কুয়েতের প্রখ্যাত সালাফী বিদ্বান, ‘জমঈয়াতু এহইয়াইত তুরাছ আল-ইসলামী’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও গবেষক শায়খ আব্দুর রহমান আব্দুল খালেক (৮১) গত ২৯শে সেপ্টেম্বর’২০ মঙ্গলবার সকালে কুয়েত সিটির ‘আছ-ছাবাহ’ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। ঐদিন বাদ আছর জানাযা শেষে তাঁকে কুয়েতের ‘ছুলায়বীখাত’ কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শায়খ আব্দুর রহমান আব্দুল খালেক ১৯৩৯ সালে মিসরের মুনূফিয়া যেলার ‘আরাব আর-রম্ল’ গ্রামে এক সালাফী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরী‘আহ অনুষদ থেকে উচ্চতর ডিগ্রী (‘আলামিয়াহ) লাভ করেন। শায়খ আলবানী, শায়খ বিন বায, শায়খ মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীতী, শায়খ আব্দুল মুহসিন আল-আববাদ প্রমুখ তাঁর শিক্ষক ছিলেন। মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফারেগ হওয়ার পর ২৭ বছর বয়সে তিনি কুয়েতে আসেন। তিনি ১৯৬৫-১৯৯০ সাল পর্যন্ত কুয়েতের বিভিন্ন মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৯০ সাল থেকে তিনি  ‘জমঈয়াতু এহইয়াইত তুরাছ আল-ইসলামী’-এর গবেষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০১১ সালের ৩১শে অক্টোবর তাঁকে কুয়েতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। তিনি দরস-তাদরীস, বক্তৃতা, সেমিনার, পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখন, গ্রন্থ রচনা, ফৎওয়া প্রদান প্রভৃতির মাধ্যমে কুয়েতে সালাফী আক্বীদার প্রচার-প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ষাটের অধিক গ্রন্থ  রচনা করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, আর-রাদ্দু ‘আলা মান আনকারা তাওহীদাল আসমা ওয়াছ-ছিফাত, আত-তরীকু ইলা তারশীদি হারাকাতিল বা‘ছিল ইসলামী, ফুছূল মিনাস সিয়াসাতিশ শারঈয়াহ ফিদ-দাওয়াতি ইলাল্লাহ, আছারুল আহাদীছিয যঈফাহ ওয়াল মাওযূ‘আহ ফিল আক্বীদাহ, মাশরূইয়াতুল আমাল আল-জামাঈ, আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা, শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ ওয়াল ‘আমালুল জামাঈ, উছূলুল আমালিল জামাঈ, আস-সালাফিইয়ূনা ওয়াল আইম্মাহ আল-আরবা‘আহ, আশ-শূরা ফী যিল্লে নিযামিল ইসলাম, লামাহাত মিন হায়াতে শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়াহ, ফাযাইহুছ ছূফিয়া, মাওকিফু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ মিনাল বিদা‘ ওয়াল মুবতাদি‘আহ, আল-ফিকরুছ ছূফী ফী যূইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ প্রভৃতি। হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে তাঁর রচিত আল-উছূল আল-ইলমিয়াহ লিদ-দাওয়াতিস সালাফিইয়াহ ও মাশরূইয়াতু ‘আমালিল জামাঈ গ্রন্থ দু’টির বঙ্গানুবাদ যথাক্রমে ‘সালাফী দাওয়াতের মূলনীতি’ ও ‘শরী‘আতের আলোকে জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।

আধুনিক বিশ্বে যে কয়েকজন সালাফী বিদ্বান স্বীয় ইলমের কারণে জগদ্বিখ্যাত হয়েছেন তন্মধ্যে শায়খ আব্দুর রহমান আব্দুল খালেক অন্যতম। সাবলীল ভাষায় রচিত তাঁর গ্রন্থগুলি বিশ্বে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। আক্বীদা, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি, জামা‘আত ও সংগঠন প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর প্রামাণ্য গ্রন্থ সমূহ মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সুধীমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

[স্মৃতি : ইরাক-কুয়েত যুদ্ধ শেষে কুয়েতী বন্দীদের মুক্তির দাবীতে ১৯৯২ সালের ১৯-২২শে জানুয়ারী কুয়েত সরকার কর্তৃক কুয়েত সিটিতে আয়োজিত ৪ দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক ইসলামী মহা সম্মেলনে ৩৫টি দেশের ৪৬৭ জন অতিথির মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত ৭ জন অতিথির মধ্যে আমিও ছিলাম। সম্মেলনের শেষ দিন এহইয়াউত তুরাছের পক্ষ থেকে তাদের ‘করতবা’ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্মেলনে আগত ৭টি দেশের আহলেহাদীছ প্রতিনিধিদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তাদের মিলনায়তনে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তৃতা শেষে ভারত ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সাথে শায়খ আব্দুর রহমান আব্দুল খালেক-এর নেতৃত্বে কুয়েতী নেতৃবৃন্দ এক বিশেষ বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে আমরা তাঁর দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের পরিচয় পাই। বৈঠক শেষে তিনি আমাকে তাঁর লিখিত বই সমূহ উপহার দেন। তাঁর ‘উছূলুল ইলমিইয়াহ’ বইটি আমি অনুবাদ করি। তাঁর বইগুলি সাবলীল ও সুপাঠ্য। পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে মতভেদের কারণে তিনি এহইয়াউৎ তুরাছ থেকে বিচ্যুত হন। আজ তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। আল্লাহ তাঁর ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌসে সর্বোচ্চ স্থান দান করুন-আমীন! (স.স.)] 






বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ (বিভাগীয় যুবসমাবেশ)
মাসিক ইজতেমা
যেলা সম্মেলন \ খুলনা (আল্লাহর বিধানের কাছে আত্মসমর্পণ করুন!) (স্রেফ আখেরাতের লক্ষ্যে আহলেহাদীছ আন্দোলনে ব্রতী হউন!) - -আমীরে জামা‘আত
এলাকা সম্মেলন
যেলা সম্মেলন, টাঙ্গাইল (জান্নাতে ফিরে যাওয়ার জন্য জান্নাতী হেদায়াত মেনে চলুন!) - -মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
শাহ মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান (আমীরে জামা‘আতের স্মৃতিচারণ) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
যেলা সম্মেলন \ রাজশাহী (ইসলাম পরিপূর্ণ দ্বীন, এতে কোন কিছুর প্রবেশাধিকার নেই) - -মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
আহলেহাদীছ মহিলা সংস্থা (মাসিক ইজতেমা)
মৃত্যু সংবাদ (মুহাম্মাদ জালালুদ্দীন)
প্রথম ১২ তাকবীরে ঈদের ছালাত আদায়
বিতর্ক প্রতিযোগিতা (আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী)
ইসলামী সম্মেলন
আরও
আরও
.