মহান আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। সাথে সাথে মানুষ আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলবে, এটা তার জন্য ফরয। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা তাঁর ইবাদতের অন্তর্গত। কিন্তু মানুষ বিভিন্ন সময়ে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে, আল্লাহর অবাধ্য হয়। এটাই পাপ। এ পাপ বর্জনের কিছু আদব রয়েছে। নিম্নে পাপ বর্জনের আদব সমূহ উল্লেখ করা হ’ল।-
১. পাপকে বড় মনে করা ও তাকে ছোট বা তুচ্ছ জ্ঞান না করা : গোনাহ যে পর্যায়েরই হোক না কেন তাকে ছোট মনে না করা। বরং তাকে পরকালে শাস্তির কারণ মনে করে তা থেকে বিরত থাকা যরূরী। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَأَنَّهُ قَاعِدٌ تَحْتَ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ، وَإِنَّ الْفَاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبَابٍ مَرَّ عَلَى أَنْفِهِ، ‘মুমিন ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে এত বিরাট মনে করে, যেন সে একটা পর্বতের নীচে উপবিষ্ট আছে, আর সে আশঙ্কা করছে যে, হয়তো পর্বতটা তার উপর ধ্বসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মত মনে করে, যা তার নাকের উপর দিয়ে চলে যায়’।[1]
অন্যত্র তিনি আরো বলেন,إِيَّاكُمْ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوبِ كَقَوْمٍ نَزَلُوْا فِىْ بَطْنِ وَادٍ فَجَاءَ ذَا بِعُوْدٍ وَجَاءَ ذَا بِعُوْدٍ حَتَّى أَنْضَجُوْا خُبْزَتَهُمْ وَإِنَّ مُحَقَّرَاتِ الذُّنُوْبِ مَتَى يُؤْخَذْ بِهَا صَاحِبُهَا تُهْلِكْهُ. ‘তোমরা ছোট ছোট গোনাহ থেকে বেঁচে থাক। তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ঐ সম্প্রদায়ের মত যারা কোন উপত্যকায় অবতরণ করেছে। অতঃপর প্রত্যেকে একটি করে কাঠ নিয়ে এসেছে। এমনকি তা স্তূপাকার ধারণ করেছে। যার দ্বারা তারা রুটি পাকাতে পারে। আর নিশ্চয়ই ছোট ছোট গোনাহ যখন পাপীকে পাকড়াও করবে তখন তাকে ধ্বংস করে ছাড়বে’।[2] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) আয়েশা (রাঃ)-কে বলেন,يَا عَائِشَةُ إِيَّاكِ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوبِ فَإِنَّ لَهَا مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ طَالِباً. ‘হে আয়েশা! তুমি ছোট ছোট গোনাহগুলো থেকে নিজেকে রক্ষা কর। কেননা সেটা লেখার জন্যও আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত আছেন’।[3]
২. পাপীদের সাথে অবস্থান না করা : পাপী ব্যক্তিদের সাথে ওঠাবসা না করার জন্য মুমিনদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,
إِيَّاكُمْ وَالْجُلُوسَ فِى الطُّرُقَاتِ. قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ مَا لَنَا بُدٌّ مِنْ مَجَالِسِنَا نَتَحَدَّثُ فِيْهَا. قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا أَبَيْتُمْ إِلاَّ الْمَجْلِسَ فَأَعْطُوا الطَّرِيقَ حَقَّهُ. قَالُوا وَمَا حَقُّهُ قَالَ غَضُّ الْبَصَرِ وَكَفُّ الأَذَى وَرَدُّ السَّلاَمِ وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىُ عَنِ الْمُنْكَرِ.
