আপনি কাউকে তুচ্ছজ্ঞান করবেন না, অপবাদপ্রাপ্ত ব্যক্তির পাশে বসবেন না, পাপাচারী ব্যক্তির সাথে (ঘনিষ্ঠভাবে) মিশবেন না ও তাকে সঙ্গ দিবেন না। কেবলমাত্র তাক্বওয়াশীল ও সম্মানিত ব্যক্তির সাথে ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখুন। কেননা অসৎ সঙ্গীর চেয়ে একাকী থাকাই উত্তম। আপনি ভূষিত হেŠন সর্বোচ্চ ও সর্বোত্তম চরিত্রে এবং সকল ধরনের নিকৃষ্ট ও মন্দ স্বভাব থেকে বিরত থাকুন। নবী করীম (ছাঃ) থেকে আমার নিকটে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,إنَّ الله يُحِبُّ مَعَالِيَ الأخْلَاقِ ويَكْرَهُ سَفْسافَها  ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোত্তম চরিত্রকে ভলোবাসেন এবং নিকৃষ্ট স্বভাবকে অপসন্দ করেন’।[1]

আমার নিকটে হাদীছ পৌঁছেছে যে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, بُعِثْتُ لِأُتَمِّمَ مَكَارِمَ الْأَخْلَاقِ، ‘সর্বোত্তম চরিত্রসমূহকে পরিপূর্ণতা দান করার জন্য আমি প্রেরিত হয়েছি’।[2]

অন্য কারো উপর দ্বীন ও দুনিয়ার ক্ষেত্রে আপনার প্রাধান্য লক্ষ্য করলে বেশী বেশী আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। নবী করীম (ছাঃ) থেকে আমার নিকট হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, مَا أَنْعَمَ اللهُ عَلَى عَبْدٍ فَحَمِدَ اللهَ عَلَيْهَا إِلَّا كَانَ ذَلِكَ الْحَمْدُ أَفْضَلُ مِنْ تِلْكَ النِّعْمَةِ، ‘আল্লাহ তাঁর বান্দাকে কোন নে‘মত দান করলে যদি সে আল্লাহর প্রশংসা করে, তাহ’লে সেই প্রশংসা তার নে‘মত প্রাপ্তির চেয়ে উত্তম বলে বিবেচিত হয়’।[3]

আর আপনি বিপদগ্রস্থ কাউকে দেখলে বলুন,الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ عَافَانِيْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ، وَفَضَّلَنِيْ عَلَى كَثِيْرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيْلًا، ‘যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাকে সুস্থাবস্থায় রেখেছেন এমন (বিপদ) থেকে, যা দিয়ে তিনি তোমাকে পরীক্ষা করেছেন এবং তাঁর অনেক সৃষ্টিজীব থেকে আমাকে প্রাধান্য দিয়েছেন’।[4]

ইহরাম অবস্থায় জাফরানী রঙের কাপড় পরিধান করবেন না। কেননা আমার নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি তা থেকে নিষেধ করেছেন।[5]

দাঁড়ানো অবস্থায় আপনি রাগান্বিত হ’লে বসে পড়ুন, বসা অবস্থায় থাকলে শুয়ে পড়ুন। কেননা এ বিষয়ে আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,إذَا غَضِبْتَ فَإنْ كُنْتَ قَائِماً فَاقْعُدْ وإنْ كُنْتَ قَاعِداً فاتَّكِئْ وإن كنتَ مُتَّكِئاً فَاضْطَجِعْ، ‘দাঁড়ানো অবস্থায় তুমি রাগান্বিত হ’লে বসে পড়, আর যদি বসে থাক তবে (কোনকিছুর সাথে) হেলান দাও, হেলান দেয়া অবস্থায় থাকলে তুমি শুয়ে পড়’।[6]

খাবার খাওয়া হয় এমন কোন পাত্র দিয়ে আপনি ওযূ করবেন না, গোসলখানায় খাবারপাত্র ঘষা-মাজা করবেন না; কেননা এটা স্বভাবধর্মের বিপরীত।

আপনি অহংকার করবেন না এবং জাফরানী সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। তবে লোমনাশক ব্যবহারের পর দুর্গন্ধ দূরীকরণের জন্য তা ব্যবহার করতে পারেন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,بَيْنَمَا رَجُلٌ فِى بُرْدَيْنِ له مُتَخَلِّقٌ يَتَبَخْتَر فيهما إذْ سَاخَتْ بِه الأرْضُ فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ فِيْهَا إلى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ‘জনৈক ব্যক্তি সুগন্ধিযুক্ত দু’টি চাঁদর পরিধান করে সেগুলোকে নিয়ে সে অহংকার করে চলল, সহসা তাকে সহ মাটি ধ্বসে গেল। ক্বিয়ামত দিবস অবধি সে এভাবে মাটিতে ঢুকতেই থাকবে’।[7]

গোসলখানায় প্রবেশ করে মেহেদী দিয়ে আপনি আপনার হাত ও নখের রং পরিবর্তন করবেন না। কেননা এটা সম্মানিত ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক নয়। তালাক বা দাস মুক্তির ক্ষেত্রে আপনি কসম করবেন না, কেননা এটা ফাসেকদের কসমের ন্যায়। ওমর (রাঃ) থেকে আমার নিকটে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,

أَرْبَعٌ جَائِزَاتٌ إذا تُكُلِّمَ بِهِن وَالطَّلاَقُ الْعِتْقُ وَالنِّكَاحُ وَالنَّذْرُ وأربعة يُمْسونَ والله عليهم ساخط ويُصْبِحون والله عليهم غضبان الْمُتَشَبِّهُونَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتُ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ ومَنْ أَتَى بهيمةً أوعَمِلَ عَمَلَ  قومِ لوطٍ

