চট্টগ্রাম ১১ই মার্চ বুধবার :
অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ চট্টগ্রাম যেলার উদ্যোগে নগরীর
জিইসি মোড়ে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সুধী
সমাবেশে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
উপরোক্ত আহবান জানান। ‘আন্দোলন’-এর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী কেন্দ্রীয়
শিক্ষা সফর উপলক্ষে কক্সবাজার যাওয়ার পথে রাজশাহী হ’তে বিমান যোগে
চট্টগ্রাম পৌঁছে তিনি বাদ মাগরিব সুধী সমাবেশে যোগদান করেন।
তিনি তাঁর বক্তব্যে সূরা আন‘আমের ৪৮-৫০ আয়াত পাঠ করে বলেন, নবী-রাসূলগণ পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন মানুষকে জান্নাতের পথ দেখাতে ও জাহান্নামের পথ থেকে সতর্ক করতে। তিনি বলেন, প্রকৃত জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করেন। মানুষের জ্ঞান সসীম কিন্তু আল্লাহর জ্ঞান অসীম। অসীম জ্ঞানের মালিক আল্লাহ সামান্য কিছু জ্ঞান দিয়ে মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। সসীম জ্ঞান কখনো অসীম জ্ঞানকে বাতিল করতে পারে না। বরং তা অসীম জ্ঞানের ব্যাখ্যাকারী হ’তে পারে। তাই আমাদেরকে জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বদলে অহী ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। ইসলামের মূল থিম হ’ল তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাত। শিরকবিমুক্ত নির্ভেজাল তাওহীদে বিশ^াস, বিদ‘আতমুক্ত বিশুদ্ধ সুন্নাত ও প্রকৃত ইখলাছ ব্যতীত কোন সৎকর্ম আল্লাহর নিকট কবুল হয় না। সৎকর্ম যদি কুরআন ও হাদীছের বিপরীত হয়, তবে তা আল্লাহর নিকট গৃহীত হবে না। নবী-রাসূলগণ অহি-র বিধান প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। তাঁরা গায়েবের খবর জানতেন না। অথচ পীর-ফকীররা কিভাবে জানতে পারেন? এজন্যই আল্লাহ তাঁর শেষ নবীকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তুমি বলে দাও, আমি তোমাদের একথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধনভান্ডার আছে। আর আমি অদৃশ্যের খবর রাখি না এবং একথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি কেবল অহি-র অনুসরণ করি যা আমার কাছে নাযিল করা হয়’ (আন‘আম ৬/৫০)।
বর্তমানের ভয়াবহ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ। তাই এথেকে বাঁচতে আল্লাহর পথে ফিরে আসতে হবে। তিনি বলেন, এদেশে রাজনীতির নামে যেমন চলছে ধোঁকাবাজী তেমনি ধর্মের নামে চলছে আরো বেশী ধোঁকাবাজী। বায়েযীদ বোস্তামী কখনো বাংলাদেশে আসেননি। তিনি ইরানের লোক। অথচ চট্টগ্রামে তাঁর নামে চলছে মাযার পূজা। আরব বণিকদের মাধ্যমে প্রথম ইসলামের দাওয়াত চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে বাংলাদেশে এসেছিল। অথচ ছূফী-পীর-ফকীরদের মাধ্যমে এদেশে ইসলাম এসেছিল বলে মিথ্যা প্রচার করা হয়। মৃত ব্যক্তিরা কবরে থেকে অন্যের কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না। অথচ সেই ধোঁকা দিয়ে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। আমরা আশা করি প্রকৃত ইসলামের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছে গেলে এদেশে কবর থাকবে, কিন্তু কবর পূজারী কেউ থাকবে না ইনশাআল্লাহ। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও তার অঙ্গ সংগঠন সমূহ সে কাজই করে যাচ্ছে। অতএব ফিরে আসুন আমাদের মূল শ্লোগানের দিকে। আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি।
চট্টগ্রাম যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি শেখ সা‘দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সুধী সমাবেশে কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে আরো বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা দুররুল হুদা ও দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম। যারা সকালেই পৌঁছে অন্যান্য সাথীদের সঙ্গে উত্তর পতেঙ্গাস্থ ‘আন্দোলন’ পরিচালিত বায়তুর রহমান আহলেহাদীছ জামে মসজিদে অবস্থান করছিলেন। অন্যেরা চট্টগ্রাম শহরের দর্শনীয় স্থান সমূহ পরিদর্শন করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বায়তুর রহমান আহলেহাদীছ জামে মসজিদ উত্তর পতেঙ্গার খতীব হাফেয মাওলানা রিয়াযুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক আরযু হোসাইন সাবিবর।