শরীরের
ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মযবূত হওয়ায় করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হ’লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেঁচে যাচ্ছে প্রান্তিক পর্যায়ের খেটে
খাওয়া মানুষ। বিপাকে পড়ছেন আগে থেকেই ডায়াবেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে
আক্রান্তরা। ঝুঁকি বাড়ছে শারীরিক পরিশ্রম করেন না এমন মানুষদের মধ্যে।
তন্মধ্যে যারা বাড়িতে, গাড়িতে বা অফিসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ব্যবহার
করেন, তারা রয়েছেন আরো অধিক ঝুঁকিতে। কারণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিস কক্ষ,
বাসা, গাড়িতে করোনাভাইরাস দীর্ঘ সময় জীবিত থাকে।
ভাইরাস বিশেষজ্ঞ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. নযরুল ইসলাম বলেন, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে শারীরিক পরিশ্রমের সম্পর্ক আছে। একজন মানুষ যখন শারীরিক পরিশ্রম করে তখন শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করে। একই সঙ্গে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরের দূরতম প্রান্ত পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছে যায়। তখন শরীরের কোষগুলোতে শক্তি উৎপাদন শুরু হয়। প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। তিনি আরও বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে, গাড়িতে করোনাভাইরাস অনুকূল পরিবেশ পায়।
গত ১২ই মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন রংপুরের ধানকাটা শ্রমিক ফরহাদ হোসাইন। কুমিল্লায় এক বিদেশফেরত ব্যক্তির বাড়িতে ধানকাটতে গিয়েছিলেন তিনি। পরে ঐ প্রবাসীর সংস্পর্শে যাওয়া সবাইকে পরীক্ষা করে কয়েকজনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। যদিও কোন উপসর্গ প্রকাশ পায়নি। অতঃপর আট দিন পরেই তাদের করোনা নেগেটিভ আসে। এ ব্যাপারে ডা. নযরুল ইসলাম বলেন, তাদের দ্রুত সুস্থ হওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে। যেমন তারা বয়সে তরুণ ও তাদের শরীরে অন্য কোন জটিলতা নেই। ঐ শ্রমিকরা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন। তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম মযবূত হওয়ায় করোনা তাদের কাবু করতে পারেনি।
টাঙ্গাইলে করোনা আক্রান্ত ৬০ বছর বয়সী খলীল মিয়া। সময় কাটাতে তিনি ভোরে উঠে নিজের জমিতে কাজ করেন এবং রান্না করে খান। করোনার জন্য কোন ওষুধ খাওয়ারও প্রয়োজন পড়েনি। ১৪ দিনের মধ্যে তিনি এমনিতেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
জনস্বাস্থ্যবিদ আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসাইন বলেন, শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল এমন মানুষদের করোনাভাইরাস কাবু করে ফেলছে। তাই এ সময় নিয়মিত ব্যায়াম করা, শরীরে ইমিউনিটি বাড়ে এমন পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।