
পবিত্র কা‘বা গৃহের চাবি রক্ষকের মৃত্যু
কা‘বা শরীফের চাবি রক্ষক (জ্যেষ্ঠ পরিচালক) শেখ আবদুল কাদের বিন ত্বহা আল-শাইবী (৭৫) মারা গিয়েছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বৃহস্পতিবার জেদ্দার কিং খালেদ ন্যাশনাল গার্ড হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কা‘বা শরীফে জানাযার পর তাঁকে মক্কার আল-মো‘আল্লা কবরস্থানে দাফন করা হয়। তাঁর জানাযায় লাখ লাখ হাজী, পবিত্র দুই মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাগণ এবং তাঁর আত্মীয়-স্বজন যোগ দেন। চার বছর আগে তার চাচা আব্দুল আযীয আল-শাইবীর মৃত্যুর পর কা‘বা শরীফের জ্যেষ্ঠ পরিচালক হন তিনি। এখন শাইবী পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি ড. ছালেহ বিন ত্বহা আল-শাইবী হবেন কা‘বার নতুন পরিচালক। শাইবী পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে কা‘বা শরীফের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারার সম্মান পেয়ে আসছে। কা‘বা শরীফ খোলা, বন্ধ করা এবং এর পরিষ্কার করার কাজও তারা করে আসছেন। শেখ আবদুল কাদের আল-শাইবী ছিলেন ছাহাবী ওছমান বিন তালহা (রাঃ)-এর ১০৮তম উত্তরাধিকারী। যাঁর হাতে রাসূল (ছাঃ) উক্ত দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন।
দুবাই হওয়ার স্বপ্ন চুরমার
সোমালিয়ার মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে লিবিয়া!
আরব বসন্তের সূত্র ধরে ২০১১ সালে বিপ্লবের মাধ্যমে লিবিয়ায় দীর্ঘদিনের শাসক মু‘আম্মার গাদ্দাফীর শাসনের পতন ঘটে। নির্মমভাবে নিহত হন তিনি। দুবাইয়ের ন্যায় প্রাচুর্যপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বিপ্লবে যোগ দিয়েছিলেন লিবিয়ার জনগণ। কিন্তু গাদ্দাফী-পরবর্তী তিনটি বছর পার হয়ে গেলেও তাদের সেই স্বপ্ন এখন ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। দেশটিতে মারাত্মক রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, অস্ত্রের ঝনঝনানি এবং মিলিশিয়াদের অনুকম্পার ওপর নির্ভর করে সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে। গত তিন বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাত এতই ভয়াবহ যে এসময় বিপ্লবকালীন সংঘর্ষের মতো কয়েক হাযার লোক নিহত হয়েছে। উত্তর আফ্রিকার তেলসমৃদ্ধ দেশ লিবিয়া এখন সমৃদ্ধ দুবাই নয়, বরং সোমালিয়ার মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণতি বরণ করতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির জনগণ।
লিবিয়ায় এখন দুই সরকারের শাসন চলছে। একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সেক্যুলারপন্থীদের সরকার। অন্যটি ইসলামপন্থীদের জোটের স্বঘোষিত সরকার। দুই সরকার সহ বিভিন্ন মিলিশিয়া গ্রুপের মাঝে সংঘাত এখন নিত্যদিনের ঘটনা। বিপ্লবকালীন যোদ্ধা ৩৯ বছর বয়স্ক শিক্ষক মুহাম্মাদ আল-কারগালি বলেন, ‘আমাদের যে বিপুল তেলসম্পদ রয়েছে, তা দিয়ে অনায়াসে আমরা দেশটিকে দুবাইয়ে পরিণত করতে পারতাম। কিন্তু এখন আমরা লিবিয়াকে আরেকটি সোমালিয়া বা ইরাকে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করছি। বর্তমানে অধিকাংশ লিবীয় গাদ্দাফী শাসনামলের স্থিতিশীল দিনগুলো ফিরে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছে।
বেনগাজির ডাক্তার ছালেহ মাহমূদ আল-আকূরী বলেন, বর্তমানে আঞ্চলিক, আদর্শিক এবং গোত্রীয় সংঘাত একনায়কতান্ত্রিক শাসনের চেয়েও বহুগুণে খারাপ। তাই গাদ্দাফিকে ঘৃণা করা সত্ত্বেও অনেক লিবীয় পুরনো শাসন ফিরে পেতে চাচ্ছেন।
তেল উৎপাদনকারী দেশটির অবকাঠামো দিন দিন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। তাই অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন, সমৃদ্ধি অর্জন ও উন্নত জীবনের আশা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক উত্তরণের আকাংখা মরুভূমির বালুর নিচে দিন দিন চাপা পড়ে যাচ্ছে। দেশটির পরিচয় ধীরে ধীরে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে।