৬. সন্দেহজনক উপার্জন :
নিজ হাতের উপার্জনই সর্বোত্তম উপার্জন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا أَكَلَ
أَحَدٌ طَعَاماً قَطٌّ خَيْراً مِّنْ أَنْ يَأْكُلَ مِنْ عَمَلِ يَدَيْهِ،
‘কারো জন্য নিজ হাতের উপার্জন অপেক্ষা উত্তম খাদ্য আর নেই’।[1] আল্লাহ
বলেন, فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ
وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللهِ، ‘যখন ছালাত আদায় হয়ে যাবে, তখন তোমরা যমীনে
বেরিয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তথা রিযিক অনুসন্ধান কর’ (জুম‘আ ৬২/১০)।
ব্যবসা সম্মানজনক উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম। অনেক নবী-রাসূলও ব্যবসার
সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। কুরআনুল কারীমেও এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছে
যে, أَحَلَّ اللهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا، ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল
করেছেন আর সূদকে করেছেন হারাম’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। ব্যবসায়ের
পদ্ধতি, শর্ত-শরায়েত এবং হালাল-হারাম সবকিছুই সুস্পষ্ট। কিন্তু অধুনা এমন
সব ব্যবসায়ের পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে, যার হালাল-হারাম হওয়ার বিষয়টি সাধারণ
মানুষ তো দূরের কথা অনেক জ্ঞানীজনও বুঝতে পারেন না। বাহ্যত হালাল মনে হ’লেও
বাস্তবে তা হালাল নয়। আবার এ ক্ষেত্রে সাইনবোর্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়
একশ্রেণীর নামী-দামী আলেমকে। যারা শুধু ‘সাইনিং মানী’ ও ‘সিটিং ফী’ পেয়েই
সন্তুষ্ট থাকেন। বাস্তবে কী সর্বনাশ করছেন তা খতিয়ে দেখেন না। এ ক্ষেত্রে
বিধান হচ্ছে- হালাল নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ জাতীয় ব্যবসায় সম্পৃক্ত না
হওয়া। দেড় হাযার বছর আগেই রাসূল (ছাঃ) তাঁর উম্মতকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
নির্দেশ দিয়েছেন যাবতীয় অস্পষ্ট ও সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকতে। নো‘মান
ইবনে বাশীর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,الْحَلاَلُ بَيِّنٌ
وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهَا كَثِيرٌ
مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ
وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِى الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِى الْحَرَامِ
كَالرَّاعِى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يَرْتَعَ فِيْهِ- ‘হালাল স্পষ্ট
এবং হারামও স্পষ্ট, আর উভয়ের মাঝে রয়েছে অনেক সন্দেহজনক বিষয়। যেগুলো
(হালাল না হারাম সে বিষয়ে) অধিকাংশ মানুষই জানে না। অতএব যে ব্যক্তি
সন্দেহজনক বস্ত্ত পরিহার করে চলল, সে তার দ্বীন ও সম্মান সংরক্ষণ করল। আর
যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বস্ত্ততে লিপ্ত হ’ল, সে হারামে লিপ্ত হ’ল। যেমন যে
রাখাল তার পশুপালকে (নিষিদ্ধ এলাকার) সীমানার নিকটে চরাবে, এতে হয়ত তার পশু
নিষিদ্ধ এলাকায় মুখ ঢুকিয়ে দিবে (অর্থাৎ ফসল খেয়ে ফেলবে)’।[2] সন্দিগ্ধ
বিষয় পরিত্যাগ করা সম্পর্কে হাসান বিন আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে যে, তিনি
বলেন,حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم دَعْ مَا يَرِيْبُكَ
إِلَى مَا لاَ يَرِيْبُكَ فَإِنَّ الصِّدْقَ طُمَأْنِينَةٌ وَإِنَّ
الْكَذِبَ رِيْبَةٌ- ‘আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট হ’তে এই কথাটি ভালভাবে
মুখস্থ রেখেছি যে, (তিনি বলেছেন) সন্দিগ্ধ বিষয় ছেড়ে দাও এবং সন্দেহমুক্ত
বিষয়ের প্রতি ধাবিত হও। নিঃসন্দেহে সত্যবাদিতায় রয়েছে প্রশান্তি ও মিথ্যায়
আছে সন্দেহ’।[3]
রাসূল (ছাঃ) সন্দেহজনক বিষয় থেকে সর্বাধিক দূরে থাকতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, একবার পথ অতিক্রমকালে রাস্তায় পড়ে থাকা একটি খেজুর দেখে তিনি বললেন,لَوْلاَ أَنْ تَكُوْنَ صَدَقَةً لأَكَلْتُهَا- ‘যদি এটি ছাদাক্বার খেজুর বলে সন্দেহ না হ’ত, তবে তা আমি খেতাম’।[4] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنِّىْ لأَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِى فَأَجِدُ التَّمْرَةَ سَاقِطَةً عَلَى فِرَاشِىْ فَأَرْفَعُهَا لآكُلَهَا ثُمَّ أَخْشَى أَنْ تَكُوْنَ صَدَقَةً فَأُلْفِيَهَا- ‘আমি আমার ঘরে ফিরে যাই। অতঃপর আমার বিছানায় খেজুর পড়ে থাকতে দেখি, খাওয়ার জন্য তা তুলে নেই। পরে আমার ভয় হয় যে, হয়ত তা ছাদাক্বার খেজুর হবে। অতঃপর তা আমি রেখে দেই’।[5] উল্লেখ্য যে, রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য ছাদাক্বা গ্রহণ সিদ্ধ ছিল না।
রাসূল
(ছাঃ)-এর ছাহাবীগণও সন্দেহ ও অস্পষ্ট বিষয় থেকে দূরে থাকতেন। আয়েশা (রাঃ)
হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আবূবকর (রাঃ)-এর একজন ক্রীতদাস ছিল।... একদিন সে
কিছু খাবার নিয়ে আসল এবং তিনি তা থেকে আহার করলেন। অতঃপর গোলাম বলল, আপনি
জানেন কি তা কিভাবে উপার্জন করা হয়েছে, যা আপনি খেয়েছেন? তিনি বললেন, এটা
কি? অর্থাৎ কিভাবে উপার্জন করা হয়েছে? গোলাম বলল, আমি জাহেলী যুগে এক
ব্যক্তির ভবিষ্যৎ গণনা করে দিয়েছিলাম। আর ভবিষ্যৎ গণনা করা আমার ভালভাবে
জানা ছিল না। তবুও প্রতারণামূলকভাবে আমি এটি করেছিলাম। (কিন্তু ভাগ্যচক্রে
আমার গণনা সঠিক হয়ে যায়) ফলে আমার সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটলে ঐ গণনার বিনিময়ে
সে আমাকে হাদিয়া স্বরূপ এগুলি প্রদান করে, যা আপনি আহার করলেন। আবূবকর
(রাঃ) এ কথা শুনামাত্র মুখের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বমি করে দিলেন এবং
পাকস্থলীর মধ্যে যা কিছু ছিল সব বের করে দিলেন’।[6]
রাসূল
(ছাঃ) ও তাঁর ছাহাবীদের সন্দেহজনক বস্ত্তর ক্ষেত্রে এরূপ কঠোরতা সত্ত্বেও
আজ আমরা অন্ধ। হালাল-হারামের কোনরূপ বাছ-বিচার না করেই যা খুশী তাই
দ্বিধাহীনচিত্তে গ্রহণ করে চলেছি। যেকোন উপায়ে দুনিয়া উপার্জনই যেন মুখ্য
হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুনিয়া লাভের প্রতিযোগিতায় যেন সকলে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। আখেরাত
সম্পর্কে উদাসীনতা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। তাই তো রাসূল (ছাঃ) আক্ষেপ
করে বলেছেন,لَوْ أَنَّ لاِبْنِ آدَمَ وَادِيًا مِنْ ذَهَبٍ أَحَبَّ أَنْ
يَكُوْنَ لَهُ وَادِيَانِ وَلَنْ يَمْلأَ فَاهُ إِلاَّ التُّرَابُ
وَيَتُوْبُ اللهُ عَلَى مَنْ تَابَ، ‘যদি আদম সন্তানকে এক ময়দান ভর্তি
স্বর্ণ দেওয়া হয়, তাহ’লে সে দুই ময়দান ভর্তি স্বর্ণের আকাঙ্ক্ষা করবে। আর
তার মুখ কখনোই ভরবে না মাটি ব্যতীত (অর্থাৎ কবরে না যাওয়া পর্যন্ত)।
বস্ত্ততঃ আল্লাহ তওবাকারীর তওবা কবুল করে থাকেন’।[7] অন্যত্র তিনি বলেন,
يَأْتِى عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لاَ يُبَالِى الْمَرْءُ مَا أَخَذَ مِنْهُ
أَمِنَ الْحَلاَلِ أَمْ مِنَ الْحَرَامِ، ‘মানুষের নিকটে এমন এক যুগ আসবে,
যখন কেউ পরোয়া করবে না যে, সে কি গ্রহণ করছে বা উপার্জন করছে, তা কি হালাল
উপায়ে, নাকি হারাম উপায়ে?’।[8]
অতএব পরলোকে
প্রশান্তি প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষায় আমাদেরকে উপার্জনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সংযমী
হ’তে হবে। ব্যবসায়ে সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। লোভ সংবরণ করতে হবে
এবং দূরে থাকতে হবে যাবতীয় অস্পষ্ট ও সন্দেহযুক্ত উপার্জন থেকে। কেননা মনের
অজান্তেও যদি হারাম গলাধঃকরণ হয়ে যায়, সেকারণে হয়ত জান্নাতে প্রবেশ
দুঃসাধ্য হয়ে যেতে পারে। এই ভীতি সবসময় হৃদয়ে লালন করতে হবে। কেননা রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন,لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِالْحَرَامِ، ‘ঐ দেহ
জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যে দেহ হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট হয়েছে’।[9]
