ভুল ধারণা-৬ :
আহলেহাদীছরা আলেমদেরকে মানে না :
তাক্বলীদে শাখছী থেকে আহলেহাদীছদের দূরে থাকাকে অনেকে আলেমদের প্রতি অসন্তুষ্টির সমার্থবোধক বানিয়ে দেন। তারা এটা মনে করেন যে, আহলেহাদীছরা যেখানে চার ইমামেরই তাক্বলীদ করে না সেখানে অন্য আলেমদের কিভাবে মানতে পারে? অথচ এটা সত্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। আহলেহাদীছরা কোন আলেমের ব্যক্তিত্ব বা তার কথাকে নবী করীম (ছাঃ)-এর ন্যায় অনুসরণ করা আবশ্যক মনে করেন না। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তারা আলেমদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন। দ্বীনের মাসআলা-মাসায়েল বুঝতে আলেমদের নিকট থেকে উপকৃত হওয়া এবং তাঁদের দিকনির্দেশনা গ্রহণ করাকে তারা যরূরী মনে করেন।
(১) আহলেহাদীছরা জানা না থাকার ক্ষেত্রে আলেমদের খেদমত থেকে উপকার লাভ করে থাকেন : স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা জানা না থাকলে আলেমদের নিকট থেকে উপকৃত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, فَاسْأَلُوْا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ، ‘যদি তোমাদের জানা না থাকে তাহ’লে জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস কর’ (নাহল ১৬/৪৩; আম্বিয়া ২১/৭)। এ আয়াত থেকে বিদ্বানগণ এ কথার দলীল গ্রহণ করে থাকেন যে, যার জানা নেই সে যেন জ্ঞানী ব্যক্তির দারস্থ হয় এবং তার নিকট থেকে জেনে স্বীয় জ্ঞান বৃদ্ধি করে।
(২) দুনিয়া থেকে আলেমদের উঠিয়ে নেওয়া মানুষদের গোমরাহীর এক বড় কারণ :
আলেমদের
জীবিত থাকা উম্মতের জন্য গোমরাহী থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যম। অপরপক্ষে
আলেমদের শূন্যতা ভ্রষ্টতা ও ধ্বংসের কারণ। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)
বলেছেন,إِنَّ اللهَ لاَ يَنْزِعُ العِلْمَ بَعْدَ أَنْ أَعْطَاكُمُوْهُ
انْتِزَاعًا، وَلَكِنْ يَنْتَزِعُهُ مِنْهُمْ مَعَ قَبْضِ العُلَمَاءِ
بِعِلْمِهِمْ، فَيَبْقَى نَاسٌ جُهَّالٌ، يُسْتَفْتَوْنَ فَيُفْتُوْنَ
بِرَأْيِهِمْ، فَيُضِلُّوْنَ وَيَضِلُّوْنَ، ‘আল্লাহ তোমাদেরকে যে ইলম দান
করেছেন তা হঠাৎ ছিনিয়ে নেবেন না। বরং আলেমদেরকে তাদের ইলমসহ ক্রমশঃ তুলে
নেয়ার মাধ্যমে তা ছিনিয়ে নেবেন। তখন কেবল মূর্খ লোকেরা অবশিষ্ট থাকবে।
তাদের কাছে ফৎওয়া চাওয়া হ’লে তারা মনগড়া ফৎওয়া দেবে। ফলে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে এবং অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে’।[1]
এ হাদীছের ভিত্তিতে আহলেহাদীছরাও এ আক্বীদা পোষণ করেন যে, আলেম-ওলামার বিদ্যমানতা উম্মতের কল্যাণ ও হেদায়াতের কারণ। আলেম-ওলামার অনুপস্থিতি অযোগ্য ব্যক্তিদের ফৎওয়াবাযী করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিবে। যা স্বয়ং তাদের ও অন্যদের পথভ্রষ্ট হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেকারণ সর্বদা আলেমদের সাহচর্যে থাকতে হবে।
