নতুন সংযোজন পেট্রোল বোমায় মানবিক বিপর্যয় চরমে
অবরোধ-হরতাল-সহিংসতায় গভীর সংকটে বাংলাদেশ
বিরোধী দলের টানা অবরোধ-হরতাল আর সরকারী দলের নির্দয় দমননীতি সবমিলিয়ে নিষ্ঠুর ক্ষমতালিপ্সার যাতাকলে পড়ে গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। দ্বন্দ্ব চলছে নেতা-নেত্রীদের, আর পুড়ছে সাধারণ মানুষ। ৬ জানুয়ারী’১৫ থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত গত ৪৮ দিনে সহিংসতায় নিহত হয়েছে ১০১ জন। তন্মধ্যে পেট্রোল বোমায় ও আগুনে পুড়ে ৫৬ জন, সংঘর্ষে ১৫ জন এবং কথিত বন্দুক যুদ্ধে (?) ও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে ৩০ জন। পেট্রোল বোমার আগুনে দগ্ধ ১৩০ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়, যাদের মধ্যে ৬৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। আরো বহু মানুষ দেশের বিভিন্ন হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এছাড়া হিসাবের বাইরে রয়েছে অসংখ্য হতাহত মানুষ। এ কয়দিনে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ১৫ সহস্রাধিক লোক। যাদের বেশীরভাগই সাধারণ জনগণ। ইতিপূর্বে রাজনৈতিক সংকটে দলীয় কর্মীদের হতাহতের হার বেশী হ’লেও এবার সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণের হারই বেশী। এ পর্যন্ত ১১৪৬ টি যানবাহন আগুন ও ভাংচুরের শিকার হয়েছে এবং রেলে নাশকতা হয়েছে ১৪ দফা। অর্থনৈতিক ক্ষতির হিসাব আরো ভয়াবহ। ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রদত্ত হিসাব অনুযায়ী ব্যবসায়িক খাতে একদিনের হরতাল-অবরোধে ক্ষতি হয় ২ হাযার ৭০০ কোটি টাকা। গত ৪৪ দিনের হরতাল-অবরোধে ১ লাখ ২০ হাযার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে নাশকতা-অরাজকতা ঠেকানোর জন্য বিপুল সংখ্যক আইন-শৃংখলা বাহিনীর পিছনে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে ১৮৮ কোটি টাকা। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনী যখন-তখন যে কাউকে ধরে গুলি করার অবাধ স্বাধীনতা পাওয়ায় জনজীবনে চরম আতংক ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। পুলিশী নিরাপত্তার মাঝে কিছু গণপরিবহন চলাচল করলেও পেট্রোল বোমা হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না তাঁরা। বরং প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও এরূপ হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিরল ঘটনা
মহিলা রোগীর চোখ থেকে জীবন্ত কৃমি অপসারণ
পটুয়াখালী এনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এম. এ. জলীল গত ৯ই ফেব্রুয়ারী দুপুরে উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পটুয়াখালীর বাউফলের ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বেগমের চোখ থেকে বিরল একটি কৃমি অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করেন। তিনি জানান, চিকিৎসা বিজ্ঞানে চোখের মধ্যে জীবন্ত কৃমি পাওয়া বিরল ঘটনা। বাংলাদেশে এটি দ্বিতীয় এবং পৃথিবীতে এটি অষ্টম ঘটনা। তিনি বলেন, আনোয়ারা বেগম চোখ লাল সহ চুলকানি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষার পর তিনি চোখের ভিতরে জীবন্ত একটি কৃমির নড়াচড়া দেখতে পান। তিনি বলেন, রোগীর চোখে এরূপ কৃমি মারা গেলে চোখ নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এমনকি চোখ উঠিয়ে ফেলতে হ’তে পারে। তার মতে সাধারণত যারা অর্ধ সিদ্ধ মাছ বা গোশত খান তাদের মধ্যে এটি বেশী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও দূষিত পানি পানের মাধ্যমে পেট থেকে শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং সেখান থেকে রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে যেতে পারে।
বিদেশ
সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ ডায়াবেটিসের ওষুধ!
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের প্রধান গাছ ‘সুন্দরী’র পাতা ও শ্বাসমূলে এমন কিছু ভেষজ উপাদান আছে, যা ‘টাইপ-টু ডায়াবেটিস’ সারিয়ে তুলতে বিশেষভাবে কার্যকর হ’তে পারে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘আর জে কর’ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ আবিষ্কারের দাবী করেছেন। অচিরেই তারা এর উদ্ভাবনী স্বত্বের জন্য আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন লাগোয়া লোকালয়ের মানুষদের ভেষজ চিকিৎসা ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে গবেষণাটি শুরুর পর সুন্দরীগাছের এমন ঔষধি গুণের কথা জানতে পারেন তারা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হ’ল, সুন্দরীগাছের পাতা, শ্বাসমূলসহ অন্যান্য অংশেও এমন কিছু উপাদান আছে, যা সুগার লেভেল স্বাভাবিক করে দেয়। কিন্তু স্বাভাবিক মাত্রার তুলনায় আরো কমিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার বিপদ ডেকে আনে না। ডায়াবেটিস সারাতে সুন্দরীগাছের এমন ঔষধি গুণের কথা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর আগে কখনো জানা যায়নি বলেও দাবী করেছেন তারা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পাঁচ বছর ধরে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে গবেষণাটি চালানো হয়।
কুড়িয়ে পাওয়া ২১৮ কোটি টাকা ফেরত!