‘তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। সেখানে বসে আমরা আলোচনা করে থাকি। তিনি বললেন, একান্তই যদি বসতে হয়, তাহ’লে রাস্তার হক আদায় করবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, রাস্তার হক কী? তিনি বললেন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট দেওয়া হ’তে বিরত থাকা, সালামের জবাব দেওয়া, সৎকাজের আদেশ ও মন্দ কাজে বাধা দান করা’।[4]
মহান আল্লাহ বলেন,وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِيْنَ يَخُوضُوْنَ فِيْ آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ وَإِمَّا يُنْسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَى مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِيْنَ- ‘যখন তুমি দেখবে যে, লোকেরা আমাদের আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করছে, তখন তুমি তাদের থেকে সরে যাও, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় লিপ্ত হয়। আর যদি শয়তান তোমাকে এটা ভুলিয়ে দেয়, তাহ’লে স্মরণ হওয়ার পর আর যালেম সম্প্রদায়ের সাথে বসবে না’ (আন‘আম ৬/৬৮)।
৩. অন্তরকে পাপমুক্ত রাখা ও পাপের দিকে ঝুঁকে না যাওয়া : মানুষের অন্তর মন্দ প্রবণ। আল্লাহ ইউসুফ (আঃ)-এর ভাষ্য এভাবে উল্লেখ করেন,وَمَا أُبَرِّئُ نَفْسِيْ إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوْءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّيْ إِنَّ رَبِّيْ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ، ‘আর আমি নিজেকে নির্দোষ মনে করি না। নিশ্চয়ই মানুষের মন মন্দপ্রবণ। কেবল ঐ ব্যক্তি ছাড়া যার প্রতি আমার প্রভু দয়া করেন। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (ইউসুফ ১২/৫৩)। সুতরাং মানুষের অন্তরকে পাপের পঙ্কিলতা ও কলুষ-কালিমা মুক্ত রাখার চেষ্টা করা যরূরী। যাতে তা পাপের দিকে ঝুঁকে না পড়ে।
৪. উত্তম লোকদের সাথে অবস্থান করা : মানুষ তার সঙ্গী-সাথীর দ্বারা প্রভাবিত হয়। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন,الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ، ‘মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের সকলেরই খেয়াল রাখা উচিত সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে’।[5] তাই ভাল মানুষের সাথে মেশা এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্যই রাসূল (ছাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, لاَ تُصَاحِبْ إِلاَّ مُؤْمِنًا وَلاَ يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلاَّ تَقِىٌّ، ‘তুমি মুমিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেযগার লোকে খায়’।[6] বনী ইসরাঈলের ৯৯টি হত্যাকারীর তওবা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,اُخْرُجْ مِنَ الْقَرِيَةِ الْخَبِيْثَةِ الَّتِيْ أَنْتَ فِيْهَا إِلَى الْقَرِيَةِ الصَّالِحَةِ قَرِيَةِ كَذَا وَكَذَا (فَإِنَّ بِهَا أُنَاسًا يَعْبُدُوْنَ اللهَ فَاعْبُدْ رَبُّكَ (مَعَهُمْ) فِيْهَا (وَلاَ تَرْجِعْ إِلَى أَرْضِكَ فَإِنَّهَا أَرْضُ سُوْءٍ) ‘তুমি যে গ্রামে ছিলে তা একটি মন্দ গ্রাম। সেখান থেকে তুমি বের হয়ে অমুক উত্তম গ্রামের দিকে গমন কর। ঐ গ্রামে এমন কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহর ইবাদত করে। সুতরাং সেখানে গিয়ে তাদের সাথে তুমি তোমার রবের ইবাদত কর। আর তুমি তোমার দেশে ফিরে এসো না। কেননা সেটা মন্দ এলাকা’।[7]
৫. ইবাদতে রত হওয়া : আল্লাহর ইবাদতে সদা লিপ্ত থাকা যরূরী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ، وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ، ‘অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও। এবং তোমার প্রভুর দিকে রুজূ হও’ (শরহ ৯৪/৭-৮)। তিনি আরো বলেন, وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ، ‘আর তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর, যতক্ষণ না মৃত্যু তোমার নিকট উপস্থিত হয়’ (হিজর ১৫/৯৯)। আবার নিজে ইবাদত না করে অপরকে নির্দেশ দিলে পরকালে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন,يُجَاءُ بِالرَّجُلِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُلْقَى فِى النَّارِ، فَتَنْدَلِقُ أَقْتَابُهُ فِى النَّارِ، فَيَدُوْرُ كَمَا يَدُوْرُ الْحِمَارُ بِرَحَاهُ، فَيَجْتَمِعُ أَهْلُ النَّارِ عَلَيْهِ، فَيَقُوْلُوْنَ أَىْ فُلاَنُ، مَا شَأْنُكَ أَلَيْسَ كُنْتَ تَأْمُرُنَا بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَى عَنِ الْمُنْكَرِ قَالَ كُنْتُ آمُرُكُمْ بِالْمَعْرُوْفِ وَلاَ آتِيْهِ، وَأَنْهَاكُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَآتِيهِ. ‘ক্বিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন আগুনে পুড়ে তার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যাবে। এ সময় সে (নাড়ি-ভুঁড়িরর চার পাশে) ঘুরতে থাকবে যেমন গাধা তার চাকা নিয়ে তার চারপাশে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামবাসীরা তার নিকট একত্রিত হয়ে তাকে বলবে, হে অমুক ব্যক্তি! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমি না আমাদেরকে সৎ কাজের আদেশ করতে আর অন্যায় কাজ হ’তে নিষেধ করতে? সে বলবে, আমি তোমাদেরকে সৎ কাজের আদেশ করতাম বটে, কিন্তু আমি নিজে তা করতাম না। আর আমি তোমাদেরকে অন্যায় কাজ হ’তে নিষেধ করতাম ঠিকই, কিন্তু আমি নিজেই তা করতাম’।[8]
৬. পাপ থেকে সর্বদা তওবা-ইস্তেগফার করা : শয়তান সর্বদা মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে ব্যাপৃত আছে। তার প্ররোচনায় মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়। পাপ হয়ে গেলে সাথে সাথে তওবা করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন,وَالَّذِيْنَ إِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوْا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوْا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ اللهُ وَلَمْ يُصِرُّوْا عَلَى مَا فَعَلُوْا وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ، ‘যারা কখনো কোন অশ্লীল কাজ করলে কিংবা নিজের উপর কোন যুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে। অতঃপর স্বীয় পাপসমূহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। বস্ত্ততঃ আল্লাহ ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কে আছে? আর যারা জেনেশুনে স্বীয় কৃতকর্মের উপর হঠকারিতা প্রদর্শন করে না’ (আলে ইমরান ৩/১৩৫)।
রাসূল (ছাঃ)-এর পূর্বাপর সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার পরও তিনি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার তওবা-ইস্তেগফার করতেন। আগার আল-মুযানী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّهُ لَيُغَانُ عَلَى قَلْبِى وَإِنِّى لأَسْتَغْفِرُ اللهَ فِى الْيَوْمِ مِائَةَ مَرَّةٍ. ‘কখনো কখনো আমার হৃৎপিন্ডের উপরও আবরণ পড়ে। তাই আমি দৈনিক একশো বার ক্ষমা প্রার্থনা করি’।[9] অন্যত্র এসেছে, ইবনু আবূ মূসা (রহঃ) তাঁর পিতা হ’তে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (ছাঃ) এরূপ দো‘আ করতেন,
رَبِّ اغْفِرْ لِى خَطِيئَتِى وَجَهْلِى وَإِسْرَافِى فِى أَمْرِى كُلِّهِ، وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّى، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى خَطَايَاىَ وَعَمْدِى وَجَهْلِى وَهَزْلِى، وَكُلُّ ذَلِكَ عِنْدِى، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ، أَنْتَ الْمُقَدِّمُ، وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ، وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ.
‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আমার যেসব গুনাহ আপনি আমার চেয়ে অধিক জানেন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার ভুল-ত্রুটি, আমার ইচ্ছাকৃত গুনাহ ও আমার অজ্ঞতা এবং আমার উপহাসমূলক গুনাহ আর এ রকম গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন যেসব গুনাহ আমি আগে করেছি। আপনিই অগ্রবর্তী করেন, আপনিই পশ্চাদবর্তী করেন এবং আপনিই সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান’।[10] গোনাহের পরিণতি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا أَخْطَأَ خَطِيْئَةً نُكِتَ فِيْ قَلْبِهِ نُكْتَةٌ فَإِنْ هُوَ نَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ وَتَابَ صُقِلَتْ فَإنْ عَادَ زِيْدَ فِيْهَا وَإِنْ عَادَ زِيْدَ فِيْهَا حَتَّى تَعْلُوَ فِيْهِ فَهُوَ الرَّانُ الَّذِيْ ذَكَرَ اللهُ جَلَّ وَعَلاَ : كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ (المطففين 14)-
আবু হুরায়রা (রাঃ) ‘নিশ্চয়ই বান্দা যখন গোনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। অতঃপর যদি সে তা ত্যাগ করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে ও তওবা করে তখন তার দাগ চলে যায়। যদি সে পুনরায় পাপ করে তখন তার দাগ বৃদ্ধি পায়। অতঃপর সে পাপ করলে তার দাগ বৃদ্ধি পায়। এমনকি তা আরো উচ্চ হয়। এটাই হচ্ছে মরিচা, যার কথা মহান আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। (তিনি বলেন,) ‘কখনই না। বরং তাদের অপকর্মসমূহ তাদের অন্তরে মরিচা ধরিয়েছে’ (মুতাফফিফীন ৮৩/১৪)।[11]
গোনাহ করার পর তওবা করলে আল্লাহ সেই পাপ ক্ষমা করে দেন। মহান আল্লাহ বলেন,إِلَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَئِكَ يُبَدِّلُ اللهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَحِيْمًا، ‘তবে তারা ব্যতীত, যে তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে। আল্লাহ তাদের পাপসমূহকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন’ (ফুরক্বান ২৫/৭০)।
৭. পাপ প্রকাশ না করা : পাপ করার পর তা প্রকাশ করা যাবে না। কেননা আল্লাহ বান্দার পাপ গোপন রাখেন। কিন্তু বান্দা নিজে তা প্রকাশ করলে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
كُلُّ أُمَّتِى مُعَافًى إِلاَّ الْمُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ الْمَجَانَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلاً، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللهُ، فَيَقُولَ يَا فُلاَنُ عَمِلْتُ الْبَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللهِ عَنْهُ.
‘আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল’।[12]
তিনি আরো বলেন,يَدْنُو أَحَدُكُمْ مِنْ رَبِّهِ حَتَّى يَضَعَ كَنَفَهُ عَلَيْهِ فَيَقُولُ عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا. فَيَقُولُ نَعَمْ. وَيَقُولُ عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا. فَيَقُولُ نَعَمْ. فَيُقَرِّرُهُ ثُمَّ يَقُولُ إِنِّى سَتَرْتُ عَلَيْكَ فِى الدُّنْيَا، فَأَنَا أَغْفِرُهَا لَكَ الْيَوْمَ. ‘তোমাদের এক ব্যক্তি তার প্রতিপালকের এত কাছাকাছি হবে যে, তিনি তার উপর তাঁর নিজস্ব আবরণ টেনে দিয়ে দু’বার জিজ্ঞেস করবেন, তুমি এই এই কাজ করেছিলে? সে বলবে, হ্যাঁ। আবার তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তুমি এই এই কাজ করেছিলে? সে বলবে, হ্যাঁ। এভাবে তিনি তার স্বীকারোক্তি গ্রহণ করবেন। এরপর বলবেন, আমি দুনিয়াতে তোমার এগুলো লুকিয়ে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ ক্ষমা করে দিলাম’।[13]
৮. পাপের পর নেকীর কাজ করা : শয়তানের প্ররোচনায় পাপ হয়ে গেলে, বুঝতে পারার পর তওবা করা এবং তারপর নেকীর কাজ করা যরূরী। যাতে নেকীর কাজ পাপকে মিটিয়ে দেয়। আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল,
يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّى عَالَجْتُ امْرَأَةً فِى أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَإِنِّى أَصَبْتُ مِنْهَا مَا دُونَ أَنْ أَمَسَّهَا فَأَنَا هَذَا فَاقْضِ فِىَّ مَا شِئْتَ. فَقَالَ لَهُ عُمَرُ لَقَدْ سَتَرَكَ اللهُ لَوْ سَتَرْتَ نَفْسَكَ قَالَ فَلَمْ يَرُدَّ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا فَقَامَ الرَّجُلُ فَانْطَلَقَ فَأَتْبَعَهُ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً دَعَاهُ وَتَلاَ عَلَيْهِ هَذِهِ الآيَةَ (أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ) فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ يَا نَبِىَّ اللهِ هَذَا لَهُ خَاصَّةً قَالَ بَلْ لِلنَّاسِ كَافَّةً.
