ভূমিকা :

অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে অন্তঃসারশূন্য ও বরবাদ করার জন্য যত প্রকার অর্থনৈতিক দুর্নীতি আছে তন্মধ্যে অন্যতম হ’ল মজুদদারী। মজুদদারির প্রভাবে দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়। এতে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় এবং জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের ওঠে নাভিশ্বাস। তাই ইসলামে মজুদদারী হারাম। এতদসত্ত্বেও বাজারের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী এহেন দুষ্কর্ম ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাইতো আধুনিক অর্থনীতি গবেষক ড. আহমাদ আরাফাহ বলেন, ولقد أصبح الاحتكار ركيزة من ركائز النظام الرأسمالي الحديث، وسمة من سمات التعامل الاقتصادي في معظم الشركات، رغم أنه يحمل في طياته بذور الهلاك والدمار لما يسببه في ظلم وعنت وغلاء وبلاء، ولما فيه من إهدار لحرية التجارة والصناعة، وسد لمنافذ العمل وأبواب الرزق أمام غير المحتكرين. ‘মজুদদারী আধুনিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি এবং অধিকাংশ কোম্পানীতে অর্থনৈতিক লেনদেনের অন্যতম বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। অথচ এটি তার অভ্যন্তরে ধ্বংস ও বিনাশের বীজ বহন করে। কারণ এটি যুলুম, অন্যায়, মূল্যবৃদ্ধি ও বালা-মুছীবতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া এতে ব্যবসা ও শিল্পের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয় এবং মজুদদার নন এমন ব্যক্তিদের সামনে কর্মক্ষেত্র ও জীবন-জীবিকার দারসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়’।[1]

মজুদদারির সংজ্ঞা :

আভিধানিক অর্থ : মজুদদারির আরবী প্রতিশব্দ ‘আল-ইহতিকার’(اَلْاِحْتِكَارُ)  বা ‘আল-হুকরাহ’(اَلْحُكْرَةُ) ।[2] মূলত اَلْحُكْرُ ও اَلْحُكْرَةُ হল إسم বা বিশেষ্য এবং احتكار বাবে افتعال -এর মাছদার বা ক্রিয়ামূল।[3]

প্রথম আরবী অভিধান রচয়িতা খলীল ইবনু আহমাদ আল-ফারাহীদী বলেন,الحَكْرُ: ما احتَكرْتَ من طَعامٍ ونحوِه ممّا يُؤكَلُ، ومعناه: الجمعُ، والفعل: احتَكَر وصاحبه مُحتَكِرٌ ينتظر باحتباسه الغلاء- ‘খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যজাত অন্যান্য জিনিস মজুদ করাকে মজুদদারী বলে। এর অর্থ: জমা করা। এর ক্রিয়া اِحْتَكَرَ আর যে মূল্য বৃদ্ধির অপেক্ষায় খাদ্যদ্রব্য জমা করে রাখে তাকে مُحتَكِرٌ বা মজুদদার বলে’।[4]

আল-জাওহারী বলেন, احْتِكارُ الطعام: جَمْعه وحَبْسه يُتَربَّصُ به الغلاُء- وهو الحُكْرَةُ بالضم ‘খাদ্যদ্রব্য মজুদকরণ হ’ল, মূল্যবৃদ্ধির অপেক্ষায় খাদ্য জমা করা ও আটকে রাখা। এটাই হল মজুদদারী’।[5]

ইবনু ফারিস বলেন,

(حَكَرَ) الْحَاءُ وَالْكَافُ وَالرَّاءُ أَصْلٌ وَاحِدٌ، وَهُوَ الْحَبْسُ. وَالْحُكْرَةُ: حَبْسُ الطَّعَامِ مُنْتَظِرًا لِغَلَائِهِ، وَهُوَ الْحُكْرُ، وَأَصْلُهُ فِي كَلَامِ الْعَرَبِ الْحَكَرُ، وَهُوَ الْمَاءُ الْمُجْتَمِعُ، كَأَنَّهُ احْتُكِرَ لِقِلَّتِهِ-

‘(حَكَرَ) হা, কাফ ও রা মূল অক্ষর। অর্থ : আটকে রাখা। মূল্যবৃদ্ধির অপেক্ষায় খাদ্যদ্রব্য আটকে রাখাকে الحُكْرَة বা মজুদদারী বলে। এটাই হল الحُكْر। আরবদের বাকরীতিতে এর মূল হল الحَكَر অর্থাৎ জমে থাকা পানি। যেন পানির স্বল্পতার দরুণ তা আটকে গেছে’।[6]

ইবনু মানযূর বলেন, الحَكْرُ: ادِّخارُ الطَّعَامِ للتَّرَبُّصِ، وصاحبُه مُحْتَكِرٌ ‘মূল্যবৃদ্ধির প্রতীক্ষায় খাদ্যদ্রব্য মজুদ করে রাখা হ’ল মজুদদারী। আর যে মজুদ করে রাখে তাকে مُحْتَكِرٌ বা মজুদদার বলে’।[7]

