ভাই ও বোনেরা!
পরিসংখ্যান ও চাক্ষুষ অভিজ্ঞতায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, অধিকাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘুরা দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে। ত্রাণ ও দাতব্য সংস্থাসমূহ কিংবা প্রচলিত জীবনধারণ প্রকল্পসমূহ এই দুঃখজনক পরিস্থিতির পরিবর্তনে বা উপশমে সক্ষমতা দেখাতে পারছে না। ফলে দারিদ্রে্যর ক্রমবিস্তার সমাজকে অধিকতর মানবেতর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। জনসমাজ হয়ে পড়েছে দুষিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত। আর মুসলিম জাতি পরিণত হয়েছে দুর্দশা, রোগ-পীড়া আর দুর্ভিক্ষের প্রতীকে। গোটা বিষয়টি তাই আজ এক বৃহৎ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা প্রতিনিয়ত ইসলামী ব্যাংকসমূহকে আহবান জানাচ্ছে যে, একটি ফলপ্রসূ আর্থ-সামাজিক পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, তা পালনে তারা যেন যরূরী ভিত্তিতে অগ্রসর হয়। তবে এই পদক্ষেপ এমন বাস্তবসম্মত হতে হবে, যেন কেবল লেখনী ও বক্তব্যের মঞ্চে নয়; বরং দরিদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠী যেন তাদের কৃষিক্ষেত, শিল্প-কারখানা,ওয়ার্কশপ সর্বত্র এর প্রভাব স্পষ্টরূপে উপলব্ধি করতে পারে।
যে বিশ্ব আজ দারিদ্রে্যর বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা বলার কারণে নত হচ্ছে ‘ড. ইউনুস’ নামক একজন ব্যক্তি এবং ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ নামক একটি ব্যাংকের সামনে, সে বিশ্ব আরো বহুগুণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে ১০০-এর ঊর্ধ্বে পৌঁছানো ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য, যারা জনগণের আর্থ-সামাজিক ও নৈতিক উন্নয়নে প্রতিনিয়ত আলোচনা-পর্যালোচনা অব্যাহত রেখেছে।
’গরীবের ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার আহবান, যাকে আমি ফরয যাকাত এবং বিশেষভাবে দরিদ্র ও অভাবীদের প্রাপ্য অংশের ব্যবহারিক অর্থ নিয়ে নামকরণ করেছি ‘দরিদ্রদেরকে সম্পদশালী করার ব্যাংক’ হিসাবে, তা কোন দয়া-দাক্ষিণ্য, অনুদান বা দাতব্য সংস্থার কমূর্সচির সাথে সম্পর্কিত নয়। বরং এর উদ্দেশ্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এমন সুযোগ করে দেয়া, যাতে তারা উৎপাদনশীল কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে এবং গরীবদের সমাজের উৎপাদনশীল কার্যক্রমের একটি মৌলিক শক্তিতে পরিণত করা যায়। সকল পরিবেশে খাপ খাইয়ে চলতে পারে এমন ক্ষুদ্র উৎপাদনশীল ও বাণিজ্যিক প্রকল্পসমূহ সৃষ্টির মাধ্যমে সহজেই এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হতে পারে।
এছাড়া সমাজের অসচ্ছল গরীবদের উপার্জনক্ষম ও কর্মক্ষম করে তোলার জন্য ইসলামী ব্যাংকসমূহকে তাদের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি আরো সম্প্রসারিত করতে হবে। বিশেষত যে সব জায়গায় অন্যেরা আগেই কাজ শুরু করেছে। যেমন কুটির শিল্প ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ, বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কারিগর ও দক্ষ কর্মীদের অর্থায়ন ইত্যাদি। সাথে সাথে যামানত বা সিকিউরিটি গ্যারান্টি মানি-র হার কমাতে হবে, যেন উৎপাদনে জড়িত সর্বস্তরের অসচ্ছল মানুষের কাছে অর্থের প্রবাহ পৌঁছে যায়। তাছাড়া মনে মনে আমি একটি প্রকল্পের কথা ভাবছি যা সম্প্রতি কোনাক্রিতে (ঘানা) আইডিবির একটি বৈঠকে অংশগ্রহণের পর এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ভ্রমণের পর আমার ভিতরে বদ্ধমূল হয়েছে। আমি আশাবাদী যে, এই প্রকল্পটি একদিন পূর্ণতা পাবে এবং আগামী বছরগুলির মধ্যে বাস্তবতার মুখ দেখবে।
প্রিয় ভ্রাতৃমন্ডলী!