‘মৌখিক স্বীকৃতির মাধ্যমে চারটি বিষয় সাব্যস্ত হয়। (১) তালাক, (২) দাসমুক্তি, (৩) বিবাহ ও (৪) নযর-নেয়ায। চার শ্রেণীর মানুষ সন্ধ্যায় উপনীত হয় এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ তদের উপরে ক্রোধান্বিত থাকেন। সকালে উপনীত হয় এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ তদের উপরে রাগান্বিত হন। (১)  পুরুষ হয়ে নারীর বেশ ধারণকারী ও (২) নারী হয়ে পুরুষের বেশ ধারণকারিণী এবং (৩) যে ব্যক্তি পশুর সাথে অথবা (৪) কওমে লূত্বের মত সমকামিতায় লিপ্ত হয়’।[8] আপনি এমন সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না, যার রং প্রকাশিত হয়। কেননা নবী করীম (ছাঃ) থেকে আমার নিকটে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,طِيبُ الرِّجَالِ مَا بَطَنَ لَوْنُه وَظَهرَ رِيحُه وَطِيْبُ النِّسَاءِ مَا ظَهَرَ لَوْنُه وَبَطَنَ رِيْحُه ‘পুরুষদের সুগন্ধি হ’ল, যার রং দেখা যায় না, তবে সুগন্ধি পাওয়া যায়; আর মহিলাদের সুগন্ধি হ’ল, যার রং প্রকাশিত হয়, তবে সুগন্ধি পাওয়া যায় না’।[9]

আপনি উত্তম মতামত, ভাল দিকনির্দেশনা ও মধ্যমপন্থাকে আবশ্যিক করে নিন, কেননা আমার নিকট ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত বিখ্যাত একটি হাদীছ পৌঁছেছে যে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ الْهَدْىَ الصَّالِحَ وَالسَّمْتَ الصَّالِحَ وَالاِقْتِصَادَ جُزْءٌ مِنْ خَمْسَةٍ وَعِشْرِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ، ‘নিশ্চয় সঠিক দিকনির্দেশনা, উত্তম ভাবগাম্ভীর্য এবং মধ্যমপন্থা হ’ল নবুওয়তের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ’।[10]

অপবিত্র থেকে পবিত্রতা অর্জনের সময় বড় পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করলে কোন সমস্যা নেই এবং ঐ গোসল দিয়ে ছালাতও আদায় করতে পারেন। কেননা ইবনু আববাস (রাঃ)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, إنَّ الْمَاءَ لَا يَجْنُبُ، ‘নিশ্চয়ই পানি অপবিত্র হয় না’।[11] (অসাবধানতাবশতঃ) মসজিদে শ্লেষ্মা ফেললে তা আপনি মুছে ফেলুন। কেননা আমার নিকট কতিপয় আলেম থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, নবী করীম (ছাঃ) বলেন, هِيَ خَطِيْئَةٌ وكَفَّارَتُها دَفْنُهَا، ‘এটা পাপের কাজ, তবে তার কাফফারা হ’ল তাকে মুছে ফেলা’।[12]

মানবীয় প্রয়োজন পূরণের জন্য টয়লেটে গেলে আপনি ক্বিবলামুখী হয়ে বসবেন না, ক্বিবলার দিকে পিঠ করেও বসবেন না এবং ডান হাতে ইসতেনজা করবেন না। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি তাঁর ছাহাবীদেরকে নির্দেশ দিতেন যে, তারা যেন প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণে ক্বিবলামুখী হয়ে না বসেন, ডান হাতে শেŠচকার্য না করেন এবং গোবর বা হাড় দিয়ে শেŠচকার্য না করেন।[13]

ছালাত সমাপনান্তে আপনি বলুন,اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ مِنَ الْخَيْرِ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّرِّ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ، اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَاذَ بِهِ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ اللَّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنَ النَّارِ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ كُلَّ قَضَاءٍ قَضَيْتَهُ لِى خَيْرًا- ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় কল্যাণ প্রার্থনা করছি দ্রুত বা বিলম্বে, যা আমার জানা আছে ও যা আমার জানা নেই। আমি আপনার কাছে যাবতীয় অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দ্রুত বা বিলম্বে, যা আমার জানা আছে ও যা আমার জানা নেই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় কল্যাণ প্রার্থনা করছি, যেগুলো আপনার বান্দা ও নবী প্রার্থনা করেছিলেন। আপনার কাছে যাবতীয় অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যেগুলো থেকে আপনার বান্দা ও নবী আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট জান্নাত ও জান্নাতে যাওয়ার জন্য যাবতীয় কথা ও কাজ সম্পাদনের তাওফীক কামনা করছি। আপনার নিকট জাহান্নাম ও তা থেকে বাঁচার জন্য যাবতীয় কথা ও কাজ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! যাবতীয় ভাল ফায়ছালা আপনি আমার জন্য নির্ধারণ করুন’।[14]      

যখন মুক্বীম বা মুসাফির হবেন তখন আপনি ইচ্ছা করলে আপনার দুই মোযার উপর মাসাহ করতে পারেন। মুসাফির হ’লে তিন দিন তিন রাত ও মুকীম হ’লে এক দিন ও এক রাত মোযার উপর মাসাহ করবেন।[15]

শাসকের তরফ থেকে কোন যুলুম বা অনিষ্টের আশংকা করলে বলুন, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَعَزُّ مِنْ خَلْقِهِ جَمِيْعًا اللهُ أَعَزُّ مِمَّا أَخَافُ وَأَحْذَرُ  أَعُوْذُ بِاللهِ الَّذِيْ لاَ إلَهَ إِلاَّ هُوَ الْمُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ أَنْ يَقَعْنَ عَلَى الأَرْضِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ مِنْ شَرِّ عَبْدِكَ فُلاَنٍ وَجُنُوْدِهِ وَأَتْبَاعِهِ وَأَشْيَاعِهِ مِنَ الْجِنِّ وَالإِنْسِ اللَّهُمَّ كُنْ لِيْ جَارًا مِنْ شَرِّهِمْ  جَلَّ ثَنَاؤُك وَعَزَّ جَارُك وَتَبَارَكَ اسْمُك  وَلا إلَهَ غَيْرُكَ- ‘আল্লাহ সবার বড়, আল্লাহ তাঁর সকল সৃষ্টিজীবের উপরে পরাক্রমশালী, আল্লাহ সবার চেয়ে বড়, তার চাইতেও, যাকে আমি ভয় করি ও (অনিষ্টের) আশংকায় থাকি। আমি অমুকের অনিষ্ট থেকে মহান আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যিনি সপ্ত আকাশের ধারক, যে আকাশ তাঁর অনুমতি ব্যতীত যমীনের উপরে পতিত (ধ্বংস) হবে না। হে আল্লাহ! অমুক ও তার সৈন্য-সামন্ত মানুষ বা জিনের মধ্য হ’তে কারো বাড়াবাড়ির বিপরীতে আপনি আমার প্রতিবেশী হয়ে যান। আপনার মর্যাদা অনেক বড়, আপনার নাম বরকময়, আর আপনি ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই’। এই দো‘আটি আপনি তিনবার পড়বেন। কেননা ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে আমার নিকট এই হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি আমাদেরকে এরূপ নির্দেশ দিতেন।[16]

অমুসলিম কারো নিকট পত্র লিখলে سَلَامُ اللهِ عَلَيْكُمْ না লিখে বরং আপনি লিখুন, السَلَامُ على من اتَّبَعَ الهُدَى ‘হেদায়াত অনুসরণকারীর উপর শান্তি বর্ষিত হউক’। কেননা আমার নিকট নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি অমুসলিমেদের মাঝে এভাবে পত্র লিখতেন।[17] টয়লেটে আপনার হাঁচি আসলে মনে মনে আল্লাহর নাম স্মরণ করুন, কেননা আল্লাহ বলেন, إِلَيْهِ يَصْعَدُ الْكَلِمُ الطَّيِّبُ وَالْعَمَلُ الصَّالِحُ يَرْفَعُهُ، ‘তাঁর দিকেই যাবতীয় ভাল কথা ও সৎকর্ম  উত্থিত হয়’ (ফাত্বির ৩৫/১০)

স্বর্ণ-রূপা খচিত পাত্রে আপনি তৈল-প্রসাধনী রাখবেন না ও তাতে সুগন্ধি রাখবেন না। কেননা নবী করীম (ছাঃ) থেকে আমার নিকটে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি সোনা-রূপার পাত্রে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন। আপনি মোটা এবং চিকন রেশমের কাপড় পরিধান করবেন না এবং তাতে ঘুমাবেন না। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে,نَهَانَا عَنِ الْحَرِيرِ وَالدِّيبَاجِ وَالشُّرْبِ فِى آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَقَالَ  هُنَّ لَهُمْ فِى الدُّنْيَا وَهْىَ لَكُمْ فِى الآخِرَةِ، ‘তিনি আমাদেরকে মোটা ও চিকন রেশমের কাপড় পরিধান করতে এবং সোনা-রূপার পাত্রে পান করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, এগুলো কাফেরদের জন্য দুনিয়াতে এবং তোমাদের জন্য আখিরাতে’।[18] আপনি যখন আপনার পরিবারে বা খাছমহলে এমন কোন অপসন্দনীয় বিষয় দেখতে পাবেন যা পরিবর্তন করা আবশ্যক, এক্ষেত্রে তাদের কাউকে পরোয়া করবেন না। আপনার উপর ন্যস্ত আল্লাহর হক আদায়ে আপনি সচেষ্ট হেŠন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,انْصُرْ أَخَاكَ ظَالِمًا أَوْ مَظْلُومًا، ‘তুমি তোমার ভাইকে অত্যাচারী অথবা অত্যাচারিত অবস্থায় সাহায্য কর’।[19] আল্লাহর আনুগত্যের কোন কাজের নিয়ত করলে অল্প সময়ের মধ্যে সেটা বাস্তবায়ন করুন, কেননা মৃত্যু থেকে আপনি নিরাপদ নন। আর আল্লাহর অবাধ্যতামূলক কোন কাজের নিয়ত করলে সেটা বাস্তবায়ন করবেন না। ভাল কোন কাজের আহবান এলে প্রস্তাব নাকচ করা আপনার শোভা পায় না, এমন কাজে আপনি কুণ্ঠাবোধ করবেন না। কেননা আল্লাহ বলেন, وَاللهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ ‘আল্লাহ হক প্রকাশে লজ্জাবোধ করেন না’।[20] আর আপনি মুওয়ায্যিনের আযান শুনে তাই বলুন, যা মুওয়ায্যিন বলেন। তবেحَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ-এর সময় বলুন, لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে এ মর্মে হাদীছ পৌঁছেছে।[21]  