(৩) আহলেহাদীছরা স্বীয় প্রবৃত্তিপূজার নিন্দা করেন[2] : কোন কোন মানুষের এ ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, আহলেহাদীছদের দাওয়াতের উদ্দেশ্য হ’ল সাধারণ মানুষকে আলেমদের নিকট থেকে মুক্ত করে প্রবৃত্তিপূজার পথে পরিচালিত করা। অথচ এ অভিযোগকারীদের মধ্যে অবশ্যই কেউ এমন আছেন যিনি জানেন যে, আহলেহাদীছদের মাঝে আলেম ও জনসাধারণ উভয়েই রয়েছে, যারা আলেমদের নিকট থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করে তদনুযায়ী আমল করে। সারা পৃথিবীতে আহলেহাদীছদের বড় বড় মাদরাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেখান থেকে প্রতিবছর শত-সহস্র ছাত্র সনদ লাভ করে দ্বীনের খেদমতের জন্য সমাজের অংশ হয়ে যায়।
আহলেহাদীছদের দাওয়াত কখনো এটা নয় যে, জনসাধারণকে আলেমদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে তাদেরকে মুজতাহিদের আসনে আসীন করা। বরং আহলেহাদীছদের দাওয়াত এই যে, সাধারণ মানুষকে এমন জ্ঞানের দিকে প্রত্যাবর্তন করানো, যা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) নিয়ে এসেছেন। তাদের দাওয়াত হ’ল জনসাধারণের মাঝে এ চেতনা সৃষ্টি করা যে, তারা মাযহাবী গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে উঠে হক-কে মান্যকারী হবেন। চাই হক পেশকারী বিরোধী দলের লোক-ই হোন না কেন। আহলেহাদীছের দাওয়াত হ’ল বাপ-দাদা, পূর্ব-পুরুষ, সমাজ ও প্রবৃত্তির ঊর্ধ্বে উঠে উম্মতের মাঝে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর কথা মেনে নেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা। এমনকি গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, আসল প্রবৃত্তিপূজা তো এটাই যে, বাপ-দাদা, সমাজ ও মাযহাবী গোঁড়ামির কারণে মানুষ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা মেনে নেওয়া থেকে দূরে থাকবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيْبُوْا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُوْنَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللهِ- ‘অতঃপর যদি তারা তোমার কথায় সাড়া না দেয় তবে জানবে যে, তারা কেবল তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে। আর যে ব্যক্তি আললাহর হেদায়াত অগ্রাহ্য করে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে?’ (ক্বাছাছ ২৮/৫০)।
অর্থাৎ যদি মানুষ আল্লাহর রাসূলের ডাকে সাড়া না দেয়, তাঁর কথা না মানে এমনকি শুনতে আগ্রহীও না হয় তাহ’লে এটা তার প্রবৃত্তিপূজার প্রমাণ বৈকি। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত হেদায়াত ও পথনির্দেশনা উপেক্ষা করে স্রেফ ধারণা ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করা সবচাইতে বড় গোমরাহী। যে ব্যক্তি আল্লাহ প্রদত্ত দিকনির্দেশনার বিরোধিতা করবে, তার সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হওয়া ও অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকতে পারে কি?
আহলেহাদীছদের দৃষ্টিতে,
আলেম-ওলামার নিকট থেকে সরে যাওয়া যেমন গোমরাহীর কারণ, তেমনি আলেমদের ফৎওয়া
সমূহের মধ্য থেকে নিজের ইচ্ছামত ফৎওয়া তালাশ করে তার উপর আমল করাও গোমরাহী।
এ ধরনের ব্যক্তি বাহ্যিকভাবে আলেমদের কথার অনুসরণকারী হিসাবে নিজেকে যাহির
করলেও আসলে সে স্বীয় প্রবৃত্তির দাস হয়ে থাকে। সুলায়মান তায়মী (৪৬-১৪৩
হিঃ) বলেন, إِنْ أَخَذْتَ بِرُخْصَةِ كُلِّ عَالِمٍ اجْتَمَعَ فِيكَ
الشَّرُّ كُلُّهُ ‘যদি তুমি সব আলেমের রুখছত তথা শিথিল ফৎওয়াগুলো গ্রহণ কর
তাহ’লে তোমার মধ্যে সব অকল্যাণ একত্রিত হবে’।[3]
ইবনু
আব্দিল বার্র বলেন, هَذَا إِجْمَاعٌ لَا أَعْلَمُ فِيْهِ خِلَافًا ‘এ কথার