‘আমি মদীনার শেষ প্রান্তে এক মহিলাকে স্পর্শ করেছি এবং আমি তার সাথে সহবাস ব্যতীত সবই করেছি। আমি এখন আপনার নিকট এসেছি। আপনি যা ইচ্ছা আমার ব্যাপারে ফায়ছালা করেন। ওমর (রাঃ) তাকে বললেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমার অপরাধ গোপন রেখেছেন। এখন তুমিও যদি তা গোপন রাখতে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কারো কথায় প্রতিউত্তর করলেন না। লোকটি উঠে চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে তাকে ডেকে আনেন এবং এই আয়াত পাঠ করে শুনান (অনুবাদ): ‘আর তুমি ছালাত কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তে ও রাত্রির কিছু অংশে। নিশ্চয়ই সৎকর্মসমূহ মন্দ কর্মসমূহকে বিদূরিত করে। আর এটি (অর্থাৎ কুরআন) হ’ল উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য (সর্বোত্তম) উপদেশ’ (হূদ ১১/১১৪)। উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন বলল, এটা কি শুধু তার বেলায় প্রযোজ্য? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, না, বরং সকলের জন্য।[14]
আপর হাদীছে এসেছে, আবূ যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে বলেছেন,اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ. ‘তুমি যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় কর, মন্দ কাজের পরপরই ভাল কাজ কর, তাতে মন্দ দূরীভূত হয়ে যাবে এবং মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর’।[15]
৯. পাপের কারণে অন্যকে তিরস্কার না করা : পাপের কারণে কাউকে তিরস্কার না করে তাকে সংশোধনের জন্য নছীহত করা যরূরী। যাতে সে পাপাচার থেকে তওবা করে। আবার তাকে তাচ্ছিল্য করে একথা বলাও সমীচীন নয় যে, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না। কেননা এরূপ বলার পরিণতি ভয়াবহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন,قَالَ رَجُلٌ وَاللهِ لاَيَغْفِرُ اللهُ لِفُلاَنٍ فَقَالَ اللهُ مَنْ ذَا الَّذِيْ يَتَأَلَّى عَلَيَّ أَنْ لاَّ أَغْفِرَ لِفُلاَنٍ فَإِنِّيْ قَدْ غَفَرْتُ لِفُلاَنٍ وَأَحْبَطْتُ عَمَلَكَ، ‘জনৈক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না। তখন আল্লাহ বলেন, কে আমার উপরে কসম দিতে পারে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করব না। আমি অমুক ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমার আমল বরবাদ করে দিলাম’।[16]
১০. নিরাশ না হয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করা : হতাশ বা নিরাশ হওয়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। পাপ কাজ হয়ে গেলে হতাশ না হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া ও তওবা করা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন,قُلْ يَاعِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوْا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَحْمَةِ اللهِ إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ، ‘বল, হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (যুমার ৩৯/৫৩)। তিনি আরো বলেন,وَتُوْبُوْا إِلَى اللهِ جَمِيْعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ، ‘আর হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে যাও, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (নূর ২৪/৩১)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন,وَالَّذِيْنَ لاَ يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُوْنَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا- يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيْهِ مُهَانًا- إِلاَّ مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَئِكَ يُبَدِّلُ اللهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَحِيْمًا- ‘যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন উপাস্যকে আহবান করে না এবং যারা আল্লাহ যাকে হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, ন্যায় সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং যারা ব্যভিচার করেনা। যারা এগুলি করবে তারা শাস্তি ভোগ করবে। ক্বিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুণ হবে এবং তারা সেখানে লাঞ্চিত অবস্থায় চিরকাল থাকবে। তবে তারা ব্যতীত, যে তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে। আল্লাহ তাদের পাপসমূহকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু’ (ফুরক্বান ২৫/৬৮-৭০)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন,قَالَ اللهُ يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِى وَرَجَوْتَنِى غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلاَ أُبَالِى يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِى غَفَرْتُ لَكَ وَلاَ أُبَالِى يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِى بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتَنِى لاَ تُشْرِكُ بِى شَيْئًا لأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً. ‘হে আদম সন্তান! যতক্ষণ আমাকে তুমি ডাকতে থাকবে এবং আমার হ’তে (ক্ষমা পাওয়ার) আশায় থাকবে, তোমার গুনাহ যত অধিক হোক, তোমাকে আমি ক্ষমা করব, এতে কোন পরওয়া করব না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহর পরিমাণ যদি আসমানের কিনারা বা মেঘমালা পর্যন্তও পেঁŠছে যায়, তারপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি পরওয়া করব না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি সম্পূর্ণ পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়েও আমার নিকট আস এবং আমার সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করে থাক, তাহ’লে তোমার কাছে আমিও পৃথিবী পূর্ণ ক্ষমা নিয়ে হাযির হব’।[17] তিনি আরো বলেন,إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوْبَ مُسِىءُ النَّهَارِ وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوْبَ مُسِىءُ اللَّيْلِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا، ‘আল্লাহ তা‘আলা রাতে নিজের হাত বাড়িয়ে দেন, যাতে দিনের বেলায় গুনাহকারীরা তাওবাহ করতে পারেন। আবার দিনের বেলায় তিনি তার হাত বাড়িয়ে দেন, যাতে রাতের বেলায় গুনাহকারীর তওবাহ করতে পারেন। এভাবে তিনি হাত প্রসারিত করতে থাকবেন, যতদিন না সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হয়’।[18]
মানুষের মাঝে কামনা-বাসনা আছে এবং তাদের বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তান সদা তৎপর। তাই মানুষের দ্বারা পাপ কাজ সংঘটিত হওয়া অসম্ভব নয়। কিন্তু সে পাপের মাঝে ডুবে না থেকে তওবা করে তা থেকে ফিরে আসা অতিব যরূরী। কেননা মানুষের সীমিত জীবনকালে এবং হঠাৎ আগমনকারী মৃত্যুর কারণে যে তওবার সুযোগ নাও পেতে পারে। তাই পাপের পরে অবিলম্বে তওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে নিজেকে মুক্ত করে নেওয়া আবশ্যক। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পাপমুক্ত হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!
[1]. বুখারী হা/৬৩০৮; তিরমিযী হা/২৪৯৭; মিশকাত হা/২৩৫৮।
[2]. আহমাদ হা/২২৮৬০; ছহীহাহ হা/৩৮৯, ৩১০২।
[3]. আহমাদ হা/২৪৪৬০; মিশকাত হা/৫৩৫৬; ছহীহাহ হা/২৭৩১।
[4]. মুসলিম হা/২১২১; ছহীহাহ হা/২৫০১।
[5]. আবূদাঊদ হা/৪৮৩৩; তিরমিযী হা/২৩৭৮; মিশকাত হা/৫০১৯; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৫৪৫।
[6]. আবূদাঊদ হা/৪৮৩২; তিরমিযী হা/২৩৯৫; মিশকাত হা/৫০১৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৩৪১।
[7]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭০৬৬; ছহীহাহ হা/২৬৪০; ছহীহ আত-তারগীব হা/৩১৫১।
[8]. বুখারী হা/৩২৬৭; মিশকাত হা/৫১৩৯।
[9]. মুসলিম হা/২৭০২; আবূদাঊদ হা/১৫১৫; মিশকাত হা/২৩২৪।
[10]. বুখারী হা/৬৩৯৮, ৬৩৯৯; মুসলিম হা/২৭১৯।
[11]. ছহীহ ইবনে হিববান হা/২৭৮৭; আত-তা‘লীকাতুল হিসান হা/২৭৭৬, সনদ ছহীহ।
[12]. বুখারী হা/৬০৬৯; মুসলিম হা/২৯৯০; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৫১২।
[13]. বুখারী হা/৬০৭০, ৭৫১৪, ২৪৪১।
[14]. মুসলিম হা/২৭৬৩; তিরমিযী হা/৩১১২; ইবনু মাজাহ হা/১৩৯৮; মিশকাত হা/৫৭৫।
[15]. তিরমিযী হা/১৯৮৭; মিশকাত হা/৫০৮৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৯৭।
[16]. ছহীহাহ হা/২০১৪।
[17]. তিরমিযী হা/৩৫৪০; মিশকাত হা/২৩৩৬; ছহীহাহ হা/১২৭-২৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৩৩৮।
[18]. মুসলিম হা/২৭৫৯; মিশকাত হা/২৩২৯; ছহীহাহ হা/৩৫১৩; ছহীহ আত তারগীব হা/৩১৩৫; ছহীহুল জামে‘ হা/১৮৭১।