আপনি মাহরাম ছাড়া কোন বেগানা মহিলার সাথে নির্জনবাস করবেন না। কেননা আমার নিকট ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বর্ণিত নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে,ألاَ لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ لا تَحِلُّ لَهُ فَإِنَّ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ إِلاَّ مَحْرَمٍ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ مَعَ الْوَاحِدِ وَهُوَ مِنَ الاِثْنَيْنِ أَبَعْدُ ‘সাবধান, কোন পুরুষ যেন কোন বেগানা মহিলার সাথে নির্জনবাস না করে। যেখানে কোন মাহরাম নেই, সেখানে তাদের তৃতীয় জন হয় শয়তান। আর শয়তান একাকী ব্যক্তির পিছনেই লেগে থাকে এবং সে দুইজন ব্যক্তি থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে’।[22] মুক্তাদীবৃন্দ ইমামের পিছনে চুপেচুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। সূরা ফাতিহা শেষে ইমাম যখন ‘আমীন’ বলেন, তখন আপনিও ‘আমীন’ বলুন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,إِذَا أَمَّنَ الإِمَامُ فَأَمِّنُوا فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ تَأْمِينُهُ تَأْمِيْنَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‘ইমাম যখন ‘আমীন’ বলেন, তখন তোমরাও ‘আমীন’ বল। কেননা তোমাদের যার ‘আমীন’ ফেরেশতাগণের ‘আমীন’-এর সাথে মিলে যায়, তার বিগত সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়’।[23] মানবীয় প্রয়োজন পূরণ শেষে কেবলমাত্র পানি দিয়েই পবিত্রতা অর্জন করুন। কেননা আমি জানতে পেরেছি যে, فِيْهِ رِجَال يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا، ‘সেখানে এমন সব লোক রয়েছে, যারা উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হওয়াকে ভালবাসে’ (তওবা ৯/১০৮)। এই আয়াত নাযিল হলে রাসূল (ছাঃ) ‘উয়াইম ইবনে সা‘এদার নিকট গমন করে বললেন, তোমাদের পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম কি, যার আল্লাহ প্রশংসা করেছেন? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের কোন নর-নারী টয়লেট শেষে কেবল পানি দিয়েই পবিত্রতা অর্জন করে। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘হ্যাঁ, এটিই একমাত্র কারণ’।[24] খাবার শেষে আপনি আঙ্গুল ভাল করে চেটে খাবেন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, حَبَّذَا الْمُتَخَلِّلُونَ مِنْ أمَّتي ‘আমার উম্মতের খিলালকারী (তথা আঙ্গুল ভাল করে চেটে খায় ও ওযূতে খিলালকারী) এমন লোকেরা কতইনা উত্তম’।[25]

আপনি যখন কোন অবতরণস্থলে নামবেন তখন বলুন,أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ، ‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহের মাধ্যমে তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[26] কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,مَنْ نَزَل مَنْزِلاً فَقَالَ هَذِه الْكَلِمَاتِ وُقِيَ شَرَّ مَنْزِلِه حَتَّى يَرْتَحِلَ مِنْهُ، ‘যে ব্যক্তি কোন অবতরণস্থলে নেমে এই বাক্যগুলো বলবে, সেখান থেকে প্রস্থান পর্যন্ত সে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে’।[27] যে খাবার বা পানীয়ের মূল্য খাওয়া আপনার জন্য হারাম, তা থেকে সামান্যতমও খাবেন না। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, إنَّ الَّذِيْ حَرَّمَ شُرْبَهَا حَرَّمَ بَيْعَها، ‘যে মহান সত্তা তা পান করা হারাম করেছেন, তা তিনি বিক্রি করাও হারাম করেছেন’।[28]

হিংস্র পশু-পাখির গোশত ভক্ষণ করবেন না। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি হিংস্র ধারালো দাঁত বিশিষ্ট কোন পশু বা নখর বিশিষ্ট পাখির গোশত ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। ঘুমের ঘোরে ভয় পেলে আপনি বলুন,أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ، ‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহের মাধ্যমে তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তাঁর দুষ্ট বান্দা এবং শয়তানদের অনিষ্ট ও উপস্থিতি থেকেও আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। কেননা আমার নিকট নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,إِذَا فَزِعَ أَحَدُكُمْ فِى النَّوْمِ فَلْيَقُلْ ذلِكَ ‘তোমাদের কেউ যখন নিদ্রায় ভয় পায়, তখন সে যেন উক্ত বাক্যগুলো বলে’।[29]

যখন আপনি কাউকে কসম দিয়ে বলবেন যে, তুমি অবশ্যই এই সময়ের মধ্যে এই কাজটি সম্পাদন কর। কিন্তু সে তা করল না, তখন আপনি উক্ত কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করুন।

অমুসলিমদের কাউকে প্রথমে আপনি সালাম দিবেন না। তাদের কেউ সালাম দিলে তখন আপনি বলুন, وَعَلَيْكُمْ ‘আপনার প্রতিও’। কেননা আমার নিকট নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি এরূপ নির্দেশ দিতেন।[30] অপবিত্র অবস্থায় ওযূ ছাড়া পানাহার করাতে কোন সমস্যা নেই, যখন আপনি হস্তদ্বয় প্রক্ষালন করে পানাহার আরম্ভ করবেন। কাউকে আপনি বলবেন না যে,  صَلَّى اللهُ عَلَيْكَ ‘আল্লাহ আপনার উপরে দরূদ বর্ষণ করুন’। কেননা আমি ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে হাদীছ জানতে পেরেছি যে,مَا يَنْبَغِى الصَّلاَةُ مِنْ أَحَدٍ عَلَى أَحَدٍ إِلاَّ عَلَى النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم، ‘তোমাদের কারো একে অপরের জন্য দুরূদ পাঠ চলবে না, কেবলমাত্র নবী করীম (ছাঃ) ব্যতীত’।[31]

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালবাসলে তাকে অবহিত করুন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে,أَنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّى أُحِبُّ فُلاَناً فِى اللهِ. قَالَ  فَأَخْبَرْتَهُ قَالَ لاَ قَالَ  فَأَخْبِرْهُ  فَقَالَ تَعْلَمُ أَنِّى أُحِبُّكَ فِى اللهِ قَالَ فَقَالَ لَهُ فَأَحَبَّكَ الَّذِى أَحْبَبْتَنِى لَهُ ‘জনৈক ব্যক্তি নবী করীম (ছাঃ)-কে বলল, আমি অমুককে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালবাসি। তিনি বললন, তুমি কি তাকে অবগত করেছ? সে বলল, না। তিনি বললেন, তাকে অবগত কর। যখন সে তাকে অবগত করল, ঐ ব্যক্তি তখন বলল, আল্লাহ তোমাকে ভালবাসুন, যাঁর জন্য তুমি আমাকে ভালোবেসেছ’।[32]