সন্দেহ নেই যে, ধারণা ও কৌশলগত দিক থেকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর নিজেদেরকে এগিয়ে নেয়ার খুব ভাল সম্ভাবনা রয়েছে। তার কারণ হ’ল সমসাময়িককালের ইসলামী পুনর্জাগরণ এবং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে পবিত্র কুরআন ও রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকামী প্রবণতার বিকাশ। যা ইসলামী ব্যাংকিং অঙ্গনে অধিকতরভাবে স্বচ্ছতা আনা ও শরী‘আহ অনুমোদিত আর্থিক লেনদেনের নিশ্চয়তা বিধান এবং সাথে সাথে সেখানে বৃহৎ পরিমাণে আর্থিক সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তাগাদা দেয়। এজন্য কৌশলগত সকল প্রস্ত্ততি থাকতে হবে, যেন সম্পদের সরবরাহকে ধরে রাখা যায় এবং অর্থসংস্থানকারীদের শরী‘আহ মোতাবেক যথাযথভাবে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা দেয়া যায়। তবে কৌশলগত দুর্বলতা এবং শারঈ মূলনীতি অনুসরণে গাফলতি থাকলে ইসলামী ব্যাংকসমূহ এই সুবর্ণ সুযোগ হারাবে। সাথে সাথে সে সব মানুষকে হতাশার মধ্যে ঠেলে দেবে যারা ইসলামী ব্যাংকসমূহকে শরী‘আহ মোতাবেক পরিচালিত বিনিয়োগের সার্থক ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচনা করেছিল।
অন্যদিকে বিশ্ব আজ প্রকৃত মাল (real goods) সম্পদের সংকটে ভুগছে করছে। ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য এটা সত্যিই একটি ভাল সুযোগ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোন ফলপ্রসূ বিনিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে আল্লাহ প্রদত্ত পার্থিব নে‘মতরাজি আহরণের চেষ্টা চালাতে হবে।
ইসলামী অর্থনীতির কার্যক্রমে অগ্রগতি আনার জন্য আরও যে সকল ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, তার মধ্যে অন্যতম হ’ল, বিনিয়োগের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মুনাফা বৃদ্ধির চেষ্টা করা। সাথে সাথে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে আগ্রহী করায় জোর দেয়া এবং বিনিয়োগের স্বার্থে তাদেরকে ইসলামী অর্থনীতির নানা আর্থিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেয়া। এ সব পদক্ষেপ অধিকহারে বিনিয়োগ সহায়ক অর্থ সঞ্চয়ের পথ খুলে দেবে।
অধিকন্তু, যোগাযোগব্যবস্থা ও প্রযুক্তিগত আবিষ্কারের চরমোন্নতি এবং ব্যাংকিং লেনদেনে যে উদারীকরণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা আমাদেরকে এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের ইসলামী ব্যাংকগুলোকে নিয়মিতভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে হালনাগাদ হতে হবে। এটা সম্ভব হতে পারে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নিত্যনতুন প্রযুক্তির যে বিপ্লব ঘটেছে এবং সারা বিশ্বের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক রাখার জন্য যে সব সুযোগ-সুবিধার উদ্ভব ঘটেছে, তার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে। এছাড়া আগামী দিনগুলোতে সেকেলে আমলের সেবাসমূহের আধুনিকায়ন করে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমন্ডিত নতুন ধারার গ্রাহক সেবা কর্মসূচি প্রবর্তনের লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোতে যে প্রতিযোগিতার আভাষ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ইসলামী ব্যাংকসমূহকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। সাথে সাথে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অধিকহারে ভোক্তাদের টার্গেট করে তাদেরকে ইসলামী ব্যাংকসমূহের কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত করার জন্য।
সম্মানিত ভ্রাতৃবর্গ!
