ভূমিকা : সুস্থ জীবন যাপনের জন্য আমাদের মৌলিক চাহিদাগুলো যেমন অপরিহার্য, তেমনি মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন মানুষের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি করে তাদের বিবেককে জাগিয়ে তোলা। জীবনে উচ্ছৃঙ্খলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মূলে দায়ী আমরা নিজেরাই। পারিবারিক ও সমাজ জীবনের পরিমন্ডল এবং মূল্যবোধ সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদেরই। বর্তমানে নীতিবোধ ও নৈতিক শিক্ষা উপেক্ষিত বলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে মানব সম্পদ উন্নয়নের এ গতিধারাটি বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অটুট পারিবারিক বন্ধন, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বন্ধন, আল্লাহর ভয়, ন্যায়-নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা, সংযত ও রুচিশীল পোষাক-পরিচ্ছদ, সামাজিক বিধি-নিষেধ, পারস্পরিক সহমর্মিতা, সহনশীলতা প্রভৃতি রীতিনীতিগুলো ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ভূলুণ্ঠিত প্রায়। ইসলামের পূর্ণ অনুশীলন ও অনুশাসনের অভাব এবং মুসলমানদের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানের অজ্ঞতাই হ’ল ইসলামের শত্রুদের বড় হাতিয়ার। মুসলমানদের ইসলামের সঠিক পরিচয় ও এর বিধি-নিষেধের জ্ঞান না থাকায় তারাও শত্রুদের চক্রান্তের শিকার হয়। এজন্য দায়ী আমাদের আলেম সমাজ ও ইসলাম বর্জিত রাজনীতি-সমাজনীতি।
পৃথিবীর অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো আমাদের দেশেরও মানবসম্পদ উন্নয়নের পথে কতগুলো বাধা বা সমস্যা রয়েছে। যেমন জনগণের মৌলিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব। অপরদিকে জনমানবের উন্নয়নের জন্য আমাদের চমৎকার সম্ভাবনাও আছে। উন্নয়নের পথে আমাদের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করে তা দূর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের সম্ভাবনাগুলোকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। আর এই মহান কাজে কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার যোগ্য উত্তরসূরি হ’লেন আমাদের মসজিদের ইমামগণ। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ الْعُلَمَاءَ هُمْ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ إِنَّ الأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوْا دِيْنَارًا وَلاَ دِرْهَمًا إِنَّمَا وَرَّثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ- ‘আলেমগণই নবীগণের উত্তরাধিকারী। নবীগণ দীনার বা দিরহামের উত্তরাধিকারী করেন না। বরং তারা ইলমের উত্তরাধিকারী করেন। ফলে যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করল সে বৃহদাংশ গ্রহণ করল’।[1] আলোচ্য নিবন্ধে আমরা মানব সম্পদ উন্নয়নে ইমামগণের ভূমিকা উল্লেখ করার চেষ্টা করব।-
ইমামদের জন্য করণীয় : ইমামগণ জনগণকে ইসলামের সাম্য-মৈত্রী, একতা-সংহতি, নীতি-নৈতিকতা, মানবতা, সমাজপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, অন্যের অধিকার, আমানতদারিতা, পরহেযগারিতা, জবাবদিহীতা, নমনীয়তা, সর্বোপরি মানবসম্পদ উন্নয়নে গঠনমূলক পরিকল্পনা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধি, আত্মসমালোচনা ও গর্ব-অহংকার বর্জনসহ প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞান শিক্ষা দিতে পারেন। নিজেদের মেধা, শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সমাজ থেকে অলসতা, কর্মবিমুখতা, ব্যক্তিপূজার প্রবণতা, লোভ, আত্মসাৎ, গীবত, তোহমত, কাঁদা