কট্টর বামপন্থী ফার্ক বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের সঙ্গে কলম্বিয়ায় ৫০ বছরের যুদ্ধ অবসানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান মানুয়েল সান্তোস। প্রায় চার বছর কলম্বিয়ার ভেতরে-বাইরে শান্তি আলোচনার পর গত ১৫ই আগষ্ট তিনি নিজে শেষ অস্ত্রের কন্টেইনার বন্ধ করেন। পরে তা জাতিসংঘের পরিদর্শকদের কাছে হস্তান্তর করেন।

প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সংঘর্ষ সত্যিই শেষ হয়েছে। আমাদের জাতি একটি নতুন পর্যায় শুরু করতে যাচ্ছে। আমাদের জন্য এটা সত্যিই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত’। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮ বছরের একটি প্রজাতন্ত্র আমাদের। এর আগে এমন যুদ্ধের ইতিহাস নেই কলম্বিয়ার। আজ সত্যিই এই যুদ্ধ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল’।

অনুষ্ঠানে ফার্ক বিদ্রোহীরা জানান, আগামী ১লা সেপ্টেম্বর থেকে একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবেন তাঁরা।

১৯৬৪ সাল থেকে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন বামপন্থী ফার্ক গেরিলারা। লাতিন আমেরিকায় ফার্ক-কলম্বিয়া সরকারের লড়াইই সবচেয়ে পুরোনো গৃহযুদ্ধ। এই গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারায় ২ লাখ ৬০ হাযারের বেশী লোক। পাঁচ দশকের এ যুদ্ধে নিখোঁজ হয়েছে আরও ৬০ হাযার মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়েছে কয়েক লাখ। এছাড়া সরকারি হিসাব মতে, দীর্ঘমেয়াদি এই যুদ্ধে প্রায় আড়াই লাখ ফার্ক বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। এছাড়া অন্তত পাঁচ লাখ বিদ্রোহী পালিয়ে গেছে।

এক সময়ে কলম্বিয়ায় ধনী-দরিদ্রের তীব্র বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে প্রথমে কয়েকজন কৃষক এবং ভূমি শ্রমিক মিলে প্রতিষ্ঠা করেছিল ফার্ক নামে এই গেরিলা সংগঠনটি। মূলতঃ কলম্বিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধেই লড়াই করতো তারা। এছাড়া তারা তেলের সরবরাহ লাইন, বিদ্যুৎ লাইন, বিভিন্ন সেতু এবং সামাজিক ক্লাবে বোমা হামলা চালাতো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের আক্রমণের শিকার হ’ত বেসামরিক নাগরিকরা। অনেককে অপহরণ করে নিয়ে যেত তারা। পরে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হ’ত।






আরও
আরও
.