যার উপরে আল্লাহর হদ ওয়াজিব হয়েছে এবং ফায়ছালাটি শীর্ষ পর্যায়ের কর্তৃত্বশীলের নিকট পৌঁছে গেছে, তখন আর সুফারিশ করবেন না। তার পূর্বে অধঃস্তন পর্যায়ে ফায়ছালাটি থাকলে আপনি সুফারিশ করতে পারেন। কেননা আমি কতিপয় আলেম ছাহাবী থেকে জানতে পেরেছি যে, জনৈক ছাহাবী এক চোরের দন্ডবিধি মওকূফের জন্য আল্লাহর রাসূলের নিকট আবেদন জানালে তাকে বলা হ’ল, ছাহাবী হয়ে আপনি এ বিষয়ে সুফারিশ করছেন? অধঃস্তন পর্যায়ে ফয়ছালাটি থাকতে আপনি সুফারিশ করতে পারতেন। কিন্তু ফায়ছালাটি শীর্ষ পর্যায়ের কর্তৃত্বশীলের নিকট পৌঁছে গেলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না, যদিও কর্তৃত্বশীল ক্ষমা করে দেন। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, تَعَافَوُا الْحُدُودَ فِيمَا بَيْنَكُمْ فَمَا بَلَغَنِى مِنْ حَدٍّ فَقَدْ وَجَبَ، ‘তোমাদের বিবাদীয় বিষয়গুলোকে তোমরা পরস্পর সমাধান করে নিও। আর যে বিচার আমার কাছে আসবে, তার হদ অপরিহার্য হয়ে যাবে।[33] আপনি অপ্রয়োজনীয় কথা পরিহার করুন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন, لا يَسْتَكْمِلُ أحدُكم حقيقةَ الإيمان حتى يَخْزن لسانَه ‘তোমাদের কেউ ঈমান ততক্ষণ পূর্ণ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার জিহবাকে সংযত করে’।[34] হাঁচি দিয়ে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বলুন। কেউ يرحمك الله বললে আপনি বলুন, يَهْدِيكُمُ اللهُ ويُصْلِحُ بَالَكُمْ وَيَغْفِرُ لَكُمْ، ‘আল্লাহ আপনাদের হিদায়াত দান করুন, আপনাদের অবস্থার সংশোধন করুন এবং আপনাদেরকে ক্ষমা করুন’। কেননা এ বিষয়টি আমার কাছে কতিপয় ছাহাবী মারফত পৌঁছেছে যে, নবী করীম (ছাঃ) এভাবে বলতেন। আপনার নিকটে কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বলার পূর্বে আপনি তার জবাব দিবেন না। তবে সে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বললে তার জবাব দিন। কেননা আমার নিকটে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি বলেন,مِنْ حَقِّ المسلمِ عَلى المسْلِمِ... تَشْمِيْتُ العَاطِسِ إذا حَمِدَ اللهَ ‘এক মুসলমানের উপর আরেক মুসলমানের হক হ’ল, ... সে হাঁচি দিয়ে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বললে, তার জবাব দিবে’।[35]

বড়কে আপনি সম্মান করুন ও ছোটকে স্নেহ করুন। কেননা নবী করীম (ছাঃ) বলেন,ليْسَ مِنَّا مَنْ لم يَرْحمْ صَغِيْرَنا وَلَمْ يُوَقِّرْ كَبِيْرَنَا، ‘যে ছোটদের স্নেহ করে না ও বড়দের সম্মান করে না, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়’।[36]

মসজিদে আপনি উচ্চৈঃস্বরে কথা বলবেন না। সেখানে তরবারী কোষমুক্ত করবেন না। কেননা নবী করীম (ছাঃ) তা থেকে নিষেধ করেছেন।[37] সাক্ষী প্রদানের জন্য আপনাকে আহবান করা হ’লে, তাতে আপনার স্বাধীনতা রয়েছে। উপস্থিত হয়ে গেলে আপনি অস্বীকৃতি জানাবেন না। কারো প্রতি উপকার করলে খোঁটা প্রদান করবেন না। কেননা তাতে আপনার ছওয়াব বরবাদ হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تُبْطِلُواْ صَدَقَاتِكُم بِالْمَنِّ وَالأذَى ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দিয়ে তোমাদের ছাদাক্বাগুলো বরবাদ করো না’ (বাক্বারাহ ২/২৬৪)। কেউ আপনার উপকার করলে, আপনি তার প্রতিদান দিতে অপারগ হ’লে অন্ততঃ সেটা উল্লেখ করে তার প্রশংসা করুন। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,مَنْ أُولِيَ مَعروفا فَلم يَقْدِرْ عَلى المكافَأةِ إلا بالثَّناءِ فَقَدْ شَكَرَه ومَنْ كَتَمَه فَقدْ كَفَرَه، ‘যে উপকৃত হ’ল, কৃতজ্ঞতা স্বীকার ব্যতিরেকে প্রতিদান দিতে অপারগ হ’লে, অন্ততঃ তার প্রশংসা করলেও সে যেন তার প্রতি কৃতজ্ঞ হ’ল। আর যে তা গোপন রাখল, সে অকৃতজ্ঞ হ’ল’।[38] খাবারের সময় আপনার নিকটে কেউ থাকলে তাকে আহবান জানান। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,إنَّ في الجَنَّةِ غُرَفاً يُرَىَ ظَاهِرُهَا مِنْ بَاطِنِهَا وَبَاطِنُهَا مِنْ ظاهِرِه، قِيْلَ لِمَنْ هِيَ قَالَ لِمَن أطْعَمَ الطَّعَامَ وَتَابَعَ الصِّيَامَ وقَالَ طَيِّبَ الْكَلاَمِ وَصَلَّى بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ، ‘জান্নাতে এমন কিছু গৃহ আছে যার বাহির থেকে ভিতর দেখা যায় এবং ভিতর থেকে বাহির দেখা যায়। জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল! এটা কার জন্য? তিনি বললেন, এটা তার জন্য, যে অপরকে আহার করায়, নিয়মিত ছিয়াম রাখে, নম্রভাষায় কথা বলে, রাতে মানুষ ঘুমন্ত থাকলে সে (তাহাজ্জুদ) ছালাত আদায় করে’।[39]