ছোড়াছুড়ি, হিংসার বিষবাষ্প ছড়ানো থেকে বিরত থেকে আত্মকর্মশীল করে তুলতে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। ইমামগণের জন্য অবশ্যই করণীয় হ’ল জানা বিষয়গুলো আমজনতার নিকট প্রচার করা। যুগোপযুগী কৌশল, বুদ্ধিমত্তা, দূরদর্শিতা ও যথাযথ আদর্শের প্রতীক হয়ে সত্যকে মুছল্লীদের কাছে সহনীয়, বরণীয় ও গ্রহণীয় করে তুলতে হবে। যেমন আল্লাহ তাঁর নবীর নিকট অহী প্রেরণের পর তা মানুষের নিকট প্রচারের নির্দেশ দিয়ে বলেন,يَا أَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِيْنَ- ‘হে রাসূল! তোমার প্রতি তোমার প্রভুর পক্ষ হ’তে যা নাযিল হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন), তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও। যদি না দাও, তাহ’লে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছে দিলে না। আল্লাহ তোমাকে শত্রুদের হামলা থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (মায়েদাহ ৫/৬৭)।
এ প্রসঙ্গে রাসূল (ছাঃ) বলেন, بَلِّغُوْا عَنِّىْ وَلَوْ آيَةً ‘আমার পক্ষ হ’তে মানুষের নিকট পৌঁছে দাও, যদি একটি আয়াতও হয়’।[2] অপরদিকে আলেম সমাজ যদি তার প্রতি অর্পিত দায়িত্ব পালনে বা দ্বীন প্রচারের কাজে অবহেলা করে কিংবা তা পালনে বিরত থাকে তবে তার অবস্থা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। হাদীছে এসেছে, আবু বকর (রাঃ) বলেন,
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ تَقْرَءُوْنَ هَذِهِ الآيَةَ (يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ) وَإِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنَّ النَّاسَ إِذَا رَأَوُا الظَّالِمَ فَلَمْ يَأْخُذُوْا عَلَى يَدَيْهِ أَوْشَكَ أَنْ يَعُمَّهُمُ اللهُ بِعِقَابٍ مِنْهُ-
‘হে লোক সকল!
নিশ্চয়ই তোমরা এ আয়াত তেলাওয়াত কর যে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সাধ্যমত তোমাদের
কাজ করে যাও। পথভ্রষ্টরা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, যখন তোমরা সৎপথে
থাকবে’ (মায়েদাহ ৫/১০৫), আর আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে,
যখন লোকেরা যালিমের হাত ধরে তাকে যুলুম করা থেকে বিরত না রাখবে, তখন মহান
আল্লাহ তাদের উপর ব্যাপকভাবে আযাব নাযিল করবেন’।[3] অন্যত্র নবী করীম (ছাঃ)
বলেন,مَا مِنْ قَوْمٍ يُعْمَلُ فِيْهِمْ بِالْمَعَاصِى ثُمَّ يَقْدِرُوْنَ
عَلَى أَنْ يُغَيِّرُوْا ثُمَّ لاَ يُغَيِّرُوْا إِلاَّ يُوْشِكُ أَنْ
يَعُمَّهُمُ اللهُ مِنْهُ بِعِقَابٍ. ‘যে কওম এরূপ হবে যে, তারা যখন গুনাহে
লিপ্ত হবে, তখন তা প্রতিরোধ করার মত কিছু লোক থাকা সত্ত্বেও যদি তারা
প্রতিকার না করে তখন আল্লাহ তা‘আলা সকলকে আযাবে গ্রেফতার করবেন’।[4]
মানুষকে
দাওয়াত না দিলে দুনিয়াতেই শাস্তি হ’তে পারে। যেমন রাসূল (ছাঃ)
বলেন,وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِهِ لَتَأْمُرُنَّ بِالْمَعْرُوْفِ
وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ أَوْ لَيُوْشِكَنَّ اللهُ أَنْ يَبْعَثَ
عَلَيْكُمْ عِقَابًا مِنْهُ ثُمَّ تَدْعُوْنَهُ فَلاَ يُسْتَجَابُ لَكُمْ،
‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে
এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করবে। অন্যথা আল্লাহ তা‘আলা শীঘ্রই তোমাদের উপর
তার শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তখন তোমরা তাঁর নিকট দো‘আ করলেও তিনি তোমাদের
দো‘আ কবুল করবেন না’।[5]
তবে আলেমগণকে অবশ্যই তাদের দাওয়াত অনুযায়ী আমল করতে হবে। অন্যথা ক্বিয়ামতের দিন তাদেরকে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
يُجَاءُ بِالرَّجُلِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُلْقَى فِي النَّارِ فَتَنْدَلِقُ أَقْتَابُهُ فِي النَّارِ فَيَطْحَنُ فِيهَا كَطَحْنِ الْحِمَارِ بِرَحَاهُ فَيَجْتَمِعُ أَهْلُ النَّارِ عَلَيْهِ فَيَقُولُونَ: أَيْ فُلَانُ مَا شَأْنُكَ؟ أَلَيْسَ كُنْتَ تَأْمُرُنَا بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَانَا عَنِ الْمُنْكَرِ؟ قَالَ: كُنْتُ آمُرُكُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَلَا آتِيهِ وَأَنْهَاكُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَآتِيْهِ-
‘এক ব্যক্তিকে ক্বিয়ামতের
দিন নিয়ে আসা হবে। তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন তার
নাড়িভূঁড়ি বের হয়ে যাবে। আর সে তা নিয়ে ঘুরতে থাকবে যেমনভাবে গাধা আটা পিষা
যাতার সাথে ঘুরতে থাকে। জাহান্নামীরা তার নিকটে একত্রিত হয়ে তাকে জিজ্ঞেস
করবে, হে অমুক ব্যক্তি! আপনার এই অবস্থা (পরিণতি) কেন? আপনি কি আমাদের ভাল
কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হ’তে নিষেধ করতেন না? সে বলবে, হ্যাঁ। আমি তোমাদের
ভাল কাজের আদেশ করতাম, কিন্তু নিজে তা করতাম না। আর মন্দ কাজের নিষেধ
করতাম, কিন্তু নিজেই সে মন্দ কাজ করতাম’।[6]
ইমামদের জন্য বর্জনীয় : জাতির উন্নয়নে দেশের দক্ষ মানবসম্পদ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। মানবসম্পদ এমন এক বিরাট সম্পদ, যা সঠিকভাবে কার্যকর করা হ’লে প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত তথা দেশ-জাতির প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। মানবসম্পদকে যথাযথ দিক নির্দেশনা দিতে না পারলে উন্নয়ন-প্রক্রিয়া দারুণভাবে ব্যাহত হয়। সুতরাং মানবসম্পদ উন্নয়নে দেশের আলেম সমাজ, ধর্মীয় নেতা ও মসজিদের ইমাম-খতীবদেরকে নেতৃত্বের প্রতি অনীহা, দুশ্চরিত্র, অশ্লীলভাষা, কর্কষভাষা ও রূঢ় আচরণ, অসৎ সঙ্গ, অসত্য কথা, কথা-কর্মের গড়মিল, ধৈর্যহীনতা, গোঁড়ামি, বিদ‘আতের লালন, অপসংস্কৃতির অনুকরণ, জিহাদবিমুখতা, শিষ্টাচার বহির্ভূত কথা ও কর্ম, হিংসার ও বৈষম্য আচরণ প্রভৃতি অসুন্দর ও অকল্যাণকর কাজ বর্জনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়োজিত করা বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُوْلًا أَنِ اعْبُدُوْا اللهَ وَاجْتَنِبُوْا الطَّاغُوْتَ- ‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিকট আমরা রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগূত থেকে দূরে থাক’ (নাহল ১৬/৩৬)। আল্লাহ আরো বলেন,
قُلْ فَأْتُوْا بِكِتَابٍ مِنْ عِنْدِ اللهِ هُوَ أَهْدَى مِنْهُمَا أَتَّبِعْهُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ، فَإِنْ لَّمْ يَسْتَجِيبُوْا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُوْنَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللهِ إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِيْ الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ-
‘তুমি বল, বেশ তাহ’লে তোমরা আল্লাহর নিকট থেকে এমন একটি কিতাব নিয়ে এসো যা এদু’টিকে (তওরাত ও কুরআনের) চাইতে উত্তম পথ প্রদর্শনকারী হবে। আমি তা অনুসরণ করব, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। অতঃপর যদি তারা তোমার কথায় সাড়া না দেয় তবে জানবে যে, তারা কেবল তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর হেদায়াত অগ্রাহ্য করে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে? নিশ্চয়ই আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (ক্বাছাছ ২৮/৪৯-৫০)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন,بَلِ اتَّبَعَ الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا أَهْوَاءَهُمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ فَمَنْ يَّهْدِيْ مَنْ أَضَلَّ اللهُ وَمَا لَهُمْ مِنْ نَاصِرِيْنَ- ‘বরং সীমালংঘনকারীরা অজ্ঞতাবশে তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে থাকে। অতএব আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাকে পথ দেখাবে কে? তাদের তো কোন সাহায্যকারী নেই’ (রূম ৩০/২৯)। হাদীছে এসেছে,
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ وَثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ فَأَمَّا الْمُنْجِيَاتُ: فَتَقْوَى اللهِ فِي السِّرِّ والعلانيةِ والقوْلُ بالحقِّ فِي الرضى وَالسَّخَطِ وَالْقَصْدُ فِي الْغِنَى وَالْفَقْرِ. وَأَمَّا الْمُهْلِكَاتُ: فَهَوًى مُتَّبَعٌ وَشُحٌّ مُطَاعٌ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ وَهِيَ أَشَدُّهُنَّ،
‘আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত,
রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তিনটি জিনিস মুক্তিদানকারী ও তিনটি জিনিস ধ্বংসকারী।
মুক্তিদানকারী জিনিসগুলো হ’ল (১) গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহকে ভয় করা (২)
সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিতে সত্য কথা বলা এবং (৩) সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতায় দানের
ইচ্ছা পোষণ করা। আর ধ্বংসকারী জিনিসগুলো হ’ল (১) প্রবৃত্তি পূজারী হওয়া (২)
লোভের দাস হওয়া এবং (৩) আত্ম অহংকারী হওয়া। আর এটিই হ’ল সবচেয়ে মারাত্মক’।[7]
মানবসম্পদ উন্নয়নে ইমামদের ভূমিকা :
আমাদের দেশে যথেষ্ট মূলধন না থাকলেও আছে পর্যাপ্ত জনসংখ্যা। এই জনসংখ্যার বিশুদ্ধ ধর্ম বিশ্বাস, নৈতিকতা ও সঠিক ইসলামী জ্ঞানে দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে তথা মানবসম্পদে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। আর রূপান্তরিত এই বিশাল জনসম্পদই হ’ল প্রকৃত অর্থে মানবসম্পদ। দেশের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মসজিদের ইমাম-খত্বীবগণ যদি পরিকল্পিত পন্থায় দা‘ওয়াতী কাজে অগ্রসর হন, তাহ’লে তাঁরা মসজিদের আওতাধীন ধর্মপ্রাণ মানুষকে সামাজিক অনাচার ও অনৈতিক বিষয়াদি সম্পর্কে সজাগ-সচেতন করতে পারেন। নিরক্ষরতা দূরীকরণ, মাদকতা প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, পরিবেশ সংরক্ষণসহ জাতীয় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নে ও তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন। এক্ষেত্রে তাঁরা বিশেষ কিছু বিষয়ে মুছল্লীদের বিবেককে জাগিয়ে তোলার জন্য কাজ করতে পারেন। যেমন:
(ক) মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য : আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন কেবলমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য। তবে সাথে সাথে ইচ্ছা-অনিচ্ছার ক্ষমতাও তাকে দিয়েছেন। তাই কেউ আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা যথার্থ ব্যয় করে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করেছে এবং কেউ এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আল্লাহ বলেন,وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ- ‘আর আমি জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদত করবে’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। অন্যত্র তিনি বলেন,وَمَا أُمِرُوْا إِلَّا لِيَعْبُدُوْا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ وَيُقِيْمُوْا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ- ‘অথচ তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খালেছ অন্তরে একনিষ্ঠভাবে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং ছালাত কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে। আর এটাই হ’ল সরল দ্বীন’ (বাইয়িনাহ ৯৮/৫)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ
يَرْضَى لَكُمْ ثَلَاثًا، وَيَكْرَهُ لَكُمْ ثَلَاثًا، فَيَرْضَى لَكُمْ:
أَنْ تَعْبُدُوْهُ، وَلَا تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا، وَأَنْ تَعْتَصِمُوْا
بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعًا وَلَا تَفَرَّقُوْا، وَيَكْرَهُ لَكُمْ: قِيْلَ
وَقَالَ، وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةِ الْمَالِ- ‘আল্লাহ তোমাদের
তিনটি বিষয় পসন্দ করেন এবং তিনটি বিষয় অপসন্দ করেন। পসন্দনীয় বিষয়গুলো হ’ল,
একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না এবং আল্লাহর
রজ্জুকে মযবূতভাবে ধারণ করবে ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না। আর অপসন্দনীয়
তিনটি বিষয় হ’ল অনর্থক কথা বলা, অধিকহারে প্রশ্ন করা এবং সম্পদ বিনষ্ট
করা’।[8]
(খ) طَاغُوْتٌ (ত্বাগূত)-এর স্পষ্ট ধারণা প্রদান : طَاغُوْتٌ শব্দটি আল-কুরআনে আটবার এসেছে। ত্বাগূত-এর শাব্দিক অর্থ- সীমা লঙ্ঘনকারী, অবাধ্য। আল্লাহ ছাড়া আর যাকেই মানা হয় সেই ত্বাগূত। এ অর্থে আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে বা আল্লাহর মর্যাদায় বা আল্লাহ প্রদত্ত বিধান বহির্ভূত নিয়মে বস্ত্ত, ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র এবং সমাজে প্রচলিত রসম-রেওয়ায ও তরীকা যা কিছুই মানা হয় সবই ত্বাগূত।
হাফেয ইবনুল
ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, فَطَاغُوْتُ كُلِّ قَوْمٍ مِنْ يَتَحَاكَمُوْنَ
إلَيْهِ غَيْرَ اللهِ وَرَسُوْلِهِ- ‘প্রত্যেক জাতির ত্বাগূত সে, যার কাছে
আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ)-কে বাদ দিয়ে লোকেরা শাসন ও বিচার চায়’।[9]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,ذَلِكَ بِأَنَّ اللهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهِ هُوَ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيْرُ- ‘এটা একারণেও যে, কেবলমাত্র আল্লাহই সত্য এবং তাঁর পরিবর্তে যাকে তারা ডাকে তা অসত্য। আর আল্লাহই সর্বোচ্চ ও মহান’ (হজ্জ ২২/৬২)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَسُوْلًا أَنِ اعْبُدُوْا اللهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ- ‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিকট আমরা রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগূত থেকে দূরে থাক’ (নাহল ১৬/৩৬)।
(গ) আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য : মূলতঃ একনিষ্ঠতার নিদর্শন হ’ল আনুগত্য। আনুগত্য হচ্ছে জান্নাত লাভের উপায় ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির পথ। আনুগত্যের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজেকে একটি সুশৃঙ্খল ও সুন্দর জীবন ধারায় পরিচালনা করতে পারে। আল্লাহ বলেন,وَاذْكُرُوْا نِعْمَةَ اللهِ عَلَيْكُمْ وَمِيْثَاقَهُ الَّذِيْ وَاثَقَكُمْ بِهِ إِذْ قُلْتُمْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَاتَّقُوْا اللهَ- ‘আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নে‘মতকে স্মরণ কর এবং ঐ অঙ্গীকারকে স্মরণ কর, যা তোমরা তাঁর সাথে করেছিলে। যখন তোমরা বলেছিলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর’ (মায়েদাহ ৫/৭)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَأَطِيعُوْا اللهَ وَالرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ ‘তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। যাতে তোমরা