জাপানের রাজধানী টোকিওর নাগরিকেরা কুড়িয়ে পাওয়া ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত দিয়েছেন। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ২১৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এএফপি জানায়, এটা জাপানীদের তাক লাগানোর মত সততার একটি নযীর। টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, সম্প্রতি টোকিওর কয়েকজন নাগরিক ৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন জাপানী ইয়েনভর্তি একটি ব্যাগ পান। এরপর তারা সেটি তাদের স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করেন। খেলাধূলার একটি ব্যাগে ঐ অর্থ ছিল, যা দিয়ে অনায়াসে টোকিওতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনা যেত।
ঐ মুখপাত্র আরও জানান, হারিয়ে যাওয়া অর্থের ৭৪ শতাংশই প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। জাপানের আইনানুসারে কুড়িয়ে পাওয়া অর্থের মালিককে তিন মাসের মধ্যে না পাওয়া গেলে, অর্থ প্রাপক তা খরচ করতে পারবেন। কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হ’ল, কুড়িয়ে পাওয়া এ টাকায় প্রাপকেরা তাদের অধিকার পরিত্যাগ করায় সেটি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়। যার পরিমাণ জাপানী মুদ্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ইয়েন ।
[মানবতার এই উচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য আমরা প্রাপকদের ধন্যবাদ জানাই। কতইনা ভাল হ’ত যদি তারা এর বিনিময়ে আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি কামনা করত এবং পরকালে এর উত্তম প্রতিদান ও জান্নাত প্রার্থনা করত। তাহ’লে তাদের মানবতা সর্বদা ও সর্বত্র অটুট থাকত এবং প্রকৃত অর্থে নিঃস্বার্থ এবং অনুকরণীয় হ’ত। আমরা তাদেরকে প্রকৃত মুসলিম হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। সাথে সাথে এথেকে অন্যদের শিক্ষা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি (স.স.)]
বিলিয়নিয়ারের সংখ্যায় তৃতীয় এবং অস্ত্র আমদানীতে শীর্ষে
ভারতের ৩০ কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নীচে
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতের ৩০ কোটি মানুষ এখন চরম দারিদ্রে্যর মাঝে বসবাস করছে। অথচ চলতি বছরের ডিসেম্বরেই ভারতের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সময়সীমা শেষ হ’তে যাচ্ছে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের উক্ত ৩০ কোটি মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও বিদ্যুৎ সুবিধাসহ মৌলিক সামাজিক সেবাসমূহ থেকেও বঞ্চিত। এদিকে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় ভারত বিশ্বের শীর্ষে। কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী ২০১৫ সালের প্রথম ৪৫ দিনে কেবল মহারাষ্ট্রের মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলে ৯৩ জন কৃষক ঋণের চাপ সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করেছে।
অন্যদিকে বিলিয়নিয়ার ক্লাবের সদস্য ভারতে ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে বিলিয়নিয়ারের হিসাবে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। ইতিমধ্যে ভারত বিলিয়নিয়ারের সংখ্যায় পিছনে ফেলেছে রাশিয়াকে। এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারতে এখন বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ৯৭ জন। গবেষণা সংস্থা হুরুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। কেবল অর্থনৈতিক মন্দার সাল ২০১৪ সালেই বিলিয়নিয়ার ক্লাবের তালিকায় দেশটির ২৭ জন যুক্ত হয়েছে। এছাড়া অস্ত্র আমদানীতেও ভারত ২০১০ সাল থেকে শীর্ষ স্থান দখল করে রেখেছে। কেবল ২০১৩ সালেই তারা প্রায় ৫৫৮ কোটি ডলারের অস্ত্র ক্রয় করেছে।
[এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। পুঁজিবাদের এই ভয়াল থাবা বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বিস্তার লাভ করেছে। এই অর্থনীতি ধনীকে আরও ধনী বানায় এবং দরিদ্রকে নিঃস্ব বানায়। তাই যতদিন পৃথিবীতে সূদবিহীন ইসলামী অর্থনীতি চালু না হবে, ততদিন এই হিংস্র দৃষ্টান্তই মানুষকে দেখতে হবে পৃথিবীতে। আমরা অনতিবিলম্বে দুনিয়া ও আখেরাত ধ্বংসকারী এই নিকৃষ্ট অর্থনীতির অবসান চাই (স.স.)]
মুসলিম শাসকরা ধর্মান্তরে বাধ্য করলে ভারতে হিন্দুই থাকতো না
-অধ্যাপক শেলডন
প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও ভাষাতাত্ত্বিক, যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দক্ষিণ এশিয়া চর্চা’ বিভাগের অধ্যাপক শেলডন পোলক বলেছেন, মুসলমান শাসকরা জোর করে ধর্মান্তর করালে ভারতে একজনও হিন্দু থাকত না। কারণ মুসলমান শাসকরা ভারতে প্রায় বারোশ’ বছর রাজত্ব করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারী বুধবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি নিজেকে ‘ইহুদী ব্রাহ্মণ’ বলে পরিচয় দেন।
পোলককে প্রশ্ন করা হয় যে, অনেকে বলেন, ইসলামী আক্রমণের পর সংস্কৃতের পতন হল, শাসকের দাপটে সবাই উর্দু, ফার্সি শিখতে ছুটল। জবাবে তিনি বলেন, বাজে কথা। তোমাদের বাংলার নবদ্বীপ বা মিথিলা সংস্কৃত ন্যায়চর্চার কেন্দ্র হয়েছিল সুলতানী আমলে। দারাশিকো বেদান্ত পড়েছেন বারাণসীর পন্ডিতদের কাছে। মুসলমান শাসকরা এ দেশে প্রায় বারোশ’ বছর রাজত্ব করেছিলেন। তারা জোর করে ধর্মান্তর করালে এ দেশে একজনও হিন্দু থাকত না। তাদের উৎসাহ না থাকলে সংস্কৃতও টিকে থাকত না। ধর্মের সঙ্গে ভাষার উত্থান-পতন গুলিয়ে তাই লাভ নেই।