আল্লাহর ওয়াস্তে কোন কাজ করলে তা সর্বোত্তমভাবে সম্পাদন করুন। আল্লাহ বলেন, لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلاً ‘যাতে তিনি পরীক্ষা করেন, কে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম আমল করে’ (মুলক ৬৭/২)। কাউকে শাস্তি দানের ব্যাপারে আপনি তাড়াহুড়া করবেন না এবং তাকে অপবাদ আরোপ করবেন না। সকালে উপনীত হ’লে আপনি বলুন,لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ  لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ  شَىْءٍ قَدِيْرٌ،‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। যাবতীয় প্রশংসা ও রাজত্ব তাঁরই, তিনি সকল কিছুর উপর কর্তৃত্বশীল’ (দশ বার) যে ব্যক্তি সকালে উক্ত দো‘আটি ১০ বার পড়বে, তার জন্য ১০০টি ছওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়, ১০০টি পাপ মোচন করা হয় এবং ১টি দাসমুক্তির সমপরিমাণ নেকী লেখা হয়। অনুরূপভাবে সন্ধ্যায় পাঠ করলেও সমপরিমাণ নেকী পাবে’।[40] দুই ঈদ, জুম‘আ ও ‘আরাফার ময়দানে যাওয়ার পূর্বে আপনি গোসল করুন, তবে ওযূ করলেও চলবে। আলী (রাঃ)-কে জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, জুম‘আ, দুই ঈদ ও আরাফার দিন গোসল করবে।[41]   

আপনি অপর কোন ব্যক্তির বাড়িতে বা তার নিয়ন্ত্রণাধীন স্থানে তার অনুমতি ব্যতীত ইমামতি করবেন না। এটা এ কারণে যে আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে, তিনি বলেন,لاَ يَؤُمَّنَّ الرَّجُلُ الرَّجُلَ فِى سُلْطَانِهِ وَلاَ يَقْعُدْ فِى بَيْتِهِ عَلَى تَكْرِمَتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، ‘কেউ যেন অপর কোন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন স্থানে তার অনুমতি ব্যতীত ইমামতি না করে এবং তার বাড়ির সম্মানজনক স্থানে তার অনুমতি ব্যতীত না বসে’।[42] মানুষরা আপনার সম্মানে দাঁড়িয়ে থাকবে, এটা আপনি পসন্দ করবেন না। কেননা নবী করীম (ছাঃ) বলেন,مَنْ سَرَّهُ أن يَمْثُلَ لَه بَنُوْ آدَم قِياماً وَجَبَتْ لَه النَّار ‘যে ব্যক্তি পসন্দ করে যে তার সম্মানে কোন আদম সন্তান দাঁড়িয়ে থাকুক, তবে তার জন্য জাহান্নাম অপরিহার্য হয়ে গেল’।[43] দাওয়াত দেয়া হ’লে তা আপনি কবুল করুন। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِذَا دُعِىَ أَحَدُكُمْ إِلَى وَلِيمَةِ عُرْسٍ فَلْيُجِبْ، ‘ওয়ালীমার দিনের দাওয়াতে তোমাদের কাউকে আহবান করা হ’লে, সে যেন তা কবুল করে’।[44] তিনি আরও বলেন, لَوْ دُعِيْتُ إلى كُراعٍ لَأَجَبْتُ ‘খুরা দ্বারা প্রস্ত্ততকৃত ওয়ালীমায় আমাকে দাওয়াত দেয়া হ’লেও আমি তার দাওয়াত কবুল করব’।[45]

কোন কাজের বিষয়ে আপনি কসম করলে যদি আপনার মাতা-পিতা বা এতদুভয়ের একজন উক্ত কসমের বিপরীত কাজ করে, তবে তাদেরকে ততদিন পর্যন্ত দেখাশুনা করবেন, যতদিন তারা আল্লাহর অবাধ্যতা না করে। চাঁদের সতের, ঊনিশ বা একুশ তারিখে (বিজোড় দিনগুলোতে) আপনি শিঙ্গা লাগাতে পারেন। কেননা আমার নিকটে নবী করীম (ছাঃ) থেকে হাদীছ পৌঁছেছে যে, তিনি এভাবে পরামর্শ দিতেন।[46] রোগী দেখতে গেলে আলতো পরিচর্যা করুন ও স্বল্প সময় অবস্থান করুন। কবরস্থানের পাশ দিয়ে অতিক্রম কালে আপনি এ দো‘আটি বলুন,السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ أَنْتُمْ لَنَا فَرَطٌ وَنَحْنُ لَكُمْ تَبَعٌ أَسْأَلُ اللهَ الْعَافِيَةَ لَنَا وَلَكُمْ، ‘আপনাদের উপর শান্তি অবতীর্ণ হউক ওহে  কবরবাসী মুসলমানবৃন্দ! আল্লাহ চাহেনতো আমরা আপনাদের সাথে মিলিত হব, আপনারা আমাদের অগ্রগামী, আমরা আপনাদের অনুগামী। আমি আমাদের ও আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করছি’।[47]