রহমত প্রাপ্ত হ’তে পার’ (আলে ইমরান ৩/১৩২)।
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,اسْمَعُوْا وَأَطِيعُوْا، وَإِنِ اسْتُعْمِلَ عَلَيْكُمْ
عَبْدٌ حَبَشِيٌّ، كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ، ‘যদি তোমাদের উপর একজন
হাবশী গোলামকেও শাসক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়, যার মাথাটি কিসমিশের মতো তবুও
তার কথা শোন ও আনুগত্য কর’।[10]
(ঘ) আল্লাহভীতি জাগিয়ে তোলা :
যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য পথ বের করে দেন এবং ঐ
ব্যক্তি আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত। আল্লাহভীতি একজন সৎ মানুষের মূল
ভিত্তি। তাক্বওয়াশীল ব্যক্তি জান্নাতে যাবে এ কথার নিশ্চয়তা দিতে গিয়ে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘গাভীর ওলান থেকে দুধ বের করে ঐ দুধ পুনরায় ভিতরে
ঢুকানো যেমন অসম্ভব, আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারী ব্যক্তির জাহান্নামে যাওয়া
তেমনি অসম্ভব’।[11]
আল্লাহ বলেন, وَيَخِرُّوْنَ لِلْأَذْقَانِ يَبْكُوْنَ وَيَزِيْدُهُمْ خُشُوعًا ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের বিনয়চিত্ততা আরও বৃদ্ধি পায়’ (ইসরা ১৭/১০৯)।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,أَفَمِنْ هَذَا الْحَدِيْثِ تَعْجَبُوْنَ، وَتَضْحَكُوْنَ وَلَا تَبْكُوْنَ، وَأَنْتُمْ سَامِدُوْنَ، فَاسْجُدُوْا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا- ‘অতঃপর তাহ’লে কি তোমরা এই কুরআন থেকে বিস্মিত হচ্ছ? আর হাসছ অথচ কাঁদছ না? আর তোমরা (অহংকারে) উদাসীন? অতএব তোমরা আল্লাহ্কে সিজদা কর এবং তাঁর ইবাদত কর’ (নাজম ৫৩/৫৯-৬২)।
(ঙ) প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতাকে নিরুৎসাহিত করা :
দুনিয়াবী শান-শওকত, মায়া-মমতা মরীচিকার মত। এগুলোর কোন কিছুই মানুষ সাথে
নিয়ে যেতে পারবে না। কেবলমাত্র তার নেক আমল ব্যতীত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন,مَنْهُوْمَانِ لَا يَشْبَعَانِ: مَنْهُومٌ فِي الْعِلْمِ لَا يَشْبَعُ
مِنْهُ وَمَنْهُومٌ فِي الدُّنْيَا لَا يَشْبَعُ مِنْهَا- ‘দু’জন পিপাসু
ব্যক্তি রয়েছে, যারা কখনো তৃপ্ত হয় না। একজন হ’ল জ্ঞান পিপাসু, যার পিপাসা
কখনো নিবৃত্ত হয় না। অন্যজন হ’ল দুনিয়া পিয়াসী, যার লোভ কখনো শেষ হয় না’।[12]
তিনি
আরো বলেন,لَوْ أَنَّ لِابْنِ آدَمَ وَادِيًا مِنْ ذَهَبٍ أَحَبَّ أَنْ
يَكُوْنَ لَهُ وَادِيَانِ، وَلَنْ يَمْلَأَ فَاهُ إِلَّا التُّرَابُ،
وَيَتُوْبُ اللهُ عَلَى مَنْ تَابَ- ‘যদি আদম সন্তানকে এক ময়দান ভর্তি
স্বর্ণ দেওয়া হয়, তাহ’লে সে দুই ময়দান ভর্তি স্বর্ণ আকাঙ্ক্ষা করবে। তার
মুখ ভরবে না মাটি ব্যতীত (অর্থাৎ কবরে না যাওয়া পর্যন্ত)। আর আল্লাহ
তওবাকারীর তওবা কবুল করে থাকেন’।[13]
দুনিয়াবী
ধন-দৌলত, শান-শওকত ও নে‘মতরাজির হিসাব আল্লাহ তা‘আলার কাছে পেশ করতে হবে।
অধিকাংশ মানুষই ধন-সম্পদের ধোঁকায় পতিত হয়। তাই অধিক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
পরিহার করে অল্পে তুষ্ট থাকাই হবে প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য। আব্দুল্লাহ