মাজদুদ্দীন ফিরোযাবাদী বলেন,

الحَكْرُ: الظُّلْمُ، وإساءَةُ المعاشَرَةِ... وبالتحريكِ:ما احْتُكِرَ، أي احْتُبِسَ انْتِظَاراً لِغَلائِهِ-

‘الحَكْرُ অর্থ : অত্যাচার ও খারাপ আচরণ। আর কাফ বর্ণে যবর অর্থাৎ اَلْحكَرُ হ’ল মূল্যবৃদ্ধির অপেক্ষায় যা মজুদ করে রাখা হয়’।[8]

আল-আযহারী বলেন, الحَكْر: الظُّلْمُ والتَّنَقُّصُ وسُوء العِشْرَةِ. يُقَالُ: فُلَانٌ يَحْكِرُ فُلَانًا إِذا أَدْخَلَ عَلَيْهِ مَشَقّة ومَضَرَّة فِي مُعاشَرَته ومُعايَشَته، ‘আল-হাকর অর্থ: যুলুম, হ্রাস করা ও মন্দ আচরণ। জীবন-জীবিকা ও আচরণগত দিক থেকে কেউ কাউকে কষ্ট প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্ত করলে বলা হয়,فُلَانٌ يَحْكِرُ فُلَانًا।[9] ইবনু শুমাইল বলেন,إنَّهم لَيَتَحَكَّرُون فِي بَيْعهم: ينظُرون ويَتَربَّصُون- ‘তারা তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে মজুদদারী করে অর্থাৎ তারা মূল্যবৃদ্ধির প্রতীক্ষায় থাকে’।[10]

পারিভাষিক অর্থ : الاحتكار বা মজুদদারির পারিভাষিক অর্থ বর্ণনা করতে গিয়ে হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন,إِمْسَاكُ الطَّعَامِ عَنِ البيع وانتظارُ الغلاءِ مَعَ الِاسْتِغْنَاءِ عَنْهُ وَحَاجَةِ النَّاسِ إِلَيْهِ- ‘নিজের প্রয়োজন মুক্ত থাকা ও জনগণের প্রয়োজন সত্ত্বেও মূল্য বৃদ্ধির অপেক্ষায় খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করা থেকে বিরত থাকাকে মজুদদারী বলে’।[11] ইমাম আবুদাঊদ (রহঃ) বলেন,سَأَلْتُ أَحْمَدَ مَا الْحُكْرَةُ؟ قَالَ مَا فِيهِ عَيْشُ النَّاسِ: أَيْ: حَيَاتُهُمْ وَقُوتُهُمْ، ‘আমি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন জিনিস গুদামজাত করা নিষেধ? তিনি বললেন, মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস। অর্থাৎ যাতে মানুষের জীবন ও জীবিকা (খাদ্য) রয়েছে’। ইমাম আওযাঈ (রহঃ) বলেন, الْمُحْتَكِرُ مَنْ يَعْتَرِضُ السُّوقَ؛ أَيْ: يَنْصِبُ نَفْسَهُ لِلتَّرَدُّدِ إلَى الْأَسْوَاقِ لِيَشْتَرِيَ مِنْهَا الطَّعَامَ الَّذِي يَحْتَاجُونَ إلَيْهِ لِيَحْتَكِرَهُ ু ‘যে ব্যক্তি (কোন জিনিস) বাজারজাত করার পথে প্রতিবন্ধক হয় সেই মজুদদার। অর্থাৎ বাজারে বাজারে ঘুরে মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য মজুদকরণের উদ্দেশ্যে ক্রয় করার কাজে যে নিজেকে নিয়োজিত করে তাকে মজুদদার বলে’।[12]

মদীনা মুনাওয়ারায় অবস্থিত তায়বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রফেসর ড. মাহমূদ আবূ যায়েদ আছ-ছূছূ বলেন,الاحتكار هو إمساك ما اشتراه التاجر وقت الغلاء ليبيعه بأكثر مما اشتراه عند اشتداد الحاجة ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময় ব্যবসায়ী কর্তৃক ক্রয়কৃত পণ্য বিক্রি করা থেকে বিরত থাকা, যাতে মানুষের তীব্র প্রয়োজনের সময় সে ক্রয়কৃত মূল্যের চেয়ে বেশী দামে তা বিক্রি করতে পারে’।[13]

মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর শায়খ আতিইয়া মুহাম্মাদ সালিম বলেন, الاحتكار: هو جمع السلعة أياً كانت، سواء كانت من المطعومات، أو الملبوسات، أو أدوات منزلية، أو أي نوع من الأنواع، جمعه واحتكره لنفسه وسكت عليه، ‘যেকোন পণ্য জমা করাকে মজুদদারী বলে। চাই সেটা খাদ্যদ্রব্য হোক, পোষাক-পরিচ্ছদ হোক বা গার্হস্থ্য জিনিসপত্র হোক অথবা যে কোন প্রকারের জিনিস হোক। সে সেটা সংগ্রহ করে নিজের জন্য মজুদ করে রেখেছে এবং (বিক্রি না করে) চুপ থেকেছে’।[14]

আধুনিক গবেষক আহমাদ হিলমী সায়ফ আন-নাছর বলেন, الاحتكار اصطلاحا هو حبس ما يحتاج إليه الناس، سواء كان طعاما أو غيره، ممّا يكون في احتباسه إضرار بالناس ‘পরিভাষায় মজুদদারী হ’ল, মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিস আটকে রাখা। সেটা খাদ্যদ্রব্য হোক বা অন্য কিছু। যা আটকে রাখলে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়’।[15]

মজুদদারের প্রকারভেদ :

মজুদদার দুই প্রকার। ১. যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতীক্ষায় থাকে না। বরং বাজারে পণ্যের মূল্য সস্তা ও পণ্যদ্রব্য পর্যাপ্ত দেখে নিজের জন্য তা কিনে জমা করে রাখে। মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর শায়খ আতিইয়া মুহাম্মাদ সালিম বলেন,وهذا لا يسمى محتكراً، بل يسمى خازن خزن لنفسه، ويجوز للإنسان أن يخزن لنفسه ما يكفي بيته سنة- ‘এরূপ ব্যক্তিকে মজুদদার বলে না। বরং তাকে সঞ্চিতকারী/গুদামজাতকারী বলা হয়। সে নিজের জন্য জমা করে রেখেছে। আর মানুষের জন্য তার বাড়ীর এক বছরের প্রয়োজনীয় জিনিস জমা করে রাখা জায়েয’।

২. দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতীক্ষায় যে জিনিসপত্র মজুদ করে রাখে এবং মানুষের প্রয়োজন যখন তীব্র হয় তখন সে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চমূল্যে পণ্য বিক্রি করে। এই দ্বিতীয় প্রকার ব্যক্তিই প্রকৃত মজুদদার। হাদীছে এরূপ মজুদদারকেই পাপী বা অপরাধী বলা হয়েছে।[16]

মজুদদারির বিধান :

মজুদদারির বিধান সম্পর্কে ফকীহগণের মধ্যে দুই ধরনের মত রয়েছে।

প্রথম মত : মজুদদারী হারাম। মালেকী, শাফেঈ, হাম্বলী সহ অধিকাংশ ফকীহর মত এটি। এরা কুরআন, সুন্নাহ, আছার ও যুক্তি দ্বারা দলীল পেশ করেছেন।

প্রথমত : কুরআনের দলীল

মহান আল্লাহ বলেন,وَمَنْ يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ- ‘বস্ত্ততঃ যে ব্যক্তি সেখানে (হারামে) অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করতে চাইবে, আমরা তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো’ (হজ্জ ২২/২৫)। হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন, وَقَالَ حَبِيبُ  بْنُ أَبِي ثَابِتٍ: وَمَنْ يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ قَالَ: الْمُحْتَكِرُ بِمَكَّةَ. وَكَذَا قَالَ غَيْرُ وَاحِدٍ- ‘হাবীব বিন আবু ছাবিত যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে হারামে ধর্মদ্রোহী কাজ করতে চাইবে’ এর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘মক্কায় পণ্য মজুদকারী ব্যক্তি’। আরো অনেকে এরূপ বলেছেন’।[17] ইবনু আববাস (রাঃ) বলেছেন,الاحتكار بمكة من الإلحاد في الحرم ‘মক্কায় মজুদদারী হারামে ধর্মদ্রোহী কাজের অন্তর্ভুক্ত’।[18] ওমর (রাঃ) বলেন,لَا تَحْتَكِرُوا الطَّعَامَ بِمَكَّةَ فَإِنَّهُ إِلْحَادٌ، ‘তোমরা মক্কায় খাদ্যদ্রব্য মজুদ করো না। কেননা তা ধর্মদ্রোহী কাজ’।[19]

মুহাম্মাদ সাইয়িদ তানতাবী বলেছেন, ويدخل تحت هذا التهديد كل ميل عن الحق إلى الباطل، أو عن الخير إلى الشر كالاحتكار، والغش- ‘হক থেকে বাতিলের দিকে প্রত্যেক প্রবণতা অথবা কল্যাণ থেকে অকল্যাণের দিকে যাবতীয় ঝোঁক যেমন মজুদদারী ও প্রতারণা এই ধমকির অন্তর্ভুক্ত হবে’।[20]