পদব্রজে হেঁটে গেলে জানাযার সামনে যাওয়াতে কোন সমস্যা নেই। কেননা আমি নবী করীম (ছাঃ) থেকে, আবু বকর, ওমর, ওছমান (রাঃ) থেকে জানতে পেরেছি যে, তাঁরা জানাযার আগে হাঁটতেন। আর যদি আপনি আরোহী হন, তবে জানাযার অগ্রগামী হবেন না। জানাযা কবরস্থানে পৌঁছার পর কাঁধ থেকে তা নামানোর পূর্বে আপনি (কবরে) নামবেন না। কেননা তা আমি কতিপয় ছাহাবী মরফত জানতে পেরেছি।[48] খাবার বা পানীয়তে আপনি ফুঁক দিবেন না, কেননা তা মন্দস্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। কতিপয় আলেম আমাকে এমনটা বলেছেন।[49]

দশ স্থানে আপনি হস্তদ্বয় উত্তোলন করুন। তাকবীরে তাহরীমার সময়, দুই ঈদের ছালাতে, বিতরের কনূতে, ছালাতের (চার স্থানে) তাকবীরে, হাজারে আসওয়াদ চুম্বনের সময়, আরাফাতের ময়দানে, জুম‘আর ছালাতে, ছাফা ও মারওয়াতে এবং কংকর নিক্ষেপের সময়।[50] আপনি দাবা খেলা থেকে বিরত থাকবেন। কেননা নবী করীম (ছাঃ) শতরঞ্জ খেলা সম্পর্কে বলেন, مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدَشِيْرِ فَكَأَنَّمَا صَبَغَ يَدَهُ فِى لَحْمِ خِنْزِيْرٍ وَدَمِهِ، ‘যে ব্যক্তি শতরঞ্জ (দাবা, লুডু, কেরাম বোর্ড, মোবাইল-কম্পিউটার ইত্যাদিতে গেম্স) খেলল, সে যেন তার হাতকে শূকরের রক্ত-মাংসে রঙ্গীন করল’।[51]

ইফতারের সময় ছায়েমদেরকে আপনার ইফতারে আহবান করুন। কেননা নবী করীম (ছাঃ) বলেন,مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْئًا ‘যে ব্যক্তি কোন ছায়েমকে ইফতার করাল, তারও ছায়েমের অনুরূপ নেকী হবে, তবে ছায়েমের নেকী থেকে সামান্যতমও কমতি করা হবে না’।[52]

মনে রাখবেন হে খলীফা! আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আমার তরফ থেকে আপনার প্রতি কতিপয় দিক নির্দেশনামূলক নছীহত প্রেরণ করেছেন। যার মাধ্যমে আল্লাহ আপনাকে উপকৃত করবেন এবং আমিও ছওয়াব পাব। আপনি সেগুলি হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করুন, আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দান করুন, আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন। এগুলো উপলব্ধি করুন, তার উপরে আমল করুন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের আমল আরম্ভ করুন। আমলগুলোকে আপনার উপর আবশ্যক করে নিন। আমি আপনার জন্য যা বর্ণনা করেছি তাকে যথার্থভাবে সংরক্ষণ করুন। আল্লাহর নিকট সাহায্য চেয়ে নিয়মিত দৃঢ়ভাবে আমল করুন। কেননা তিনি ব্যতীত কোন শক্তি এবং সামর্থ্য নেই, তিনি সমুন্নত ও মহান। আল্লাহ আমাদেরকে, বিশেষভাবে আপনাকে তাঁর আনুগত্য করার তাওফীক দান করুন, আমাকে ও আপনাকে তাঁর অবাধ্যতা থেকে দূরে রাখুন। তাঁর সন্তুষ্টিমূলক আমল করার তাওফীক দান করুন। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। মুহাম্মাদ (ছাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ ও সকল ছাহাবীর উপর আল্লাহ অশেষ শান্তি বর্ষণ করুন। আমীন! (ঈষৎ পরিমার্জিত ও সংক্ষেপায়িত)


[1]. হাকেম হা/১৫১; ছহীহাহ হা/১৬২৭।

[2]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/২৭৩; ছহীহাহ হা/৪৫।

[3]. ছহীহুত তারগীব হা/১৫৭৩; আল-জামেঊছ ছগীর হা/১০৪৯৯; সনদ হাসান।

[4]. তিরমিযী হা/৩৪৩২; ছহীহাহ হা/৬০২, ২৭৩৭।

[5]. বুখারী হা/৫৮৪৭; মুসলিম হা/১১৭৭ ।

[6]. জামেউল আহাদীছ হা/৪১৭৩৫; ইহইয়াউ উলূমুদ্দীন হা/৩০৮৮, সনদ ছহীহ।

[7]. বুখারী হা/৩৪৮৫; মুসলিম হা/২০৮৮।

[8]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/১৮৭১৫; বায়হাক্বী হা/৫০০১; ইবনু মাজাহ হা/২৫৬১, সনদ ছহীহ।

[9]. তিরমিযী হা/২৭৮৭; নাসাঈ হা/৫১১৭; সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৪৪৪৩।

[10]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৭৯১; আবূদাঊদ হা/৪৭৭৬, সনদ হাসান; মিশকাত হা/৫০৬০।

[11]. আবূদাঊদ হা/৬৮; তিরমিযী হা/৬৫, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৫৫৯৯।

[12]. বুখারী হা/৪১৫; মুসলিম হা/৫৫২।

[13]. বুখারী হা/১৪৪; ইবনু মাজাহ হা/৩১৮; নাসাঈ হা/৩৯; বুলূগুল মারাম হা/১০১।

[14]. আহমাদ হা/২৫০৬৩; ইবনু মাজাহ হা/৩৮৪৬; ছহীহাহ হা/১৫৪২।

[15]. বুখারী হা/১৮২; মুসলিম হা/২৭৫।

[16]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৭০৮; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৯৭৮৭, হাদীছ ছহীহ ।

[17]. বুখারী হা/২৯৪১; মুসলিম হা/১৭৭৩।

[18]. বুখারী হা/৫৬৩২; মুসলিম হা/২০৬৭।

[19]. বুখারী হা/২৪৪৩; মুসলিম হা/২৫৮৪।

[20]. বুখারী হা/১৩০; মুসলিম হা/১৯৭৩।

[21]. বুখারী হা/৬১৩; মুসলিম হা/৩৮৫।

[22]. তিরমিযী হা/১১৭১; আহমাদ হা/১৪৬৯২, সনদ ছহীহ।

[23]. বুখারী হা/৭৮০; মুসলিম হা/৪১০।

[24]. আবূদাঊদ হা/৪৪; ইবনু মাজাহ হা/৩৫৫; হাকেম হা/৫৫৪, ৬৭২, সনদ ছহীহ।

[25]. ছহীহ তারগীব হা/২১৬; সিলসিলা ছাহীহাহ হা/২৫৬৭।

[26]. মুসলিম হা/২৭০৮; আবূদাঊদ হা/৩৮৯৮।

[27]. মুসলিম হা/২৭০৮, ২৭০৯; আবূদাঊদ হা/২২১২।

[28]. মুসলিম হা/১৫৭৯; আহমাদ হা/২০৪১।

[29]. তিরমিযী হা/৩৫২৮; আবূদাঊদ হা/৩৮৯৩; মিশকাত হা/২৪৭৭, সনদ হাসান।

[30]. বুখারী হা/২৯৩৫; মুসলিম হা/২১৬৩।

[31]. জামেউল আখলাক হা/১৩২২; তাফসীরে ক্বাসেমী, সূরা তাওবার ১০৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[32]. আহমাদ হা/১২৫৩৬; মিশকাত হা/৫০১৭, সনদ ছহীহ।

[33]. আবূদাঊদ হা/৪৩৭৬; নাসাঈ হা/৪৮৮৫, সনদ ছহীহ।

[34]. বায়হাক্বী হা/৫৪৯; ছহীহাহ হা/২৮৪১।

[35]. বুখারী হা/১০২৪; মুসলিম হা/২১৬২।

[36]. আহমাদ হা/৬৯৩৭; ছহীহাহ/২১৯৬।

[37]. আহমাদ হা/২০৪৪৫; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৯৪৩, সনদ ছহীহ।

[38]. ছহীহ আত-তারগীব হা/৯৬৮, ৯৬৯, ৯৭৪, সনদ হাসান; আল-মুসনাদুল জামে‘ হা/২৭৭১।

[39]. হাকেম হা/২৭০; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫০৯; ছহীহুল জামে‘ হা/২১২৩

[40]. মুসলিম হা/২৬৯৩; আবূদাঊদ হা/৫০৭৯; আহমাদ হা/৮৭০৪।

[41]. বুখারী হা/৮৭৭; মুসলিম হা/৮৪৪, ৮৪৫।

[42]. মুসলিম হা/৬৭৩; তিরমিযী হা/২৩৫।

[43]. আবূদাঊদ হা/৫২২৯; তিরমিযী হা/২৭৫৫; ছহীহাহ হা/৩৫৭।

[44]. মুসলিম হা/১৪২৯; আহমাদ হা/৪৭৩০।

[45]. বুখারী হা/২৫৬৮; মিশকাত হা/১৮২৭।

[46]. তিরমিযী হা/২০৫১; ছহীহাহ হা/৬২২, ১৮৪৭।

[47]. মুসলিম হা/৯৭৪-৫; আবূদাঊদ হা/৩২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/১৫৪৬।

[48]. মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/৭৬৩; তিরমিযী হা/১০১০; ইবনু মাজাহ হা/১৪৮৩; সনদ ছহীহ।

[49]. আহমাদ হা/২৮১৮; আবূদাঊদ হা/৩৭২৮, সনদ ছহীহ। এছাড়াও বায়হাক্বী, সুনানে কুবরা হা২/২১১, ৫/৮২; তাফসীর কুরতুবী ৭/২২৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/২৩৮; কিতাবুল আছার ১/২১ দ্রঃ

[50]. আবূদাঊদ হা/৭২৮; ইবনু মাজাহ হা/১০৬১, সনদ ছহীহ।

[51]. আহমাদ হা/২৩০২৯ মুসলিম হা/২২৬০; আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১২৭১।

[52]. আহমাদ হা/১৭০৭৪; তিরমিযী হা/৪০৭, সনদ ছহীহ।





ইসলামী শাসনের একটি নমুনা - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
তাতারদের আদ্যোপান্ত (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
তাতারদের আদ্যোপান্ত - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আইনে জালূত যুদ্ধ : তাতারদের বিজয়াভিযানের পরিসমাপ্তি - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
তাতারদের আদ্যোপান্ত - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
কাযী শুরাইহ-এর ন্যায়বিচার - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
খলীফা হারূনুর রশীদের নিকটে প্রেরিত ইমাম মালেক (রহঃ)-এর ঐতিহাসিক চিঠি (২য় কিস্তি) - ইহসান ইলাহী যহীর
খলীফা হারূনুর রশীদের নিকটে প্রেরিত ইমাম মালেক (রহঃ)-এর ঐতিহাসিক চিঠি - ইহসান ইলাহী যহীর
তাতারদরে আদ্যোপান্ত - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ছাহাবায়ে কেরাম নেতৃত্বকে যেভাবে ভয় পেতেন - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
নীলনদের প্রতি ওমর (রাঃ)-এর পত্র - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
দিলালপুর : আহলেহাদীছ আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র - এডভোকেট জারজিস আহমাদ
আরও
আরও
.