আমি সবসময়ই সনাতন ব্যাংকিং সেক্টরকে আরো বেশী করে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে আসছি। কেননা শারঈ মূলনীতির অনুকূলে থাকা পর্যন্ত এ সহযোগিতায় কোন শারঈ বাধা নেই। আমি বিশ্বাস করি, পক্ষপাতদুষ্ট কোন অপ্রমাণিত ধারণাকে পাত্তা না দিয়ে যদি আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধির প্রয়াস চালাই, তা আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে কোনরূপ ক্ষতি করবে না। বরং এই ধরনের সহযোগিতা একটি সমন্বিত অর্থ তহবিল গঠনের মাধ্যমে মুসলিম সমাজের আর্থ-সামাজিক স্বার্থ পূরণের সুযোগ তৈরী করবে। অধিকন্তু মৌলিক প্রয়োজনসমূহ মিটানো এবং রফতানী সহায়তার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্রয় গ্রহণ করা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকেরই বেশী প্রয়োজন। কারণ অনেক ইসলামী দেশেই ইসলামী ব্যাংক না থাকার সমস্যা বিরাজ করছে।
এর সংশ্লিষ্ট আরেকটি বিষয় হ’ল, বড় বড় সনাতন ব্যাংকসমূহ তাদের ব্যাংকগুলোতে সমন্বিতভাবে ইসলামী শাখা খোলার যে প্রয়াস নিচ্ছে, তার প্রতি আমাদের ইতিবাচক মনোভাব দেখানো। কেননা বিষয়টি প্রাক-অনুমিত কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয় নয়। বরং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বিষয়টি দেখলে তা আমাদের জন্য একটি নীতিগত বিজয় এবং ইসলামী ব্যাংকিং-এর ভিত্তি আরো সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ বৈকি! এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা প্রতীক্ষায় রয়েছি একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকিং অভিজ্ঞতার সাথে ইসলামের মহৎ মূলনীতিসমূহের সুষম মিথস্ক্রিয়া প্রত্যক্ষ করার জন্য। এতে আমাদের কৌশলসমূহ এবং বিনিয়োগের ধরন ও গ্রাহক পর্যায়ে সেবাদান কার্যক্রম আরো সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে।
আরো একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এর সাথে সংশ্লিষ্ট তা হ’ল, ইসলামী ব্যাংকসমূহকে তাদের নিজস্ব আইনী কাঠামোর পরিপূর্ণতা দেয়া ও তার সুরক্ষা করা এবং নিজেদের মধ্যে আন্তঃসহযোগিতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালানো। এজন্য এর প্রধান মূলনীতি সমূহকে কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং লেনদেনে কোন প্রকার সন্দেহকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। একই সাথে ফৎওয়াসমূহ হ’তে হবে কেবলমাত্র ইসলামের মূল উৎস তথা পবিত্র কুরআন ও হাদীছের উপর ভিত্তিশীল। ব্যতিক্রম, শর্তাধীনে বৈধ, জনস্বার্থ রক্ষা কিংবা শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থরক্ষা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে যেন কোন ফৎওয়া না দেয়া হয়।
সম্মানিত ভ্রাতৃমন্ডলী!