৭. জবরদখলের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ :
মানুষ যখন ক্ষমতার দাপটে ও অর্থের মোহে অন্ধ হয়ে যায় এবং আল্লাহ ভীতি ও আখেরাতের চিন্তা মন-মগজ থেকে উঠে যায় তখন সে তার পেশীশক্তিবলে অন্যের সম্পদ কুক্ষিগত করে। অন্যায়ভাবে মানুষের জায়গা-জমি, বাড়ী-গাড়ি, দোকান-পাট ইত্যাদি দখল করে নেয়। ‘জোর যার মুল্লুক তার’ এই নির্যাতনী নীতি প্রয়োগে ক্ষমতাধররা সমাজের দুর্বল ও অসহায় বনু আদমের উপর যুলমের খড়গ চাঁপিয়ে সহায় সম্পদ সব লুটে নেয়। সমাজের এই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দটি করার ক্ষমতাও সাধারণ মানুষের নেই। ক্ষমতার ছত্রছায়ায় এরা যাচ্ছেতাই করে বেড়ায়। অথচ অন্যায়ভাবে কারো জমি বা অন্য কিছু জবরদখলের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ।
সাঈদ
ইবনু যায়েদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَخَذَ شِبْرًا
مِنَ الأَرْضِ ظُلْمًا، فَإِنَّهُ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ
سَبْعِ أَرَضِيْنَ، ‘যে ব্যক্তি কারো এক বিঘত পরিমাণ যমীন জোর করে দখল করে,
ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় সাত তবক পরিমাণ যমীন বেড়িরূপে পরিয়ে দেওয়া হবে’।[10]
সালেম তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ
أَخَذَ مِنَ الأَرْضِ شَيْئًا بِغَيْرِ حَقِّهِ خُسِفَ بِهِ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرَضِيْنَ، ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো জমির
কিয়দংশ জবরদখল করে নিবে, ক্বিয়ামতের দিন এজন্য তাকে সপ্ত যমীন পর্যন্ত
পুঁতে দেওয়া হবে’।[11]
অন্য হাদীছে আছে,
ইয়া‘লা ইবনে মুররাহ হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَيُّمَا رَجُلٍ ظَلَمَ
شِبْراً مِنَ الأَرْضِ كَلَّفَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يَحْفِرَهُ
حَتَّى يَبْلُغَ آخِرَ سَبْعِ أَرَضِيْنَ ثُمَّ يُطَوَّقَهُ إِلَى يَوْمِ
الْقِيَامَةِ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ- ‘যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ
জমি জবরদখল করবে আল্লাহ তাকে যমীনের সপ্ত স্তর পর্যন্ত তা খনন করতে বাধ্য
করবেন। অতঃপর ক্বিয়ামত দিবসে তা তার গলায় বেড়ী করে রাখা হবে, যে পর্যন্ত না
মানুষের মাঝে বিচারকার্য শেষ হয়’।[12]
এমনকি
যমীর নিশানা বা সীমানা চিহ্ন পরিবর্তন করা বা চুরি করাও জঘন্য অপরাধ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,لَعَنَ اللهُ مَنْ سَرَقَ مَنَارَ الأَرْضِ،
‘যে ব্যক্তি জমির নিশানা বা আইল চুরি করে আল্লাহ তার উপর অভিসম্পাত করেন’।[13]
অন্য বর্ণনায় আছে لَعَنَ اللهُ مَنْ غَيَّرَ مَنَارَ الأَرْضِ، ‘যে
ব্যক্তি জমির নিশানা বা আইল পরিবর্তন করে আল্লাহ তার উপর অভিসম্পাত করেন’।[14]
ওয়ায়েল
ইবনে হুজর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কাছে
উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় দু’ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে একটি ভূমি সম্পর্কে বিচার
প্রার্থনা করল। তন্মধ্যে একজন বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! জাহেলী যুগে
এই ব্যক্তি আমার ভূমি জবরদখল করে নিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, বিচার প্রার্থী
ছিল ইমরুল কায়েস বিন ‘আবেস আল-কিন্দী আর বিবাদী ছিল রাবী‘আ বিন ‘ইবদান।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বাদীকে বললেন, তোমার সাক্ষী পেশ কর। সে বলল, আমার কোন
সাক্ষী নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তাহ’লে বিবাদী থেকে কসম নেয়া হবে।
লোকটি বলল, তবে তো সে মিথ্যা কসম করে সম্পত্তি গ্রাস করে ফেলবে।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তার কাছ থেকে তোমার এতটুকুই প্রাপ্য। বর্ণনাকারী
বলেন, অতঃপর যখন সে শপথ করার জন্য প্রস্তুত হ’ল, তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বললেন, مَنِ اقْتَطَعَ أَرْضًا ظَالِمًا لَقِىَ اللهَ وَهُوَ عَلَيْهِ