ইমাম কুরতুবী (রহঃ) উক্ত আয়াতের তাফসীরে আবুদাঊদের একটি হাদীছ উল্লেখ করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে,احْتِكَارُ الطَّعَامِ فِى الْحَرَمِ إِلْحَادٌ فِيهِ ‘হারাম এলাকায় খাদ্যপণ্য গুদামজাত করে রাখা ধর্মদ্রোহিতার নামান্তর’।[21]

ইমাম গাযালী (রহঃ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেছেন,إن الاحتكار من الظلم وداخل تحته في الوعيد ‘মজুদদারী যুলুমের অন্তর্ভুক্ত এবং উক্ত আয়াতের ধমকির অন্তর্ভুক্ত’।[22]

ইমাম গাযালীর মতটি القول الراجح বা অগ্রাধিকারযোগ্য অভিমত। কারণ আয়াতের ভাব ‘আম বা ব্যাপক এবং যে ব্যক্তি হারাম কাজ করতে চাইবে সে নিষেধের আওতায় পড়বে। আর নিঃসন্দেহে মজুদদারী এই ব্যাপকতার আওতাভুক্ত। যদি বলা হয়, মজুদদারির প্রতি নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত অন্য কারণে আয়াতটি নাযিল হয়েছে। তাহ’লে এর জবাবে বলা হবে,إن العبرة بعموم اللفظ لا بخصوص السبب ‘শব্দের ব্যাপকতাই বিবেচ্য, নির্দিষ্ট কারণ নয়’।[23] তাছাড়া মজুদদারী যেহেতু এক প্রকার যুলুম, সেহেতু কুরআনের যেসব আয়াতে যুলুম হারাম করা হয়েছে সাধারণভাবে সেগুলি দ্বারাও মজুদদারী হারাম হওয়ার দলীল গ্রহণ করা যাবে।[24]

দ্বিতীয়ত : হাদীছের দলীল

১. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لاَ يَحْتَكِرُ إِلاَّ خَاطِئٌ ‘শুধুমাত্র পাপী ব্যক্তিই মজুদদারী করে থাকে’।[25]

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, قَالَ أَهْلُ اللُّغَةِ الْخَاطِئُ بِالْهَمْزِ هُوَ الْعَاصِي الْآثِمُ وَهَذَا الْحَدِيثُ صَرِيحٌ فِي تَحْرِيمِ الِاحْتِكَارِ  ‘ভাষাবিদরা বলেছেন, الْخَاطِئُ হল অবাধ্য ও পাপী। আর মজুদদারী হারাম হওয়ার ব্যাপারে এ হাদীছটি দ্ব্যর্থহীন’।[26]

ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন,وَالتَّصْرِيحُ بِأَنَّ الْمُحْتَكِرَ خَاطِئٌ كَافٍ فِي إِفَادَةِ عَدَمِ الْجَوَازِ، لِأَنَّ الْخَاطِئَ الْمُذْنِبُ الْعَاصِيْ ‘মজুদদার পাপী হওয়ার দ্ব্যর্থহীন ঘোষণাই তা জায়েয না হওয়ার ফায়েদা দেয়ার জন্য যথেষ্ট। কারণ পাপী ও অবাধ্য ব্যক্তিই হল الْخَاطِئ।[27]

আতিইয়া মুহাম্মাদ সালিম বলেন, ولكن المحتكر الخاطئ الذي يتعمد جمع الصنف ويرى بالناس حاجة فلا يبرزه، إمعاناً في حاجتهم، وطلباً في زيادة السعر، فهذا هو الخاطئ، وهذا هو الذي من حق الحاكم أن يتدخل  في أمره- ‘কিন্তু পাপী মজুদদার হ’ল ঐ ব্যক্তি, যে বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য মজুদ করে এবং মানুষের প্রয়োজন লক্ষ্য করেও তাদের প্রয়োজন তীব্র হওয়ার প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে অধিক মূল্য পাওয়ার আশায় তা বিক্রির জন্য তাদের কাছে পেশ করে না। এরূপ মজুদদার পাপী। এমন মজুদদারের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা শাসকের কর্তব্য’।[28]

২. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنِ احْتَكَرَ حُكْرَةً يُرِيدُ أَنْ يُغْلِيَ بِهَا عَلَى الْمُسْلِمِينَ فَهُوَ خَاطِئٌ ‘যে ব্যক্তি মুসলমানদের উপর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে মজুদদারী করবে, সে পাপী।[29]

উল্লেখিত হাদীছ দু’টিতে পাপী বা অপরাধী কথাটিকে হালকাভাবে নেয়ার কোন অবকাশ নেই। কারণ কুরআন মাজীদে ফেরাঊন, হামান প্রমুখ বড় বড় কাফেরদের সম্পর্কে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,إِنَّ فِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَجُنُودَهُمَا كَانُوا خَاطِئِينَ ‘নিশ্চয়ই ফেরাঊন, হামান ও তাদের সেনাবাহিনী ছিল অপরাধী’ (ক্বাছাছ ২৮/৮)।[30]

৩. হযরত মা‘কিল বিন ইয়াসার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, তিনি যখন রোগাক্রান্ত হলেন তখন উমাইয়া গভর্ণর ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ তাঁকে দেখতে এলেন। তিনি তাঁকে বললেন, হে মা‘কিল, আপনি কি জানেন, আমি কোন হারাম রক্তপাত করেছি? তিনি বললেন, আমি জানি না। ওবায়দুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি জানেন আমি মুসলমানদের পণ্যমূল্যের ব্যাপারে কোন হস্তক্ষেপ করেছি? তিনি বললেন, আমি জানি না। অতঃপর মা‘কিল লোকদেরকে বললেন, তোমরা আমাকে বসিয়ে দাও। লোকেরা তাঁকে বসিয়ে দিল। অতঃপর তিনি বললেন, হে ওবায়দুল্লাহ! শুনুন, আমি আপনাকে একটি হাদীছ শোনাচ্ছি, যা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এর কাছ থেকে আমি মাত্র এক-দুইবার শুনিনি। তিনি বলেছেন, مَنْ دَخَلَ فِى شَىْءٍ مِنْ أَسْعَارِ الْمُسْلِمِينَ لِيُغْلِيَهُ عَلَيْهِمْ فَإِنَّ حَقًّا عَلَى اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَنْ يُقْعِدَهُ بِعُظْمٍ مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ- ‘মুসলিম জনগণের জন্যে পণ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে যদি কেউ কোনরূপ হস্তক্ষেপ করে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলার অধিকার হ’ল তিনি ক্বিয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের একটি বড় স্থানে আগুনের উপর বসাবেন’।[31]

এ হাদীছ থেকে বোঝা গেল যে, যে মজুদদারী করবে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। হারাম কাজ করার কারণেই তার এরূপ শাস্তি হবে। অতএব মজুদদারী হারাম।

৪. নবী (ছাঃ) বলেন, اَلْجَالِبُ مَرْزُوقٌ وَالْمُحْتَكِرُ مَلْعُوْنٌ ‘পণ্য আমদানীকারক রিযিকিপ্রাপ্ত আর মজুদদার অভিশপ্ত’।[32]

এর কারণ হ’ল ব্যবসায়ী দু’ভাবে লাভ করে। এক. অধিক মূল্যে বিক্রি করার আশায় সে পণ্যদ্রব্য মজুদ করে রাখে। এদিকে মানুষ পণ্য খুঁজবে কিন্তু পাবে না। তখন খুবই প্রয়োজন এমন ব্যক্তি পণ্য কেনার জন্য বাজারে আসবে এবং যে মূল্যই তার কাছে দাবী করা হবে তা দিয়েই সে তা ক্রয় করতে বাধ্য হবে। যদিও মূল্য অনেক চড়া হয় এবং সীমা ছাড়িয়ে যায়।

দুই. ব্যবসায়ী পণ্য বাজারে নিয়ে আসবে এবং অল্প-স্বল্প মুনাফা নিয়েই তা বিক্রয় করে দেবে। পরে এ মূলধন দিয়ে সে আরো অন্যান্য পণ্য কিনে নিয়ে আসবে। তাতেও সে মুনাফা পাবে। এভাবে তার ব্যবসা চলতে থাকবে ও পণ্যদ্রব্য বেশী কাটতি ও বিক্রয় হওয়ার ফলে অল্প অল্প করে মুনাফা করতে থাকবে। মুনাফা লাভের এই নীতি ও পদ্ধতিই সমাজের জন্য অধিক কল্যাণকর। এতে বরকত বাড়ে এবং এরূপ ব্যবসায়ী রিযিক প্রাপ্ত হয়।[33]

ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, وَلَا شَكَّ أَنَّ أَحَادِيثَ الْبَابِ تَنْتَهِضُ بِمَجْمُوعِهَا لِلِاسْتِدْلَالِ عَلَى عَدَمِ جَوَازِ الِاحْتِكَارِ وَلَوْ فُرِضَ عَدَمُ ثُبُوتِ شَيْءٍ مِنْهَا فِي الصَّحِيحِ، فَكَيْفَ وَحَدِيثُ مَعْمَرٍ الْمَذْكُورُ فِي صَحِيحِ مُسْلِمٍ ‘নিঃসন্দেহে বাবের হাদীছগুলি সামষ্টিকভাবে মজুদদারী জায়েয না হওয়ার দলীলের যোগ্য। যদি ধরে নেয়া হয় যে, এর কোনটিই ছহীহ প্রমাণিত নয় তাহলে ছহীহ মুসলিমে উল্লেখিত মা‘মারের হাদীছের ব্যাপারে কি বলা হবে’।[34]

তৃতীয়ত : আছার থেকে দলীল

১. ওমর (রাঃ) বলেন, لَا حُكْرَةَ فِي سُوقِنَا ‘আমাদের বাজারে কেউ মজুদদারী করবে না’।[35]

২. ওছমান (রাঃ) মজুদদারী থেকে নিষেধ করতেন।[36]

৩. আলী (রাঃ) বলেন,من احتكر الطعام أربعين يوماً قسا قلبه ‘যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন খাদ্য মজুদ করে রাখবে, তার অন্তর কঠোর হয়ে যাবে’।[37]

এই আছারগুলো মজুদদারী হারাম হওয়া, তা নিষেধ ও জায়েয না হওয়ার সুস্পষ্ট দলীল। আর النهى বা নিষেধ হারামের ফায়েদা দেয়। যতক্ষণ না এমন কোন قرينة বা ইঙ্গিত পাওয়া যাবে, যা হারাম ব্যতীত অন্য দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। আর এমন কোন ইঙ্গিতও নেই। অতএব প্রমাণিত হ’ল যে, মজুদদারী হারাম।

চতুর্থত : যুক্তির দলীল

১. মজুদদারী হারাম হওয়ার কারণ হ’ল, এর সাথে সাধারণ মানুষের হক জড়িত রয়েছে। কাজেই পণ্য বিক্রি থেকে বিরত থাকলে তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হবে এবং তারা কষ্টের সম্মুখীন হবে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত তো হবেই।

২. মানুষের প্রয়োজনের সময় তাদের হক থেকে বঞ্চিত করা  যুলুম ও হারাম।[38] ইমাম কাসানী বলেন,

وَلِأَنَّ الِاحْتِكَارَ مِنْ بَابِ الظُّلْمِ مَا بِيعَ فِي الْمِصْرِ فَقَدْ تَعَلَّقَ بِهِ حَقُّ الْعَامَّةِ فَإِذَا امْتَنَعَ الْمُشْتَرِي عَنْ بَيْعِهِ عِنْدَ شِدَّةِ حَاجَتِهِمْ إلَيْهِ فَقَدْ مَنَعَهُمْ حَقَّهُمْ وَمَنْعُ الْحَقِّ عَنْ الْمُسْتَحِقِّ ظُلْمٌ وَأَنَّهُ حَرَامٌ وَقَلِيلُ مُدَّةِ الْحَبْسِ وَكَثِيرُهَا سَوَاءٌ فِي حَقِّ الْحُرْمَةِ لِتَحَقُّقِ الظُّلْمِ.

‘কারণ মজুদদারী যুলুমের অন্তর্ভুক্ত। শহরে-নগরে যা বিক্রি করা হয়েছে তার সাথে সাধারণ মানুষের হক জড়িত রয়েছে। সুতরাং মানুষের তীব্র প্রয়োজনীয়তার সময়ও ক্রেতা যখন পণ্য ক্রয় করা থেকে বিরত থাকবে, তখন বিক্রেতা তাদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। আর হকদারকে তার হক থেকে বঞ্চিত করা যুলুম ও হারাম। যুলুম নিশ্চিত হওয়ার কারণে মজুদদারী হারাম হওয়ার ক্ষেত্রে পণ্য মজুদের সময়সীমার কম ও বেশী উভয়ই সমান’।[39]

দ্বিতীয় মত : মজুদদারী মাকরূহ। অধিকাংশ হানাফী ও কতিপয় শাফেঈর মত এটি। তাদের দলীল হ’ল:

১. সনদ ও দলীলের দিক থেকে মজুদদারির বিষয়ে বর্ণিত হাদীছগুলির স্বল্পতা। যেগুলি দ্বারা শক্তিশালীভাবে হারাম সাব্যস্ত হয় না। অনুরূপভাবে এগুলি হারাম হওয়ার দলীলের উপযুক্তও নয়।

এর জবাবে বলা যায়, হানাফীদের মতে সাধারণভাবে মাকরূহ দ্বারা মাকরূহে তাহরীমী উদ্দেশ্য। তাদের মতে মাকরূহ কাজ হারাম। হারাম কাজ সম্পাদনকারীর ন্যায় মাকরূহ কাজ সম্পাদনকারীও শাস্তির যোগ্য।

২. মানুষ তাদের সম্পদের উপর কর্তৃত্বশীল। তাদের কর্তৃত্ব হারাম করা হ’লে তা তাদের জন্য প্রতিবন্ধক হবে।

এর জবাবে বলা যায়, সাধারণভাবে সম্পদের মালিক তার মালিকানার ব্যাপারে স্বাধীন। যতক্ষণ না অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়া নিজের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কারো স্বেচ্ছাচারিতা চলবে না। বরং তার অধিকার সামষ্টিক কল্যাণের সাথে শর্তযুক্ত থাকবে।[40]

অগ্রাধিকারযোগ্য মত :

অধিকাংশ ফকীহর মতামতই অগ্রাধিকারযোগ্য। অর্থাৎ মজুদদারী হারাম।

মজুদদারী হারাম হওয়ার হিকমত :

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, وَالْحِكْمَةُ فِي تَحْرِيمِ الِاحْتِكَارِ دَفْعُ الضَّرَرِ عَنْ عَامَّةِ النَّاسِ كَمَا أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ لَوْ كَانَ عِنْدَ إِنْسَانٍ طَعَامٌ واضطر الناس إليه ولم يجدوا غيره أُجْبِرَ عَلَى بَيْعِهِ دَفْعًا لِلضَّرَرِ عَنِ النَّاسِ - ‘মজুদদারী হারাম হওয়ার হিকমত হ’ল জনসাধারণকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করা। যেমন আলেমগণ এ বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, যদি কারো কাছে কোন খাদ্যদ্রব্য থাকে এবং মানুষ নিরূপায় হয়ে যায় এবং সেই খাদ্য ব্যতীত অন্য কিছু না পায়, তাহ’লে মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য তাকে তা বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে’।[41]

সাইয়িদ সাবিক বলেন, والاحتكار حرمه الشارع ونهى عنه لما فيه من الجشع والطمع وسوء الخلق والتضييق على الناس. ‘শরী‘আত প্রণেতা মজুদদারীকে হারাম করেছেন এবং এ থেকে নিষেধ করেছেন। কারণ এতে রয়েছে লোভ-লালসা, অসততা ও মানুষকে কষ্ট দেয়া’।[42]

ড. আমীন মোস্তফা আব্দুল্লাহ বলেন,وهو أمر لا تقره الشريعة الإسلامية، لأنه استغلال ضائقة وإحداث أزمات لرفع الأسعار وإضرار حالات الناس، واضطراب الأسواق مما يحدث بلبلة فى المجتمع الإسلامى-  ‘মজুদদারী এমন একটি বিষয়, ইসলামী শরী‘আত যার স্বীকৃতি দেয় না। কেননা এটি সংকীর্ণ বিনিয়োগ। তাছাড়া এটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সংকট সৃষ্টি করে, মানুষের অবস্থার ক্ষতিসাধন করে এবং বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যা ইসলামী সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে’।[43]

শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী (রহঃ) বলেন, أقول : وذلك لأن حبس المتاع مع حاجة أهل البلد اليه لمجرد الغلاء وزيادة الثمن إضرار بهم بتوقع نفع ما وهو سوء انةظام المدينة- ‘আমার বক্তব্য হ’ল, মজুদদারী নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হ’ল নাগরিকদের প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও নিছক উচ্চমূল্যের আশায় পণ্য আটকে রাখা তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করার শামিল। যে ধরনের মুনাফা লাভের আশাতেই তা করা হোক না কেন। এটা নগরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামান্তর’।[44]

 [চলবে]


[1]https://www.aliqtisadalislami.net/موقف-الشريعة-الإسلامية-من-الاحتكار-وا/

[2]হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাতহুল বারী (রিয়াদ: দারুস সালাম, ১৪২১হি:/২০০০ খ্রি:) ৪/৪৩৯; শরীফ আলী বিন মুহাম্মাদ আল-জুরজানী, কিতাবুত তা‘রীফাত (দেওবন্দ: মাকতাবা ফাকীহুল উম্মাহ, তাবি), পৃ: ১৩।

[3]. লিসানুল আরাব ৪/২০৮; তাজুল আরূস ১১/৭২ প্রভৃতি

[4]. আল-আইন ৩/৬২

[5]আছ-ছিহাহ ২/৬৩৫।

[6]. মু‘জামু মাকাঈসিল লুগাহ ২/৯২

[7]. লিসানুল আরাব ৪/২০৮

[8]. আল-ক্বামূসুল মুহীত ১/৩৭৮

[9]. তাহযীবুল লুগাহ ৪/৬০

[10]. তাজুল আরূস ১১/৭১

[11]ফাতহুল বারী ৪/৪৪০।

[12]আবূদাঊদ হা/৩৪৪৭; ইমাম শাওকানী, নায়লুল আওতার (বৈরূত: দারুল কিতাব আল-আরাবী, ১৪২০ হি:/২০০০ খ্রি:), ৩/৬০৫।

[13]. http://www.alkhaleej.ae/supplements/page/83366ca9-8f8b-4c54-a483-1463f1ab137d

[14]. আতিইয়া মুহাম্মাদ সালিম, শারহু বুলূগিল মারাম, মাকতাবা শামেলাহ দ্র.

[15]http://www.alkhaleej.ae/supplements/page/645ea360-5b5f-42ac-ae5c-261cc1dd2d63

[16]. শায়খ আতিইয়া মুহাম্মাদ সালিম, শারহু বুলূগিল মারাম, মাকতাবা শামেলা দ্র.

[17]. তাফসীর ইবনে কাছীর ৫/৪২৩, হজ্জ ২৫ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্র.

[18]ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন ১/২৪৩

[19]. আল-মাওছিলী। আল-ইখতিয়ার লি-তা‘লীলিল মুখতার ৪/১৬০

[20]. মুহাম্মাদ সাইয়িদ তানতাবী, আত-তাফসীর আল-ওয়াসীত ১/২৯৬১

[21]. আবুদাঊদ, হা/২০২০, হাদীছ যঈফ; তাফসীরে কুরতুবী, হজ্জ ২৫ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্র.

[22]. ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন ২/৭৩

[23]https://www.aliqtisadalislami.net / موقف-الشريعة-الإسلامية-من-  الاحتكار-وا

[24]http://www.alkhaleej.ae/supplements/page/645ea360-5b5f-42ac-ae5c-261cc1dd2d63

[25]মুসলিম হা/১৬০৫।

[26]ইমাম নববী, আল-মিনহাজ শারহু ছহীহ মুসলিম (বৈরূত: দারুর রাইয়ান লিত-তুরাছ, ১৪০৭ হি:/১৯৮৭খ্রি:), ১১/৪৩।

[27]. নায়লুল আওতার ৩/৬০৪

[28]. আতিইয়া মুহাম্মাদ সালিম, শারহু বুলূগিল মারাম, মাকতাবা শামেলাহ দ্র.

[29]সিলসিলা ছহীহা হা/৩৩৬২।

[30]. ড. ইউসুফ আল-কারযাভী, আল-হালালু ওয়াল হারামু ফিল-ইসলাম, পৃঃ ২২৪

[31]আহমাদ, হা/১৯৪২৬, শু‘আইব আরনাঊত বলেছেন, إسناده جيد ‘এর সনদ উত্তম’; আল-হালালু ওয়াল হারামু ফিল ইসলাম, পৃ: ২২৫।

[32]ইবনু মাজাহ হা/২১৫৩, হাদীছ যঈফ; মিশকাত হা/২৮৯৩।

[33]আল-হালালু ওয়াল হারামু ফিল ইসলাম, পৃ: ২২৪-২২৫।

[34]. নায়লুল আওতার ৩/৬০৪

[35]. মুওয়াত্ত্বা ইমাম মালেক হা/২৩৯৮

[36]. ঐ, হা/২৪০০ عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ كَانَ يَنْهَى عَنْ الْحُكْرَةِ

[37]. ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন ২/৭২

[38]. ড. কাহতান আব্দুর রহমান আদ-দূরী, আল-ইহতিকার ওয়া আছারুহু ফিল ফিক্বহিল ইসলামী (বৈরুত:১৪৩২/২০১১), পৃঃ ১০২

[39]. বাদায়েউছ ছানায়ে ৫/১২৯

[40]. আল-ইহতিকার ওয়া আছারুহু ফিল ফিক্বহিল ইসলামী, পৃঃ ১০৩-১০৬; https://www.aliqtisadalislami.net/موقف-الشريعة- الإسلامية-من-الاحتكار- وا

[41]আল-মিনহাজ ১১/৪৩।

[42]. সাইয়িদ সাবিক, ফিক্বহুস সুন্নাহ (বৈরুত: মুআস্সাসাতুর রিসালাহ, ১ম প্রকাশ, ১৪২৪/২০০৩), ৩/১৬৪

[43]ড. আমীন মোস্তফা আব্দুল্লাহ, উসূলুল ইকতিছাদ আল-ইসলামী (মিসর: মাতবা‘আ ঈসা আল-বাবী আল-হালাবী, ১৪০৪হি:/১৯৮৪খ্রি:), পৃ: ২৮৭।

[44]হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ ২/২০২।





পণ্যে ভেজাল প্রদান : ইসলামী দৃষ্টিকোণ - ড. নূরুল ইসলাম
ইসলামের দৃষ্টিতে মজুদদারী - ড. নূরুল ইসলাম
হালাল জীবিকা - মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান
ইসলামের দৃষ্টিতে মুনাফাখোরী - ড. নূরুল ইসলাম
উৎপাদন, বণ্টন ও ভোগের ক্ষেত্রে যাকাত-এর ভূমিকা - বিকাশ কান্তি দে, কক্সবাজার সিটি কলেজ, কক্সবাজার
ইসলামের আলোকে হালাল রূযী - মুহাম্মাদ আতাউর রহমান
ইসলামে হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যের রূপরেখা - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
ইসলামের দৃষ্টিতে মজুদদারী (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. নূরুল ইসলাম
ঘুষের ভয়াবহ পরিণতি - আব্দুল মান্নান, সৈয়দপুর, নীলফামারী।
সার্বজনীন পেনশন স্কিম এবং আমাদের প্রস্তাবনা - আব্দুল্লাহ আল-মুছাদ্দিক
জীবিকা থেকে বরকত দূরীভূত হওয়ার কারণ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: ইসলামী দৃষ্টিকোণ - ড. নূরুল ইসলাম
আরও
আরও
.