উপর ইজমা হয়েছে। আমার জানা মতে এ ব্যাপারে কারো মধ্যে কোন দ্বিমত নেই’।[4]
নিজের খায়েশ পূরণ করার জন্য আলেমদের কথার উপর নির্ভর করাকে জ্ঞানের পরিবর্তে মূর্খতা ও কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণ বলাই অধিক যুক্তিযুক্ত। সব ধরনের প্রবৃত্তিপূজা থেকে বেঁচে থাকা এবং কুরআন ও সুন্নাহর অনুসারী হওয়াই আহলেহাদীছদের দাওয়াতের মূল কথা।
(৪) কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মতভেদের ফায়ছালা হওয়া উচিত :
এখানে একথাও ভাবার দাবী রাখে যে, যারা আলেমদের কথা মানার উপর জোর দেন এবং আহলেহাদীছদেরকে আলেমদের দুশমন সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা চালান, তারা কি সকল আলেমের কথা মানেন? এক মাযহাবের হওয়া সত্ত্বেও কোন কোন সময় সেই মাযহাবের সাথে সম্পৃক্ত দু’দলের আলেমদের মধ্যে এত মারাত্মক মতভেদ দেখা দেয় যে, ব্যাপারটা একে অপরকে গোমরাহ এমনকি কাফের আখ্যা দেয়া পর্যন্ত গড়ায়। এমতাবস্থায় প্রত্যেক দলের আলেমগণ তাদের অনুসারীদেরকে অপর দলের আলেমদের বাধা দেন। তারা নিজেদের এ ধরনের কর্মপদ্ধতিকে আলেমদেরকে অসম্মান করা বা তাদের বিরোধিতা আখ্যা দেয় না। তাদের নিকটে আলেমদের কথা মেনে নেয়ার মূলনীতি শুধুমাত্র নিজ জামা‘আত বা দলের আলেমদের পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। পক্ষান্তরে আহলেহাদীছরা কোন আলেমের মতামতকে শুধুমাত্র দলীয় গোঁড়ামির কারণে প্রত্যাখ্যান করে না; বরং কিতাব ও সুন্নাতের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়া অথবা দলীল বিহীন হওয়ার কারণে পরিত্যাগ করে। আর এটা স্বয়ং ঈমানের দাবী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর এবং আনুগত্য কর রাসূলের ও তোমাদের নেতৃবৃন্দের। অতঃপর যদি কোন বিষয়ে তোমরা বিতন্ডা কর, তাহ’লে বিষয়টি আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক দিয়ে সর্বোত্তম’ (নিসা ৪/৫৯)।
এ আয়াত থেকে দলীল গ্রহণ করতে গিয়ে কোন কোন আলেম এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, আলেমদের কথা মানা আবশ্যক। কেননা স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা এর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি একথা বলেন না যে, এ আয়াতে আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের আনুগত্যের নির্দেশ উলুল আমর (নেতাদের)-এর পূর্বে এবং আলাদাভাবে দেয়া হয়েছে। উলুল আমর-এর কথা কি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর অগ্রগণ্য? আলেমরা কি কিতাব ও সুন্নাতের চেয়ে অগ্রগামী? আয়াতে তো আলেমদেরকে স্বয়ং দলীলও আখ্যা দেয়া হয়নি। বরং মতভেদের সময়ে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে। যদি আলেমদের কথা স্বয়ং দলীল হ’ত তাহ’লে সেটিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে ফিরানোর প্রয়োজন হ’ত না। বুঝা গেল যে, আলেমদের কথা মানার হুকুম সে সময় প্রযোজ্য হবে, যখন তা কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক হবে। আলাদাভাবে নয়। কারণ আলেম নিজে কোন দলীল নন। বরং তিনি দলীলের মুখাপেক্ষী।
(৫) আহলেহাদীছগণ শরী‘আতের মোকাবিলায় কোন আলেমের কথা মানেন না :
যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার অহীর মোকাবিলায় আলেমদের কথাকে মেনে নেয় অথবা আলেমদেরকে বস্ত্তসমূহকে হালাল বা হারাম আখ্যা দেওয়ার এখতিয়ার দিয়ে দেয়, তাহ’লে এটা তাদেরকে রব বা মা‘বূদের স্থানে বসানোর নামান্তর। আদী বিন হাতেম বলেন,أَتَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي عُنُقِي صَلِيبٌ فَقَالَ لِي: يَا عَدِيَّ بْنَ حَاتِمٍ: أَلْقِ هَذَا الْوَثَنَ مِنْ عُنُقِكَ- وَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ وَهُوَ يَقْرَأُ سُورَةَ بَرَاءَةٍ حَتَّى أَتَى عَلَى هَذِهِ الْآيَةِ اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا لَمْ نَتَّخِذْهُمْ أَرْبَابًا، قَالَ: بَلَى، أَلَيْسَ يُحِلُّونَ لَكُمْ مَا حُرِّمَ عَلَيْكُمْ فَتُحِلُّونَهُ، وَيُحَرِّمُونَ عَلَيْكُمْ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ فَتُحَرِّمُونَهُ؟ فَقُلْتُ: بَلَى، قَالَ: تِلْكَ عِبَادَتُهُمْ ‘আমি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আসলাম। তখন আমার গলায় ক্রুশ ঝুলানো ছিল। তিনি এটা দেখে বললেন, হে আদী! তোমার গলা থেকে এ মূর্তিটি ছুঁড়ে ফেল। আমি তাঁর নিকটবর্তী হ’লে শুনতে পেলাম, তিনি সূরা তওবা পাঠ করছিলেন। এমনকি তিনিاتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ ‘তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম-ওলামা ও পোপ-পাদ্রীদের এবং মারিয়াম পুত্র মসীহ ঈসাকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছে’ (তওবা ৯/৩১) আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলেন। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা
তো
তাদেরকে আমাদের রব বানাইনি। তিনি বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই বানিয়েছ। ব্যাপারটা
কি এরূপ নয় যে, যখন তারা আল্লাহর হারাম করা কোন বস্ত্তকে তোমাদের জন্য
হালাল করে দেন, তখন তোমরা তা হালাল রূপে গ্রহণ কর। আবার যখন তারা আল্লাহ
প্রদত্ত হালালকে তোমাদের জন্য হারাম করেন তখন তোমরা সেটাকে তোমাদের জন্য
হারাম মনে কর। আমি বললাম, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, এটাই তাদের
ইবাদত’।[5]
অর্থাৎ আল্লাহ প্রদত্ত শরী‘আতের মোকাবিলায় আলেমদের কথা মানা শিরক। মানুষ চাই তাদেরকে মা‘বূদের মর্যাদা দিক বা না দিক। তাদের কথা শরী‘আত বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও তা মেনে নেয়ার অর্থই হ’ল তাদেরকে শরী‘আত প্রণেতা রূপে মেনে নেয়া। আর এটাই হ’ল তাদেরকে রব আখ্যা দেয়া।
[চলবে]
[1]. বুখারী হা/৭৩০৭ ‘কুরআন ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়; মুসলিম হা/৪৮২৮, ৪৮২৯ ‘ইলম’ অধ্যায়।
[2]. القضاة ثلاثة : قاضيان في النار و قاض في الجنة قاض قضى بالهوى فهو في النار و قاض قضى بغير علم فهو في النار و قاض قضى بالحق فهو في الجنة- ‘বিচারক তিন শ্রেণীর। দুই শ্রেণীর বিচারক জাহান্নামে এবং এক শ্রেণীর জান্নাতে যাবে। যে বিচারক তার প্রবৃত্তি অনুযায়ী বিচার করবে সে জাহান্নামে যাবে। অনুরূপভাবে যে না জেনে বিচার করবে সেও জাহান্নামে যাবে। আর যিনি হক অনুযায়ী বিচার করবেন তিনি জান্নাতে যাবেন’ (ছহীহুল জামে‘ হা/৪৪৪৭)।
[3]. জামেউ বায়ানিল ইলম, ক্রমিক ১০৮৯।
[4]. ঐ।
[5]. তিরমিযী হা/৩০৯৫; বায়হাকী, আস-সুনানুল কুবরা হ/২০৩৫০; হাদীছ হাসান; জামেউ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহি ক্রমিক ১১৪০।