غَضْبَانُ ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে সম্পত্তি গ্রাস করবে, সে আল্লাহর কাছে
এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রোধান্বিত থাকবেন’।[15]
অপরদিকে
সমাজে এমন অনেক দাপটে ব্যক্তি আছেন, যারা বিনা নোটিশে বা বিনা অনুমতিতে
জোর করে অন্যের জমিতে লাঙ্গল দেন। অর্থাৎ চাষাবাদ করেন। এটিও
মারাত্মক যুলুম।
এভাবে বিনা অনুমতিতে কারো জমিতে চাষাবাদ করা বৈধ নয়। এরূপ ক্ষেত্রে
শরী‘আতের ফায়ছালা হচ্ছে- ঐ ব্যক্তি জোর করে চাষাবাদকৃত জমির ফসলের কোন অংশ
পাবে না, কেবলমাত্র চাষাবাদের খরচ ব্যতীত। রাফে‘ বিন খাদীজ (রাঃ) হ’তে
বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, مَنْ زَرَعَ فِىْ أَرْضِ قَوْمٍ بِغَيْرِ
إِذْنِهِمْ فَلَيْسَ لَهُ مِنَ الزَّرْعِ شَىْءٌ وَلَهُ نَفَقَتُهُ، ‘যে
ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া কোন সম্প্রদায়ের জমিতে কৃষিকাজ করে, তার জন্য কৃষির
কোন অংশ নেই। সে তার খরচ পাবে মাত্র’।[16]
প্রিয়
পাঠক! এভাবে জবরদখল করে সম্পদের মালিক হয়ে দুনিয়াতে ধনী হওয়া যায় বটে,
কিন্তু আখেরাতে হ’তে হবে নিঃস্ব। কেননা আল্লাহর অধিকার বা ‘হাক্কুল্লাহ’
ক্ষুণ্ণ হ’লে আল্লাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু ‘হাক্কুল ইবাদ’
বা বান্দার হক বিনষ্ট হ’লে তিনি ক্ষমা করবেন না। বান্দার নিকট থেকেই ক্ষমা
নিতে হবে। নচেৎ ক্বিয়ামতের দিন নেকী দিয়ে পরিশোধ করতে হবে। আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, أَتَدْرُوْنَ مَا
الْمُفْلِسُ قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لاَ دِرْهَمَ لَهُ وَلاَ
مَتَاعَ فَقَالَ إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِىْ يَأْتِى يَوْمَ
الْقِيَامَةِ بِصَلاَةٍ وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ وَيَأْتِى قَدْ شَتَمَ هَذَا
وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ مَالَ هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا
فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ
فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ
خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِى النَّارِ، ‘তোমরা কি
বলতে পার, নিঃস্ব বা দরিদ্র কে? ছাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার দিরহাম
(টাকা কড়ি) ও আসবা পত্র (ধন-সম্পদ) নেই সেই তো নিঃস্ব। তখন রাসূল (ছাঃ)
বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সেই ব্যক্তি প্রকৃত নিঃস্ব, যে ক্বিয়ামতের দিন
ছালাত, ছিয়াম ও যাকাত (নেকী) নিয়ে উপস্থিত হবে। সাথে ঐসব লোকেরাও আসবে,
যাদের কাউকে (দুনিয়াতে) সে গালি দিয়েছে, কারো উপরে অপবাদ দিয়েছে, কারো
সম্পদ জবরদখল করেছে, কাউকে হত্যা করেছে বা কাউকে প্রহার করেছে। এরপর
পাওনাদারদেরকে একে একে তার নেকী থেকে প্রদান করা হবে। এভাবে পরিশোধ করতে
করতে যদি তার নেকী শেষ হয়ে যায়, তখন ঐসব লোকদের পাপসমূহ তার উপর চাঁপানো
হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’।[17] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ)
বলেন,مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَحَدٍ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَىْءٍ
فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُوْنَ دِيْنَارٌ
وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ
مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ
صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ، ‘যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের প্রতি যুলুম করে
তার সম্মান বা অন্য কোন বিষয়ে, সে যেন আজই তার নিকট থেকে তা মাফ করিয়ে নেয়,
সেই দিন আসার পূর্বে, যেদিন তার নিকটে দিরহাম ও দীনার কিছুই থাকবে না।
সেদিন যদি তার কোন নেক আমল থাকে, তবে তার যুলুম পরিমাণ নেকী সেখান থেকে
নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি তার কাছে নেকী না থাকে, তবে মযলূম ব্যক্তির
পাপসমূহ তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে’।[18]
৮. চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ : চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ আখেরাতে ব্যক্তির জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। কেননা এসবই ‘হাক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক, যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। এতে মালিকের অগোচরে, কখনো জোর-জবরদস্তি করে অন্যের মাল অন্যায়ভাবে গ্রাস করা হয়। অথচ এ থেকে আল্লাহ তা‘আলা চূড়ান্তভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا تَأْكُلُوْا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ، ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা একে অপরের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না’ (নিসা ৪/২৯,৩০)। অন্যত্র তিনি বলেন,وَلَا تَأْكُلُوْا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوْا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوْا فَرِيْقًا مِنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ، ‘আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের সম্পদ ভক্ষণ করো না এবং অন্যের সম্পদ গর্হিত পন্থায় গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তোমরা জেনেশুনে তা বিচারকদের নিকট পেশ করো না’ (বাক্বারাহ ২/১৮৮)।
চুরি করা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।[19] যা তওবা ব্যতীত মাফ হবে না। চোরের দুনিয়াবী শাস্তি হচ্ছে হাত কাটা। আল্লাহ বলেন,وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِنَ اللهِ وَاللهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ، ‘চোর পুরুষ হৌক নারী হৌক তার হাত কেটে দাও তার কৃতকর্মের শাস্তি হিসাবে।
আল্লাহর পক্ষ হ’তে এটাই তার শাস্তি। আর আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত ও মহা প্রজ্ঞাময়’ (মায়েদা ৫/৩৮)।
আর তা বাস্তবায়ন করবে দেশের দায়িত্বশীল সরকার, বিচ্ছিন্নভাবে কোন ব্যক্তি
নয়। এ ক্ষেত্রে কোন প্রকার পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। মন্ত্রী-এমপির পুত্র
বা ক্ষমতাসীনদের কেউ চুরি করলে ক্ষমা করা হবে, আর অন্য কেউ করলে শাস্তি
পাবে। এই দ্বিমুখী বিধান ইসলামের নয়। ইসলামের বিধান সর্বশ্রেণীর মানুষের
জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। রাজা-প্রজা, ধনী-গরীব কারো মধ্যে কোন তারতম্য নেই।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাখযূম গোত্রের এক
মহিলা চোরের ঘটনা কুরাইশদের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে
তুলল। এ অবস্থায় তারা বলাবলি করতে লাগল যে, এ ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে
কে আলাপ করতে পারে? তারা বলল, একমাত্র রাসূল (ছাঃ)-এর প্রিয়তম ওসামা বিন
যায়েদ (রাঃ) এ ব্যাপারে আলোচনার সাহস করতে পারেন। অতঃপর ওসামা রাসূল
(ছাঃ)-এর সাথে এ বিষয়ে কথা বললেন। রাসূল (ছাঃ) তখন তাকে বললেন,أَتَشْفَعُ
فِى حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ، ‘তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমা
লঙ্ঘনকারিণীর সাজা মওকূফের সুপারিশ করছ’? অতঃপর রাসূল (ছাঃ) দাঁড়িয়ে খুৎবা
দিলেন। খুৎবায় জনগণের উদ্দেশ্যে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বললেন, أَيُّهَا
النَّاسُ إِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا
سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيْهِمُ الضَّعِيْفُ
أَقَامُوْا عَلَيْهِ الْحَدَّ وَايْمُ اللهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ
مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا- ‘তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে এ
কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোন বিশিষ্ট লোক চুরি করত, তখন তারা
বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন কোন অসহায় গরীব সাধারণ লোক চুরি করত, তখন
তার উপর হদ (বিধান) জারী করত। আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মাদের কন্যা ফাতেমাও
চুরি করত, তাহ’লে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম’।[20]
আমাদের
সমাজে চুরির অনেক রকমফের রয়েছে। ব্যক্তির সম্পত্তি যেমন চুরি করা হয় তেমনি
প্রাতিষ্ঠানিক সম্পদ, সংস্থা বা সংগঠনের সম্পদ, সরকারী সম্পদ ও দায়িত্বশীল
কর্তৃক জনগণের সম্পদও চুরি করা হয়। সেটি বৃহত্তর অর্থে ‘পুকুর চুরি’ও হ’তে
পারে, সামান্য কম্বল চুরিও হ’তে পারে। অনেকে সামান্য চুরিকে কিছুই মনে
করেন না। ভাবেন এ আর তেমন কী? অথচ রাসূল (ছাঃ) একটি ডিম চুরির জন্যও
অভিসম্পাত করেছেন। তিনি বলেন, لَعَنَ اللهُ السَّارِقَ، يَسْرِقُ
الْبَيْضَةَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ، وَيَسْرِقُ الْحَبْلَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ-
‘ঐ চোরের উপর আল্লাহর লা‘নত, যে একটি ডিম চুরি করার ফলে তার হাত কাটা হয়
এবং একটা রশি চুরি করার ফলে তার হাত কাটা হয়’।[21] ‘একবার ছাফওয়ান বিন
উমাইয়া মদীনায় আগমন করলেন এবং নিজ চাদরটি বালিশ স্বরূপ মাথার নিচে রেখে
মসজিদের ঘুমিয়ে পড়লেন। এমন সময় এক চোর এসে চাদরটি তুলে নিল। ছাফওয়ান তাকে
ধরে ফেললেন এবং রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে নিয়ে আসলেন। রাসূল (ছাঃ) তার হাত
কাটার নির্দেশ দিলেন। তখন ছাফওয়ান বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি তাকে
এ জন্য আনিনি যে, আপনি তার হাত কেটে দিবেন। আমি চাদরটি তাকে ছাদাক্বা করে
দিয়েছি। তখন রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমার নিকটে আনার পূর্বে ছাদাক্বা করলে না
কেন?’।[22]
খায়বর যুদ্ধের দিন মুত্যুবরণকারী
জনৈক ছাহাবীর থলেতে সামান্য দুই দিরহাম মূল্যের গণীমতের একটি হার পাওয়ায়
রাসূল (ছাঃ) তার জানাযা পড়েননি।[23] রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘(জুতার) একটি ফিতা বা দু’টি ফিতাও জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হবে’।[24]
আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, কারকারাহ নামক এক
ব্যক্তি যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-এর আসবাবপত্রের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে
নিয়োজিত ছিল। সে মারা গেলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, এ ব্যক্তি জাহান্নামী। এ কথা
শুনে লোকেরা তার মাল-সামানা তল্লাশী করে দেখতে পেল যে, সে গণীমতের মাল
হ’তে একটি জুববা আত্মসাৎ করেছে’।[25] আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) ওমর
(রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, খায়বর যুদ্ধের দিন রাসূল (ছাঃ)-এর কয়েকজন
ছাহাবী এসে নিহত মুসলমানদের বর্ণনা দিতে লাগলেন এবং বললেন, অমুক শহীদ
হয়েছে, অমুক শহীদ হয়েছে। অবশেষে তারা আরো এক ব্যক্তি সম্পর্কে বললেন যে,
অমুক শহীদ হয়েছে। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, كَلاَّ إِنِّىْ رَأَيْتُهُ فِى
النَّارِ فِىْ بُرْدَةٍ غَلَّهَا أَوْ عَبَاءَةٍ، ‘কখনোই না। আমি তাকে একটি
কম্বল অথবা একটি জুববা গণীমতের মাল হ’তে খেয়ানতের কারণে জাহান্নামের আগুনে
দগ্ধ হ’তে দেখেছি’। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) ওমর (রাঃ)-কে বললেন, হে খাত্ত্বাবের
পুত্র! লোকদেরকে তিন তিনবার ঘোষণা শুনিয়ে দাও যে, لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ
إِلاَّ الْمُؤْمِنُوْنَ ‘মুমিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[26]
উক্ত হাদীছ সমূহ থেকে এ কথা সুস্পষ্ট হয় যে, চুরির মাল যত সামান্যই হৌক না কেন, তা হকদারের নিকটে ফিরিয়ে দিয়ে আল্লাহর নিকটে খালেছ তওবা না করলে হয়ত এই সামান্য মালই তার আখেরাতের অনন্ত জীবনে জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন-আমীন!