সন্দেহ নেই যে স্বয়ং ইসলামী ব্যাংকসমূহেরই স্বীয় আওতা বহির্ভূত অনেক সমস্যা ও প্রতিকূলতা রয়েছে। আমি সেদিকে বিস্তারিত আলোচনায় যেতে চাই না। আপনারা নিত্যই সে সকল সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে একটি মৌলিক সমস্যার দিকে আমি ইঙ্গিত করতে চাই যা সংশ্লিষ্ট সকল সমস্যার গোড়ায় প্রোথিত। তা হ’ল ইসলামী অর্থনীতি ও এর কার্যপ্রণালীর সরকারী স্বীকৃতি না থাকা। পৃথিবীতে আজ ৮০০ মিলিয়ন মুসলিম, যারা কোনরূপ পক্ষপাত বা অন্ধ আনুগত্যের বশবর্তী না হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইসলামকে ইবাদত ও ব্যবহারিক জীবন বিধান হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন এবং পশ্চাতমুখী চারিত্রিক ও বৈষয়িক দুরবস্থার হাত থেকে নিজেদেরকে উদ্ধার করেছেন। এমন কেউ নেই যে মানুষের আর্থ-সামাজিক জীবনে দ্বীনের মূলনীতিসমূহের সুনিশ্চিত কার্যকারিতার ব্যাপারে মুসলমানদের ঈমান বা দৃঢ় আস্থাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। অথচ তা স্বত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতিবিদগণ বিবিধ অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান ইসলামী অর্থনীতির মধ্যে না খুঁজে অন্যত্র অনুসন্ধান করছেন।
এই নেতিবাচক পরিস্থিতির সাথে সাথে ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য আরো যে সকল সমস্যা তৈরী হয়েছে তার জন্য দায়ী হ’ল, ইসলামী ব্যাংকসমূহ প্রতিষ্ঠার জন্য সুশৃখংল কার্যপ্রণালীর অভাব, যথাযথ নিয়ন্ত্রণবিধি ও তদন্তের ব্যবস্থা না থাকা, ঋণ প্রদানের নির্ধারিত সীমা না থাকা, ব্যাংকের তারল্য ও রিজার্ভ তহবিল সংকট ইত্যাদি। আরো দায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে তারল্য সরবরাহে সহায়ক কোন শারঈ মেকানিজম না থাকা, ইসলামী ব্যাংকসমূহকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেয়া থেকে নিবৃত রাখা, ভূ-সম্পত্তির মালিকানা লাভ এবং তা ভাড়া দেয়া বা নেয়া, যদিও এটা ইসলামী ব্যাংকের কার্যাবলীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং ইসলামী ব্যাংকসমূহের মুনাফা ও রিটার্নের উপর উচ্চ হারে করারোপ করা, যেখানে সনাতন ব্যাংকসমূহের পুঁজি ও সূদের উপর কোন করারোপ করা হয় না।
যাই হোক, আমরা তবুও আশাবাদী যে, সমাজে মূল্য সংযোজনে (Added value) আমরা যে অবদান রাখছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার যে উদ্যোগ নিয়েছি এবং এ সম্পর্ককে যুথবদ্ধ করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তাতেই উপরোক্ত সমস্যাসমূহের সমাধান কিংবা নেতিবাচক তীব্রতা ও প্রভাব কমিয়ে আনার উপাদান নিহিত রয়েছে।
প্রিয় ভাইয়েরা!
এই সম্মাননা পেয়ে আমি সত্যিই গর্ববোধ করছি। তবে এটা আমার উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্যের ভার চাপিয়ে দিয়েছে তা হল, আমার চলার গতি অব্যাহত রাখতে হবে। ইসলামী ব্যাংকিং-এর সার্বিক অগ্রগতি সাধনে আমাকে আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। পৃথিবীর উন্নয়নে, ইসলামী অর্থনীতির উৎকর্ষ সাধনে এবং সর্বোপরি মানবতার কল্যাণে ইসলামী ব্যাংকিং-এর শরীরে নতুন রক্তের সঞ্চার করে এর জন্য আরো উজ্জ্বল ও প্রশস্ততর ময়দান অনুসন্ধান করতে হবে। যাতে করে সর্বত্র শ্রমের মর্যাদা, উৎপাদন, পারস্পরিক সহযোগিতা ও ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করা যায়। ইসলামী অর্থনীতির নিখাদ কল্যাণসমূহকে ফিরিয়ে আনতে আমরা ব্যবহারিক ময়দানে জোর তৎপরতার সাথে কাজ করে যেতে পারব বলে আমি আশাবাদী। যেন এর মাধ্যমে বস্ত্তগত ও আদর্শগত উভয় দিক থেকে আমরা এই উম্মতের গৌরবোজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ অতীতের স্পর্শ লাভে ধন্য হতে পারি। আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও সর্বোচ্চ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আল্লাহ আপনাদেরকে হেফাযত করুন এবং সঠিক পথে পরিচালিত করুন।
আস-সালামু আলায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
মূল : শেখ ছালেহ কামেল
অনুবাদ : আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব