশোর), মেহেরপুরের গোলাম মোস্তফা, আব্দুর বর (মেহেরপুর) আরো অনেকে। সেদিন ‘যুবসংঘে’র বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গঠন করা হয়েছিল। এ রিপোর্টটি আমার সাংবাদিকতা জীবনের প্রথম পত্রিকা দৈনিক স্ফুলিঙ্গে (যশোর) ছাপানো হয়েছিল। সেদিনের বৈঠকে আমাদের আলোচনায় উঠে এসেছিল আহলেহাদীছদের একটা ভাল পত্রিকার প্রয়োজনীয়তার কথা।

অতঃপর দীর্ঘ ৭টি বছর কখন যে শেষ হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণিল জীবনের শেষ প্রান্তে এসে গেলাম। ১৯৯৫ সাল এলএলএম (মাষ্টার্স অব ল) পরীক্ষা শেষ হয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমি সাথী ভাইদেরকে নিয়ে নওদাপাড়া মাদরাসায় যেতাম। এ সূত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের তৎকালীন ছাত্র দুররুল হুদা (গোদাগাড়ী), শেখ রফীক (সাতক্ষীরা), শহীদুল ইসলাম (সাতক্ষীরা), আব্দুল গফূর (সাতক্ষীরা), মোফাক্ষার হোসাইন (পাবনা), আহসান হাবীব (গাইবান্ধা), আব্দুর রউফ (বগুড়া), আবুল কালাম (জয়পুর হাট) প্রমুখের সাথে সখ্য গড়ে ওঠে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যুবসংঘে’র সঙ্গী ছিলেন শেখ রফীক (সাতক্ষীরা), আব্দুর রব (মেহেরপুর), শিমুল (সাতক্ষীরা), মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (কুমিল্লা), হাবীবুল্লাহ বাহার (সাতক্ষীরা), মঞ্জুরুল ইসলাম (দিনাজপুর), মঞ্জুরুল ইসলাম (যশোর), হেলালুদ্দীন (দিনাজপুর), আব্দুল্লাহ (নাটোর) এবং নাম না জানা আরও অনেকে। বন্ধুবর দুররুল হুদা, আব্দুর রাযযাক, আব্দুর রউফ প্রমুখের সহযোগিতায় ডঃ গালিব স্যার আমাকে নওদাপাড়া মাদরাসায় শিক্ষকতার কাজ করতে বললেন। ভাবলাম সবে মাষ্টার্স পরীক্ষা শেষ করলাম। কাটাই কিছু দিন, পরে দেখা যাবে। কিন্তু কে জানে জীবনের বহু অংশ এখানে কাটবে?

২৫ মে ১৯৯৫ সালে যোগদান করি ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়ায় শিক্ষকতার পেশায়। সে সময় মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ডঃ আসাদুল্লাহ আল-গালিব স্যার বলেছিলেন, আমাদের একটি পত্রিকা বের করতে হবে। আহলেহাদীছদের তেমন কোন পত্রিকা নেই। তিনি বললেন, এটা আমার বহু দিনের স্বপ্ন। কিন্তু দায়িত্বটি কাকে দেব এমন কোন লোক খুঁজে পাচ্ছি না। তুমি সাংবাদিকতার কাজে জড়িত আছ। এ দায়িত্বটি তুমি গ্রহণ করো। বললাম, স্যার চমৎকার সিদ্ধান্ত। প্রকৃত অর্থে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক কোন পত্রিকা নেই। এটা খুবই প্রয়োজন। তবে এ কাজ আমি পারব কি-না চিন্তার বিষয়। কেননা অনিয়ম-দুর্নীতিতে দেশের সকল সেক্টর ছেয়ে গেছে। ঘুষ প্রদান না করলে কোন অফিসে কাজ হয় না। আর আমি তো ঘুষ দিতে অভ্যস্ত নই। স্যার বললেন, আমার বিশ্বাস তুমি সঠিক নিয়মেই এটা করতে পারবে। আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু কর, দেখবে কাজ সহজ হয়ে গেছে।

বিশাল এ দায়িত্ব প্রাপ্তির পর আমি রুমে গিয়ে চিন্তা করতে থাকি, কিভাবে বিনা ঘুষে এত বড় একটা কাজ সম্পন্ন করা যায়। এমন কোন বিভাগ নেই, যেখানে অনিয়ম-দুর্নীতি নেই। সাংবাদিক হয়ে অনার্সের সার্টিফিকেট উঠাতে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট সেকশনে। সেখানে সার্টিফিকেট দিবে যে লোক সে আমার কাছে দশ টাকা চেয়ে বসল। বলল, অন্যের কাছ থেকে বেশী নেই আপনার কাছ থেকে কম নিব। লোকটি আমাকে চিনে। আমি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বললাম, বেটা বেতন পাওনা, ঘুষ খেয়ে বেঁচে আছ না-কি? জাননা ‘ঘুষদাতা, ঘুষগ্রহীতা উভয়ে অভিশপ্ত’। কোন অন্যায় কাজে বাধা দেয়াও নেকীর কাজ, ‘যুবসংঘে’র কাজ করতে গিয়ে এ শিক্ষা পেয়েছি। যাক লোকটিকে এমন ধমক ও ভয় দেখানো হ’ল যে, টাকা তো দূরের কথা সে লজ্জিত হয়ে বলল, ভাই টাকা লাগবে না।

এক্ষণে ভাবতে শুরু করলাম, কিভাবে বিনা ঘুষে পত্রিকার অনুমোদন ও রেজিষ্ট্রেশনের কাজ সম্পন্ন করতে পারি। মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ শুরু করলাম। প্রথমে আবেদন করতে হবে ডিসি অফিসে। স্যারের পূর্ণ বায়োডাটা ও বহু কাগজপত্র সহ আবেদন পত্র জমা দিলাম রাজশাহী ডিসি অফিসে। কয়েকদিনের মধ্যে পুলিশী তদন্ত গেল স্যারের আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায়। পুলিশ কর্মকর্তা স্যারের সাক্ষাৎকার নিলেন। বেচারা স্যারের পরিচয় পেয়ে আর আমার সাংবাদিকতার কথা জেনে টাকা চাওয়ার সাহস করতে পারেনি। ভাবলাম টাকাতো দিব না, তবে কি করা যায়? আবার ভাল রিপোর্টও দরকার। সাথে ছিল ‘যুবসংঘে’র তৎকালীন তাবলীগ সম্পাদক আহসান হাবীব। আমরা দু’জন বলাবলি করছি পুলিশকে কি বলা যায়? পুলিশের বিশ্বাস আমরা তাকে অবশ্যই কিছু দিব। কারণ তার ধারণা এটা দেয়া-নেয়া কোন দোষের কিছু নয়। শুধু পত্রিকা অফিস কেন দেশের সবখানে এই বখশিসের নিয়ম চালু আছে। এটাকে তো ঘুষ বলা যাবে না (?) শুধু পুলিশ কেন, ডিসি, এসপি, সচিব, মন্ত্রী, বিচারক, শিক্ষক, সাংবাদিক সহ সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষ এই অদ্ভূত (?) নিয়মের সাথে জড়িত।

বললাম, চলেন তিন জন মিলে তাকে সি.এন্ড.বি মোড় সংলগ্ন মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে তার অফিসে পৌঁছে দিয়ে আসি। আহসান ভাই বলল, তাই-ই হোক। মটর সাইকেলে তিনজনে রওনা হয়ে সাহেব বাজারে পৌঁছলাম। সেখানে তিনজনে হালকা নাস্তা সেড়ে পুলিশ কর্মকর্তাকে তার অফিসে পৌঁছে দিলাম। ফেরার পথে তিনি আমাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। বললেন, আপনারা চলে যাচ্ছেন? বললাম, হ্যাঁ ভাই, আপনার তেমন কোন খেদমত করতে পারলাম না। এজন্য দুঃখিত। যদি আপনার একটি ভাল রিপোর্টে পত্রিকাটি বের হয় তাহ’লে আপনার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে এবং অনেক নেকী পাবেন, সমাজও উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি তাতেই যেন খুশী হ’লেন। ওখান থেকে বিদায় নিলাম। ভাবলাম কাজটি তো কেবল শুরু মাত্র। বহুদূর এখনও বাকী। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিসি অফিস, ডিএফপি, তথ্য মন্ত্রণালয় প্রভৃতি অফিস হয়ে অনুমতির ফাইল আমাদের হাতে আসবে। ঐ সমস্ত সেক্টরে তো আরও নামী-দামী ঘুষখোর বসে আছে।

যাই হোক পুলিশ দপ্তর ভালই রিপোর্ট দিল। কিন্তু অনেক দেরী হ’ল। রিপোর্ট পাওয়ার পর ১৯৯৬ সালে ‘তাওহীদের ডাক’ নামে পত্রিকার অনুমোদনের জন্য প্রথম ডিসি অফিস, অতঃপর ডিএফপি অফিস, ঢাকাতে ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হ’ল। প্রায় ১ বছর পর জানা গেল সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে এই নামে আরেকটি পত্রিকা রয়েছে। সুতরাং এই নামে রেজিষ্ট্রেশন দেয়া যাবে না। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! হতাশাগ্রস্ত না হয়ে স্যার বললেন, আবার একটি নাম পাঠাও। এবারে নাম দিলেন মাসিক আত-তাহরীক। সেই নামে আবার পুলিশী তদন্ত হল এবং ডিসি অফিসে পাঠানো হ’ল। কাজ এবার কিছুটা সহজে হ’ল। কারণ কাগজপত্র গোছানো ছিল। ডিসি অফিস ‘মাসিক আত-তাহরীক’ নামে ছাড়পত্রের জন্য ঢাকাতে আবার পাঠিয়ে দিল। এজন্য পূর্বে ও পরে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কতবার যে যাওয়া-আসা করতে হয়েছে, কত সময় ও অর্থ যে ব্যয় হয়েছে তার হিসাব নেই। এজন্য আহসান হাবীব, মোফাক্ষার ভাইকে নিয়েও অনেক সময়ে বিভিন্ন স্থানে মটর সাইকেল যাতায়াত করেছি। দুররুল হুদা ভাই সহ অনেকে সহযোগিতা করেছেন। একদিন ডিএফপি অফিসের এক অফিসার বললেন, আপনাদের পত্রিকার ছাড়পত্র হয়ে গেছে। আপনি রাজশাহী চলে যান। রাজশাহী জেলা প্রশাসক আপনাদের ছাড়পত্রের কাগজ দিয়ে দিবেন। তখন ছিল আগষ্ট মাস, ১৯৯৭ সাল। ডিসি আমাদেরকে ছাড়পত্রের কাগজ দিলেন এবং বললেন, পোষ্টাল একাডেমি নওদাপাড়া রাজশাহী (পিএমজি) অফিসে যান। সেখান থেকে আপনাদের পত্রিকার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর দিবে। সাথে সাথে কাগজ নিয়ে এলাম। জমা দিলাম রেজিষ্ট্রেশন নম্বর পেয়ে গেলাম। রেজিঃ নম্বর হ’ল রাজ-১৬৪। আলহামদুলিল্লাহ! দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফল এবার পাওয়া গেল। যার পর নাই আনন্দিত হ’লাম। এক ভিন্ন অনুভূতি হৃদয়তন্ত্রীকে আন্দোলিত করে তুলল। স্যারকে রেজিষ্ট্রেশন ও ছাড়পত্রের কাগজ দিলাম। তাঁর চোখে-মুখে সেদিনের হাসি ও উচ্ছাস আমাকে আরও আনন্দিত করল। তিনি আমার জন্য দো‘আ করলেন, এর বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা যেন তোমাকে ইহকালে কল্যাণ ও পরকালে মুক্তি দান করেন। সেদিন স্যারকে বলেছিলাম, এর যাত্রা যেন আরও সুন্দর ও লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়, সেটাই আমাদের এখন অন্যতম কাজ।

অতঃপর ১ম সংখ্যা হিসাবে সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ সালে বের হল সাড়া জাগানো মাসিক পত্রিকা আত-তাহরীক। মাত্র ২০০০ কপি দিয়ে যাত্রা শুরু হ’ল। রূপান্তরিত হ’ল ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুখপত্র হিসাবে। আমীরে জামা‘আত হ’লেন প্রধান সম্পাদক। আব্দুল ওয়াজেদ সালাফী হ’লেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। মুহাম্মাদ হারুন হোসাইন হ’লেন নির্বাহী সম্পাদক। সার্কুলেশন ম্যানেজার ও হিসাব রক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পড়ল আমার উপর। এ বিষয়ে তত অভিজ্ঞতা না থাকলেও শিক্ষকতার পাশাপাশি ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বিকেলে, কখনও দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ক্লান্তিহীনভাবে আত-তাহরীক-এর দায়িত্ব পালন করতে শুরু করলাম। তাহরীক ১ম সংখ্যা ২০০০ বের হওয়ার পর কয়েকদিনের মধ্যে আরও ২০০০ কপির অর্ডার এল। মুহূর্তে পত্রিকার প্রচার ও প্রসার বৃদ্ধি পেতে থাকল। শুরু হ’ল পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক নির্ভেজাল আক্বীদা সমূহ প্রচারের এক নব যাত্রা। সে যাত্রা ছিল তাওহীদের ঝান্ডাবাহী বার্তা নিয়ে। সে যাত্রা ছিল মানব জীবনের ইহকাল-পরকালের মুক্তির পথ দেখানোর যাত্রা।

তিন মাস পর পত্রিকার দায়িত্বশীল পরিবর্তন হ’ল। মুহাম্মাদ হারূণের পরিবর্তে দায়িত্বে এলেন বর্তমান সম্পাদক ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। সে সময়ে তিনি নির্বাহী সম্পাদক হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এর ৭/৮ মাস পর সার্কুলেশন ম্যানেজারের দায়িত্বে এলেন আবুল কালাম আযাদ (গাইবান্ধা)। যিনি গত ২০ অক্টোবর ২০১২ তারিখে স্ট্রোক করে স্ত্রী-সন্তান রেখে চিরবিদায় নিয়েছেন (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন)। তার নিজ হাতে লেখা তাহরীকের বিভিন্ন খাতা এখনও আমার নিকট রয়েছে। যখন এগুলো দেখি তখনই তার সাথে দীর্ঘ দিনের কাজের মধ্যে তার হাস্যময় চেহারার কথা আমার মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।

তাহরীকের প্রথম জীবনের জনশক্তির দৈন্যতা এখন আর নেই। এখন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে তাহরীক একটি বিশাল পরিবার। সেই সাথে সার্কুলেশনও বৃদ্ধি পেয়েছে আশানুরূপ। এছাড়া ইন্টারনেটে বিশ্বব্যাপী তাহরীকের প্রচার-সুনাম ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। সঠিক দ্বীনের মশাল জ্বালিয়ে এগিয়ে চলেছে একগুচ্ছ জিহাদী কলম। বাতিলের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছে এই তরুণ বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ‘আত-তাহরীক’। তাই তো মনে পড়ে আত-তাহরীক পত্রিকার স্বপ্নদ্রষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব স্যারের সেই দিনের কথা। মনে পড়ে আজ তাঁর দূরদর্শিতা ও পত্রিকার মান রক্ষায় বিভিন্ন পরামর্শের কথা। মনে পড়ে আমার সেই দিনগুলোর কথা। জানি না কতদিন আত-তাহরীক-এর খেদমত করতে পারব। জানি না কে কখন হারিয়ে যাব। কিন্তু যেন তাহরীক বেঁচে থাকে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের গহীনে।

হে আল্লাহ! এই প্রার্থনা তোমার কাছে, ক্বিয়ামত অবধি তুমি এ প্রাণের পত্রিকা আত-তাহরীককে বাঁচিয়ে রাখ, লক্ষ-কোটি তাওহীদপন্থী মানুষের অন্তরে, সকল মানুষের মুখে, সমাজে, রাষ্ট্রে, ইসলামী রেনেসার বিজয়বার্তা নিয়ে। কবির ভাষায় বলতে হয়-

কেটেছে রঙিন মখমল দিন নতুন সফর আজ,

শুনেছি আবার লোনা দরিয়ার ডাক,

ভাসে জোওয়ার মউজের ফিরে সফেদ চাঁদির তাজ

পাহাড় বুলন্দ ঢেউ বয়ে আনে নোনা দরিয়ার ডাক;

নতুন পানিতে সফর এবার হে মাঝি সিন্দাবাদ।

হে আল্লাহ! যার বিনিদ্র রজনীর অক্লান্ত ও নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টা এবং অগ্নিঝরা খুরধার লেখনীর মাধ্যমে পত্রিকাটি আন্তর্জাতিক মানে অভিষিক্ত হয়েছে সেই শ্রদ্ধাভাজন লেখক, সাহিত্যিক শিক্ষক ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব স্যার এবং যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম পত্রিকার অগ্রগতিতে সাহায্য করেছে তাদের সকলের দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আত-তাহরীকের মান শনৈঃ শনৈঃ বৃদ্ধি পাক। কায়মনোবাক্যে মহান আল্লাহর কাছে এই দো‘আ ও প্রার্থনা করি। আল্লাহ তুমি কবুল কর।-আমীন!

শামসুল আলম

 শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।






মানবাধিকার ও ইসলাম (৪র্থ কিস্তি) - শামসুল আলম
সুন্নাত উপেক্ষার পরিণাম - লিলবর আল-বারাদী - যশপুর, তানোর, রাজশাহী
ইসলামে ভ্রাতৃত্ব (২য় কিস্তি) - ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ
ওশর : দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম হাতিয়ার - ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম
ইমাম গাযালীর রাষ্ট্র দর্শন - ড. মুঈনুদ্দীন আহমদ খান
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
মুহাসাবা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল (পূর্বে প্রকাশিতের পর) - আব্দুল্লাহ বিন আবদুর রাযযাক
আশূরায়ে মুহাররম - আত-তাহরীক ডেস্ক
মৌলবাদের উত্থান - মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান
সমাজ সংস্কারে তাবলীগী ইজতেমা - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
কুরআনের বঙ্গানুবাদ, মুদ্রণ প্রযুক্তি ও ঊনিশ শতকের মুসলিম সমাজে এর প্রভাব - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
আরও
আরও
.