[ক্রমশঃ]
[1]. বুখারী, মিশকাত হা/২৭৫৯।
[2]. বুখারী হা/৫২; তিরমিযী হা/১২৪৬; ইবনু মাজাহ হা/৪১১৯; মিশকাত হা/২৭৬২, ঐ, বঙ্গানুবাদ ৬/২ পৃঃ হা/২৬৪২।
[3]. তিরমিযী হা/২৫১৮; নাসাঈ হা/৫৭১১; মিশকাত হা/২৭৭৩।
[4]. বুখারী হা/২০৫৫, ঐ বঙ্গানুবাদ ইফাবা হা/১৯২৭; মুসলিম হা/১০৭১।
[5]. বুখারী হা/২৪৩২, ঐ বঙ্গানুবাদ ইফাবা হা/২২৭০; মুসলিম হা/১০৭০।
[6]. বুখারী হা/৩৮৪২; ঐ, বঙ্গানুবাদ ইফাবা. হা/৩৫৬৪।
[7]. বুখারী হা/৬৪৩৯; মুসলিম হা/১০৪৮; মিশকাত হা/৫২৭৩।
[8]. বুখারী হা/২০৫৯; মিশকাত হা/২৭৬১, ঐ বঙ্গানুবাদ ৬/২, হা/২৬৪১।
[9]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, মিশকাত হা/২৭৮৭; ছহীহাহ হা/২৬০৯।
[10]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৩৮ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়।
[11]. বুখারী হা/২৪৫৪, ৩১৯৬; মিশকাত হা/২৯৫৮।
[12]. আহমাদ হা/১৮০৩৭; ছহীহাহ হা/২৪০।
[13]. মুসলিম হা/১৯৭৮; মিশকাত হা/৪০৭০।
[14]. মুসলিম হা/১৯৭৮; নাসাঈ হা/৪৪৪২; মিশকাত হা/৪০৭০।
[15]. মুসলিম হা/১৩৯; ঐ, বঙ্গানুবাদ ইফাবা হা/২৫৮ ‘ঈমান’ অধ্যায়; আহমাদ হা/১৮৮৮৩।
[16]. আবূদাঊদ হা/৩৪০৩; ইবনু মাজাহ হা/২৪৬৬; তিরমিযী হা/১৩৬৬; মিশকাত হা/২৯৭৯।
[17]. মুসলিম হা/২৫৮১; মিশকাত হা/৫১২৭।
[18]. বুখারী হা/২৪৪৯; মিশকাত হা/৫১২৬।
[19]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৮।
[20]. বুখারী হা/৪৩০৪; মুসলিম হা/১৬৮৮।
[21]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৯২।
[22]. আবূদাঊদ হা/৪৩৯৪; ইবনু মাজাহ হা/২৫৯৫; মিশকাত হা/৩৫৯৮, সনদ ছহীহ।
[23]. ছহীহ ইবনে হিববান হা/৪৮৫৩; মিশকাত হা/৪০১১।
[24]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৯৯৭।
[25]. বুখারী হা/৩০৭৪; মিশকাত হা/৩৯৯৮।
[26]. মুসলিম হা/১১৪; মিশকাত হা/৫০।