ইবনে আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, نِعْمَتَانِ
مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ: الصِّحَّةُ وَالفَرَاغُ ‘দু’টি
নে‘মত রয়েছে, যে দু’টিতে বহু মানুষ ধোঁকায় পতিত হয়েছে- স্বাস্থ্য এবং
সচ্ছলতা’।[14]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, يَقُوْلُ الْعَبْدُ: مَالِي، مَالِي،
إِنَّمَا لَهُ مِنْ مَالِهِ ثَلَاثٌ: مَا أَكَلَ فَأَفْنَى، أَوْ لَبِسَ
فَأَبْلَى، أَوْ أَعْطَى فَاقْتَنَى، وَمَا سِوَى ذَلِكَ فَهُوَ ذَاهِبٌ،
وَتَارِكُهُ لِلنَّاسِ ‘বান্দা বলে আমার মাল, আমার মাল! অথচ তার মাল হ’ল
মাত্র তিনটি : (১) যা সে খেয়েছে ও শেষ করেছে (২) যা সে পরিধান করেছে ও
জীর্ণ করেছে এবং (৩) যা সে ছাদাক্বা করেছে ও সঞ্চয় করেছে। এগুলি ব্যতীত
বাকী সবই চলে যাবে এবং মানুষের জন্য রেখে যাবে’।[15]
(চ) নম্র ও বিনয়ী করে গড়ে তোলা : নম্রতা, ভদ্রতা ও সদাচার সমাজে আজ উপেক্ষিত প্রায়। নবী করীম (ছাঃ) মু‘আয ও আবু মূসাকে ইয়ামনে প্রেরণের সময় বলেন,يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا، وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا، وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا ‘তোমরা লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না। সুসংবাদ দিবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না’।[16] সুতরাং কোমল ও সদাচরণ মুছল্লীদের মাঝে প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
উপসংহার : ইসলাম মানবসম্পদ উন্নয়নে নীতি-নৈতিকতা, আর্থ-সামাজিক, ইহলৌকিক ও পারলৌকিক অগ্রগতির বিষয়ে জোরালো তাকীদ দিয়েছে, যাতে একজন নীতিবান ও আদর্শ মানুষ সামাজিক কল্যাণ, রাষ্ট্রীয় কল্যাণ ও মানবিক উন্নয়নে সমর্থ হয় এবং ইহকাল ও পরকালে সাফল্য লাভ করে। মানব সন্তানের কার মধ্যে কোন শক্তি-সামর্থ্য নিহিত, তা খুঁজে বের করে যথোপযুক্ত পরিচর্যা, প্রশিক্ষণ ও সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারলে মানবতার নৈতিক, চারিত্রিক, বৈষয়িক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়ন সম্ভব। মসজিদের ইমাম, খত্বীব, আলেম, মুহাদ্দিছ, ওয়ায়েজ ও বক্তাদের উপরেই মূলতঃ এ দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। আল্লাহর পক্ষ হ’তে অর্পিত এ দায়িত্ব পালন করে মানবজাতিকে প্রকৃতার্থে সভ্য মানুষে পরিণত করার জন্য আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!
[1]. ইবনু মাজাহ হা/২২৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৬২৯৭।
[2]. বুখারী হা/৩৪৬১; তিরমিযী হা/২৬৬৯।
[3]. তিরমিযী হা/৩০৫৭; ছহীহাহ হা/২২৫৭।
[4]. আবুদাউদ হা/৪৩৩৮, হাদীছ ছহীহ।
[5]. তিরমিযী হা/২১৬৯; মিশকাত হা/৫১৪০, সনদ হাসান।
[6]. বুখারী হা/৩২৬৭; মিশকাত হা/৫১৩৯।
[7]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭২৫২; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮০২; মিশকাত হা/৫১২২।
[8]. মুওয়াত্ত্বা ইমাম মালেক হা/৮২৫; মুসলিম হা/৪৫৭৮ (১৭১৫)।
[9]. হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন ১/৫০ পৃঃ।
[10]. বুখারী হা/৭১৪২; ইবনু মাজাহ হা/২৮৬০; মিশকাত হা/৩৬৬৩।
[11]. তিরমিযী হা/১৬৩৩, ২৩১১; নাসাঈ হা/৩১০৭, ৩১০৮।
[12]. হাকেম, আল-মুসতাদরাক হা/৩১২; মিশকাত হা/২৬০; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৬২৪।
[13]. বুখারী হা/৬৪৩৯; মুসলিম হা/১০৪৮; মিশকাত হা/৫২৭৩।
[14]. বুখারী হা/৬৪১২; মিশকাত হা/৫১৫৫।
[15]. মুসলিম হা/২৯৫৯; মিশকাত হা/৫১৬৬।
[16]. বুখারী হা/৩০৩৮; মুসলিম হা/৪৬২৩।